হযরত বাদশাহ নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দ্বীন ইসলাম গ্রহণ ও ইন্তিকাল, উনার পবিত্র মদীনা শরীফে জানাযা এবং হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সালামের জাওয়াব দেয়াই প্রমাণ করে যে, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইলমে গইব উনার অধিকারী এবং সবকিছুই উনার নিকট হাযির ও নাযির

সংখ্যা: ২৩০তম সংখ্যা | বিভাগ:

اعطيت بجوامع الكلم

অর্থ : মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ের ইলম হাদিয়া করেছেন। (মিশকাত শরীফ)

কুরাঈশ কাফিরদের অত্যাচার যখন চরমে, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে আবিসিনিয়ায় হিজরত করার অনুমতি প্রদান করেন। ১১ জন পুুরুষ ও ৪ জন মহিলা- এই পনের জন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের একটি কাফেলা আবিসিনিয়ায় প্রথম গমন করেন। এটা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রথম হিজরত। জিদ্দা থেকে মাথা পিছু তখনকার আট আনা ভাড়ায় নৌকা যোগে উনারা আবিসিনিয়ায় পৌঁছেন।

উক্ত দলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা কন্যা সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুকাইয়া আলাইহাস সালাম ও উনার আহাল হযরত উসমান যুননূরাইন আলাইহিস সালাম তিনিও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কুরাঈশরা প্রচুর উপঢৌকন হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবারে পাঠিয়ে মুসলমান উনাদেরকে ফেরত পাঠানোর জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। মুসলমান উনাদের এই হিজরত উনার মধ্য দিয়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আন্তর্জাতিক বিজয় সূচিত হয়। পরবর্তীতে আরো ৮৩ জন সম্মানিত পুরুষ ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও ১৮ জন সম্মানিতা মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনারা সর্বমোট ১০১ জন আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। এটা ছিলো দ্বিতীয় হিজরত। এই হিজরতে হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কন্যা উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মে হাবীবা আলাইহাস সালাম তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন।

দীর্ঘদিন আবিসিনিয়ায় অবস্থান করার পর ৭ম হিজরী সনে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সরাসরি পবিত্র মদীনা শরীফে গিয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হন। আবিসিনিয়ায় মুসলমানদের অবস্থান সেদেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচারে সহায়ক হয়েছিলো। বর্তমান ইথোপিয়া বা হাবসা বর্তমানে শায়ত্ব শাসন লাভ করেছে। মুসলমান উনাদের আদব আখলাক্ব দেখে বাদশাহ হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দিকে ঝুঁকে পড়েন। ৭ম হিজরী সনে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রোম, পারস্য, মিশর, বাহরাইন ও আবিসিনিয়ার বাদশাহদের নিকট সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত সম্বলিত পত্র প্রেরণ করেছিলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পত্র পাঠ করে হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। বিদেশের একজন বাদশাহ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করায় খ্রিস্টান জগতে হৈচৈ পড়ে যায়। বিনা যুদ্ধে, বিনা তলোয়ারে এভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রচার হয়।

বাদশাহ হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি (আসহামা) ৯ম হিজরী সনের পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে বিছাল শরীফ গ্রহণ করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাবুকের জিহাদ হতে মাত্র পবিত্র মদীনা শরীফ-এ ফিরেছেন। তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে ডেকে বললেন, আপনাদের ভাই হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি আজ আবিসিনিয়ায় বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন। সুতরাং আমরা উনার পবিত্র জানাযা পড়বো। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লাশ দেখে দেখে পবিত্র জানাযা উনার নামাযে ইমামতি করেন। সুবহানাল্লাহ!

৮ম হিজরী সনে মূতার জিহাদে তিনজন মুসলিম সেনাপতি শহীদ হয়েছিলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ থেকেই তা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে, উনাদের পবিত্র শাহাদাত উনার সুংবাদ দিয়েছিলেন।

ওই জিহাদে হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার ভাই হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি শহীদ হয়েছিলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা উনার পবিত্র রূহ মুবারক নিয়ে আকাশে ভ্রমণকালে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  তিনি উনাকে আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়েছিলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম’ বলে সালামের জবাব দিলে উপস্থিত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কারণ জিজ্ঞাসা করলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, হযরত জাফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আমাকে বিদায়কালীন সালাম দিয়েছেন আকাশ থেকে। আমি উনার সালামের জবাব দিয়েছি। আপনারা যা জানেন না, আমি তা জানি। আপনারা যা দেখেনে না আমি তা দেখি। (বুখারী শরীফ)

হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জানাযা ও হযরত জাফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার এই ঘটনাও প্রমাণ করে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইলমে গায়েব উনার অধিকারী এবং তিনি হাযির ও নাযির। সুবহানাল্লাহ!

-মুফতিউল আ’যম আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আব্বাজান আলাইহিস সালাস ও আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনারা ফিতরাত যুগের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন ও উনারা দ্বীনে হানীফার উপর কায়িম ছিলেন।

আল হাদ্বির ওয়ান নাযির, ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা ক্বাওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সব

সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাহরীম শরীফ উনার শানে নুযূলকে কেন্দ্র করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ কুফরী বক্তব্য ও তার খণ্ডনমূলক জবাব

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমস্ত উম্মতের জন্য ফরযে আইন

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে খরচ করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক