সরকারের নির্বাহী বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য সরাসরি ও সক্রিয় পোশাকধারী বাহিনীর সদস্য পুলিশের এসি, র‌্যাবের এসিও যদি চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের অভিযোগে চাকরি হারাতে পারে তবে কেবলমাত্র ধোঁকাবাজির আশ্রয়ে নিবন্ধনপ্রাপ্ত জামাতীরা নিশ্চিত জঙ্গি কানেকটেড থাকার পরও ধৃত জঙ্গিদের ষাটভাগ জামাতী প্রডাক্ট প্রমাণিত হবার পরও ছলচাতুরির মাধ্যমে প্রাপ্ত শুধুমাত্র তথাকথিত নিবন্ধনের জন্য জঙ্গি অভিযোগ ও অভিহিতকরণ থেকে জামাতীরা পার পাবে কেন? বিপথগামী পুলিশ সদস্য তথা সরকারি চাকরিজীবীর যদি চাকরি যেতে পারে তবে জঙ্গি জামাতের সরকারি নিবন্ধন বাতিল হবে না কেন? গণতন্ত্রের তথাকথিত খোলসধারী জামাতকে জঙ্গি বলার জন্য আর কত জঙ্গিবাদের প্রসার ঘটতে দিতে হবে? জঙ্গি জামাতের জঙ্গিপনার বিচার কবে হবে?

সংখ্যা: ১৯০তম সংখ্যা | বিভাগ:

গত ১৭.০৮.৯ ঈসায়ী তারিখ ছিলো সিরিজ বোমা হামলার চতুর্থ বার্ষিকী। গত চার বছর আগে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের গুরুত্বপূর্ণ সাড়ে ৪শ’ স্পটে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিল জেএমবি। সেই থেকে জঙ্গি নিয়ে যত হৈ চৈ। আগস্ট এলেই জঙ্গি নিয়ে নানা শঙ্কা, উৎকণ্ঠা ভাবিয়ে তোলে সংশ্লিষ্টদের। গত চার বছরে জঙ্গিদের নির্মূল করা যায়নি। একদিকে যেমন জঙ্গি গ্রেফতার হচ্ছে, অন্যদিকে জেএমবি, হুজি ডালপালা মেলছে। সম্প্রতি গজিয়ে উঠেছে ইসলাম ও মুসলিম নামে নতুন জঙ্গি সংগঠন। এছাড়া ভারতীয় জঙ্গি ও লস্কর-ই তৈয়বা নেতাদের বিচরণও দেখা গেছে। খোদ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু সম্প্রতি রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, আমরা সবাই জঙ্গি নেটওয়ার্কের মধ্যে রয়েছি।

২০০৫ সালের ১৭ আগস্টের পর দেশজুড়ে শুরু হয় একের পর এক আত্মঘাতী জঙ্গি বোমা হামলা। বোমার ছোবলে দেশের বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাসহ ৩৩ জন প্রাণ হারান। আহত হন ৪ শতাধিক। বাংলাদেশ জঙ্গিকবলিত হয়ে পড়ায় সে ঘটনা আন্তর্জাতিক পরিম-লেও আলোচিত-সমালোচিত হয়। জঙ্গি গ্রেফতারে তৎপর হয়ে ওঠে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। একে একে জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলা ভাইসহ প্রায় ৯শ’ জঙ্গি নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়। শীর্ষ নেতাসহ এ পর্যন্ত ৬ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, ১৭ আগস্ট-পরবর্তী অভিযানে ৪৬১ জেএমবি নেতাকর্মী, হুজিসহ অন্যান্য সংগঠনের ৬৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৬৪টি গ্রেনেড, প্রায় তিন হাজার রাউন্ড গুলি ও বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হেলিপ্যাডে বোমা পুঁতে রাখার ঘটনা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নিজস্ব তদন্তের পর এর সঙ্গে জঙ্গিরা জড়িত বলে দাবি করলেও জোট সরকার তা আমলে নেয়নি। এমনকি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হেলিপ্যাডে বোমা পুঁতে রাখা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মুফতে হান্নানের সাজা মওকুফের জন্য জোট সরকারের গোপালগঞ্জ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী (পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী) অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিতভাবে সুপারিশ করেন!

এদিকে শীর্ষ জঙ্গিদের ফাঁসি হলেও আজো ধরা হয়নি তাদের মদদদাতা ও গডফাদারদের। রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে জঙ্গি সংগঠন সৃষ্টি ও লালনকারী সেই জামাত-শিবির এখনো বহাল তবিয়তেই আছে। বর্তমান সরকার দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলেও জঙ্গিদের গডফাদারদের ধরার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি গত ৬ মাসেও।

বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে ক্ষমতার ছত্রছায়ায় ব্যাপকভাবে উত্থান ও বিস্তৃতি ঘটে সশস্ত্র মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীর। প্রথমদিকে ভিন্ন নামে গোপনে জঙ্গি তৎপরতা চালালেও ২০০৪ সালের প্রথমার্ধে রাজশাহীর বাগমারায় জঙ্গিবাদী সংগঠন ‘জাগ্রত মুসলিম জনতা, বাংলাদেশ’ (জেএমজেবি) নামে প্রকাশ্য কর্মকা- শুরু করে শীর্ষ জঙ্গি সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই। আর ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে একযোগে বোমা হামলার মাধ্যমে প্রকাশ্য আত্মপ্রকাশ ঘটে ভয়ঙ্কর জঙ্গি সংগঠন ‘জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ’ (জেএমবি)-এর। পরবর্তিতে জানা যায় জেএমবি ও জেএমজেবি আসলে একই সংগঠন। অভিযোগ ওঠে মূলত স্বাধীনতা বিরোধী দল জামাতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরই এই জঙ্গিবাদী সংগঠন দু’টির স্রষ্টা। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার সুবাদে সরকার ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিশেষ নীলনকশার অংশ হিসেবেই গড়ে তোলা হয় এই জঙ্গি গোষ্ঠীকে।

বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে যেসব জঙ্গি ধরা পড়েছে তাদের মাধ্যমেই বেরিয়ে আসে জামাতের জঙ্গি সংশ্লি¬ষ্টতা। দেখা যায়, আটককৃতদের অধিকাংশই কোনো না কোনোভাবে জামাত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত। তবে বিএনপি কাজ করেছে জামাতের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সহায়ক শক্তি হিসেবে। যদিও বিএনপির কতিপয় মন্ত্রী ও সাংসদ সরাসরি সশস্ত্র জঙ্গিদের মদদ দিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

জামাত ও জঙ্গি একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ

মৌলবাদী দল জামাতে ইসলামী ও জঙ্গি সংগঠন জেএমবির মধ্যে আদর্শগত কোনো পার্থক্য নেই।

জামাতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকেও গড়ে তোলা হয়েছে একই আদর্শ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে। বিভিন্ন আত্মঘাতী হামলাসহ গ্রেনেড-বোমা হামলার ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর জঙ্গিদের সরল স্বীকারোক্তি ছিল জিহাদের অংশ হিসেবেই তারা এসব করেছে। একইভাবে জামাতের অঙ্গ সংগঠন শিবিরকেও ইসলামী শাসন কায়েম করতে কথিত জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়ে থাকে, যা তাদের বিভিন্ন প্রকাশনায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

১৯৯৭ সালে এক সমাবেশে জামাত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বলেছিলেন, ‘যারা আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ে, কতল ও ক্বিতাল করে, সংগ্রাম করে, জিহাদ করে তারা ঈমানদার। আর যারা আল্লাহর আইন মানে না, মানুষের তৈরি তন্ত্রমন্ত্র, বাদ-মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালায় তারা কাফের।’ তার বক্তৃতা ক্যাসেটবন্দী করে বাজারজাত করা হয় (ক্যাসেটসূত্র : আল্লাহর পথে জিহাদ)।

২০০৩ সালের ১৪ জুলাই জামাতী সংগঠন ‘ব্যাংকার্স কল্যাণ পরিষদ’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিজামীর উপস্থিতিতে ইসলামী ব্যাংকের অন্যতম কর্ণধার জামাত নেতা মীর কাসেম আলী বলেছিলেন, ‘দ্বীন কায়েমের জন্য সেনাবাহিনী ও দুর্গ লাগবে। শুধু দোয়া করে দ্বীন কায়েম করা গেলে আল্লাহর রাসুল বদর-ওহুদ-খন্দক যুদ্ধ করতেন না।’ তার এ বক্তব্য সুস্পষ্টভাবেই জামাত সদস্যদের সশস্ত্র সংগ্রাম তথা জঙ্গিবাদের পথে উস্কে দেয়ার শামিল।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, ‘দৈনিক আল ইহসান’-এ বহুবার বহু তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, ‘জঙ্গিদের ষাট ভাগই জামাতীতের প্রডাক্ট।’

বর্তমানে জামাতের জঙ্গি কানেকশনের বিষয়টি বহুল আলোচিত। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তদন্তকারী সংস্থাগুলোরও তা অজানা নয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জামা’আতুল মুজাহিদীন আসলে উগ্র সাম্প্রদায়িক দল জামাতে ইসলামীর ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা একটি জঙ্গি সংগঠন। জামাতের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি এদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে এ দেশে ইসলামী হুকুমত বা শাসন কায়েম করা। দেখা গেছে, বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ঘটনাচক্রে যেসব সশস্ত্র জঙ্গি ধরা পড়েছেÑ তাদের অধিকাংশই এক সময় জামাত-শিবিরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত ছিল। পরবর্তী সময়ে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার পর দলীয় কৌশলের অংশ হিসেবেই প্রকাশ্যে জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তারা। কিন্তু গোপনে জামাতের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অব্যাহত থাকে। কোনো সময় জঙ্গিরা ধরা পড়লে যাতে জামাতকে দায়ী করা না যায় সে লক্ষ্যেই এই কৌশল গ্রহণ করা হয়।

এছাড়া, অভিযানকালে জঙ্গি আস্তানা থেকে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই মওদুদী, গোলাম আযম, নিজামী ও সাঈদীর লেখা বইসহ জামাতী বইপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সিলেটে শায়খ রহমানকে গ্রেপ্তারের পর তার আস্তানা থেকেও জামাতের প্রকাশনার অসংখ্য বই উদ্ধার করা হয়েছে, যা পুলিশের জব্দের তালিকায় ছিল। এসব বই পড়েই জেএমবি জঙ্গিরা জিহাদের নামে বোমাবাজিতে উৎসাহিত হয়েছে।

বাংলা শয়তান ও শায়খ আব্দুস শয়তানের স্বীকারোক্তি:

মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত শীর্ষ জঙ্গি নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাই এবং জেএমবির তৎকালীন সামরিক কমান্ডার আতাউর রহমান সানি এক সময় জামাত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিল। জামাত রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছিলেন শায়খ আব্দুর রহমান ও বাংলাভাই দুজনেই।

গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদকালে শায়খ রহমান তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন, কামালখান হাট সিনিয়র মাদ্রাসায় পড়ার সময় তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তিতে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার জন্য মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সে সময় তিনি জামাতের মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট রাজধানীসহ দেশের ৬৩টি জেলার ৪১০টি স্পটে সিরিজ টাইম বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যারা গ্রেপ্তার হয়েছিল তাদের অনেকেই পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের কাছে নিজেদের জামাতের নেতাকর্মী, সমর্থক বলে পরিচয় দিয়েছে। এদের মধ্যে অনেককে বোমা হামলার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আবার সরকারি প্রভাবের কারণে অনেককে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিএনপি নেতারাও ছিলেন বিরুদ্ধে

জামাত নিজেদের জঙ্গি সংশ্লি¬ষ্টতা আড়ালের প্রাণান্ত চেষ্টা করলেও খোদ বিএনপিরই মুক্তিযুদ্ধের অংশ এই জঙ্গিবাদ লালনের বিষয়টিকে মেনে নিতে পারেননি। ঝুঁকি নিয়ে হলেও মুখ খুলেন তারা। তৎকালীন হুইপ ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জঙ্গিবাদের জন্য জামাতকে দায়ী করে বলেছিলেন, জামাত ও জঙ্গিবাদের আদর্শ এক ও অভিন্ন।

সে সময় বিএনপির আরেক সাংসদ আবু হেনাও মুখ খুলেছিলেন। বাংলা ভাইয়ের ঘাঁটি রাজশাহীর বাগমারা থেকে নির্বাচিত ওই সাংসদ জঙ্গিবাদ সৃষ্টি ও মদদদানের জন্য সরাসরি অভিযুক্ত করেছিলেন তার নিজ দল বিএনপি ও জোট শরিক জামাতকে। এ কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল।

তৎকালীন বিএনপির শীর্ষনেতা কর্নেল (অব.) অলি আহমদও (বর্তমানে এলডিপির নির্বাহী সভাপতি) সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন বিএনপি-জামাতের জঙ্গি কানেকশনের বিরুদ্ধে।

জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে জামাতীদের স্বীকারোক্তি!

যার জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে জামাত নেতারা বলেছেন একেক সময় একেক কথা। এর মধ্যে বাংলাভাইকে নিয়ে জামাতের আমির মতিউর নিজামীর একটি মন্তব্য ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ২০০৪ সালের এপ্রিল-মে মাসে রাজশাহী ও নওগাঁর তিনটি উপজেলায় বাংলাভাইয়ের নেতৃত্বে জঙ্গিরা সশস্ত্র তা-ব শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঐ বছর ২২ জুন জাতীয় সংসদে এক সংবাদ সম্মেলনে মতিউর রহমান নিজামী বলেছিলেন, ‘বাংলাভাই বলে কেউ নেই। এসব মিডিয়ার সৃষ্টি। কারণ আমরা জেনেছি রাজশাহীর বাগমারায় সর্বহারাদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে উঠেছে। মিডিয়ায় সর্বহারার নির্যাতনের কথা না বলে কোনো এক বাংলাভাইয়ের কথা লিখছে।’ এ বক্তব্যের মাধ্যমে নিজামী সর্বহারা দমনের নামে আসলে বাংলা ভাইয়ের কর্মকা-কে সমর্থন করেছেন এবং বাংলাভাইকে আড়াল করার লক্ষ্যে তার অস্তিত্ব অস্বীকার করে মিডিয়াকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন।

২০০৬ সালের ৩ মার্চ রাজধানীর হাজারীবাগে দলীয় এক জনসভায় নিজামী বলেন, কিছু সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল জঙ্গিবাদ ও বোমাবাজির সঙ্গে জড়িত। তিনি আরো বলেছিলেন, জঙ্গিদের যতোটা ভয়ঙ্কর ও শক্তিশালী বলা হয় তারা আসলে ততোটা নয়। তারা যদি আসলেই অতোটা শক্তিশালী হতো তাহলে জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান সানিও ৫ মিনিটের জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবের কাছে সব কিছু প্রকাশ করে দিতো না। নিজামী এ বক্তব্যে শুধু মিডিয়াকে আক্রমণ করেই ক্ষান্ত হননি। জঙ্গিদের শক্তিকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। তাছাড়া, সম্পৃক্ততা না থাকলে নিজামী জঙ্গিদের শক্তি ও সামর্থ্য সম্পর্কে এতো নিশ্চিত করে বলেনই বা কী করে?

জঙ্গিদের পক্ষে নিজামীর সাফাই

প্রসঙ্গতঃ বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিনা রোকা বাংলাদেশ সফরে এলে মতিউর রহমান নিজামী তার সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তিনি রোকাকে বলেন, জেএমবি তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত।

ইসলামের নামে মানুষকে ভুলপথে পরিচালিত করা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তারা ক্ষমাও চেয়েছে। তখনই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছিল জঙ্গিরা যে ক্ষমা চেয়েছে নিজামী এ তথ্য কোথায় পেয়েছেন? আর জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলে তাদের পক্ষে তিনি সাফাই গাইছেন কেন?

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, ১৯৭১-এর রাজাকার এবং আজকের জঙ্গি জামাতীরা

এখন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের পুরস্কার দেয়ার মত ধোঁকাবাজি ও ছলচাতুরি অনুষ্ঠান করার মত ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে।

সচেতন মুক্তযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে যখন প্রশাসনকে এসব প্রবঞ্চাপূর্ণ অনুষ্ঠান বন্ধ করার জন্য বলা হয়-

তখন প্রশাসনের তরফ থেকে জবাব দেয়া হয়-“জামাত একটা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। সেজন্য তাদের সভা নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা প্রশাসনের নেই।”

উল্লেখ্য, সরকার জঙ্গি-সন্ত্রাসী, ডাকাত-ছিনতাইকারীদের দমন করে যে বাহিনী দিয়ে,

সরকার দেশ চালায় যে বাহিনী দিয়ে  সে পুলিশ বাহিনীর

এসি আকরাম থেকে আরো দু/একজন এসির শাস্তির,

চাকরিচ্যুতির খবরও দেশবাসী জেনেছে।

সম্প্রতি র‌্যাবের এক এসির  ছিনতাইয়ের অভিযোগে চাকরিচ্যুতির খবরও সবাই জেনেছে।

এমনকি বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনেক উপদেষ্টাসহ দুদকের চেয়ারম্যান

সাবেক রাষ্ট্রপতি, স্পিকার, মন্ত্রী, এমপি পর্যন্ত বিচারের আওতায় আসছে।

শুধু র‌্যাব আর পুলিশ বাহিনীর দু’একজন চাকরিচ্যুতির ঘটনাই ঘটছে না স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন থেকে

কুখ্যাত রাজাকার সাকা চৌধুরীর সংসদ পদও আশু প্রত্যাহারের ঘোষণা আসছে।

যদি সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির জন্য অথবা

ইসি’র নিয়ম বহির্ভূত মন্তব্য-বক্তব্য কর্মকান্ডের জন্য

ইসি সে ঘোষণা দিতে পারে

তবে প্রকাশ্য দিবালোকের মত স্পষ্ট

জঙ্গি কানেকশন এবং জঙ্গি তৎপরতা

অথবা ইসি’র নিবন্ধনের নিয়মনীতির খেলাপ লক্ষ্য-উদ্দেশ্যর পরও   ইসি জামাতের নিবন্ধন বাতিলে কেন সক্রিয় হচ্ছে না?

মূলতঃ ইসি প্রথম থেকেই জামাতের প্রতি ভাজা মাছটি উল্টে খেতে না পারার মত দুর্বলতা ও অজ্ঞতা প্রকাশ করে চলছে।

জামাত মুখে যতই গণতান্ত্রিক দল বলুক

আসলে জামাত যে চূড়ান্ত পর্যায়ে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় এবং

জামাতের জন্মদাতা মওদুদীও যে ‘গণতন্ত্র নাজায়িয-হারাম’ সে কথা বলেছেন, লিখেছেন।

জামাতী বই-পুস্তকে সেসব কথা এখনও দিব্যি লেখা রয়েছে।

এ ব্যাপারে ইসি মূলতঃ কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত বোবা, বধির ও অন্ধের মত আচরণ করে যাচ্ছে।

ইসি’র এ ব্যর্থতাকে ঘুচিয়ে দিতে এগিয়ে আসতে হবে

বর্তমান দিন বদলের

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারকেই।

সঙ্গতকারণেই সরকারকে উচ্চারণ করতে হবে জঙ্গি কারিগর

১৯৭১-এর

রাজাকার

জামাতীরা কোন ইসলামিক দল নয়

এমনকি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলও নয়।

বরং তারা শতভাগই একটি জঙ্গি দল।

শুধু যুদ্ধাপরাধের বিচারের আওতায় জামাতকে এনে সীমাবদ্ধ থাকলে চলেবে না

সরকারকে আশু শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে

সাহসী চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে

জঙ্গি তৈরি জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতা

জঙ্গি সহযোগিতা

জঙ্গি সম্পৃক্ততার

কারণে গোটা জামাতকেই জঙ্গি তৎপরতার বিচার পরিক্রমার পর্যায়ভুক্ত করা।

১৯৭১-এর রাজাকারগিরির পর হাত-পায়ের রগ কাটার অভ্যাস করে তারা এখন ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মত হামলা করে হাত-পা উড়িয়ে দেয়া সহ গোটা মানুষকেই বোমা মেড়ে উড়িয়ে দিচ্ছে।

মূলতঃ  জামাতই জঙ্গিবাদের জনক। জামাতই জঙ্গি পৃষ্ঠপোষক। জামাতই জঙ্গি নিয়ন্ত্রক।

-মুহম্মদ তা’রিফুর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।