মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংযুক্ত এবং সম্পৃক্ত। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার সম্মানিত ফতওয়া মুবারক অনুযায়ী- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, সেটা সরাসরি হোক বা ইশারা ইঙ্গিতেই হোক, স্বাভাবিক অবস্থায় হোক অথবা মাতাল বা নেশাগ্রস্থ অবস্থায় হোক অর্থাৎ যেকোনো অবস্থায়ই হোক না কেন- অবশ্যই অবশ্যই তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পাওয়ার তাদের কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু তাই নয়, তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো লক্ষ কোটি গুণ বেশি কঠিনভাবে যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একই হুকুম অর্থাৎ তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ لَعَنَهُمُ اللهُ فِـى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَاَعَدَّ لَـهُمْ عَذَابًا مُّهِيْنًا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে কষ্ট দেয়, তাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত দুনিয়া এবং আখিরাতে। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامِ الْاَوَّلِ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ فِـىْ عِتْـرَتِـىْ فَقَدْ اٰذَى اللهَ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দিলো, সে মূলত যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকেই কষ্ট দিলো।” নাঊযুবিল্লাহ! (দায়লামী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامِ الْاَوَّلِ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ وَعِتْرَتِـىْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমাকে এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কষ্ট দিবে, তার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত। অর্থাৎ সে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে লা’নতগ্রস্থ।” নাঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَلْعُوْنِـيْـنَ اَيْنَمَا ثُقِفُوْاۤ اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِيْلًا.
অর্থ: “লা’নতগ্রস্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই পাকড়াও করা হবে এবং অবশ্যই তাদেরকে ক্বতল করা হবে, মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ لَـهُمْ عَذَابٌ اَلِـيْمٌ.
অর্থ: “আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامِ الْاَوَّلِ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কোনো নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে, আপনারা তাকে ক্বতল করুন, মৃত্যুদণ্ড দিন। আর যে ব্যক্তি আমার হযরত ছাহাবায়ে রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে গাল-মন্দ করবে, উনাদের মানহানী করবে, আপনারা তাকে প্রহার করুন।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২২১, ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/২৪২, আল মু’জামুছ ছগীর লিত ত্ববারনী ১/৩৯৩)
হযরত ইমাম আবূ ‘আব্দিল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আব্দিস সালাম ইবনে সাহনূন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
اَجْـمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُتَنَقِّصَ لَهٗ كَافِرٌ وَّالْوَعِيْدُ جَارٍ عَلَيْهِ بِعَذَابِ اللهِ لَهٗ وَحُكْمُهٗ عِنْدَ الْاُمَّةِ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِـىْ كُفْرِهٖ وَعَذَابِهٖ كَفَرَ.
অর্থ: “সমস্ত হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা এ বিষয়ে ইজমা’ করেছেন যে, নিঃসন্দেহে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী, উনার মর্যাদাহননকারী, মানহানীকারী ব্যক্তি কাফির এবং তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। তার ব্যাপারে সমস্ত উম্মত উনাদের ফায়ছালা হলো, তাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। আর যে ব্যক্তি এ ধরণের লোকদের কাফির হওয়ার ব্যাপারে এবং শাস্তিযোগ্য হওয়ার বিষয়ে অর্থাৎ তার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করবে, সেও কাফির হবে (এবং তাকেও শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে)।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/২১৫, আস সাইফুল মাসলূল ১২০ পৃ., নিহায়াতুস সুওয়াল ২৬১ পৃ.)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-
يُقْتَلُ عَلـٰى كُلِّ حَالٍ اَسَرَّ ذٰلِكَ اَوْ اَظْهَرَهٗ وَلَا يُسْتَتَابُ.
অর্থ: “যে কোনো অবস্থায় হোক না কেন তাকে ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। চাই সে গোপনে গাল-মন্দ করুক বা প্রকাশ্যে গাল-মন্দ করুক। তার তওবা গ্রহণযোগ্য হবে না।” (আশ শিফা ২/২১৬, আস সাইফুল মাসলূল ১২৭-১২৮ পৃ.)
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامِ الثَّالِثِ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْـنِ بْنِ عَلِىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ) اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّ اَهْلَ الْبَيْتِ فَاِنَّـمَا يَسُبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দ করলো, মানহানী করলো, সে মূলত মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকেই গাল-মন্দ করলো, উনাদেরই মানহানী করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৮)
অতএব মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত ফতওয়া মুবারক হচ্ছেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। কাজেই, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পাওয়ার তাদের কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু তাই নয়, তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো লক্ষ কোটি গুণ বেশি কঠিনভাবে যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একই হুকুম অর্থাৎ তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সুবহানাল্লাহ!
ইমাম ত্ববারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ جَارِيَةً لِاُمِّ الْمُؤْمِنِيْـنَ الرَّابِعَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اِبْنَةِ اَبِيْهَا عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتنَا حَضْرَتْ حَفْصَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) سَحَرَتْهَا فَاعْتَرَفَتْ بِهٖ عَلـٰى نَفْسِهَا فَاَمَرَتْ اُمُّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اِبْنَةُ اَبِيْهَا عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ حَفْصَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ) حَضْرَتْ عَبْدَ الرَّحْـمٰنِ بْنِ زَيْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ فَقَتَلَهَا.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার একটা দাসী ছিলো, সে ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করে। তারপর সে নিজে এ বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেয়। তখন ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি (উনার চাচাতো ভাই) হযরত আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ ইবনে খত্ত্বাব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন উক্ত দাসীকে ক্বতল করার জন্য, মৃত্যুদণ্ড দেয়ার জন্য। তারপর হযরত আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ ইবনে খত্ত্বাব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সেই দাসীকে ক্বতল করেন, মৃত্যুদণ্ড দেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর ১৭/২৬)
হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘মুয়াত্ত্বা শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
اَنَّ اُمَّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ الرَّابِعَةَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اِبْنَةَ اَبِيْهَا عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ حَفْصَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَتَلَتْ جَارِيَةً لَـهَا سَحَرَتْهَا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে উনার এক দাসী জাদু করার কারণে তিনি তাকে ক্বতল করেন, মৃত্যুদণ্ড দেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুয়াত্ত্বা শরীফ)
আল হাফিুল কাবীর আবূ বকর আব্দুর রাজ্জাক্ব ইবনে হাম্মাম আছ ছন‘আনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি (বিলাদত শরীফ : ১২৬ এবং বিছাল শরীফ: ২১১ হিজরী শরীফ) উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল মুছান্নাফ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ جَارِيَةً لِاُمِّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ الرَّابِعَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اِبْنَةِ اَبِيْهَا عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ حَفْصَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) سَحَرَتْهَا وَاعْتَرَفَتْ بِذٰلِكَ فَاَمَرَتْ بِـهَا حَضْرَتْ عَبْدَ الرَّحْـمٰنِ بْنَ زَيْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ فَقَتَلَهَا.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার একটা দাসী ছিলো, সে ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করে। তারপর সে এ বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেয়। তখন ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি (উনার চাচাতো ভাই) হযরত আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ ইবনে খত্ত্বাব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন উক্ত দাসীকে ক্বতল করার জন্য, মৃত্যুদণ্ড দেয়ার জন্য। তারপর হযরত আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ ইবনে খত্ত্বাব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সেই দাসীকে ক্বতল করেন, মৃত্যুদণ্ড দেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ১০/১৮০)
হযরত ইমাম আবূ মুহম্মদ আব্দুল্লাহ ইবেন ওয়াহাব ইবনে মুসলিম মিছরী কুরাইশী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ : ১৯৭ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল জামি’ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ جَارِيَةً لِاُمِّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ الرَّابِعَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اِبْنَةِ اَبِيْهَا عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتنَا حَضْرَتْ حَفْصَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) سَحَرَتْـهَا فَاَمَرَتْ بِـهَا فَقُتِلَتْ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার একটা দাসী ছিলো, সে উনাকে জাদু করে। ফলে ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত দাসীকে ক্বতল করার জন্য, মৃত্যুদণ্ড দেয়ার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন। তখন তাকে ক্বতল করা হয়, মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।” সুবহানাল্লাহ! (আল জামি’ ১/২৮৬)
সুতরাং যারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কষ্ট দিবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে অনেক ওয়াক্বেয়া মুবারক বর্ণিত রয়েছে। যেমন-
ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়িদ ইবনে হাসান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর, ছাহিবু জুরযান, অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও ইনসাফগার শাসক, ইমামুল ‘আদিল, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা হযরত ইমাম হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইসমা‘ঈল ইবনে হাসান ইবনে যায়েদ ইবনে হাসান ইবনে আলী ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিমুস সালাম (বিছাল শরীফ : ২৭০ হিজরী) উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক-এ উল্লেখ রয়েছে-
قَالَ حَضْرَتْ اَبُو السَّائِبِ عُتْبَةُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْـهَمْذَانِـىُّ قَاضِىُ الْقُضَاةِ كُنْتُ يَوْمًا بِـحَضْرَةِ اَلْـحَسَنِ بْنِ زَيْدِ ۣ الدَّاعِىِّ بِطَبَـرِسْتَانَ وَكَانَ يَلْبَسُ الصُّوْفَ وَيَاْمُرُ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهٰى عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُوَجِّهٗ فِـىْ كُلِّ سَنَةٍ بِعِشْرِيْنَ اَلْفَ دِيْنَارٍ اِلـٰى مَدِيْنَةِ السَّلَامِ تُفَرَّقُ عَلـٰى صَغَائِرِ وَلَدِ الصَّحَابَةِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمْ وَكَانَ بـِحَضْرَتِهٖ رَجُلٌ ذَكَرَ اُمَّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ الثَّالِثَةَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) بِذِكْرٍ قَبِيْحٍ مِّنَ الْفَاحِشَةِ فَقَالَ يَا غُلَامُ اضْرِبْ عُنُقَهٗ فَقَالَ لَهُ الْعَلَوِيُّوْنَ هٰذَا رَجُلٌ مِّنْ شِيْعَتِنَا فَقَالَ مَعَاذَ اللهِ هٰذَا رَجُلٌ طَعَنَ عَلَى النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ اَلْـخَبِيْثٰتُ لِلْخَبِـيْـثِـيْـنَ وَالْـخَبِـيْثُوْنَ لِلْخَبِـيْثٰتِ وَالطَّيِّبٰتُ لِلطَّيِّـبِـيْـنَ وَالطَّيِّـبُوْنَ لِلطَّيِّبٰتِ اُولٰٓئِكَ مُبَرَّءُوْنَ مِـمَّا يَقُوْلُوْنَ لَـهُمْ مَّغْفِرَةٌ وَّرِزْقٌ كَرِيْـمٌ فَاِنْ كَانَتْ اُمُّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ الثَّالِثَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ عَائِشَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ) خَبِـيْثَةً فَالنَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَبِـيْثٌ فَهُوَ كَافِرٌ فَاضْرِبُوْا عُنُقَهٗ فَضَرَبُوْا عُنُقَهٗ وَاَنَا حَاضِرٌ.
অর্থ: ইমামুল আলাম, কাযীউল কুয্যাত হযরত ইমাম আবুস সায়িব ‘উতবাহ ইবনে ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে মূসা হামযানী শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ : ৩৫০ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন, আমি একদা তাবারিস্তানে ছাহিবু জুরযান, ইমামুল ‘আদিল, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত ছিলাম। তিনি সূফী উনাদের পোষাক পরিধান করতেন (অনেক উচ্চ পর্যায়ের মাশায়েখগণ উনাদের ইমাম ছিলেন) এবং সৎকাজের আদেশ করতেন ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করতেন (অর্থাৎ অত্যন্ত ইনসাফগার ও ন্যায়পরায়ণ শাসক ছিলেন)। তিনি প্রতি বছর সালাম শহর তথা বাগদাদ শরীফে ২০ হাজার স্বর্ণমুদ্রা প্রেরণ করতেন। যা শিশু ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের বংশধরগণ উনাদের মাঝে বন্টন করা হতো। সুবহানাল্লাহ! এক দিনের কথা- ছাহিবু জুরযান, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উপস্থিতীতে এক লোক উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সায়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপছন্দনীয় ফাহিশামূলক কিছু কথাবার্তা বললো। নাঊযুবিল্লাহ! তখন তিনি একজনকে বললেন, হে বৎস! তুমি তার গর্দান উড়িয়ে দাও। তখন আলবীগণ উনারা উনাকে বললেন, সে তো আমাদের অনুসারী! তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আশ্রয় দান করুন! এ নিকৃষ্ট লোকটি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপবাদ দিয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلْـخَبِـيْثٰتُ لِلْخَبِـيْـثِـيْـنَ وَالْـخَبِـيْثُوْنَ لِلْخَبِـيْثٰتِ وَالطَّيِّـبٰتُ لِلطَّيِّـبِـيْـنَ وَالطَّيِّـبُوْنَ لِلطَّيِّـبٰتِ اُولٰٓئِكَ مُبَرَّءُوْنَ مِـمَّا يَقُوْلُوْنَ لَـهُمْ مَّغْفِرَةٌ وَّرِزْقٌ كَرِيْـمٌ.
‘দুশ্চরিত্রা মহিলারা দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা মহিলাদের জন্য। সচ্চরিত্রা মহিলা উনারা সচ্চরিত্র পুরুষ উনাদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ উনারা সচ্চরিত্রা মহিলা উনাদের জন্য। উনাদের সম্পর্কে তারা যা বলে, উনারা সেটা থেকে পবিত্র। সুবহানাল্লাহ! উনাদের জন্য রয়েছেন সুউচ্চ মর্যাদা মুবারক এবং কুদরতময় রিযিক্ব।’ সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬)
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীকাহ আলাইহাস সালাম তিনি যদি খবীছাহ তথা দুশ্চরিত্রা হন, নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও খবীছ। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! কাজেই, এই ব্যক্তি কাফির। আপনারা তার গর্দান উড়িয়ে দিন। তখন উনারা শস্তিস্বরূপ উক্ত ব্যক্তির গর্দান উড়িয়ে দিলেন, শাস্তিস্বরূপ তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন। সুবহানাল্লাহ! কাযীউল কুয্যাত ইমাম হযরত আবুস সায়িব ‘উতবাহ ইবনে ‘উবাইদুল্লাহ শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি তখন উক্ত মজলিসে উপস্থিত ছিলাম।” সুবহানাল্লাহ! (শরহু উছূলি ই’তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘য়াহ ৭/১৩৪৫, আস সাইফুল মাসলূল ‘আলা মান সাব্বার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪১৯পৃ.)
মাহবূবে এলাহী, আরিফ বিল্লাহ, আদীব, শায়ি’র, ছাহিবুস শুজা‘য়াহ, ছাহিবু হুসনিস সীরাহ, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে যায়েদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইসমা‘ঈল ইবনে হাসান ইবনে যায়েদ ইবনে হাসান ইবনে আলী ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিমুস সালাম (শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ : ২৮৭ হিজরী শরীফ) তিনি ছিলেন ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়িদ ইবনে হাসান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর। অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন আখাছ্ছুল খাছ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও ইনসাফগার শাসক। তিনি উনার সম্মানিত আপন বড় ভাই ছাহিবু জুরযান, আল ইমামুল ‘আদিল, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার পর ২৭০ হিজরী শরীফ থেকে ২৮৭ হিজরী শরীফ পর্যন্ত অত্যন্ত ইনসাফ ও ন্যায়পরয়াণতার সাথে সম্মানিত শাসনকার্য মুবারক পরিচালনা করেন। উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক-এ উল্লেখ রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ جَعْفَرِ بْنِ الْفَضْلِ الطَّبَـرِىِّ رَحْـمَةُ اللهُ عَلَيْهِ قَالَ اِنَّ حَضْرَتْ مُـحَمَّدَ بْنَ زَيْدٍ رَحْـمَةُ اللهُ عَلَيْهِ اَخَا حَضْرَتْ اَلْـحَسَنِ بْنِ زَيْدٍ رَحْـمَةُ اللهُ عَلَيْهِ قَدِمَ عَلَيْهِ مِنَ الْعِرَاقِ رَجُلٌ يَّنُوْحُ بَيْـنَ يَدَيْهِ فَذَكَرَ اُمَّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ الثَّالِثَةَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) بِسُوْءٍ فَقَامَ اِلَيْهِ بِعَمُوْدٍ وَّضَرَبَ بِهٖ دِمَاغَهٗ فَقَتَلَهٗ فَقِيْلَ لَهٗ هٰذَا مِنْ شِيْعَتِنَا وَمِـمَّنْ يَّتَوَلَّانَا فَقَالَ هٰذَا سَـمّٰى جَدِّىْ قَرْنَانَ وَمَنْ سَـمّٰى جَدِّىْ قَرْنَانَ اسْتَحَقَّ عَلَيْهِ الْقَتْلَ فَقَتَلْتُهٗ.
অর্থ: “হযরত আবূ জা’ফর ইবনে ফযল ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত হাসান ইবনে যায়েদ আদ দায়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত ভাই মাহবূবে এলাহী, আরিফ বিল্লাহ, আদীব, শা‘িয়র, ছাহিবুস শুজা‘য়াহ, ছাহিবু হুসনিস সীরাহ, অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও ইনসাফগার শাসক, ইমামুল ‘আদিল, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে যায়েদ ইবনে মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট ইরাক থেকে এক ব্যক্তি আগমণ করলো। সে উনার সামনে এসে ইনিয়ে বিনিয়ে কান্নার স্বরে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ এলোমেলো (কিছু খারাপ কথা) বললো। না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন সাথে সাথে আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যদুনা ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে যায়েদ ইবনে মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একখানা লোহার খুঁটি নিয়ে তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে তার মস্তিষ্কের উপর (মাথার তালুর উপর) আঘাত করে তাকে হত্যা করে ফেললেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনাকে বলা হলো যে, সে তো আমাদের অনুসারী এবং যারা আমাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছে, সে তাদের অন্যতম। (জবাবে) তিনি বললেন, সে আমার মহাসম্মানিত নানাজান, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপবাদ দিয়েছে, উনার মানহানী করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর যে আমার মহাসম্মানিত নানাজান, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ অপবাদ দেয়, উনার মানহানী করে, তাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করা, শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ড দেয়া অপরিহার্য হয়ে যায়। তাই আমি তাকে শাস্তিস্বরূপ হত্যা করেছি, শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ড দিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ! (শরহু উছূলি ই’তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘য়াহ ৭/১৩৪৩, আস সাইফুল মাসলূল ৪২০পৃ.)
উল্লেখ্য যে, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার যেই হুকুম মুবারক অন্যান্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরও একই হুকুম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি যেমন মৃত্যুদণ্ড, তেমনিভাবে অন্যান্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরও যারা মানহানী করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পাওয়ার তাদের কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না।
শুধু তাই নয়, তাদেরকে শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো লক্ষ কোটি গুণ বেশি কঠিনভাবে যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একই হুকুম অর্থাৎ তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ছিদ্দীক্ব ইবনে আকরাম।