আল্লাহ পাক-এর হাবীব, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রায় চৌত্রিশ বছর বয়স মুবারক থেকে চল্লিশ বছর বয়স মুবারক পর্যন্ত একাদিক্রমে হেরা গুহায় মুরাকাবা (ধ্যান) করেছেন। যখন ওহী নাযিল হত তখনও তিনি মুরাকাবারত (ধ্যানমগ্ন) হতেন। এছাড়া তিনি অন্যান্য সময় প্রায়ই মুরাকাবারত থাকতেন।
অপরদিকে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, স্বীয় গৃহে নামায আদায় করতে করতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পা মুবারক ফুলে যেত।
এছাড়া কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক রাতের মধ্যভাগে ঘরের কোণে নামায আদায় করার প্রসঙ্গে আয়াত শরীফ নাযিল করেছেন, “যে ব্যক্তি রাত্রিকালে (একাকী) সিজদার মাধ্যমে এবং দাঁড়িয়ে ইবাদত করে, পরকালের আশঙ্কা রাখে এবং তার রব-এর রহমত কামনা করে; সে কি তার সমান- যে এরূপ করে না।” (সূরা যূমার, আয়াত শরীফ ৯)
আরো ইরশাদ হয়েছে, “হে কম্বলাবৃত আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি রাত্রিতে (নামাযের জন্য) দ-ায়মান হোন কিছু অংশ বাদ দিয়ে। অর্ধরাত অথবা তদপেক্ষা বেশি। কুরআন শরীফ তারতীল বা তাজবীদের সাথে তিলাওয়াত করুন। আমি তো আপনার কাছে অবতীর্ণ করি প্রয়োজনীয় বাণী। নিশ্চয়ই ইবাদতের জন্য (একাকী) রাতে উঠা (উম্মতের) প্রবৃত্তি দমনে সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণের অনুকূল।” (সূরা মুয্যাম্মিল, আয়াত শরীফ- ১-৬)
আরো ইরশাদ হয়েছে, “যখন রাতের অংশ পার হয় তখন আপনার রবের স্মরণে দাঁড়িয়ে যান।”
অর্থাৎ কুরআন শরীফ-এও আল্লাহ পাক ঘরের কোণে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করতে বলেছেন।
এছাড়া হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “মহিলাদের জন্য ঘরের কোনে দাঁড়িয়ে নামায পড়লে পঁচিশগুণ বেশি সওয়াব।” (সুবহানাল্লাহ) (মিশকাত, মিরকাত, শরহুত ত্বীবী)
কাজেই দেখা যাচ্ছে যে, মুরাকাবা বা ধ্যান এবং ঘরে নামাযের কথা বলে কুখ্যাত মইজ্জা রাজাকার স্বয়ং আল্লাহ পাক, আল্লাহ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং কুরআন ও সুন্নাহর প্রকাশ্য বিরোধিতা করেছে, মিথ্যাচার করেছে।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, গতকাল ‘দৈনিক আমাদের সময়’ পত্রিকায় হেডিং হয়েছে, “ধ্যান কিংবা ঘরের কোণে একাকী নামাজ আদায়ের মতো কাজকে ইসলাম সমর্থন করে না -মুজাহিদ।”
খবরে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ জামাতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ বলেছে, কর্মের জীবনাদর্শের নামই হচ্ছে ইসলাম। ধ্যান কিংবা একাকী ঘরের কোণে বসে নামায আদায়ের মতো কোনো কাজকে ইসলাম সমর্থন করে না। গতকাল সকালে রাজধানীর উত্তরাস্থ হোয়াইট হলে জামাতের উত্তরা থানা আয়োজিত দেশব্যাপী গণসংযোগ অভিযান পালন উপলক্ষে দাওয়াতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলে।”
এতদ্বপ্রেক্ষিতে সমূহ ফিক্বাহর কিতাবসমূহের দৃষ্টিতে সে একজন কাট্টা মুরতাদে পরিণত হয়েছে এবং তার সংগঠন জামাতে মওদুদী যদি একই ধারণা পোষণ করে তাহলে তারাও কাট্টা মুরতাদে পরিণত হয়েছে এবং খোদ তথাকথিত জামাতে ইসলামী আসলে ‘জামাতে মুরতাদে’ পরিণত হয়েছে।
পাশাপাশি উল্লেখ্য যে, এদেশের কোটি কোটি লোক সাক্ষী যে, জামাতে মওদুদীরা ১৯৭১-এর ঘৃণ্য রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী ছিলো। কিন্তু তারপরও মইজ্জা রাজাকার সেটাকে মিথ্যা বলে নিজেদের পক্ষে সাফাই গেয়েছে।
মূলতঃ এদেরকেই হাদীছ শরীফ-এ মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বলা হয়েছে।
দেশবাসী মুসলমানদের উচিত, মুরতাদ মইজ্জা রাজাকার ও তার সংগঠন জামাতে মুরতাদদের প্রতিহত করা এবং মিথ্যাবাদী দাজ্জালের চেলা বলে অভিহিত করা।
কারণ, দেশবাসী তথা বিশ্ববাসী অবগত আছেন যে, আউলিয়ায়ে কিরাম, ছূফী-সাধক, দরবেশগণ বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন তথা ইসলামের সব ইমাম-মুজতাহিদ সবাই সারারাত জেগে নামায আদায় করে এবং মুরাকাবা করেই বুযূর্গ হয়েছিলেন এবং সে কারণেই তাঁদের দ্বারা ইসলামের এত খিদমত হয়েছিলো।
পাশাপাশি স্মর্তব্য যে, বর্তমান সরকারের একটি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিলো, ‘কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন হবে না’। সে প্রেক্ষিতে সরকারের উচিত কুরআন-সুন্নাহ বর্ণিত আইন অনুযায়ী মুরতাদ মুজাহিদ ও মুরতাদ জামাতীদের- মুরতাদীর শাস্তি বাস্তবায়ন করা।
মুহম্মদ মাহবুব আলম
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০