শুধু বাসে গণসম্ভ্রমহরণের বিষয় দেখলেই হবেনা, ভাবতে হবে গণমানসে গণসম্ভ্রমহরণের গণঅন্তর্ভুক্তির সব বিষয়ও।

সংখ্যা: ২২১তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

প্রতিবেশী দেশটিতে তোলপাড় হচ্ছে। একের পর এক তুলকালাম প্রতিবাদী কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন। পার্লামেন্টে হয়েছে উত্তপ্ত বিতর্ক। দিল্লির রাজপথে হয়েছে উত্তাল জনতার উন্মত্ত প্রতিবাদ। পুলিশকে ব্যবহার করতে হয়েছে কাঁদানে গ্যাস, পানিকামান। সব কিছুর মূলে হচ্ছে দিল্লির এক চলন্ত বাসে এক তরুণীর উপর গণসম্ভ্রমহরণের ঘটনা।

জানা গেছে, গত ২৩ ডিসেম্বর ২০১২ ঈসায়ী তারিখ রোববার রাতে দিল্লির বসন্ত বিহার এলাকায় একটি হোয়াইট লাইন বাসে ২৩ বছরের এক মেডিকেল পরুয়া তরুণীর সম্ভ্রমহরণ করে পাঁচ যুবক। তারপর ধর্ষিতা ও তার পুরুষ বন্ধুকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় একটি ওভারব্রিজের উপর ফেলে দেয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে ভর্তি ওই তরুণী। সে দক্ষিণ দিল্লির পালম এলাকার বাসিন্দা।

ধর্ষিতার এক আত্মীয়ের কথা অনুযায়ী, গত ২৩ ডিসেম্বর ২০১২ ঈসায়ী তারিখ রোববার রাত ১১টা নাগাদ ওই তরুণী ও তার পুরুষ বন্ধু দক্ষিণ দিল্লির মুনিরকা একটি হোয়াইট লাইন বাসে উঠে। তারা বাসে ওঠার ১০ মিনিটের মাথায় পাঁচজন যুবক তরুণীকে নানাভাবে উত্যক্ত করতে শুরু করে। পুরষ বন্ধুটি বাধা দিলে তাকে মারধর করতে শুরু করে দুষ্কৃতিরা। ধর্ষিতার আত্মীয় জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা একটি লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে যুবকটিকে। তারপর চলন্ত বাসের মধ্যেই তরুণীকে জোর করে বাসের কেবিনে টেনে নিয়ে গিয়ে সেখানেই পাঁচজনে মিলে সম্ভ্রমহরণ করে তাকে। দুষ্কর্মের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য দুজনেরই শরীর থেকে বেশির ভাগ জামাকাপড় খুলে নিয়ে দক্ষিণ দিল্লির মহিপালপুর ওভারব্রিজের উপর ছুঁড়ে ফেলে দেয় দুষ্কৃতীরা।

এ ঘটনায় নারী অধিকারবিষয়ক সংস্থাগুলো প্রতিবাদে রাজপথ উত্তপ্ত করে তুলেছে। মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ খুলেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।

পরিস্থিতি দেখে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী নাখোশ। সে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল সিন্ধে ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতকে কড়া ভাষায় চিঠি লিখেছে। তাতে এ ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছে। বলেছে, এ বিষয়ে ত্বরিৎ পদক্ষেপ নিতে। ওদিকে অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক ওমেন্স এসোসিয়েশন নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভ করেছে। প্রতিবাদ হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরে ও বহুল আলোচিত যন্তরমন্তরে।

সোনিয়া গান্ধীর চিঠি পেয়ে গতকালই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল সিন্ধে ও দিল্লির পুলিশ কমিশনার নীরাজ কুমার বৈঠক করেছে। তারা বৈঠকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- সব বাস থেকে রঙিন গ্লাস সরিয়ে ফেলা হবে। পর্দাও সরিয়ে ফেলা হবে। সব বাসে এখন থেকে চালকদের মোবাইল ফোন নম্বর ও লাইসেন্স নম্বর মোটা হরফে লেখা থাকবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এহেন সিদ্ধান্তেই খুশি হবার কোনো কারণ নেই। কারণ দিল্লিতে চলন্ত বাসে এক যুবতীকে গণসম্ভ্রমহরণের পর ভারতে যখন ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে ঠিক তখনই প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছে উত্তর প্রদেশে। সেখানে মাও জেলায় একটি বাসস্ট্যান্ডে ৩৮ বছর বয়সী এক নারীর সম্ভ্রমহরণ করেছে তিন নরপিশাচ। মিডিয়ায় লেখালেখির কারণে দিল্লির ঘটনায় পুলিশ ত্বরিৎ পদক্ষেপ নিলেও উত্তর প্রদেশের ঘটনায় পুলিশ সম্ভ্রমহরণের মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। উল্টো তারা একটি যৌন নির্যাতন, নারী টিজিং ও চুরির অভিযোগ নিবন্ধিত করেছে।

দেখা যাচ্ছে, গণসম্ভ্রম লুটেরারা শুধু দিল্লিতে নয়, রয়েছে মাও প্রদেশেও। মূলত: প্রতিবেশী দেশটির সব প্রদেশেই। তাই এর মর্মমূলে ভাবতে হবে। শুধু আইন করে, ব্যবস্থা নিয়ে সাময়িক প্রতিকার পাওয়া যায়। কিন্তু যেখানে আইনের ফোকর থাকে অথবা ভিকটিম দুর্বল অবস্থায় থাকে অথবা মিডিয়ার সরব পদচারণা না থাকে সেখানে গণসম্ভ্রম লুটেরারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। ‘মাও’ প্রদেশে গণসম্ভ্রম লুটেরাদের বহাল-তবিয়ত তারই প্রমাণ।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, প্রতিবেশী দেশটির সংস্কৃতি চর্চার মধ্যেই রয়েছে মারাত্মক গলদ। কারণ তাদের সিনেমা-মুভি-নাট্যকলা তথা গোটা সংস্কৃতি চর্চাই মারাত্মক অশ্লীলতার উপর ভিত্তি করে চলছে। ওই দেশটিতে কত হাজার যে নায়ক-নায়িকা? তার কোন ইয়ত্তা নেই। এসবের কারণ হচ্ছে প্রতিবেশী দেশটি রাষ্ট্রীয়ভাবেই এই অশ্লীল সংস্কৃতির ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করে এবং এই অশ্লীলতা নির্ভর চলচ্চিত্র তারা সউদী আরব, কাতার, দুবাই, কুয়েত, আরব-আমিরাত সহ খোদ পাকিস্তান এমনকী আমাদের বাংলাদেশেও রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা কামাই করে। অর্থাৎ প্রতিবেশী দেশটির অর্থনীতি দেহ-বাণিজ্য নির্ভর বললেও অত্যুক্তি হয়না। কিন্তু “পরের জন্য কুয়া খুঁড়লে তাতে নিজেরই পড়তে হয়।” প্রবাদ বাক্যের মতো অবস্থা হয়েছে প্রতিবেশী দেশটির। উন্নত দেশ, প্রযুক্তির ব্যবহার, নারী অধিকার বাস্তবায়নের দেশ ইত্যাদি দাবি করলেও চলন্ত বাসে পর্যন্ত নারীর সম্ভ্রমহরণের উদাহরণ তারা তৈরি করলো। এতে প্রতিভাত হয় আসলে প্রতিবেশী দেশটির গণমানসে, নারীর সম্ভ্রম লুণ্ঠনের প্রবৃত্তি ঢুকে পড়েছে। এটা হয়েছে মূলত তাদের অশ্লীল সংস্কৃতি চর্চার জন্যই।

বলাবাহুল্য, মানুষ স্পর্শকাতর জীব। সিনেমা, টিভি-মুভিতে মানুষ যে অশ্লীল সিনেমা দেখে তা তার মানসে গভীর প্রভাব ফেলে। মনস্তাত্ত্বিকভাবে সে দৃশ্যমান প্রতিটি নারী দেহকে ধর্ষণ করে। (নাঊযুবিল্লাহ) আর সুযোগ পেলেই নারীর উপর হামলে পড়ে। দিল্লির বাস ঘটনায় মূলত এরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এ থেকে উত্তরণ পেতে হলে মানুষের সৃষ্টিকর্তা খালিক্ব মালিক রব তায়ালা তিনি যে পর্দার হুকুম মুবারক করেছেন তা পালনের কোনো বিকল্প নেই। কেবলমাত্র পর্দা প্রথার প্রচলন ঘটলেই নারীর নিরাপত্তা বলয় রচিত হবে। নারী অধিকার নিশ্চিত হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশটির এই ন্যক্কারজনক ঘটনা হতে নছীহত লাভের অবকাশ রয়েছে আমাদের দেশেরও। কারণ আকাশ সংস্কৃতির নামে প্রতিবেশী দেশটির অশ্লীলতা ঢুকে পড়েছে আমাদের দেশেও। এতে প্রতিবেশী দেশটিতে যেমন হায়েনার চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে আমাদের দেশেও তার প্রতিফলন ঘটার যথেষ্ট বৈরী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কাজেই সময় থাকতেই সাবধান হতে হবে। প্রতিবেশী দেশটির আকাশ সংস্কৃতি এদেশে সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম-উনার দৃষ্টিতে হারাম টিভি-সিনেমা-ছবি এগুলো সঙ্গতকারণেই নির্মূল করতে হবে।

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে ছবি জায়িজকারী ধর্মব্যবসায়ী, রাজনীতিক, উলামায়ে ‘সূ’দের নির্বংশ করতে হবে। কেবলমাত্র তাহলেই গণসম্ভ্রমহরণের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবার কোনো সুযোগ থাকবেনা।

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে  পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত মুবারক তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ আশরাফুল মাহবূবে রব্বানী

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।