সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।
মহা মহিমান্বিত আজিমুশ শান ৯ই রমাদ্বান শরীফ।
খলীফাতুল উমাম, লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, কুতুবুল আলম, ওলীয়ে মাদারজাত, ছাহিবুল খাইর, মুত্বহিরুল আ’যীম, নূরে মুকাররম, শামছে ইলাহী, মাহবুবে ইলাহী, নূরে রহমানী, ছাহিবে জামিউল মাক্বামত, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল সম্মানিত বিলাদত শরীফ।
যা আমাদের জন্য তথা কুল-কায়িনাতের জন্য সব ঈদের সেরা ঈদ। তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ। মূলত সাইয়্যিদে ঈদে বিলাদতে মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, খলীফাতুল উমাম, হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মহান ঈদ যথাযথ পালন ব্যতীত অন্য কোনো ঈদ পালনই সম্ভব নয়।
মহিমান্বিত ওই ঈদের বরকতেই অন্য সব ঈদ পালনের কুওওয়াত ও রহমত হাছিল হয়। তাই এ ঈদ সব ঈদের সর্দার বা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ।
প্রসঙ্গত মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (উম্মতদেরকে) বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক উনার ফযল ও রহমত লাভ করার কারণে তারা যেন আনন্দ, খুশি প্রকাশ করে।” (সূরা ইউনূস : আয়াত শরীফ ৫৮)
বলাবাহুল্য, এ আয়াত শরীফ সাইয়্যিদে ঈদে বিলাদতে খলীফাতুল উমাম, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার জন্য খাছ।
প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, ৯ই রমাদ্বান শরীফ-এর মাহাত্ম্য ও মা’রিফাত মূলত: খোদ কালেমা শরীফ-এর মাঝেই সন্নিবেশিত। ‘৯’ অঙ্কটি বাংলায় লিখলে হয়- ‘নয়’। ‘নয়’ শব্দটি না-বোধক অর্থে তথা নেই অর্থে ব্যবহৃত হয়। অপরদিকে কালেমা শরীফ-এর শুরুও হয়েছে এই না-বোধক দ্যোতনা দিয়ে। কালেমা শরীফ-এর শুরু ‘লা’ এর অর্থও নয় বা নাই। নাই কোন ইলাহা মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত।
কালিমা শরীফ-এর শুরুর এই না-বোধক দ্যোতনা বা নয় বা ৯ অঙ্কটি, খলীফাতুল উমাম, হযরত শাহযাদা আক্বা ক্বিবলা ক্বাবা আলাইহিস সালাম উনার মাঝে, খোদা-তায়ালা উনার গুপ্ত মা’রিফাত হিসেবে বিশেষভাবে সম্পৃক্ত ও জাহির হয়েছে।
প্রসঙ্গত: উনি আরবী নবম মাসের নবম তারিখে রাত নয়টায় এ ধরার বুকে বেমেছাল শান-শওকতের সাথে আগমন করেন। (সুবহানাল্লাহ)
উল্লেখ্য, সংখ্যাতত্ত্বে ১ থেকে শুরু করে ৯ই সর্বোচ্চ সংখ্যা। কাজেই ৯ই রমাদ্বান শরীফ তথা মহিমান্বিত বিলাদত শরীফ মহাশান সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য আমাদের প্রত্যেককেই অগ্রণী হতে হবে।
প্রসঙ্গত: সূরা কাহাফের ১০৯ নম্বর আয়াত শরীফ-এ আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, আমার রব মহান আল্লাহ পাক উনার শান-মান লিখার জন্য যদি সমুদ্রের পানিকে কালি বানানো হয় তবুও মহান আল্লাহ পাক উনার শান মান, ফাযায়িল-ফযীলত শেষ হওয়ার পূর্বেই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে। আরো অনুরূপ যোগ করা হলেও।”
বলাবাহুল্য, ইহা যেমন স্বয়ং আল্লাহ পাক উনার শান মুবারক-এ তেমনি উনার হাবীব আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানেও এবং সাথে সাথে উনাদের রঙে রঞ্জিত মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং মুজাদ্দিদে আ’যম-এ ছানী, খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা আক্বা ক্বিবলাজান আলাইহিস সালাম উনাদের শানেও যথাযোগ্যভাবে প্রযোজ্য।
সঙ্গতকারণেই এই সুমহান বিলাদত শরীফ-এর তাৎপর্য, গুরুত্ব, মহত্ত্ব, শান-শওকত লিখার যেমন কোন ভাষার শুরু এবং শেষ নেই তেমনি বিলাদত শরীফ পালনের ব্যাপকতার, ঘনঘটার, শান-শওকতেরও তথা সমন্বিত আয়োজনেরও কোন পরিশেষ নেই। সবকিছুই এখানে ব্যর্থ। সস্পৃক্ত শুধুই অক্ষমতা প্রকাশ। অনিবার্য এখানে ক্ষমা প্রার্থনা।
বলার অপেক্ষা রাখে না, আমরাও তাই এই সুমহান বিলাদত শরীফ প্রসঙ্গে আমাদের সব অক্ষমতার ভারে প্রথমেই করছি শেষ স্তরের ক্ষমা প্রার্থনা। নিবেদন করছি সমগ্র সত্তার নিংড়ানো নিবেদিত মুহব্বত ও শেষ স্তরের আত্মসমর্পণ।
মূলতঃ খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা আক্বাজান আলাইহিস সালাম উনার সুমহান শান সম্পর্কে যুগপৎভাবে সম্যক অবগত এবং উনাকে যথাযথ সম্মান দানের মর্যাদা কেবল তদ্বীয় পিতাজান ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনারই।
সঙ্গতকারণেই যিনি এমন ফযীলত হাদিয়া করেছেন যেন উভয়ে উভয়ের প্রতিবিম্ব। প্রতিচ্ছবি। পার্থক্য শুধু একজন পিতা। অপরজন পুত্র। একজন মুজাদ্দিদে আ’যম। অপরজন মুজাদ্দিদে আ’যম-এ ছানী। একজন বর্তমান যামানায়ই তাজদীদ ও খিলাফত জারী করছেন। অপরজন অনাগত কালে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য যথাযোগ্যরূপে দিন দিন বিকশিত হচ্ছেন।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম সম্প্রতি সর্বশ্রেষ্ঠ ও চূড়ান্ত স্তরের ইলহাম-ইলকার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে তথা মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওযা সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশে হযরত শাহযাদা ক্বিবলাজান আলাইহিস সালাম উনাকে লক্বব মুবারক দিয়েছেন ‘খলীফাতুল উমাম’।
প্রসঙ্গত: হাদীছ শরীফ-এ এসেছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে চারজন বিশেষ খলীফা হবেন। উনারা হচ্ছেন হযরত ক্বায়িম আলাইহিস সালাম, হযরত সাফফাহ আলাইহিস সালাম, হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম এবং হযরত মাহদী আলাইহিস সালাম।” (জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি’ ইবনে আসাকির, তারীখুল খুলাফা লিস সুয়ূতী ২০৯ পৃষ্ঠা ইত্যাদি)
হাদীছ শরীফ-এ ব্যক্ত এই চার জন বিশেষ খলীফা উনারা হচ্ছেন- হযরত ক্বায়িম আলাইহিস সালাম তথা ত্রয়োদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম। বর্তমানে হযরত সাফফাহ আলাইহিস সালাম তথা সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ, মুজাদ্দিদ সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, আস সাফফাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম।
আর হযরত মানছুর আলাইহিস সালাম হলেন খলীফাতুল উমাম, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী আল মানছুর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম।
বলার অপেক্ষা রাখেনা, ৯ই রমাদ্বান শরীফ আমাদের জন্য হাক্বীক্বী সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম। মূলতঃ তদাপেক্ষাও বেশি। কারণ এই ঈদ যথাযথ পালন করতে পারলেই ঈদে আ’যম পালনের কুওওয়াত নছীব হবে। সুতরাং মূলের গুরুত্ব অনিবার্যকারণেই অনুধাবন করতে হবে।
সঙ্গতকারণেই ইহার পরিসর কেবল রাজারবাগ শরীফ অথবা রাজারবাগ শরীফ-এর সিলসিলাভুক্ত পরিম-লেই পরিশেষ হবার জন্য নয়।
বরং অনিবার্য কারণেই তথা নিজস্ব প্রয়োজনেই পৃথিবীর প্রত্যেককেই খলীফাতুল উমাম, মুজাদ্দিদে আ’যম-এ ছানী উনার প্রসঙ্গে প্রজ্ঞাপূর্ণ ইলম পরিপূর্ণভাবে অর্জন করতে হবে।
গোটা বিশ্বপরিসরেই এর পর্যালোচনা করতে হবে। গোটা বিশ্বব্যাপীই এ সুমহান বিলাদত শরীফ ব্যাপক শান-শওকত ও জওক-শওক তথা যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্য এবং সর্বশেষ প্রচেষ্টার প্রতিফলন ঘটিয়ে পালন করতে হবে। এবং দিন দিন উত্তরোত্তর এর ব্যাপকতা বিস্তর বিস্তার ঘটাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
মূলতঃ এটার উপরই নির্ভর করবে ভক্ত মুরীদণ্ডমুতাকিদ, আশিকীন-মুহিব্বীন বিশেষতঃ আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত তথা আন্তর্জাতিক আল বাইয়্যিনাত-এর মূল্যায়ন অথবা অর্জিত সফলতা বা ব্যর্থতা।
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন মহান তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউছুল আ’যম, দস্তগীর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার লখতে জিগার মুজাদ্দিদে আ’যম-এ ছানী, খলীফাতুল উমাম আমাদের প্রাণের আক্বা মামদূহ হযরত শাহযাদা ক্বিবলাজান আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উছীলায় সেটা খুলুছিয়াতের সাথে করার তাওফিক দান করুন। (আমীন)
-মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান
প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩৪
চাঁদ দেখা এবং নতুন চন্দ্রতারিখ শুরু নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা- ১