সাইয়্যিদুল আম্বিয়া, ইমামুল আতক্বিয়া, হাদিউল আওলিয়া, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ উপলক্ষে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন প্রসঙ্গে

সংখ্যা: ১৮৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

قل بفضل الله وبرحمته فبذلك فليفرحوا

“হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (উম্মতদেরকে) বলে দিন, আল্লাহ পাক-এর ফজল ও রহমত লাভ করার কারণে তারা যেন আনন্দ, খুশি প্রকাশ করে।” (সূরা ইউনুস-৫৮)

বলাবাহুল্য, খালিক মালিক আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত হতে মাখলুকাতের জন্য সবচাইতে বড় রহমত, সবচেয়ে বড় অতুলনীয় নিয়ামত তথা ফজল করম হলেন আখিরী নবী, সাইয়্যিদিল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যে বারই রবীউল আউয়াল শরীফ তিনি পৃথিবীর যমীনে তাশরীফ এনেছেন সে দিনটিও জগতবাসী আসমানবাসী সকলের জন্যই মহা আনন্দ খুশির দিনরূপে যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে।

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ সর্বপ্রথম সামাজিক এবং পারিবারিকভাবে এই মহা খুশির দিন উপলক্ষে পবিত্র মিলাদ শরীফ-এর আয়োজন করতেন বলে অসংখ্য হাদীস শরীফ বর্ণিত রয়েছে। যেমন একটি হাদীস শরীফ-এ বর্ণিত আছে যে, “একদিন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে দাওয়াত করে আনলেন নিজ ঘরে। অতঃপর তিনি নবীদের নবী, রসূলদের রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুবারক বিলাদত শরীফ-এর শান-মান মাহাত্ম্য সম্পর্কে আলোচনা করলেন, যা শুনে উপস্থিত সকলেই অত্যন্ত খুশি আনন্দচিত্তে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম-এর উপর ছলাত-সালাম পাঠ করতে থাকেন। ঠিক সে সময় রহমতুল্লিল আলামীন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে তাশরীফ আনলেন এবং তা দেখে সমবেত সকলকেই উদ্দেশ্য করে ইরশাদ করলেন, তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল”। (সুবহানাল্লাহ) মূলতঃ এ কারণেই  খলীফাতুল মুসলিমীন, আমিরুল মু’মিনীন, ফারুকে আযম হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেছেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিশেষ মর্যাদা সম্মান দিল সে যেন পবিত্র দ্বীন ইসলামকেই পুনরুজ্জীবিত করলো”। তাই প্রত্যেক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহুমগণ থেকে শুরু করে পরবর্তী ইমাম মুজতাহিদ আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ সকলেই বারই রবিউল আউয়াল শরীফতো বটেই বছরের অন্যান্য বিশেষ বিশেষ সময়েও পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুষ্ঠান করতেন।

 তবে পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাপক জাঁকজমকের সাথে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের যে ঐতিহ্য তা শুরু হয়েছে ছয়শ’ চার হিজরী অর্থাৎ ১২০৭ ঈসায়ীতে ইরাকের মসূল শহরের আরবাল নামক স্থানে। সেখানকার তৎকালীন দ্বীনদার পরহিযগার বাদশাহ মালিক মুজাফ্ফর আবু সাঈদ বিন জয়নুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি রাষ্ট্রীয়ভাবে এই সুমহান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সকল মু’মিন মুসলমানকে শামিল করেন। অনুরূপভাবে মিসরে আরো ব্যাপকভাবে পবিত্র  ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুষ্ঠান জারি করেন ইসলামের বীর সিপাহশালার, সুলতান হযরত গাজী সালাউদ্দীন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, আরবলের পুণ্যবান বাদশাহ ছিলেন বীর মুজাহিদ, সুলতান হযরত গাজী সালাউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ভগ্নিপতি। পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনের সেই রীতি মিসর থেকে পর্যায়ক্রমে পবিত্র মক্কা শরীফ-এ বিস্তৃতি লাভ করে। পবিত্র মক্কা শরীফ থেকেই পরবর্তিতে সারা বিশ্বব্যাপী পবিত্র ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপনের প্রচলিত নিয়ম আরম্ভ হয়।

বর্তমানে অনেক লোককে বলতে শুনা যায়, সউদী আরবে তো পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করতে দেখা যায় না। আসলে দেখা যাবেই বা কি করে; কারণ ইহুদী মদদে ক্ষমতাশীন হয়েই বাতিল ওহাবী মতবাদের ধ্বজাধারী সউদী রাজ গং শত-সহস্র বছরব্যাপী চলে আসা এই মহাপবিত্র আনন্দ উৎসবকে বিদয়াত-শিরক ফতওয়া দিয়ে সেখানে বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে তারা মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেও পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপনকে বন্ধ করার জন্য পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। তবে নূর নবীজীর দুশমন, ইহুদী দালাল, ইবলিশের দোসর গুমরাহ ওহাবীদের জন্য চরম দুঃসংবাদ হলো আল্লাহ পাক তাঁর চূড়ান্ত ঘোষণা মুতাবিক যেহেতু উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুমহান শানকে সমুন্নত রেখেছেন এবং আবাদুল আবাদে রাখবেন সেহেতু বর্তমান হিজরী শতাব্দীতে এমন এক মহান মুজাদ্দিদ মুদ্দা জিল্লুহুল আলীকে প্রেরণ করেছেন যিনি ইতোমধ্যে শত-সহস্র প্রামাণ্য দলীল-আদিল্লাহ দ্বারা প্রমাণ করে দিয়েছেন- নূরে মুজাস্সাম, রহমতুল্লিল আলামীন, শাফিউল উমাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ বারই রবীউল আউয়াল শরীফ হলো সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যা সার্বিকভাবে পালন করা প্রত্যেক মু’মিন মুসলমানতো বটে বরং কুল মাখলুকাতের জন্যই ফরজ-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।

আল্লামা মুনযির মুহম্মদ

-:দৈনিক আল ইহসানের বিশেষ ব্যানার হেডিং তথা তাজদীদের ধারাবাহিকতায় মুজাদ্দিদে আ’যমের মুবারক সংযোজন:- ইসলাম- বিধর্মীদের ধর্ম পালনে কোন বাধা দেয় না। কারণ, প্রত্যেকেই তার নিজ ধর্ম পালনে স্বাধীন। ইসলাম- মুসলমানদের জন্যও বিধর্মীদের কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনুমোদন করে না। পাশাপাশি মুসলমানদেরকে বিধর্মীদের অনুষ্ঠানে যেতে বিধর্মী কর্তৃক উৎসাহিত করাটাও শরীয়তসম্মত নয়। কেননা, মুসলমানরা বিধর্মীদেরকে ইসলাম পালনে বাধ্য করে না।

মিছবাহুদ্ দুজা, মিফতাহুদ্ দারা, খইরুল ওয়ারা, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্রতম দেহ মুবারক, ঘাম মুবারক ও থুথু মুবারক-এর সৌরভের কাছে যত রকমের খুশবু আছে সবই ম্লান হয়ে যায়

আকমালুল মাওজূদাত, আজমালুল মাখলূক্বাত, আল্মুওয়াইইয়াদু বিওয়াদ্বিহিল বাইয়্যিনাত, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বৈশিষ্ট্য থেকেই সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাম ও আওলিয়ায়ে কিরামগণ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়েছেন

আখলাকুহূ হামীদাহ, আফয়ালুহূ জামীলাহ, আলত্বাফুহূ কারীমাহ, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সদাচরণ হযরত উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাগণের সাথে

হাবীবুল্লাহিল মান্নান, দ্বীনুহূ খইরুল আদইয়ান, কুছূরুহুল জিনান, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্মরণ ব্যতীত নামায আদায় অসম্ভব