সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।
কুরআন শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “আমি যমীনে খলীফা প্রেরণ করব। ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা আরজি জানান, আপনি কী এমন এক সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যারা মারামারি করবে, কাটাকাটি করবে? মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করলেন, নিশ্চয়ই আমি যা জানি তোমরা তা জান না।” ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণের সে আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণিত করে যুগে যুগে আবির্ভুত হয়েছেন এক লাখ চব্বিশ হাজার বা দু’লাখ চব্বিশ হাজার নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম। সর্বোপরি যাকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হতনা সে মহান অজুদ মুবারক, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং বর্তমান যামানায় উনার সম্মানিত আহলে বাইত শরীফগণ।
সঙ্গতকারণেই উনাদের মা’রিফাত হাছিল, মুহব্বত অর্জন, তা’যীম-তাকরীম প্রদর্শনে উম্মতের অন্তঃহীন প্রচেষ্টা থাকা উচিৎ।
প্রসঙ্গত: আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ ফরমান- মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দশন সম্বলিত দিবসসমূহকে স্মরণ করিয়ে দিন সমস্ত কায়িনাতকে। নিশ্চয়ই এর মধ্যে ধৈর্যশীল ও শোকরগোজার বান্দা-বান্দীগণের জন্য ইবরত ও নছীহত রয়েছে। (সূরা ইবরাহীম : আয়াত শরীফ ৫)
মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ সূরা মারইয়াম-এর ১৫ নম্বর আয়াত পাক-এ হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার শানে ইরশাদ ফরমান- “উনার প্রতি শান্তি সালাম অবারিত ধারায় বর্ষিত হোক যেদিন তিনি দুনিয়ায় আগমন করেন অর্থাৎ বিলাদত শরীফ লাভ করেন ও যেদিন তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেন আবার যেদিন তিনি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ করেন, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (উম্মতগণকে) বলুন, আমি তোমাদের নিকট নুবুওওয়াতের দায়িত্ব পালনের কোন প্রতিদান চাই না। তবে আমার নিকটজন তথা হযরত আহলে বাইত শরীফ উনাদের প্রতি সদাচরণ করবে।” (সূরা শূরা: আয়াত শরীফ ২৩)
এসব আয়াত শরীফ থেকে প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানসহ কায়িনাতের সকলের জন্যই উপলব্ধি করা জরুরী যে, হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ই উম্মতের তথা কায়িনাতের জন্য বেমেছাল ফযীলত, ইতমিনান, রহমত এবং নিয়ামত হাছিলের কারণ।
প্রসঙ্গত: ১৯শে শাওওয়াল শরীফ ১৪১০ হিজরী সালের এই দিনে রাজারবাগ শরীফ-এর সুন্নতী জামে মসজিদে, অগণিত আউলিয়া কিরাম, ইমাম-মুজতাহিদ, নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক উপস্থিতিতে বিশেষত স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল বরকতপূর্ণ রুহানী তাশরীফে যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, আওলাদে রসূল, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার আজিমুশ শ্বান নিক্বাহ মুবারক বেমেছাল মান-মর্যাদা, শান-শওকত ও ভাষাহীন জওক-শওকের সাথে সম্পন্ন হয়। মূলত: জাহিরীভাবে এ নিক্বাহিল আযীম অনুষ্ঠিত হওয়ার অনেক পূর্বেই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুহানীভাবে এই নিক্বাহিল আযীম স্বয়ং তিনি নিজে পড়িয়ে দিয়েছিলেন। যেমনটি উনার জীবন মুবারক-এই হয়েছিল। উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম, উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম সহ অন্যান্য উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনাদের মুবারক নিক্বাহর আগেই ওহী সদৃশ স্বপ্নসহ মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণের আগমন ও বর্ণনাসহ অনেক মুবারক ঘটনার অবতারণা হয়েছিল।
অপরদিকে কায়িম-মাক্বামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার ক্ষেত্রেও ঘটেছিল বেশ কিছু বেমেছাল ফযীলতপূর্ণ ঘটনা।
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ইমামুছ ছিদ্দীক্বাত, বাহরুল উলূম, নূরে মদীনা, গুলে মুবীনা, উম্মুল খইর, আফদ্বালুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, ত্বাহিরাতুন নিসা, হামীদাতুন নিসা, মাজীদাতুন নিসা, রাহনুমায়ে দ্বীন, আত্বায়ে রসূল, ওলীয়ে মাদারজাদ, ছিদ্দীক্বায়ে কুবরা, ছাহিবাতুল ইলম ওয়াল হিকাম, মিছদাক্বে কুরআন ওয়াল হাদীছ, ক্বায়িম মাক্বামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন, আওলাদে রসূল, হাবীবাতুল্লাহ, হাদীয়ে যামান, মাহবুবায়ে ইলাহী, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক তখন অনূর্ধ্ব চার বছর। তিনি উনার সম্মানিত পিতা উনার সন্নিকটে বসা রয়েছেন। এমন সময় উনার সম্মানিত পিতার এক শ্রদ্ধাভাজন বুযূর্গ তিনি কোন এক প্রয়োজনে সেখানে উপস্থিত হলেন।
সালাম বিনিময়ের পর আগন্তুক বুযুর্গ বললেন: “হে মাওলানা রুকনুদ্দীন ছাহিব! আপনার এ কন্যা সন্তান খালিছ ওলীআল্লাহ হবেন। তিনি হবেন একজন বেমেছাল মর্যাদাসম্পন্না ওলীআল্লাহ। তিনি হবেন মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার ছাহিবাতুল মুকাররমা। অন্য কারো সঙ্গেই উনার নিকাহ মুবারক সংঘটিত হবে না। উনার নেক আল-আওলাদ উনারা সকলেই হবেন লক্ষ্যস্থল খালিছ ওলীআল্লাহ। বিশেষত তিনি হবেন বেমেছাল ওলীআল্লাহ উনার বুযুর্গ পুত্র পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার ক্বায়িম-মাক্বাম, ছানিয়ে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আম্মাজান।” অতঃপর বুযুর্গ ব্যক্তি আরো বললেন: “এমন মুবারক কন্যা সন্তান উনার পিতা হয়ে আপনি তুলনাহীন সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হয়েছেন।” মূলত মানুষের ছূরতে আগন্তুক দু’ব্যক্তি ছিলেন ফেরেশতা। সুবহানাল্লাহ!
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কুরআন শরীফ-এ সূরা বাক্বারায় প্রথমেই আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই ঈমানদারগণ অদৃশ্যের উপর বিশ্বাস করেন।
মূলত : যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, কায়িম-মাক্বামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাদের সংশ্লিষ্ট মুবারক বিষয়সমূহের ফযীলত যতটা না দৃশ্যমান তার চেয়ে লক্ষ-কোটিগুণ বেশি অদৃশ্যমান। কাজেই মু’মিন মাত্রই উচিৎ যে অদৃশ্যমান মর্যাদা-মর্তবা সম্পর্কে ইলম হাছিল করা এবং তদসংশ্লিষ্ট বেমেছাল ফযীলত, রহমত, বরকত তথা ফায়দা হাছিলে নিবেদিত হওয়া।
মূলতঃ এসব দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ।
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ছোহবত মুবারক লাভেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)
-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০