লাওনুহূ মালীহ, ওয়াজহুহূ ছবীহ, লিসানুহূ ফাসীহ, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাহারাদানকারী তথা হাররাস ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং পাহারার হুকুম

সংখ্যা: ১৮৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

ইসলামের প্রথম দিকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাহারা দিতেন। যখন

والله يعصمك من الناس.

অর্থাৎ “আল্লাহ পাক আপনাকে মানুষের অনিষ্টতা থেকে হিফাযত করেছেন।” (সূরাতুল মায়িদাহ-৬৭)

এই আয়াত শরীফ নাযিল হয়। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুজরা শরীফ-এর জানালা দিয়ে মাথা মুবারক বের করে ইরশাদ করলেন, আজ থেকে আমাকে আর পাহারা দিতে হবে না। সুবহানাল্লাহ! এ সময়টি ছিল ৮ম হিজরীর হুনাইনের রাত্রি।

মূলতঃ এ হুকুম শুধু তাঁরই জন্য খাছ ছিল। এরপরও বরকত লাভের জন্য ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ আগের মতই পাহারা দিয়েছিলেন। তাই, কিয়ামত পর্যন্ত এই পাহারার বিধান উম্মতের জন্য সুন্নত হিসেবে বলবৎ থাকবে। যে সকল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম বিভিন্ন সময় জিহাদে সফরে হাদ্বারে পাহারা দিয়েছিলেন, নিম্নে তাঁদের একটি তালিকা দেয়া হল:-

১। হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। যিনি বদর যুদ্ধের রাতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাহারা দিয়েছিলেন। তিনি তাঁবুর দরজায় তরবারী মাথায় রেখে পাহারারত ছিলেন।

২। হযরত সা’দ ইবনে মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনিও বদর যুদ্ধের সময় পাহারা দিয়েছিলেন।

৩। হযরত আবূ ক্বাতাদাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুও বদরের রাতে পাহারা দিয়েছিলেন।

৪। হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উহুদের জিহাদের সময় পাহারা দিয়েছিলেন।

৫। হযরত যুবাইর ইবনে আওয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু খন্দকের জিহাদের দিন পাহারা দিয়েছিলেন।

৬। হযরত মুগীরাহ ইবনে শু’বাহ রদ্বিয়াল্লহু তায়ালা আনহু। যিনি হুদাইবিয়াহ সন্ধির সময় পাহারা দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় তিনি তাঁর মাথায় করে তরবারী নিয়েছিলেন।

৭। হযরত আবূ আইয়ূব আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু খাইবার যাওয়ার পথে ও ময়দানে পাহারা দিয়েছিলেন।

৮। হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ‘ওয়াদিউল কুরা’ যুদ্ধের সময় পাহারায় রত ছিলেন।

৯। হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু। তিনিও ‘ওয়াদিউল কুরা’ যুদ্ধে পাহারায় ছিলেন।

১০। হযরত যাকওয়ান ইবনে আবদে কাইস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনি ‘ওয়াদিউল কুরা’ ও ‘খাইবারের রাতে পাহারায় ছিলেন।

১১।  হযরত মারছাদ ইবনে আবূ মারছাদ গানাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হুনাইন-এর যুদ্ধে পাহারায় ছিলেন। আর সেই রাতেই   والله يعصمك من الناس.

আয়াত শরীফ খানা নাযিল হয়। সুবহানাল্লাহ!

১২। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুও বিভিন্ন সময় পাহারা দিয়েছিলেন।

১৩।  হযরত আব্বাদ ইবনে বিশ্র রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুও পাহারা দিয়েছিলেন।

 যে সকল ছাহাবী আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাহারা দিয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি তিনি অত্যন্ত খুশি ছিলেন এমনকি তাদের জন্য দোয়াও করেছেন। যেমন- হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত আছে

وروى الطبرانى قى الصغير حدثنا عبدة بنت عبد الرحمن بن مصعب عن ابيه ثابت عن ابيه عبد الله عن ابيه عن ابى قتادة رضى الله تعالى عنه: انه حرس رسول الله صلى الله عليه وسلم ليلة بدر فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اللهم احفظ ابا قتادة كما حفظ نبيك هذه الليلة.

অর্থ: “হযরত ইমাম ত্ববারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তার ‘আলজামিউছ ছগীর’ কিতাবে বর্ণনা করেছেন।

আমাদের কাছে হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন, হযরত আব্দাহ বিনতে আব্দুর রহমান ইবনে মুছয়াব রহমতুল্লাহি আলাইহা তাঁর পিতা- হযরত ছাবিত রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি তাঁর পিতা হযরত আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি হযরত আবূ ক্বতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে। নিশ্চয়ই হযরত আবূ ক্বতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বদরের রাতে পাহারা দিচ্ছিলেন। তখন হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উদ্দেশ্যে দোয়া করে বললেন: আয় আল্লাহ পাক! আপনি আবূ ক্বাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে হিফাযত করুন। যেমনিভাবে এ রাতে আপনি আপনার নবীকে হিফাযত করেছেন।” (সুবুলুল হুদা ওর্য়ারাশাদ ফী সীরাতি খাইরিল ইবাদ-১১খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৭)

উল্লেখিত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয়: যদিও আল্লাহ পাক পাহারার বিষয়টিকে রুখছত দিয়েছেন, তারপরেও বরকতের জন্য হযরত ছাহাবা কিরামগণ পাহারা দিয়েছিলেন।

আর আমভাবে উম্মতের জন্য এ পাহারার বিধান সুন্নত হিসেবে ক্বিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। কেননা শরীয়তে পাহারাকে হারাম করা হয়নি; বরং রুখছত বা ইচ্ছাধীন করা হয়েছে।

অতএব, ছাত্র শিক্ষককে, মুরীদ তার মুর্শিদকে এবং প্রজা তাদের ইমাম বা খলীফাকে পাহারা দেয়া সুন্নত হিসেবে সাব্যস্ত হলো।

(দলীলসমূহ: তাফসীরে ত্ববারী, তাফসীরে খাযিন, তাফসীরে বাগবী, তাফসীরে মাদারিক, তাফসীরে মাযহারী, তাফসীরে কুরতুবী, বুখারী শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ত্ববারানী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আস্ সীরাতুল হালাবিয়াহ ফী সীরাতিল আমীনিল মা’মূন ৩য় খণ্ড ৪২৪ পৃষ্ঠা, সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ ফী সীরাতি খাইরিল ইবাদ লিছ ছালিহী শামী ১১ খণ্ড ৩৯৭ পৃষ্ঠা, মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল, শরহুল আল্লামাতিয্ যারকানী আলাল মাওয়াহিবিল লাদুন্নিয়াহ ৪র্থ খণ্ড ৫০৬ পৃষ্ঠা, ইবনে আসাকির, ইবনে হিশাম ইত্যাদি।)

-মাওলানা সাইয়্যিদ শরীফ আহমদ

-:দৈনিক আল ইহসানের বিশেষ ব্যানার হেডিং তথা তাজদীদের ধারাবাহিকতায় মুজাদ্দিদে আ’যমের মুবারক সংযোজন:- ইসলাম- বিধর্মীদের ধর্ম পালনে কোন বাধা দেয় না। কারণ, প্রত্যেকেই তার নিজ ধর্ম পালনে স্বাধীন। ইসলাম- মুসলমানদের জন্যও বিধর্মীদের কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনুমোদন করে না। পাশাপাশি মুসলমানদেরকে বিধর্মীদের অনুষ্ঠানে যেতে বিধর্মী কর্তৃক উৎসাহিত করাটাও শরীয়তসম্মত নয়। কেননা, মুসলমানরা বিধর্মীদেরকে ইসলাম পালনে বাধ্য করে না।

সাইয়্যিদুল আম্বিয়া, ইমামুল আতক্বিয়া, হাদিউল আওলিয়া, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ উপলক্ষে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন প্রসঙ্গে

মিছবাহুদ্ দুজা, মিফতাহুদ্ দারা, খইরুল ওয়ারা, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্রতম দেহ মুবারক, ঘাম মুবারক ও থুথু মুবারক-এর সৌরভের কাছে যত রকমের খুশবু আছে সবই ম্লান হয়ে যায়

আকমালুল মাওজূদাত, আজমালুল মাখলূক্বাত, আল্মুওয়াইইয়াদু বিওয়াদ্বিহিল বাইয়্যিনাত, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বৈশিষ্ট্য থেকেই সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাম ও আওলিয়ায়ে কিরামগণ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়েছেন

আখলাকুহূ হামীদাহ, আফয়ালুহূ জামীলাহ, আলত্বাফুহূ কারীমাহ, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সদাচরণ হযরত উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাগণের সাথে