হাজারো বদ আক্বীদা ও বদ আমল সংশ্লিষ্ট-জামাতী, ওহাবী, খারেজী তথা কওমী মাদরাসায় কুরবানীর চামড়া দিলে কুরবানী হবে না

সংখ্যা: ১৭২তম সংখ্যা | বিভাগ:

যাকাতের একটি রশিও দিতে যে অস্বীকার করবে, প্রথম খলীফা আফজালুন্ নাস বা’দাল আম্বিয়া, হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তার বিরুদ্ধে জিহাদ অব্যাহত রাখার দীপ্ত ঘোষণা দিয়েছিলেন।

অর্থাৎ আল্লাহ পাক-এর রাস্তায় ব্যয় হিসেবে একটি রশিও অত্যন্ত গুরুত্ব রাখে। যাকাতের পাশাপাশি কুরবানীর গরুর রশিও যদি কেউ বিক্রি করে সে অর্থ নিজে ভোগ করে- তবে তার কুরবানী হবে না বলে ফুক্বাহা-ই-কিরাম একমত। সব ফিক্বাহ্র কিতাবে তাই লেখা আছে।

উল্লেখ্য, সাধারণ মুসলমান অনেকেই কুরবানীর চামড়া মাদ্রাসায় দেয়া অধিকতর সওয়াবের কাজ মনে করেন। এক্ষেত্রে তারা সদকায়ে জারিয়া অর্থাৎ সে সওয়াব অব্যাহত থাকবে তা আদায় হবে বলে অধিকতর তৃপ্তি লাভ করেন। মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের দেয়া হলে তারা পড়তে থাকবে, পড়াশোনা শেষে তারা আবার পড়াতে থাকবে, ওয়াজ করবে এভাবে মানুষের মাঝে আমল জারি থাকবে এ ধারণাই সদকায়ে জারিয়ার কথা।

অথচ এ সদকায়ে জারিয়ার কথা প্রচার করে আজকে ফায়দা লাভ করছে ধর্মব্যবসায়ী জামাত। তারা প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করছে। এ প্রসঙ্গে দৈনিক সমকাল, ৫ই জুলাই ২০০৬-এ লেখা হয়-

 ‘এছাড়াও জামাত নিয়ন্ত্রিত হাজার হাজার মাদ্রাসার মাধ্যমে ইয়াতিম ও হতদরিদ্র ছাত্রদের দেখিয়ে প্রতি বৎসর কোটি কোটি টাকার কুরবানীর চামড়া সংগ্রহ করে। যার মাধ্যমে তাদের তহবিল আরো শক্তিশালী ও মজবুত হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, কুরবানীর চামড়ার টাকা সংগ্রহে জামাত-শিবির কতটুকু হক্বদার তা তাদের অর্থ আদায়ের অন্যান্য উৎস প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভেই পরিষ্কার হয়। এ ব্যাপারে পত্রিকান্তরে রিপোর্ট হয়-

জামাতের শক্তিশালী তহবিল থেকে  আসে জঙ্গিবাদের অর্থের যোগান

 জামাতের অর্থের যোগান আসে মার্কিন নির্দেশে সৌদি আরব, কুয়েত, লিবিয়াসহ কয়েকটি মার্কিন অনুগত মুসলিম দেশ থেকে। বিদেশ থেকে প্রাপ্ত তহবিল দেশে ব্যাংকিং, চিকিৎসা, বীমা, শিক্ষাসহ, ক্ষুদ্র, মাঝারী ও ভারী শিল্পে বিনিয়োগ করে বলে তারা পাঁচশত কোটি টাকা মুনাফা বছরে হাতিয়ে নিচ্ছে।

জামাতিরা তালেবানি রাষ্ট্র কায়েমের জন্য অত্যন্ত কৌশলে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জনের চেষ্টা করছে। তহবিল সংগ্রহের জন্য জামাত বৈধ এবং অবৈধ সব পথেই ব্যবসা করছে।

সাম্প্রতিককালে হেরোইন পাচারের সাথে জামাত সমর্থিত প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। একে তো হেরোইন, তার উপর পাচার। এসব কপট ধর্মব্যবসায়ী জামাতিরাই এদেশে ইসলামের সোল এজেন্ট হিসেবে নিজেদের দাবি করে।

যুক্তরাজ্যে হেরোইন পাচারের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত বিডিফুডসের চেয়ারম্যান বদরুদ্দোজা চৌধুরী মোমিন স্বীকার করেছেন অপ্রচলিত পণ্য রফতানির আড়ালে তিনি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে হেরোইন পাচার করে আসছেন। তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, ব্রিটেনে পৃথক ৩টি চালানে সাড়ে ৭৫ কেজি হেরোইন তিনি পাচার করেছেন।

বিডিফুডসের গ্রেফতারকৃত চেয়ারম্যান বদরুদ্দোজা চৌধুরী মোমিন গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে জামাতের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কথা স্বীকার করেছেন। ‘জামাতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দহরম মহরমের কথা তিনি লুকানোর চেষ্টা না করেই বলেছেন, জামাতের চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত এক এমপি তার ঘনিষ্ঠজনদের একজন। জামাতের ওই এমপি শিপিং ব্যবসার সাথে জড়িত। বৃহত্তর নোয়াখালীতে তার অর্থায়নেই জামাত পরিচালিত। বিডিফুডসের হেরোইন পাচারের টাকা জামাতের তহবিলে গেছে, এ তথ্য অস্বীকার করছে জামাত। বলছে না যে বিডিফুডসের মালিকের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।’ (সংবাদ, ১৮ মে, ২০০৬)

২০০৫ সালের ১৭ই আগস্ট সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের পর জঙ্গিদের অর্থের উৎস খোঁজ করতে গিয়ে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ জামাত নিয়ন্ত্রিত ইসলামী ব্যাংকের সম্পৃক্ততা পায়। ফলে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ দেশের প্রচলিত আইনানুসারে ইসলামী ব্যাংককে জরিমানা করতে বাধ্য হয়। জামাত কর্তৃক জঙ্গিদের অর্থ যোগানের বিষয়টি এমন নগ্নভাবে দেশ-বিদেশে প্রকাশপায় যে, নিজামী বিএনপি’র জোট সরকারের শিল্পমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও ইসলামী ব্যাংকে জরিমানা থেকে রক্ষা করতে পারেনি।

ফিক্বাহ্র কিতাবে লেখা হয়েছে- হারাম মালের সাথে হালাল মাল মিশ্রিত করলে তা হারাম হয়ে যায়। সুতরাং রাজাকার, আল-বাদর, জামাতীরা যেসব হারাম কায়দায় অর্থ আদায় করে তার সাথে দেয়া কুরবানীর চামড়ার অর্থ মিশ্রিত করলে তাও যে হারাম হয়ে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আবার ফিক্বাহ্ ও তাছাউফ উভয় কিতাবে লেখা হয় যে, শুধু ফাসিক-ফুজ্জারের দেয়া দাওয়াত খাওয়াই শুধু নয় পাশাপাশি তাদেরকে দাওয়াত খাওয়ানোও নাজায়িয ও হারাম।

কারণ তাদেরকে খাওয়ানো হলে ঐ খাদ্যের দ্বারা তাদের দেহে যে শক্তি তৈরি হবে সে শক্তি দ্বারা তারা পুনরায় আরো বেশিভাবে ফাসিকী-ফুজ্জারী কাজে জড়িত হয়ে যাবে।

তদ্রƒপ বলতে হয়, রাজাকার আল-বাদর জামাতীরা সম্পূর্ণরূপে ইসলাম বিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী, জঙ্গিপনা, হাজারো বদআক্বীদা ও বদআমল সংশ্লিষ্ট একটি দল।

স্বয়ং আল্লাহ পাক, আল্লাহ পাক-এর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ তথা আউলিয়া-ই-কিরাম সম্পর্কে নানা কুফরী ও বদআক্বীদা সম্পৃক্ত ও বিরোধী একটি দল।

এরা ছবি, বেপর্দা, নারী-নেতৃত্ব, ইসলামের নাম দিয়ে নির্বাচন, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী ইত্যাদি সব জায়িয করেছে। অপরদিকে এরা মীলাদ শরীফ, শবে বরাত, মাযার শরীফ জিয়ারত, ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন ইত্যাদি মহা-ফযীলতযুক্ত কাজকে নাজায়িয বলছে।

আর এখন এটা ওপেন সিক্রেট যে ক্রুসেডের যুদ্ধের পর ইহুদী-খ্রিস্টানরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র যুদ্ধে না যেয়ে তাদের মাঝে আলিমের ছদ্মবেশে, ইসলামের সেবকের ছদ্মবেশে তাদের অনেক খাছ এজেন্ট ঢুকিয়ে দিয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না জামাত তার মধ্যে অগ্রগণ্য। মাসিক আল বাইয়্যিনাতে ইতোমধ্যে দলীল দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, মওদুদী ছিল সিআইএ’র চর। মূলতঃ সেই তখন থেকেই জামাতীরা সিআইএ’র চর রূপে এদেশে মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে এসেছে। দল, উপদল কোন্দলের সৃষ্টি করছে। হারামকে হালাল করছে। আর হালালকে হারাম করছে। দেশের অনেক মসজিদ মাদ্রাসা তারা দখল করে নিয়েছে।

কিন্তু তারপরেও আফগানিস্তান, ইরাক দখল করে নেয়ার পরও আমেরিকার বিরুদ্ধে তারা কোনো প্রতিবাদ জানায়নি। বিগত জোট সরকারের আমলে মইত্যা ও মইজ্জ্যা রাজাকারকে প্রায় ঘন ঘন দেখা যেত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি অ্যান পির্টাসের সাথে হাস্যরসযুক্ত অন্তরঙ্গ অবস্থানে।

এমনকি আজকে ঘূর্ণিঝড় উপলক্ষে মার্কিন রনতরীর আগ্রাসনে ধর্মপ্রাণ মুসলমান সবাই যখন উদ্বিগ্ন, উৎকণ্ঠিত তখন ইসলামের দাবীদার তথাকথিত জামাতে ইসলাম সহাস্যবদনে উচ্ছলতার সাথে মার্কিন যুদ্ধ জাহাজকে সাদর সম্ভাষণ জানিয়েছে। (নাউজুবিল্লাহ)

মূলতঃ ’৭১-এর রাজাকাররা আবার নতুন করে রাজাকারগিরির সুযোগ নিতে চায়। আবার নতুন করে হত্যা-লুণ্ঠন-ধর্ষণের মহাযজ্ঞ চালাতে চায়। এই হচ্ছে জামাতীদের দেশপ্রীতি। এই হচ্ছে জামাতীদের ইসলাম প্রীতি।

মূলতঃ ইসলামের লেবাছে এরা দাড়িওয়ালা খচ্চর। এরা নিকৃষ্ট মুনাফিক। এদের অবস্থান জাহান্নামের অতল গহ্বরে।

কাজেই এদের থেকে সাবধান! পুণঃপুণ সাবধান। ইসলামের দৃষ্টিতে এরা অস্পৃশ্য। এদেরকে কুরবানীর চামড়া তো দূরের কথা কুরবানীর পশুর রশিও দিলে সে কুরবানী বাতিল হবে।

যেমনটি বাতিল হয়েছিল কাবিলের কুরবানী। আকাশ থেকে আগুন এসে তার কুরবানীর পশুকে জ্বালায়নি। অর্থাৎ সে যুগের রীতি অনুযায়ী তার কুরবানী কবুল হয়নি। কারণ সে নরহত্যা করেছিল।

ঠিক নরঘাতক, রাজাকার, আল বাদর, জামাতী, খারিজী, কওমীদের কুরবানী একদিকে যেমন কবুল হবে না (তওবা না করা পর্যন্ত) তেমনি তাদেরকে কুরবানীর চামড়া দিলেও কুরবানী কবুল হবে না। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা নেক কাজে পরস্পর সহযোগিতা কর। বদ কাজে সহযোগিতা করো না।’

বলার অপেক্ষা রাখে না, জামাতী, খারিজী, কওমী মাদ্রাসায় কুরবানীর চামড়া দেয়া হবে সময়ের নিকৃষ্ট বদ কাজ। কুরবানী কুবল না হওয়ার মত অতি খারাপ ও নিন্দনীয় কাজ। আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে হিফাজত করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ আরিফুর রহমান, ঢাকা।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮

‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’- একটি সূক্ষ্ম ও গভীর ষড়যন্ত্রের প্রক্রিয়া অথচ নিশ্চুপ তথাকথিত খতীব, মহিউদ্দীন, আমিনী ও শাইখুল হাদীছ গং তথা তাবত ধর্মব্যবসায়ীরা- (১)

মওদুদীর নীতি থেকেও যারা পথভ্রষ্ট সেই জামাত- জামাতীদের জন্যও ভয়ঙ্কর মুনাফিক॥ আর সাধারণের জন্য তো বলারই অপেক্ষা রাখেনা

প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২