ক্লিনটনের পর বুশের ক্ষমতাও জাহির হয়েছে। মনিকার সাথে ক্লিনটনের অবৈধ সম্পর্কের জের ধরে হিলারী- ক্লিনটনকে এমন কষে থাপ্পর লাগিয়েছিলেন যে, ক্লিনটনকে পরবর্তী প্রোগ্রামে যেতে হেভী মেকাপ নিতে হয়েছিলো।
এদিকে আমেরিকার বিখ্যাত পত্রিকা ন্যাশনাল এনকোয়ারার বরাতে জানা যায় যে, “প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ মদ খেয়ে তাদের র্যানচ-হাউসে মাতলামি করছেন দেখে তার স্ত্রী লরা বুশ তাকে প্রচণ্ড চড় মারেন এবং বুশও তাকে অশালীন ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। র্যানচের কর্মচারীরা গিয়ে তাদের মারামারি থামায়।” এ সংবাদটি তখন খুব বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। সবার জানা ছিলো বুশ প্রচণ্ড মদ্যপ একথা ঠিক কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে তা থেকে তিনি রেহাই পেয়েছেন।
তবে এ কথাও ঠিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরেও হোয়াইট হাউসে একদিন বুশ অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। তখন প্রচার করা হয়েছিলো ফুড পয়জনিংয়ের জন্য এ সাময়িক জ্ঞান হারিয়ে ফেলার ঘটনা। আরো একটু অতীতে ফিরে যাওয়া যাক।
জর্জ বুশের পিতা সিনিয়র বুশ যখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন একবার আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ। তার সম্মানে হোয়াইট হাউসে রাষ্ট্রীয় ভোজ অনুষ্ঠান হয়েছিলো সেখানে তখন জুনিয়র বুশ বা বর্তমান বুশকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। কারণ, তিনি সেখানে মদ্যপ হয়ে মাতলামি ও গালাগাল করতে পারেন। এ খবরটি সে সময়ে মার্কিন পত্র-পত্রিকায় বেশ ফলাও করে ছাপা হয়েছিলো।
এরপরও আমেরিকার পত্র-পত্রিকায় লরা বুশ ও জর্জ বুশকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হতে থাকে। বুশ যতোদিন যাচ্ছে ততোই তার স্ত্রীর প্রতি বেসামাল আচরণ করে চলেছে। তার ধৈর্যহারা স্ত্রী লরাও তাকে ছাড় দেননি বলে জানা যায়।
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশের প্রেসিডেন্ট বুশের এ অধঃপতনের কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে সে দেশের পত্রপত্রিকাগুলো। পত্রপত্রিকায় কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ইরাক যুদ্ধের পরে বুশ তার নিজের এবং তার অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বিশ্বস্ততা হ্রাসের কারণে রামসফেল্ড থেকে শুরু করে ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের তার কাছ থেকে বিদায় নেয়ায় তিনি বেসামাল আচরণ করতে থাকেন এবং তার পারিবারিক ও ব্যক্তিজীবনেও ধরেছে চিড়।
বুশ ও লরার অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, বুশ তার স্টাফদের সামনে স্ত্রী লরা বুশকে গালাগালি করা শুরু করে দেয়। শেষমেষ লরা বুশ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আর নয়, হয় আমাকে ছাড়ো, নয় বোতল ছাড়ো। লরা বুশের একই কথা, লম্পটের সঙ্গে তিনি জীবনযাপন করতে পারবেন না।
না, এরপরও বুশের কোন পরিবর্তন হয়েছে বলে ধারণা পাওয়া যায়নি। গত ২৫ আগস্ট ন্যাশনাল এনকোয়ারার পত্রিকায় সাময়িক পত্র আমেরিকান গ্লোব-এ একটি সংবাদ প্রকাশ পায় তার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, লরা ও জর্জ গোপনে আলাদাভাবে বাস করছেন। ৬ সপ্তাহ আগে ধৈর্যচ্যুত ফাস্ট লেডি হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেছেন।
অন্য একটি মার্কিন পত্রিকায় বলা হয়েছে, লরা বুশের পারিবারিক জীবনে ভাঙ্গন ধরতে শুরু করেছে গত দু’বছর আগে। এর কারণ হলো, বুশের মিথ্যাচার, ইরাকীদের বিরুদ্ধে অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া বিশেষত তার মদপানের পরিমাণ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া।
পারিবারিক কলহের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লরা তার স্বামীকে মদ্যপান থেকে সরিয়ে আনার জন্য যারপরনাই চেষ্টা করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হয়ে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে পত্রপত্রিকার অভিমত। যার ফলশ্রুতিতে লরা বুশ জর্জ বুশকে রেখে একাকী জীবন বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
লরা ও বুশের দাম্পত্য জীবনে ভাঙ্গন ধরার পেছনে আরও একটি কারণ আবিষ্কার করেছে আমেরিকার গ্লোব। পত্রিকাটি জানিয়েছে, বুশের লয়ালিটি সম্বন্ধে লরা সন্ধিহান।
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে প্রকাশ পেয়েছে, বুশ ও লরার ঝগড়ার কারণ কন্ডোলিৎসা রাইস। গ্লোবের সূত্র জানিয়েছে, লরা সন্দেহ করেন বুশ তার সুন্দরী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে তাকে প্রতারণা করেছেন। আর তাই তিনি স্বামীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটির পর ওয়াশিংটনের একটি হোটেলে গিয়ে রাত কাটান।
মার্কিন পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, বুশ ও লরার আনুষ্ঠানিক বিয়ে-বিচ্ছেদ না হলেও কার্যত বিয়ে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। মনে করা হচ্ছে, আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে বিচ্ছেদেরও মতো মারাত্মক সিদ্ধান্তে চলে যাবে।”
উল্লেখ্য, উপরোক্ত সংবাদ-ভাষ্য থেকে প্রমাণিত হয় যে, আফগানিস্তান আক্রমণকারী, ইরাক দখলকারী সারা বিশ্বে মুসলমানদের নির্যাতনকারী বুশ একজন মহিলা লরা বুশের এক চপেটাঘাতে কুপোকাত। যেমনটি ধরাশায়ী হয়েছিলেন, ক্লিনটন তার স্ত্রী হিলারীর এক থাপ্পরে।
অভিজ্ঞমহল মনে করেন যে, ক্লিনটনের পথ ধরে মুসলমানদের উপর নির্যাতন অব্যাহত রাখার কারণেই বুশকে একইভাবে তার স্ত্রী লরার কাছে মার খেতে হলো।
মূলতঃ এর দ্বারা গোটা বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টিকারী ক্লিনটন আর বুশ যে আসলে কতটুকু শক্তিধর সেটা আল্লাহ পাক বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিলেন।
এদিকে জিমি কার্টার থেকে ক্লিনটন, বুশ সব আমেরিকান প্রেসিডেন্ট যে মহা চরিত্রহীন এবং কর্মচারীর সাথেই তাদের অবৈধ সম্পর্ক তা কন্ডোলিৎসা রাইসের সাথে বুশের অবৈধ সম্পর্ক প্রকাশের দ্বারা আরো একবার প্রমাণিত হলো।
পাশাপাশি আরো একটি দিক প্রতিভাত হলো, হিলারী এবং লরা উভয়েই কিন্তু মহা প্রগতিবাদী। ফরয পর্দার লেশ তাদের মাঝে নেই। হাজার হাজার পুরুষের সাথে তাদের উঠা-বসা। কিন্তু তারপরেও তারা কিন্তু সহ্য করতে পারেনি যখন তারা জানতে পেরেছেন তাদের স্বামী পুরুষটি অন্য এক মহিলার সাথে সম্পর্ক রেখেছেন। অর্থাৎ হিলারী এবং লরার পছন্দ অনুযায়ী ক্লিনটন এবং বুশের স্ত্রী ভিন্ন অন্য কোন নারীর সাথে সম্পর্ক রাখা চলবে না।
তাহলে বিষয়টি কি দাঁড়ালো?
বিষয়টি মূলতঃ ইসলামের ফরয পর্দা প্রথারই মাহাত্ম্য ঘোষণা করলো। ইসলামের পর্দা প্রথারই শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করলো। ইসলামের পর্দা প্রথারই প্রয়োজনীয়তা ঘোষণা করলো।
-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০