সব প্রশংসা মুবারক যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ মুবারক ও সালাম মুবারক।
বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন নজরদারির ব্যাপারে গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ঈসায়ী তারিখ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে দিল্লির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিল ঢাকা।
বলাবাহুল্য, এভাবে নিস্তেজ ব্যাখ্যা চাওয়াকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের উপর এতবড় আঘাতকে নীরবে হজমের পাঁয়তারা বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল।
বর্তমানে ভারত ড্রোন বিমান নকশাল আক্রান্ত এলাকাগুলোতে ব্যবহার করছে। বিএসএফ বলেছে, সীমান্তবর্তী এলাকায় ড্রোনের ব্যবহার আরও সফল বলে প্রমাণিত হতে পারে। বিএসএফের নজরদারি শক্তিশালী করতে এরই মধ্যে শত্রুপক্ষীয় অবস্থান নির্ণয় এবং সেই স্থানের নজরদারিতে দূরপাল্লার লোরোস (এলওআরআরওএস) ব্যবস্থা, যুদ্ধক্ষেত্রে নজরদারি রাডার (বিএফএসআর) ও রাতের অন্ধকারে দেখার উপযোগী যন্ত্র ব্যবহার করছে ভারত। এসবের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে সীমান্তে ড্রোন মোতায়েনের এ ব্যবস্থা। ভারতীয় বিমানবাহিনীর সহায়তা নিয়ে এ নজরদারি করবে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ ধরনের ড্রোন নজরদারি পাকিস্তান সীমান্তেও করবে ভারত সরকার।
ড্রোন সীমান্ত এলাকার ১০ থেকে ১২ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়বে। আকাশসীমা ব্যবহার সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা থাকায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর সহায়তা নেয়া হবে। জানা গেছে, ভারত শুধু পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তেই এটি মোতায়েন করবে না, বাংলাদেশের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তেও ড্রোন মোতায়েন করবে। ভারতীয় সীমান্তে কেউ অনুপ্রবেশের করার চেষ্টা করলে বা এ সংক্রান্ত কর্মকা- চালালে তার চিত্র ড্রোন থেকে ধারণ করা হবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সেসব তথ্য সংশ্লিষ্ট বিএসএফ ক্যাম্পে জানিয়ে দেয়া হবে। জানায়, ড্রোন মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়ে দ্রুত কাজ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তে ভারতের ড্রোন মোতায়েনের সিদ্ধান্তের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক, সীমান্তবর্তী মানুষ ও বিশেষজ্ঞ তথা বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনসাধারণ। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এটি বাংলাদেশের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে চরম হুমকির মধ্যে ফেলবে। এতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। যদি ড্রোন মোতায়েন করতেই হয় তবে বাংলাদেশের সাথে ভারতকে বসতে হবে। আর শুরুতেই জোরালো প্রতিবাদ না হলে পরে পাত্তাই পাওয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, ‘বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে অনেক অমীমাংসিত বিষয় থাকা সত্ত্বেও ভারত কেন আরেক নতুন বিষয়ের জন্ম দিয়ে নতুন উত্তেজনা ও বিতর্কের সৃষ্টি করলো তা গভীর রহস্যজনক। এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয় বিবেচ্য। নিরাপত্তার দিক থেকে সম্ভাবনা এই যে, আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘিত হবে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার অবৈধ ছবি তোলা হবে এবং ভারতবিরোধী সন্ত্রাসী আস্তানা আছে এই অজুহাতে বাংলাদেশ ভূখ-ে ড্রোন হামলা চালানো হতে পারে। অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রেই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। অতএব, ভারতের পক্ষ থেকে এই একতরফা পদক্ষেপ প্রত্যাহারের জন্য আমরা জোরালো প্রস্তাব করছি।
অপরদিকে উল্লেখ্য, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ভারতীয় গোয়েন্দা কার্যক্রম সর্বাধিক শক্তিশালী, বিস্তৃত ও সক্রিয়। ভারতীয় গোয়েন্দার মূল্যায়নে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন আসন্ন। আগামী দিনের সম্ভাব্য রাজনৈতিক সরকারের আমলে সীমান্তকে বিতর্কিত ও উত্তেজনাময় রাখার জন্য তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, এখন থেকে ছয় মাস বা নয় মাস পরে সম্ভাব্য বিরোধী দল আওয়ামী লীগ বলতে পারবে যে, আমাদের আমলে সীমান্ত স্থিতিশীল ছিল। এখন গ-গোল।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বর্তমান সরকার কতটুকু জনবান্ধব, ব্যবসায়ী বান্ধব, শিল্পবান্ধব কিংবা পরিবেশবান্ধব, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও সবাই নিঃসন্দেহ যে, এটা ভারতবান্ধব সরকার। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে সরকারের ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলেরা বলে থাকেন, ভারত আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং পরীক্ষিত বন্ধু। অথচ দেশটির আচরণে প্রমাণিত হয়েছে, তারা বাংলাদেশের সাথে বন্ধুত্বের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নয়। এই সরকারের আমলে নানাভাবে ভারততোষণ করতে গিয়ে জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণœ হয়েছে।
ভারতকে ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ এখন ১ লাখ ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের করিডোর দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। অপরদিকে এ দেশের প্রতি ভারতের তাচ্ছিল্যপূর্ণ মনোভাব এবং অবমাননাকর আচরণ আরো বেড়েছে। ফেলানী হত্যা মামলায় আসামিদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় নেয়া হয়েছে সীমান্তে ড্রোন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত। পাকিস্তান আর বাংলাদেশের সীমান্ত সমস্যার মাঝে অনেক ব্যবধান। তাই এখানে ড্রোন মোতায়েনকে স্বাভাবিক বলা যায় না। সীমান্তে কড়া নজরদারির জন্য ইতোমধ্যেই যুদ্ধক্ষেত্রের মতো রাডার, দূরপাল্লার পর্যবেক্ষণ, লাইটভিশনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। এরপরও ড্রোনের মোতায়েন গভীর দুরভিসন্ধিমূলক।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শুধু ড্রোন মোতায়েনের ব্যাখ্যা চেয়েছে। ভাবখানা এই যে, উপযুক্ত জবাব দিতে পারলে ভারতের ড্রোন মোতায়েন জায়িয হয়ে যাবে। কিন্তু কোনো মূল্যেই বাংলাদেশ সীমান্তে ড্রোন মোতায়েন বরদাশতযোগ্য নয়- এ কথা উচ্চকিত কণ্ঠে, দীপ্তভাবে বলছে না কেন বর্তমান সরকার? এতে প্রমাণিত হয়, সরকারের ভূমিকা নতজানু ও দুর্বল। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা রহস্যজনক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলাদেশের জনগণ বর্তমান সরকারের জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণœকর ভারতপ্রীতি দেখতে দেখতে ভীষণ ক্ষুব্ধ। ড্রোন মোতায়েনে সরকার সক্রিয় প্রতিবাদ না করলে জনগণের ক্ষুব্ধতার অনলে ঘি পড়বে। তাতে সরকার ও ভারত উভয়েই পুড়বে।
মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ।
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারকে সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত মুবারক হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)
–মুহম্মদ আশরাফুল মাহবূবে রব্বানী
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০