মূলতঃ যুগে যুগে মিথ্যাবাদী আর মুনাফিকরাই হক্বের বিরোধিতা করেছে, হক্বের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। তাই মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ মুনাফিকদেরকে ‘কায্যাব’ বা মিথ্যাবাদী বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন- পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, æআল্লাহ পাক সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরাই মিথ্যাবাদী।” (সূরা মুনাফিকুন-১)
উক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, যারা মুনাফিক তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। আবার যারা মিথ্যাবাদী তারাই মুনাফিক। কেননা হাদীছ শরীফ-এ মুনাফিকের যে আলামত বা লক্ষণ উল্লেখ করা হয়েছে তন্মধ্যে একটি হলো মিথ্যা কথা বলা।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উনার যারা বিরোধিতাকারী তারা উক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এরই পূর্ণ মিছদাক। অর্থাৎ তারা একই সাথে মুনাফিক ও কাট্টা মিথ্যাবাদী। তাই তারা মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্যে স্মরণিকা- বার্ষিকী, পত্র-পত্রিকা ও বক্তৃতার মাধ্যমে মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়। যেমন, যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সুলূলের বংশধর ও দাজ্জালে কায্যাব, খারিজীপন্থী ওহাবীদের আরেকটি মিথ্যা অপপ্রচার হচ্ছে,
(২০)
জমহুরে উম্মতের খিলাফ
ফতওয়া প্রদান সম্পর্কে
কায্যাবুদ্দীন সর্বশেষে তার জিহালতীর সবটুকু উদ্গীরণ করে দিয়ে তার কলঙ্কিত ও গুমরাহীমূলক রেসালা æভ্রান্ত মতবাদে” লিখেছে, æউল্লেখ্য রাজারবাগের পীর মুজতাহিদ হিসেবে জমহুরে উম্মতের খিলাফ অনেক মাসায়েলও উদ্ভাবন করেছেন। যেমন (১) চার কল্লী টুপি পরিধান করা খাছ সুন্নত (২) মুসলমানদের উপর চরম ধরনের বিপদাপদ আসলে ফজরের নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করা জায়িয নয়, এরূপ কুনূতে নাযিল পাঠ করা হলে নামায ফাসেদ হয়ে যায় (৩) নামের শুরুতে বহু খেতাব ব্যবহার করা সুন্নত। (৪) ১২ রবিউল আউয়াল মুসলমানদের জন্য বড় ঈদ ইত্যাদি।”
মিথ্যাচারিতার খণ্ডনমূনলক জবাব
আশাদ্দুদ দরজার জাহিল কায্যাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রথমেই মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি এজন্য যে, কায্যাবুদ্দীন অনিচ্ছাসত্ত্বে হলেও রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীকে ‘মুজতাহিদ’ হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছে। যদিও তার এ স্বীকার করে নেয়া বা অস্বীকার করাতে আমাদের কিছুই যায় আসে না। আরো শুকরিয়া জানাই এজন্য যে, কায্যাবুদ্দীন নিজেই প্রমাণ করলো যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী কর্তৃক ইজতিহাদকৃত উল্লিখিত মাসয়ালা চারটি সঠিক। কারণ, সে উক্ত মাসয়ালা ৪টি উল্লেখ করার দুঃসাহস তার হয়নি। সে ভাল করেই জানে যে, উল্লিখিত মাসয়ালাগুলো খ-ন করার মত যোগ্যতা কায্যাবুদ্দীন তো দূরের কথা, পৃথিবীর কোন আলিমেরই নেই। তাই সে এক্ষেত্রে শুধুমাত্র æজমহুরে উম্মতের খিলাফ” বলেই ক্ষান্ত হয়েছে।
মূলতঃ æজমহুরে উম্মত” কথাটি উল্লেখ করা কায্যাবুদ্দীনের একটি জঘন্য ধরনের প্রতারণা মাত্র। কারণ æজমহুরে উম্মত” দ্বারা সে কাদেরকে বুঝাতে চেয়েছে তা স্পষ্ট নয়। কায্যাবুদ্দীন যদি æজমহুরে উম্মত” দ্বারা দেওবন্দীদেরকে বুঝিয়ে থাকে, তবে তার কথাটি ঠিকই রয়েছে। কারণ দেওবন্দীরা পাঁচ কল্লি আর কিস্তি টুপিকেই সুন্নত বলে থাকে। দেওবন্দীরা কুনূতে নাযিলা পাঠ করে থাকে এবং পাঠ করাকে জায়িয বলে। দেওবন্দীরা নামের পূর্বে লক্বব ব্যবহার করাকে নাজায়িয বলে থাকে, আর ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার হাবীব-এর আগমনের দিনকে বড় ঈদ মানা তো দূরের কথা, ঈদই মানে না বরং এটাকে বিদয়াত বলে ফতওয়া দেয়। অথচ তাদের উল্লিখিত প্রতিটি আমল ও বক্তব্যই কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ। সুতরাং রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উনার ইজতিহাদকৃত উল্লিখিত মাসয়ালাগুলো কায্যাবুদ্দীনের কথিত জমহুরে উম্মত বা দেওবন্দীদের খিলাফ হওয়াই স্বাভাবিক।
আর যদি কায্যাবুদ্দীন æজমহুরে উম্মত” দ্বারা পূর্ববর্তী অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদগণের কথা বুঝিয়ে থাকে, তবে এতে কোন সন্দেহ নেই যে, কায্যাবুদ্দীনেন উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণই ভুল। কারণ কায্যাবুদ্দীন কেন দেওবন্দীরা সকলে মিলেও যদি ক্বিয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করে তবু এরূপ একটি দলীলও পেশ করতে পারবে না যে, জমহুরে উম্মত বা পূর্ববর্তী ইমাম-মুজতাহিদগণ উল্লিখিত মাসয়ালার খিলাফ মত পেশ করেছেন। কেননা উল্লিখিত প্রতিটি মাসয়ালা-মাসায়িলের পেছনেই কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও ক্বিয়াসের বহু দলীল রয়েছে। জমহুরে উম্মত বা অনুসরণীয় ইমাম- মুজতাহিদগণের পক্ষে কস্মিনকালেও কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ মত পেশ করা সম্ভব নয়।
স্মর্তব্য যে, এখানে উল্লিখিত মাসায়িলগুলোর বিশদ বা দলীলভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনার কোনই প্রয়োজন নেই। কারণ উল্লিখিত প্রতিটি মাসায়িলের দলীলভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা মাসিক আল বাইয়্যিনাতে রয়েছে। এখানে শুধু এতটুকু বলতে চাই যে, কায্যাবুদ্দীনের ইল্মের যদি এতই জোর থেকে থাকে তবে উল্লিখিত মাসায়িলগুলোর দলীলভিত্তিক খ-নমূলক আলোচনায় সে আসলোনা কেন? উল্লিখিত মাসায়িলগুলো যে, জমহুর উম্মতের খিলাফ তার দলীল পেশ করলো না কেন? উল্লিখিত মাসায়িলের বিপরীতে জমহুরে উম্মতের যে মত সেটা উল্লেখ করলো না কেন? এর দ্বারা কি এটাই প্রমাণিত হয় না যে, কায্যাবুদ্দীন মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেছে।
মূলতঃ উল্লিখিত চারটি মাসায়িলের ক্ষেত্রে কেন বরং মাসিক আল বাইয়্যিনাতে এ পর্যন্ত যত ফতওয়া ও মাসয়ালাই প্রকাশ করা হয়েছে তার একটিও কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ নয়। বরং প্রতিটিই কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও ক্বিয়াসসম্মত। কায্যাবুদ্দীনের প্রতি চ্যালেঞ্জ রইল যদি তার ইল্মের এতই জোর থাকে তবে যেন সে প্রকাশ্য বাহাছে অবতীর্ণ হয়ে দলীলের দ্বারা তা ভুল প্রমাণ করে দেয়। আর যদি বাহাছে বসার সৎ সাহস তার না থাকে তবে যেন সে লিখিতভাবে দলীল দ্বারা তা ভুল প্রমাণ করে দেয়। নচেৎ প্রমাণিত হবে যে, কায্যাবুদ্দীন আসলেই জাহিল, গুমরাহ, প্রতারক ও ভ-।
-মুফতী মুহম্মদ ইবনে ইসহাক, বাসাবো, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩৪
চাঁদ দেখা এবং নতুন চন্দ্রতারিখ শুরু নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা- ১
কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮
কট্টর কমুনিস্ট মাওসেতুং এর নতুন ভাবশিষ্য ফুলতলীর লংমার্চ এবং তার শরয়ী পর্যালোচনা ও প্রসঙ্গ কথা