মিফতাহু খযায়িনির রহমাহ, মুশাইয়িদু ক্বছ্রিল হিদাইয়াহ, শাহীদুল্লাহি ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক বিভিন্ন রাজা-বাদশাহদের নিকট মুবারক চিঠি-পত্র প্রেরণ

সংখ্যা: ১৮৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

ان الدين عند الله الاسلام

“নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক-এর নিকট ইসলামই হচ্ছে একমাত্র মনোনীত দ্বীন।” (সূরা আলে ইমরান-১৯)

অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক-এর সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত, একমাত্র মনোনীত দ্বীন ‘ইসলাম’কে মানুষের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়ার জন্যই উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যমিনে পাঠিয়েছেন। যাতে করে মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব, নবীদের নবী, রসূলদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে।

আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল্লাহ পাক-এর সেই মনোনীত দ্বীন- ‘ইসলামকে’ পরিপূর্ণভাবে মানুষের কাছে পৌঁছিয়েছেন মৌখিকভাবে এবং লিখিত আকারে বা চিঠি-পত্রের মাধ্যমে।

নিম্নে বিভিন্ন রাজা-বাদশাহদের নিকট কতিপয় পত্র মুবারক প্রেরণ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো:

রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস-এর

নিকট মুবারক পত্র প্রেরণ

 হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত দাহিয়াতুল ক্বলবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর মাধ্যমে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস-এর কাছে পত্র প্রেরণ করেন। ঐ পত্র রোম সম্রাটের অধীনে সিরিয়ার শাসনকর্তা হারেস গাস্সানীর নিকট দিলে তিনি বাইতুল মুকাদ্দাসে অবস্থানরত সম্রাট হিরাক্লিয়াস-এর কাছে পৌঁছিয়ে দেন।

পত্র পাঠ করে হিরাক্লিয়াস সভাসদগণের নিকট বললেন, দেখ এই নগরীতে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম-এর সম্প্রদায়ের কোন লোক পাওয়া যায় কিনা?

ঘটনাক্রমে ঐ সময় সম্ভ্রান্ত কুরাঈশ বংশের সরদার হযরত আবু সুফিয়ান  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বাণিজ্য উপলক্ষে ঐ শহরে অবস্থান করছিলেন। বাদশাহর দূত তাঁকে বাদশাহর দরবারে উপস্থিত করলো।

বাদশাহ হযরত আবু সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরিচয়, স্বভাব-চরিত্র এবং কার্যকলাপ সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করলেন। জবাবে হযরত আবু সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরবের অতি সম্ভ্রান্ত বংশীয় লোক। তিনি নিজেকে আল্লাহ পাক-এর নবী ও রসূল প্রচার করেন। তিনি দরিদ্রকে ভালবাসেন,  মিথ্যা, চুরি, ব্যভিচার, দুর্নীতি ও অত্যাচার হতে লোককে বিরত রাখেন। যারা একবার তাঁর ধর্ম গ্রহণ করেন, তাঁরা আর কখনো পরিত্যাগ করেন না। গরিব লোকেরাই তাঁর নিকট বেশি যাতায়াত করেন। তিনি প্রচার করেন আল্লাহ পাক এক, তাঁর সাথে কাউকেও শরীক করো না। নামায আদায় কর এবং পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি কর।

হিরাক্লিয়াস হযরত আবু সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কথাগুলি মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করলেন। অতঃপর বললেন, আপনি যদি এই কথাগুলো সত্যিই সম্পূর্ণ সত্য বলে থাকেন, তবে তিনি নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক-এর রসূল এবং নিশ্চয়ই তিনি একদিন আমার রাজ্যও জয় করবেন। শীঘ্রই শেষ পয়গাম্বরের আবির্ভাব হবে তা আমি জানতাম। কিন্তু তিনি যে মক্কা শরীফ-এ ভূমিষ্ঠ হবেন তা আমি জানতাম না। যদি এখন আমি তাঁর নিকট থাকতাম, তবে আমি তাঁর পবিত্র পা মুবারক ধুয়ে দিতাম।

হিরাক্লিয়াস-এর কথাবার্তায় সভাসদগণ কানা-ঘুষা করে উঠলো। অতঃপর হিরাক্লিয়াস বাইতুল মুকাদ্দাস ত্যাগ করে রাজধানী হাবসে চলে এলেন। তথায় এক রুদ্ধদ্বার কক্ষে তার উজীরদেরকে নিয়ে পরামর্শে বসলেন। তিনি উজীরদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, যদি তোমরা আমার রাজ্যের অস্তিত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষা করতে চাও তবে তোমরা আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি ঈমান আন। বাদশাহর কথা কারো কাছে মনঃপুত হলো না; বরং তারা সকলে বৈঠক হতে উঠে যেতে উদ্যত হলো। হিরাক্লিয়াস অবস্থা প্রতিকূল দেখে কৌশল অবলম্বন করলেন। এবার তিনি বললেন, হে আমার বিচক্ষণ উজীররা! ধন্যবাদ তোমাদেরকে। আমি তোমাদেরকে কেবল পরীক্ষা করে দেখলাম, তোমরা নিজেদের ধর্মে যেভাবে আস্থাশীলতার পরিচয় দিলে তাতে তোমাদের প্রতি আমি খুবই খুশি হলাম। বাদশাহর একথা শুনে উজীররা অত্যন্ত খুশি হলো এবং তাকে অভিবাদন জানালো। হিরাক্লিয়াস মনে প্রাণে ইসলামের প্রতি আস্থা এনেও পরিস্থিতির চাপে বাহ্যিকভাবে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হতে পারলেন না।

আবিসিনিয়ার বাদশাহর নিকট

মুবারক পত্র প্রেরণ

আবিসিনিয়ার অধিপতি নাজ্জাশীর দরবারে ইসলামী দাওয়াত পত্র নিয়ে গেলেন হযরত উমর ইবনে উম্মিয়া জামিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।

হযরত উমর ইবনে উম্মিয়া জামিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যখন পত্রখানা তাঁর সম্মুখে রাখলেন, তখন তিনি তা হাতে নিয়ে পরম শ্রদ্ধার সাথে স্বীয় চোখে-মুখে স্পর্শ করলেন। নিজে শাহী তখত হতে নেমে মাটিতে আসন গ্রহণ করলেন। অতঃপর প্রকাশ্য রাজদরবারে সমস্ত সভাসদ এবং অন্যান্য লোকদের সম্মুখেই ঘোষণা করলেন যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ পাক-এর প্রেরিত নবী এবং রসূল। আমরা আহলে কিতাবগণ তাঁরই আগমনের প্রতিক্ষায় ছিলাম। অতঃপর তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পত্রের জবাব লিখলেনঃ

“ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার প্রতি আল্লাহ তায়ালার রহমত বর্ষিত হোক। আমি আপনার প্রেরিত পত্রখানা পেয়ে আপনার পিতৃব্য পুত্র হযরত জাফর ইবনে আবু তালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর হাতে হাত রেখে ইকরার করিলাম: আল্লাহ ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই এবং আপনি আল্লাহ পাক-এর প্রেরিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।”

উল্লেখ্য, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে মুবারক দাওয়াত-পত্রসমূহ  প্রেরণ করেছিলেন, এর সবগুলোই আরবী ভাষায় লিখিত ছিল। এতে লিখিত উপদেশাবলী ছিল নিম্নরূপ:

আল্লাহ তায়ালাকে স্বীকার কর। হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তাঁর রসূল বলে মেনে নাও এবং ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হও। যদি তুমি এরূপ কর, তাহলে আল্লাহ পাক তোমার মঙ্গল সাধন করবেন। আর যদি তা না কর, তবে তোমার বিনাশ ও ধ্বংস অবধারিত এবং অকল্যাণ অনিবার্য।

ঐ সব পত্রের প্রত্যেকটির শুরুতেই আল্লাহ পাক-এর নাম মুবারক ও তাঁর প্রশংসা লিপিবদ্ধ করা হতো এবং পত্রের শেষে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক মোহরাঙ্কিত থাকতো।  (সুবহানাল্লাহ)

ছফওয়াতুল আনাম, আকরামুল কারাম, আইনু আ’ইয়ানিল আলাম, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র বিলাদতভূমি  প্রথম যমীন অর্থাৎ ‘কা’বা শরীফ’ থেকে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করে সকল ‘টাইম জোন’ নির্ধারণ করা উচিত, গ্রীনিচ থেকে নয়

ان اول بيت وضع للناس للذى ببكة مبركا وهدى للعلمين.

অর্থ: নিশ্চয়ই সর্বপ্রথম যে ঘর মানব জাতির জন্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা তো ঐ ঘর যা মক্কা শরীফে অবস্থিত। উহা বরকতময় এবং বিশ্ববাসীর জন্য পথপ্রদর্শক। (সূরা আলে ইমরান-৯৬)

হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “কা’বা শরীফ-এর নিচের অংশটুকু পৃথিবীর প্রথম যমীন।” মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা কাফির, মুশরিক তথা ইহুদী, নাছারা ও মুশরিকদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করো না।” আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুসরণ করবে সে ব্যক্তি তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।” কাজেই মুসলমানদের জন্য সময় নির্ধারণের ক্ষেত্রেও কাফির, মুশরিক, ইহুদী-নাছারাদের অনুসরণ করা কস্মিনকালেও শরীয়তসম্মত হবে না। সুতরাং গ্রীনিচের পরিবর্তে প্রথম যমীন কা’বা শরীফ যা ইহুদী-নাছারাসহ সকলেরই রসূল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এরও ক্বিবলা তা থেকে পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য সমস্ত স্থানের সময় নির্ধারণ করা উচিত।

আমাদের মুসলমানদের প্রতিদিনের নামাযের সময়সূচি তৈরি হয় প্রতিটি দেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী। আর প্রতিটি দেশের স্থানীয় সময় নির্ধারিত হয়েছে গ্রীনিচের সময়কে আদর্শ সময় ধরে। অথচ গ্রীনিচের পরিবর্তে পবিত্র কা’বা শরীফ থেকেই পৃথিবীর সকল স্থানের সময়-অঞ্চল নির্ধারিত হওয়া উচিত ছিল। যেখানে মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কা’বা শরীফ সম্পর্কে ইরশাদ করেন, “যা নিয়ামত দ্বারা পূর্ণ এবং মানব ও জিন জাতির জন্য পথ প্রদর্শক।” সেখানে পবিত্র কা’বা শরীফ অবশ্যই সময়েরও পথ প্রদর্শক। অথচ আজ মুসলমানদের প্রতিদিনের সময় নিরূপণ হয় ব্রিটিশদের গ্রীনিচের সময় ধরে।

গ্রীনিচ রয়াল অবজারভেটরি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৬৭৫ সালে। গ্রীনিচ মেরিডিয়ানকে মূল মধ্যরেখা (প্রাইম মেরিডিয়ান)  হিসেবে বিবেচনা করা হয় ১৮৮৪ সালে। কোন বিখ্যাত এবং ঐতিহাসিক স্থান বলে গ্রীনিচ থেকে প্রাইম মেরিডিয়ান কল্পনা করা হয়নি বরং এর পেছনে ছিল রাজনৈতিক কারণ। এক সময় ব্রিটিশরা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছিল বলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গ্রীনিচ থেকে সময় নির্ধারণের বিষয়টি পৃথিবীর উপর চাপিয়ে দিয়েছে। অথচ গ্রীনিচের পূর্বেও ব্রাসেলস, কোপেনহেগেন, আলেকজান্দ্রিয়া, জেরুজালেম, মাদ্রিদ, প্যারিস এ সকল এলাকাও প্রাইম মেরিডিয়ান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

পৃথিবীর কোন স্থানের উপর দিয়ে যদি প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করতে হয়, পৃথিবীর কোন স্থানের সময়কে প্রমাণ সময় ধরে যদি পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের সময় নির্ধারণ করতে হয়, তবে সেই স্থান হওয়া উচিত পবিত্র কা’বা শরীফ।

বর্তমানে বিভিন্ন পর্যায় থেকে গ্রীনিচ মিন টাইম-এর পরিবর্তে মক্কা শরীফ মিন টাইম নির্ধারিত হবার বিষয়ে আলোচনা তুললেও তারা সুনির্দিষ্ট কারণটি ব্যাখ্যা করতে পারেনি। কেউ কেউ কা’বা শরীফ-এর ভৌগোলিক অবস্থান, চৌম্বকীয় অবস্থান ইত্যাদি বললেও প্রকৃত উত্তর থেকে দূরে সরে আছেন। সঠিক উত্তর গ্রহণ করতে হবে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ থেকে। মহান আল্লাহ পাক সূরা আলে ইমরান-এর ৯৬ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “প্রকৃতপক্ষে মানব জাতির জন্য প্রথম যে ঘর তৈরি করা হয়েছিল তা হচ্ছে ঐ বাক্কা বা কা’বা শরীফ। যা নিয়ামত দ্বারা পূর্ণ এবং মানবজাতির জন্য পথ প্রদর্শক।” সুতরাং কা’বা শরীফ পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম স্থান। প্রশ্ন হতে পারে ইহুদী, খ্রিস্টানরা কেন মুসলমানদের বিষয়টি মেনে নিবে। প্রকৃতপক্ষে ইহুদী খ্রিস্টানরাও কা’বা শরীফ-এর অবস্থান, মান-মর্যাদা, ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।

হযরত নূহ আলাইহিস সালাম-এর মহা প্লাবনের পর হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এই পবিত্র কা’বা শরীফ-এর পুনঃনির্মাণ করেন। হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম-এর দুই সন্তান হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইসহাক আলাইহিস সালামকেও আল্লাহ পাক নবী হিসেবে কবুল করেন। হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম-এর বংশধরদের মধ্য থেকে তাশরীফ নেন নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম-এর বংশধরদের মধ্য থেকে তাশরীফ নেন হযরত মুসা আলাইহিস সালাম এবং পরে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম। সুতরাং ইহুদী এবং খ্রিস্টানসহ সকল আহলে কিতাবের কাছেই কা’বা শরীফ-এর অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে।

সকল বর্ণের, সকল গোত্রের, সকল জাতির আদি পিতা হচ্ছেন হযরত আদম আলাইহিস সালাম। যিনি প্রথম মানুষ এবং নবী। তাঁর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোন কিছুর ইতিহাসের চেয়ে পুরনো কোন ইতিহাস নেই বা থাকতে পারে না। যদি কোন কারণে কোন স্থানকে ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে নির্বাচন করা হয়, তবে প্রথম গুরুত্ব পাবে বাইতুল্লাহ শরীফ বা কা’বা শরীফ; যার চেয়ে ঐতিহাসিক কোন স্থান এই যমীনে নেই।

মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মধ্যে রয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ।” তাহলে জীবনের সকল বিষয়েই আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই অনুসরণ করতে হবে।

কুরআন মজীদ প্রথম নাযিল হয় মক্কা শরীফ-এ। মক্কা শরীফ-এ প্রথম ইসলামের প্রচার শুরু হয় এবং প্রথম ইসলাম কবুলকারী ছাহাবা আজমাইনগণও মক্কা শরীফ-এর অধিবাসী। পরবর্তিতে পর্যায়ক্রমে ইসলাম পূর্বে-পশ্চিমে উত্তর-দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং কা’বা শরীফকে কেন্দ্র ধরে, তার উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করে, তার সাপেক্ষে পৃথিবীর সকল ‘সময় অঞ্চল’ (Time Zone)) ভাগ করলে এর মধ্যেই থাকবে রহমত, রবকত ও কল্যাণ। এছাড়াও কা’বা শরীফকে যেহেতু আসমান ও যমীনের কেন্দ্র বলা হয়েছে, সুতরাং মুসলমানদের উচিত কা’বা শরীফ-এর সময় সাপেক্ষে পৃথিবীর সকল দেশের বা সকল অঞ্চলের সময় নির্ধারণ করে কা’বা শরীফ-এর প্রতি পরিপূর্ণ আদব প্রকাশ করা।

হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত হয়েছে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “কা’বা শরীফ ছিল পানির উপর একটি ছোট পাহাড় এবং তার নিচ দিয়ে পৃথিবী সৃষ্টি হয়।” অর্থাৎ কা’বা শরীফ-এর নিচের অংশটুকু ছিল পৃথিবীর প্রথম যমীন যা বিশাল সাগরের মাঝে সৃষ্টি হয়। পরবর্তিতে সেই পবিত্র স্থানের চতুর্পার্শ্বে তা বিস্তার লাভ করতে থাকে এবং প্রথমে একটি বিশাল মহাদেশের সৃষ্টি হয়। সে কারণে মক্কা শরীফকে বলা হয় উম্মুল কুরা। বিজ্ঞানও প্রমাণ করেছে বর্তমানে যে সাতটি মহাদেশ আছে সেগুলো মূলতঃ একটি মহাদেশ আকারে ছিল; যাকে বলা হয় Mother Continent বা Pangaea. পরবর্তিতে এগুলো একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরতে শুরু করে এবং সরতে সরতে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে।

হাদীছ শরীফ এবং বিজ্ঞানের মাধ্যমেও এটি স্পষ্ট যে, এই পৃথিবীর বিস্তৃতিও ঘটেছে কা’বা শরীফ থেকে। সুতরাং যেখানে আল্লাহ পাক এই কা’বা শরীফকে প্রথম সৃষ্টি করে মানব জাতির পথ প্রদর্শনের জন্য নির্ধারণ করলেন, যেখানে এই কা’বা শরীফকে ধারণকারী মক্কা শরীফ থেকে ইসলাম পৃথিবীব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে, যেখানে এই কা’বা শরীফ থেকেই পৃথিবীর যমীন বিস্তার লাভ করেছে; তাহলে পৃথিবীর সকল ‘সময় অঞ্চল’ (Time Zone)) কেন এই কা’বা শরীফ থেকেই চতুর্পার্শ্বে নির্ধারিত হবে না? বরং এটাই সত্য যে, কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করে পৃথিবীর সকল ‘সময় অঞ্চল’ (ঞরসব তড়হব) নির্ধারণ করলে তা কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এর স্পষ্ট অনুসরণ করা হবে। তখন এর মধ্যে থাকবে রহমত, বরকত ও সাকিনা।

পবিত্র কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করলে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার অবস্থান হয় সুবিধাজনক স্থানে। গ্রীনিচের উপরে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করা অযৌক্তিক এবং প্রচলিত আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাও আঁকাবাঁকা।

গ্রীনিচের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করায় আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা নিয়েও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। প্রচলিত আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা হচ্ছে ১৮০ ডিগ্রি পূর্ব এবং ১৮০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমা রেখার সংযোগস্থলে। এই তারিখ রেখার পশ্চিমে রয়েছে উত্তর গোলার্ধে রাশিয়া এবং দক্ষিণ গোলার্ধে নিউজিল্যান্ড। এই তারিখ রেখা সরাসরি উত্তর গোলার্ধ থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে নেমে যেতে পারেনি। যখনই জনবসতিপূর্ণ এলাকার উপরে এসেছে তখনি ঠেলে দেয়া হয়েছে পানির দিকে। ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা রেখা বিচ্যুত সময় রেখার অংশগুলো হলো বেরিং প্রণালী, এলিউশিয়ান দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিমাংশ, ফিজির পূর্বাংশ ইত্যাদি। বর্তমান অবস্থানে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা থাকায় যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়েছে তার কিছু নমুনা দেয়া যেতে পারে।

ফিজি ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমার পশ্চিমে আর টোঙ্গা, সেমওয়া ১৮০ ডিগ্রি পূর্বে। আর কিরিবাতি দ্বীপকে ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা রেখা দ্বি-ভাগ করেছে। কিন্তু ফিজি, টোঙ্গা এবং কিরিবাতি আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার পশ্চিমে অবস্থান নিয়েছে আর সেমওয়া অবস্থান নিয়েছে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার পূর্বে। টোঙ্গা এবং সেমওয়ার সময় একই থাকলেও ১ দিনের পার্থক্য রয়েছে। আবার ফিজি এবং টোঙ্গা কাছাকাছি হলেও ফিজির সময় টোঙ্গার সময়ের চেয়ে ১ ঘণ্টা পিছিয়ে। আবার সেমওয়ার চেয়ে অনেক পূর্বে হাওয়াই দ্বীপের অবস্থান হলেও সময়ের পার্থক্য মাত্র ১ ঘণ্টা। এছাড়া ১৯৯৫ সালের পূর্ব পর্যন্ত কিরিবাতি দ্বীপে তারিখ নিয়ে ছিল গরমিল। একই দ্বীপে দুইটি তারিখ প্রচলিত ছিল। কিরিবাতির পশ্চিমাংশ সবসময় পূর্বাংশ থেকে এক দিন এগিয়ে থাকতো। সপ্তাহের মাত্র ৪ দিন দুই অংশের মধ্যে ব্যবসায়িক কাজ কর্ম সম্পাদন হতো। এ সকল সমস্যার সমাধানের জন্য ১৯৯৫ সালের পহেলা জানুয়ারিতে কিরিবাতির প্রেসিডেন্ট টিবুরোর টিটো আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাকে কিরিবাতির পূর্বে সরিয়ে নেবার ঘোষণা দেন। কিন্তু কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করলে ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা বা আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা যাবে আলাস্কা এবং কানাডার মাঝামাঝি স্থান দিয়ে (বর্তমান ১৪০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমা রেখা বরাবর)। আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে নিচে নেমে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে দক্ষিণ গোলার্ধে চলে যাবে। সম্পূর্ণ তারিখ রেখাটি যাবে পানির উপর দিয়ে ফলে স্থলভাগের ডানে ও বামে তারিখ রেখা সরিয়ে দেয়ার কোন প্রয়োজন পড়বে না।

সুতরাং পুনরায় কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করা সহজেই সম্ভব এবং যুক্তিসঙ্গত। তখন আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাসহ সকল বিষয়ের সহজ সমাধান পাওয়া যাবে। আল্লাহ পাকতো পূর্বেই ইরশাদ করেছেন “কা’বা শরীফ মানব জাতির জন্য পথ প্রদর্শক।”

গ্রীনিচের সাথে কয়েকটি বিষয় জড়িত:

১. গ্রীনিচের সময় থেকে যোগ ও বিয়োগ করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের স্থানীয় সময় নির্ণয় করা হয়েছে। যেমন (বাংলাদেশের স্থানীয় সময়) = (গ্রীনিচ সময়) + (৬ ঘণ্টা)।

২. গ্রীনিচকে ০ ডিগ্রি দ্রাঘিমায় স্থির করায় ১৮০ ডিগ্রি পূর্ব এবং ১৮০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমা রেখা বর্তমানে যেখানে মিলিত হয়েছে সেখানে রয়েছে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা (International date line))

৩.  গ্রীনিচের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করায় গ্রীনিচের অবস্থান ০ ডিগ্রি দ্রাঘিমায়।

সূর্য যখন কোন স্থানের ঠিক মাথার উপরে আসে তখন মধ্যাহ্ন হয়, একে বলে  sun time। পরের দিন সূর্য যখন আবার মাথার উপর আসবে তখন আবার মধ্যাহ্ন হবে। কিন্তু  ঘড়ি অনুযায়ী অর্থাৎ Clook Time অনুযায়ী একই সময়ে মধ্যাহ্ন হয় না। এই সূর্য সময় এবং ঘড়ি সময়ের সর্বোচ্চ পার্থক্য হয় ফেব্রুয়ারিতে ১৪ মিনিটের মত তখন ঘড়ির সময়ের চেয়ে সূর্য সময় ১৪ মিনিট পিছিয়ে থাকে। আবার নভেম্বরে সময়ের পার্থক্য হয় সর্বোচ্চ ১৬ মিনিট; তখন সূর্য সময় ঘড়ির সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকে। এ সকল অসুবিধা দূর করার জন্যে এখন Atomic Clock  ব্যবহার করা হয়।  এই Atomic Clock এর সময় অনুযায়ী তৈরি হয়েছে UTC (Co-ordinated Universal Time)|। ফলে ১৯৭২ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে TMT এর পরিবর্তে UTC ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু গ্রীনিচের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান কল্পনা করায় তার সাপেক্ষে বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় সময় GMT এর পরিবর্তে UTCহলেও সময় অঞ্চলগুলোর বিভক্তি পূর্বের মতই রয়ে গেছে। কিন্তু গ্রীনিচের উপর প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করার কোন যৌক্তিক কারণ নেই। ফলে পবিত্র কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করে নতুন করে বিভিন্ন সময় অঞ্চল স্থির করা উচিত।

গ্রীনিচের পরিবর্তে পবিত্র কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করাটাই যুক্তিসঙ্গত। বর্তমান স্থানের পূর্বেও গ্রীনিচের আরও দু’টি স্থানের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করা হয়েছিল। ফ্রান্স বহুদিন যাবৎ গ্রীনিচকে প্রাইম মেরিডিয়ান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি এবং প্যারিসকে প্রাইম মেরিডিয়ান ধরেই গণনা করতো। পরবর্তিতে গ্রীনিচকে মেনে নিয়ে GMT ব্যবহার শুরু করলেও পরবর্তীতে আবার সে চলে যায় CET (Central European Time) -এ ।

ফ্রান্সের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান (০ ডিগ্রি) চলে গেলেও তারা গ্রীনিচ টাইম না ধরে ১৫ ডিগ্রি পূর্বে যে সময় অর্থাৎ Central European Time কে ধরে গণনা করছে।

পৃথিবীপৃষ্ঠের কোন স্থানে দাঁড়িয়ে কেউ যদি বলে আমি পৃথিবীর কেন্দ্রে আছি তার দাবি একদিক থেকে সত্য। কেননা, সেই স্থানের ডানদিক থেকে যে কয়টি দ্রাঘিমা পেরিয়ে সে তার অবস্থানে আসতে পারবে একইভাবে বামদিক থেকে ঠিক সে কয়টি দ্রাঘিমা পেরিয়ে আবার পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতে পারবে। সুতরাং পৃথিবীর যে কোন স্থানের উত্তর-দক্ষিণ মেরুর সংযোজক রেখাকে মূল মধ্যরেখা হিসেবে কল্পনা করা যায়।

কেউ যদি পৃথিবীর কোন একটি স্থানে মূল মধ্যরেখা কল্পনা করে নেয় এবং সেই কল্পিত রেখার দু’পাশে পা প্রশস্ত করে দিয়ে ভাবে তার একটি পা পূর্ব গোলার্ধে এবং অন্য পা পশ্চিম গোলার্ধে তবে তার এ ধারণাটিও সত্য। যদিও তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়। কেননা, সে স্থানের কোন ধর্মীয়, ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই। সুতরাং পৃথিবীর এমন একটি স্থানের উপর দিয়ে মূল মধ্যরেখা স্থির করা উচিত, যে স্থানটির ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্ব আছে। আর তা হচ্ছে কা’বা শরীফ। কা’বা শরীফ এমন একটি স্থান যে স্থানটি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম। যে স্থানের পবিত্রতা অপরিসীম। যে স্থানটি পূর্ব-পশ্চিমে সবার কাছে পরিচিত এবং গুরুত্বসহকারে বিবেচিত। সকল আহলে কিতাবের কাছে যে স্থানের অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। যে স্থানটি ছাড়া আর কোন স্থানের এতটা ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই। কা’বা শরীফকে কেন্দ্র ধরে যখন পৃথিবীর সকল সময় অঞ্চল নির্ধারণ করা হবে তখন যে কোন স্থানের স্থানীয় সময় হবে, (UTC) + (কা’বা শরীফ কেন্দ্রিক রচিত টাইম জোন) অথবা (UTC) (কা’বা শরীফ কেন্দ্রিক রচিত টাইম জোন)।

সুতরাং পুনরায় কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করা সহজেই সম্ভব এবং যুক্তিসঙ্গত। তখন আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাসহ সকল বিষয়ের সহজ সমাধান পাওয়া যাবে। আল্লাহ পাকতো পূর্বেই ইরশাদ করেছেন “কা’বা শরীফ মানব জাতির জন্য পথ প্রদর্শক।” সুতরাং পৃথিবীর প্রায় ২৫০ কোটি মুসলমানের এ বিষয়ে সজাগ ও সোচ্চার হওয়া উচিত।

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

-:দৈনিক আল ইহসানের বিশেষ ব্যানার হেডিং তথা তাজদীদের ধারাবাহিকতায় মুজাদ্দিদে আ’যমের মুবারক সংযোজন:- ইসলাম- বিধর্মীদের ধর্ম পালনে কোন বাধা দেয় না। কারণ, প্রত্যেকেই তার নিজ ধর্ম পালনে স্বাধীন। ইসলাম- মুসলমানদের জন্যও বিধর্মীদের কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনুমোদন করে না। পাশাপাশি মুসলমানদেরকে বিধর্মীদের অনুষ্ঠানে যেতে বিধর্মী কর্তৃক উৎসাহিত করাটাও শরীয়তসম্মত নয়। কেননা, মুসলমানরা বিধর্মীদেরকে ইসলাম পালনে বাধ্য করে না।

সাইয়্যিদুল আম্বিয়া, ইমামুল আতক্বিয়া, হাদিউল আওলিয়া, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ উপলক্ষে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন প্রসঙ্গে

মিছবাহুদ্ দুজা, মিফতাহুদ্ দারা, খইরুল ওয়ারা, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্রতম দেহ মুবারক, ঘাম মুবারক ও থুথু মুবারক-এর সৌরভের কাছে যত রকমের খুশবু আছে সবই ম্লান হয়ে যায়

আকমালুল মাওজূদাত, আজমালুল মাখলূক্বাত, আল্মুওয়াইইয়াদু বিওয়াদ্বিহিল বাইয়্যিনাত, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বৈশিষ্ট্য থেকেই সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাম ও আওলিয়ায়ে কিরামগণ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়েছেন

আখলাকুহূ হামীদাহ, আফয়ালুহূ জামীলাহ, আলত্বাফুহূ কারীমাহ, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সদাচরণ হযরত উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাগণের সাথে