সংবিধান কি নিজেই সংবিধানবিরোধী এক বই? সংবিধানে অসাংবিধানিক কথাও অন্তর্ভুক্ত হয়? বিরোধীদল সবসময়ই সংবিধান অস্বীকার করে কেন? সংবিধানের পূর্ণতা কোন্ পথে?

সংখ্যা: ২৩০তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মুবারক খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম মুবারক।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের সপ্তম ভাগে নির্বাচন প্রসঙ্গে ১১৮(১) ধারায় বলা হয়েছে, “প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া এবং রাষ্ট্রপতি সময়ে সময়ে যেরূপ নির্দেশ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগদান করিবেন।”

১১৮(৪) ধারায় বলা হয়েছে, “নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হইবেন।”

নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীগণ সম্পর্কে ১২০ ধারায় বলা হয়েছে, “এই ভাগের অধীন নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালনের জন্য যেরূপ কর্মচারীর প্রয়োজন হইবে, নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করিলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনকে সেইরূপ কর্মচারী প্রদানের ব্যবস্থা করিবেন।”

উপরোক্ত ধারা মতে প্রতিভাত হয় যে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ। শুধু তাই নয়, এ নির্বাচন কমিশনের যা প্রয়োজন তা রাষ্ট্রীয়ভাবে মেটাতে হবে। যা কথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাংবিধানিক প্রতিবিম্ব।

প্রশ্ন জোরদার হয় যে, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন উঠে কেন? তাহলে এর সোজাসাপটা জবাব এই যে, সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন বলা হলেও আসলে ক্ষমতাসীন সরকার এ নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন থাকতে দেয় না। যদিও বর্তমান সরকারের ভূমিমন্ত্রী বলেছে যে, নির্বাচন কমিশন নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী। কিন্তু বিরোধীদল বলেছে, নির্বাচন কমিশন সরকারের হাতে পুতুল মাত্র।

বলাবাহুল্য, নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ক্ষমতাসীনদের সাফাই আর বিরোধীদলের অভিযোগের অভিজ্ঞতা বহু দিনের এবং যা তা সত্যই বটে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এন্তার। গত ১০ ডিসেম্বর ২০১৩ ঈসায়ী তারিখের পত্রিকায় হেডিং হয়েছে, “প্রশাসনে বদলি ও পদোন্নতি ॥ তফসিল ঘোষণার পরও সবকিছু হচ্ছে অনুমোদন না নিয়ে!”

খবরে বলা হয়েছে, “জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জনপ্রশাসনে ব্যাপক রদবদল ও পদোন্নতি চলছে। প্রতিদিনই উচ্চপদস্থ থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে পরিবর্তন আসছে। নির্বাচনকালীন সরকারের রুটিনওয়ার্ক করার কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ৮০০ কর্মকর্তার পদোন্নতি ও রদবদল করা হয়েছে। একটি মন্ত্রণালয়ে এক হাজার ৬৯৫ জনের পদোন্নতি দিয়ে বদলি করা হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতরে একই ঘটনা ঘটছে।

ইসি সূত্র জানায়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রশাসনে রদবদল ও ছুটির ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন নেয়ার বিধান রয়েছে। এ বিষয়টি জানিয়ে তফসিল ঘোষণার পর প্রশাসনে রদবদল না করার জন্য কমিশন থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়।”

কিন্তু এরপরেও নির্বাচন কমিশনকে বাদ দিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের ইচ্ছায়ই সব হচ্ছে। অর্থাৎ সংবিধানে লিপিবদ্ধ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন আদৌ প্রতিফলিত হচ্ছে না।

অপরদিকে সংবিধানের ৭(১) ধারায় বলা হয়েছে, “প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে।”

৭(২) ধারায় বলা হয়েছে, “জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য আইন যদি এই সংবিধানের সহিত অসামঞ্জস্য হয়, তাহা হইলে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইবে।”

উল্লেখ্য, চলমান রাজনৈতিক আন্দোলনে প্রতিভাত হয়, সংবিধানে বর্ণিত জনগণের পরম অভিপ্রায়রূপে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দেয়া হয়নি। হলে এরূপ রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতো না। অর্থাৎ প্রমাণিত হচ্ছে গণতন্ত্রের নামে সংবিধানে যা লিখিত হয় তা আসলে কার্যত পালিত হয় না। তাহলে বলা যায়- জনগণ সংবিধানের আইনের নামে প্রতারিত হয়।

অপরদিকে সংবিধানকে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন।’ কিন্তু বর্তমান বিরোধীদলীয় নেত্রী সে সর্বোচ্চ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে অস্বীকার করে চলছে। তার কথা ও যুক্তি এই যে, সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা ঠিক হয়নি। এতে নিরপেক্ষতা থাকবে না এবং তত্ত্বাবধায়ককে বাতিলকারী আওয়ামী লীগই তত্ত্বাবধায়ক আনার জন্য প্রায় ২০০ দিন হরতাল, আন্দোলন ইত্যাদি করেছিলো। বিরোধীদলীয় নেত্রীর অভিযোগ ক্ষমতাসীন সরকার তার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে এই অন্যায় ধারাটি অন্তর্ভুক্ত করেছে। দেখা যাচ্ছে, গণতন্ত্রই তাহলে গণতন্ত্রের কাছে নিরাপদ নয়। কারণ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে গণতন্ত্র দ্বারাই গণতন্ত্রকেও দাফন করা যায়। যেমন করেছিলো হিটলার।

বিরোধীদলীয় নেত্রীর কথায় আরো প্রতিভাত হয়, সংবিধানে অনেক সময় অসাংবিধানিক তথা অন্যায় কথাও অন্তর্ভুক্ত হয়। এ উপলব্ধি সব বিরোধী দলের। এ কথা আমাদেরও।

প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, এই ধারাবাহিকতায়ই সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ! যা এদেশের ৯৭ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান কারোরই অভিপ্রায় নয়।

অপরদিকে ক্ষমতাসীন নেত্রী বিরোধীদলীয় নেত্রীকে সংবিধান বিরোধী বলে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিতে পারছে না। বিরোধীদলের আন্দোলনকে সংবিধানবিরোধী বলে সবাইকে জেলে পুরতে পারছে না। তাহলে এ সংবিধানকে পুরোপুরিভাবে কার্যকর করা যাচ্ছে না। তাতে ক্ষমতাসীন সরকারের বৈধতাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

মূলত, সংবিধান রচনা ও প্রণয়নে রয়েছে গলদ। সংবিধানের নামে এ পর্যন্ত সংঘটিত সব বিশৃঙ্খলাই এর প্রমাণ। এর অবসান ঘটাতে হলে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে হবে এবং ৯৭ ভাগ মুসলমানের দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলামই হবে সংবিধানের মূল কথা। এটা যেমন সঙ্গত কথা, তেমনি এটাই মুক্তির একমাত্র পন্থা।

-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব।  খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-১১         

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১

 রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাক্বীক্বী নায়িব ও ওয়ারিছ। তাঁর বিরোধীতাকারীরা মুনাফিক, কাফির ও শয়তানের অনুসারী -১১     

 “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে সিনেমা”  নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’রা ॥ সর্বাঙ্গে দায়ী তারা 

অবশেষে তথাকথিত ইসলামী জামাতের আমীর নিজামী ও বায়তুল মোকাররামের তথাকথিত খতীব উবায়দুল হক, এরপর এবার মুফতে আমিনীও রাজারবাগ শরীফের তাজদীদ মানতে বাধ্য হলেন