সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ বলে কথিত ভারতে নির্মম মুসলিমবিদ্বেষী তৎপরতা চলছে। মোদীর আমলে মুসলমানদের প্রতি সহিংসতা আরো বেড়েছে। বর্তমান ভারতবান্ধব সরকারের উচিত- ভারতে মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ও শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

সংখ্যা: ২৪৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

ভারতে বাড়ছে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। চলতি ২০১৫ সালের শুরু থেকে মে মাস পর্যন্ত ৫ মাসে সংঘটিত ঘটনা নিয়ে সরকারের প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান তা স্পষ্টভাবে প্রতিভাত করেছে। গত ২১ জুলাই-২০১৫ ভারতের বহুলপ্রচারিত দৈনিক পত্রিকা ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ‘আচ্ছে দিন’ বলে প্রচারণার মাঝে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী যতই সরব হোক, সাম্প্রতিক এ পরিসংখ্যান তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালের প্রথম দিকে সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা ক্ষমতায় থাকার সময়ের চেয়ে ২০১৫ সালের প্রথম ৫ মাসে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ২৪ শতাংশ বেড়েছে। সে সঙ্গে এসব ঘটনায় মৃত্যুর হার বেড়েছে ৬৫ শতাংশ।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ জানিয়েছে, চলতি ২০১৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত সারা দেশে মোট ২৮৭টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। ২০১৪ সালের একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ২৩২টি। এসব সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে মারা গেছে ৪৩ জন। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৬ জন। এছাড়া সাম্প্রদায়িক এসব সহিংসতার ঘটনায় চলতি ২০১৫ সালের প্রথম ৫ মাসে আহত হয়েছে ৯৬১ জন, যেখানে ২০১৪ সালের একই সময়ে আহতের সংখ্যা ছিল ৭০১ জন। এর মধ্যে উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র ও পশ্চিম বাংলায় এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার হার সবচেয়ে বেশি।

শুধু ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র রিপোর্টই নয়; ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পরই ভারতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীও। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে কংগ্রেস ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীও দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িকতা বেড়েছে বলে দাবি করে বিজেপি সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছিল।

তবে সোনিয়া গান্ধী স্বীকার করেছে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশজুড়ে ৬ শতাধিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে; যা ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’য় প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে বেশি। আর প্রকৃত পরিসংখ্যান আরো অনেক বেশি।

এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়েছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’ও একই অভিযোগ করেছে। সংগঠনটির ২০১৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে।

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোদী সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে মোদীর শাসনামলে উত্তরপ্রদেশ এবং অন্যান্য রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়েছে। একই সঙ্গে দুর্নীতি, জাতিগত, বর্ণ বৈষম্যজনিত সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

অ্যামেনেস্টির রিপোর্টে মোদী সরকারের আমলে হিন্দু রাজনীতিবিদদের ‘লাগামহীন জিহ্বা’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কতিপয় নেতার বিরুদ্ধে উত্তেজক ভাষণ দিয়ে সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগের কথাও তোলা হয়েছে এতে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ক্ষমতার অংশীদার হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে মুসলিম এবং খ্রিস্টানদেরকে জোর করে হিন্দুধর্মে ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, সাংবিধানিকভাবে ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। কিন্তু ভারত সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে কট্টর সাম্প্রদায়িক তথা হিন্দুত্ববাদী। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, ভারত একটি কট্টর দাঙ্গাবাজ রাষ্ট্র। মুসলমানদের নির্বিচারে শহীদকারী এবং নির্মম নির্যাতনকারী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র।

বহুজাতি-ভাষা-সংস্কৃতি ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর একটি উপমহাদেশকে ভারত ঔপনিবেশিক ধারায় একটি রাষ্ট্রের কঠোর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে নির্মাণ করার মধ্য দিয়ে এক ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক অভিঘাত তৈরি করে রেখেছে। রাজনৈতিক বিবেচনা এবং সামাজিক নৃ-তাত্ত্বিক ও ধর্মীয় বিবেচনায় ভারতের জন্য এটি সত্যিকার ফেডারেল রাষ্ট্র কাঠামো অনিবার্যতা রয়েছে। ভারত নিজ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিয়ে শুরু থেকেই স্পর্শকাতর এবং সংরক্ষণবাদী। এ কারণেই ভারত শক্তিশালী কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে জাতি-গোষ্ঠীর নৃ-তাত্ত্বিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক স¦াতন্ত্র্যের স্বীকৃতি না দিয়ে সামরিক ও রাজনৈতিক দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে। ভারতের অনেক রাজ্য শাসিত হয় সেনাবাহিনীর ছত্রচ্ছায়ায় গভর্নরের মাধ্যমে। যা কেন্দ্রীয় শাসনেরই নামান্তর। দুনিয়ায় ভারতই ইসরাইলের পর আর একটি নিরাপত্তা বেষ্টনীর রাষ্ট্র। যে দেশের নীতিনির্ধারক ও শাসকরা দেশের অধিকাংশ নাগরিকের অ-হিন্দু হবার কারণে নাগরিক ও মানসিক অধিকার তথা রাষ্ট্র শাসনে সমঅধিকার অস্বীকার করে রাষ্ট্রকে বিভক্ত করে রেখেছে। পশ্চাদপদ হরিজন-সিডিউল কাস্ট এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ভারত রাষ্ট্রের মূলধারায় স্বীকৃতি দিতে পারেনি। এর অর্থ দাঁড়ায় গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ভারতের সংবিধানের শোভাবর্ধন করলেও এটি রাষ্ট্র, সরকারের ব্যবহারিক নীতি-আদর্শে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।

মূলত, ভারত শুধু মৌলবাদী রাষ্ট্র নয়, তীব্র হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক সামাজিক কাঠামো নিয়ে পরিচালিত হয়। সেখানে প্রতিদিন কোনো না কোনো সংখ্যায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটে। এসব দাঙ্গার প্রধান শিকার মুসলিম জনগোষ্ঠী। এর পরে রয়েছে শিখ ও খ্রিস্টানরা। এছাড়াও নিম্নবর্গের নানা গোষ্ঠী এই দাঙ্গার কবলে পড়ে জানমাল ও সহায়-সম্পদ হারায়।

ভারতীয় মুসলমানদের বিরুদ্ধে শিবসেনা ও সংঘ পরিবারের সেøাগান হচ্ছে: “হয় কুরআন ছাড়ো, নয়তো ভারত ছাড়ো।” নাঊযুবিল্লাহ! এদিকে মুসলমানদের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত ‘সাচার কমিটির’ সুপারিশ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

গোটা ভারতে মুসলমানদের জনসংখ্যার অনুপাত প্রায় ৪০ শতাংশ; কিন্তু তারপরও তারা অবদমিত ও চরমভাবে বঞ্চিত। সংঘ পরিবারের উগ্রবাদী হিন্দুরা বাবরী মসজিদ ধ্বংসের পর গুজরাটে মুসলিম নিধনযজ্ঞ চালিয়ে যে বিভীষিকার সৃষ্টি করে- ভারতের গণতান্ত্রিক ও সেক্যুলার সমাজ তা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থ হয়েছে কংগ্রেস ও বাম রাজনীতিকরাও। হিন্দুত্বের সাম্প্রদায়িকতা লালন করে ভারত বাংলাদেশকে কিভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার দীক্ষা দিতে চায়, সেটাই তাজ্জবের ব্যাপার। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমান ভারতবান্ধব সরকার এদেশে হিন্দুদের মুসলমানদের চেয়েও অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা দিলেও ভারতে মুসলমানদের দমন-নিপীড়নের বিষয়ে একেবারে নির্বিকার। যা এদেশের ৯৮ ভাগ মুসলমানের বরদাশতের বাইরে। তারা এ নতজানু ও মুসলমানবিরোধী ভারত তোষণনীতির পরিবর্তন চায়।

-আল্লামা মুহম্মদ আরিফুল্লাহ।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।