বর্তমান পনের শতকের মুযাদ্দিদ, ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, আওলার্দু রসূল, ঢাকা রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর একটি বিশেষ স্মরণীয় ক্বওল শরীফ হচ্ছে-“কিছু লোককে কিছুক্ষণের জন্য ধোকা দিয়ে রাখা যায়, কিন্তু সব লোককে সব সময়ের জন্য ধোকা দিয়ে রাখা যায়না।”
বারো আউলিয়া তথা হাজার হাজার আউলিয়ার রূহানী ফয়েজ সমৃদ্ধ এ বাংলাদেশ। ওলী আল্লাহ্গণের উছিলায় এ দেশের জনগোষ্ঠী মুসলমান। তাঁদের সিঞ্চিত ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহর বদৌলতেই এখনও এ জনগোষ্ঠীর হৃদয়ে ঈমানের শিখা দুর্বল হলেও দীপ্যমান। সে ম্রিয়মাণ ঈমানী ছটায় তাই তারা এখনও অনুভূতি প্রবণ যে, “যারা ইসলামী বা বুযূর্গ ব্যক্তিত্ব তারা ছবি তোলেননা, তারা নিজেরা বেপর্দা করা তো দূরের কথা বরং কোন মহিলা তাদের সামনে আসলে তারা চরম বিব্রত বোধ করেন, কঠোরভাবে নিবৃত্ত করেন। তারা ক্ষমতালিঞ্ঝু নন, তারা ইসলামের নামে দলীয় রাজনীতি করেননা ইত্যাদি ইত্যাদি।”
কিন্তু আখিরী যামানা বলে কথা। যেহেতু হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আখিরী যামানায় মূল দাজ্জাল আসার আগে কিছু দাজ্জালের চেলা আসবে। তারা এমন সব কথাবার্তা বলবে যা তোমরা শোননি, তোমাদের বাপ-দাদা চৌদ্দপুরুষ শোনেনি।”
উল্লেখ্য, হাদীস শরীফে উল্লিখিত এ মহলটি অধুনা প্রচার করছে, “এখন এ সময় ইসলামের কাজ করতে হলে ছবির দরকার আছে, এখন যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাতে মন্দের ভাল দলটিকে সমর্থন করলে ইসলামের জন্য ভাল হবে এবং ইসলামের জন্য সে প্রেক্ষিতে এখন সে দলটির প্রধান মহিলা নেতৃত্বকে সমর্থন করা জায়িয হবে, বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে ইসলামের ভালোর জন্য এখন সে মহিলা নেত্রীর সাথে দেখা করাও জায়িয হবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ইসলামের স্বার্থের জন্য এখন তার সাথে সামনা-সামনি বৈঠক করা, এক সাথে ইফতার করাও জায়িয হবে এবং বর্তমান সময়ের কারণে ইসলাম-এর শক্তি বৃদ্ধির জন্য এ বেপর্দা জনিত কবীরা গুণাহ্র দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করাও ঠিক হবে এবং ইসলামের প্রচার-প্রসারের জন্য তা পেপার-পত্রিকায় ছাপানোও জায়িয হবে এবং একইভাবে বর্তমান কালে ইসলাম টিকিয়ে রাখার জন্য নারী নেতৃত্বের সাথে জোট করাও জায়িয হবে।
অর্থাৎকিনা তারা নিজেরাও জানেন এবং তারাও মূলত এতদিন যাবৎ বলে আসছেন যে “ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, হারাম দলীয় রাজনীতি তথা গণতন্ত্র করা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম ও কবীরাগুণাহ্র কাজ। উল্লেখ্য, এক হারাম শত হারামের জন্ম দেয়। আর উল্লিখিত শত হারাম কাজ সমূহ হাজারো হারাম তথা কুফরীর জন্ম দিলেও তারা বর্তমান সময়ে ইসলামের দোহাই দিয়ে ঐসব হাজার হাজার হারাম কাজকে হালাল করছেন। অর্থাৎ এক্ষেত্রে তারা ইসলামের নামে হাজারো হারাম কাজ করলেও তাদের ভাষায় কল্পিত ইসলামটাই তাদের কাছে অতি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তারা দাবী করছেন। কিন্তু তাদের উচ্চারিত এত যে ইসলামের বুলি, যে- ইসলামের কথা বলে, ইসলামের জন্য ভাল হবে বলে, ইসলাম রক্ষা পাবে বলে, ইসলামের জন্য সুবিধে হবে বলে, ইসলামের জন্য সহায়ক হবে বলে, ইসলামী পরিবেশ তৈরী হবে বলে; তারা ছবি তুলে, বে-পর্দা হয়ে, হরতাল করে, লংমার্চ করে, ইসলামের নামে গণতন্ত্র করে, নারী নেতৃত্ব সমর্থন করে চারদলীয় জোট করলেন, চারদলের যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করলেন, সেখানে তারা তাদের যৌথ চার দলের ঘোষণায় লিখেছেন, “তাই আমাদের চারদলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এই যে, …….. ব্যাপক ঐক্যের ভিত্তিতে একটি দেশপ্রেমিক ও সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল শক্তিশালী সরকার গঠন করে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মুকাবিলা করা।”
পাঠক! লক্ষ্য করুন, এত যে এরা ইসলাম ইসলাম বলে ইসলাম রক্ষার জন্য ইসলামের নামেই ইসলাম বিরোধী হারাম কাজগুলো জায়িয করল; সে ইসলামের কথা এদের চুক্তিতে কোথায় রইল?
উল্লেখ্য, এখানে স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে যে, চার দলের লক্ষ্য হল সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সরকার গঠন করে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মুকাবিলা করা।
পাঠক! বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীলই যদি বলা হয় তাহলে এতসব ইসলামের বুলি আওড়ানো কেবলই ভাওতাবাজী বললে শেষ হয়না বরং একে অভিহিত করতে হয় ইতিহাসের জঘন্য ও নিকৃষ্ট মুনাফিকীরূপে। কারণ কথিত সংবিধান ইসলাম সম্মত নয় বা ইসলামী নয় বলেই তো সে সংবিধান বাতিল করে সবক্ষেত্রে ইসলামী করণের দাবীতে তাদের তথাকথিত ইসলামী দলের প্রচারণা। কিন্তু কথিত সংবিধানের প্রতিই যদি তারা পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল থাকেন বা সংবিধানকে যথার্থ বলে মনে করেন তাহলে তারা কার বিরুদ্ধে এতদিন বললেন? জনগণকে কিসের অনৈসলামিক আইন পালনের ভয় দেখালেন। এতদিন যাবৎ যে তারা কুরআন শরীফের আয়াত শরীফ উচ্চারণ করলেন “যারা আল্লাহ্ পাক-এর আইন অনুযায়ী বিচার করেনা তারা ফাসিক, জালিম, কাফির।” এবং সে আয়াত শরীফের মর্মবাণী দিয়ে যে জনগণকে সাবধান করতে চেষ্টা করলেন, নিজেদের দাবীকৃত ইসলামী দলের দিকে আহ্বান করলেন, সচেতন করলেন; সে জিহাদী জজবা এখন কোথায় গেল?
যে ইসলাম ইসলাম বলে, ইসলামের নামেই ইসলাম রক্ষার জন্যই তারা ইসলাম বিরোধী কাজকে জায়িয করল, ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, নারী নেতৃত্ব সমর্থন করলো সে ইসলাম এখন কোথায় পড়ে রইল? অর্থাৎ তারা ইসলামী স্বার্থের কথা বলে সব হারাম কাজকে হালাল করলেও নিজেদের স্বার্থের কারণে ইসলামের কথাই বেমালুম চেপে গেছেন। পরিপূর্ণ ধোকা, প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন এবং তারপরেও চুরির উপর জোচ্চুরির ন্যায় এখনও সে ইসলাম বিহীন মাত্রাকেও তারা ইসলামের নামেই চালাতে প্রচেষ্ট রয়েছেন এবং এখনো বলে যাচ্ছেন যে, তারা ইসলামপন্থীরা ইসলামের স্বার্থেই চার দলীয় জোটের সাথে আছেন।
অর্থাৎ বাদশাহ্ আকবরের আমলে উলামায়ে ‘ছূ’রা যেমন ইসলামের নামেই ইসলামের বিধিবিধানকে বিকৃত করেছিল, হালালকে হারাম করেছিল আর হারামকে হালাল করেছিল, ইসলামের নিশানা মুছে ফেলতে চেয়েছিল তথা বাদশাহ্ আকবরের দ্বীন-ই-ইলাহী সমর্থন করেছিল; তেমনি বর্তমান যামানার উলামায়ে ‘ছূ’রা যদিও মুখে ইসলাম ইসলাম করছে এবং ইসলাম রক্ষার জন্যই চার দলীয় জোট করছে বলে প্রচার করছে কিন্তু হাক্বীক্বত তারা দ্বীন ইসলামের পরিবর্তে দ্বীন-ই-জুমহুরী তথা দ্বীনে গণতন্ত্র তথা সাধারণ ক্ষমতার রাজনীতিই করছে।
তাই তারা আল্লাহ্ পাক-এর আইন নয় দেশের প্রচলিত সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কথা বলছে এবং সে সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধার কারণেই তারা হরদম ছবি তুলছে, বেপর্দা হচ্ছে, নারী নেতৃত্ব সমর্থন করছে, নির্বাচন করছে। অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক-এর রসূলের প্রচারিত যে দ্বীন ইসলাম, যাতে ছবি তোলা হারাম, বেপর্দা হওয়া হারাম, নারী নেতৃত্ব সমর্থন করা হারাম তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকছেনা। থাকছে প্রচলিত সংবিধানের প্রতি, গণতন্ত্র বা জুমহুরীর রীতি পদ্ধতির প্রতি তথা প্রচলিত রাজনীতির প্রতি। মূলতঃ যামানার পরিবর্তনের দোহাই দিয়ে অনৈসলামিক কাজকে জায়িয বলা তাদের কায়িমী স্বার্থবাদ হাছিলের জন্য এক প্রকাশ্য ছলনা ছাড়া আর কিছুই নয়। এবং এ ছলনা তারা এবারই নয় পূর্বেও দিয়েছেন এবং বরাবরই দিচ্ছেন। অথচ যামানার পরিবর্তনের দোহাই দিয়ে তারা ইতোমধ্যে সনাতন ইসলামের রূপরেখা যে ব্যাপকভাবে বাদ দিয়েছেন তা দিয়ে এতদিনেও ইসলামের কিছুই অর্জিত হয়নি বরং এক্ষেত্রে ঘাটতিই দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এবং এভাবে প্রথমে একটা তারপরে আরো একটা এবং তারপরে আরো একটা ইসলামী বিধান বাদ দেয়ার পথেই তারা বর্তমানে রয়েছেন। আর এভাবে চললে আরো কিছুদিন পরে তারা হয়তোবা এটাই সাব্যস্ত করে বসবেন যে, দ্বীন ইসলাম বলে আর আলাদা কোন কিছুর দরকার নেই। গণতন্ত্র করলেই ইসলাম করা হয় কারণ গণতন্ত্র আর ইসলাম সমার্থক বা বাদশাহ্ আকবরের মত দ্বীন-ই-ইলাহীর মত এখন দ্বীন ইসলাম বাদ দিয়ে দ্বীন-ই-জুমহুরীই করতে হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমান চারদলীয় জোট করার মাধ্যমে তারা প্রকাশ্য নারী নেতৃত্ব সমর্থন ও বেপর্দা হওয়াকেও কিছু মনে করছেননা। আর ছবি তোলা তো এখন তাদের জন্য মামুলী ব্যাপার। কিন্তু গত ৮/৯বছর আগেও ’৯৪ সালে ছবি তোলা যে হারাম তা অন্ততঃ মুখে স্বীকার করার মত ঈমানটা তাদের অবশিষ্ট ছিলো। যদিও তখনও তারা ইসলাম রক্ষার কথা বলে যামানার পরিবর্তনের দোহাই দিয়ে তা জায়িয করার অপচেষ্টা করছিলো। কিন্তু সে অপচেষ্টার মাঝেও তাদের দুর্বলতা ছিলো লক্ষ্যণীয়। তখন তারা তাদের “রাহমানী পয়গাম” নামক পত্রিকার শুরুর সংখ্যায় বলেছে, “যামানার পরিবর্তনে যদি বলা হয় যে, ছবি ছাড়া আন্দোলন চলেনা বা দ্বীনী দাবী আদায় হয়না, তাহলে একথা বাস্তবসম্মত হলে এমনভাবে ছবি তোলার অনুমতি দেয়া যেতে পারে যে, চেহারা স্পষ্ট বুঝা যায়না। যেমন পিছনের সাইড থেকে ছবি তোলা।”
তাদের এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর ২০তম সংখ্যায় “গোমরাহীতে যারা আকক্ত নিমজ্জিত হয়েছে” শীর্ষক মতামতে তখন বলা হয়েছিলো।
“……উল্লেখ্য, পিছনের দিক থেকেও যে ছবি তোলা নাজায়িয-হারাম, তা এতক্ষণে আলোচিত হয়েছে। আবার যারা এ ফতওয়া দিচ্ছেন, তারা যে মূলতঃ সামনে থেকেই ছবি তুলছেন বা তুলতে দিচ্ছেন তাও বুঝতে অসুবিধা হয়না। অর্থাৎ তাদের অবস্থাটা এমন যে, তারা আল বাইয়্যিনাতের দলীল প্রকাশের কারণে না পারছেন ছবিকে হালাল বলতে, আবার তাতে নিজেদের দুনিয়াবী স্বার্থসিদ্ধি হয়না বলে না পারছেন হারাম মানতে। তাই ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার মত নিজস্ব মনগড়া এক একটা ফাঁক-ফোঁকর বের করতে চাচ্ছেন যার আদৌ কোন ভিত্তি নেই। শরীয়তের বিচারে যা সম্পূর্ণরূপে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়; কারণ ইসলামী শরীয়ত কোন নির্দিষ্ট যুগের জন্য নয়; বরং সর্বকালের জন্য।
এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করে দিলাম এবং পরিপূর্ণ করলাম তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামতকে, আর ইসলামকেই তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।” (সূরা মায়িদা/৩)
কাজেই আজকে যারা বলছেন যে, যামানার পরিবর্তনে ছবির দরকার, তারা কি তবে ইসলামের বিধি নিষেধকে সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য মনে করেননা? ইসলাম কি তাদের দৃষ্টিতে পরিপূর্ণ নয়? তাদের এ বক্তব্য থেকে সহজ কারণেই তাই আরো যেসব প্রশ্ন উত্থাপিত হয় যে, তবে কি তারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে খাতামুন্ নবী হিসেবে মানেননা? তারা কি তবে কাদিয়ানী, শিয়াদের দোসর? তারা কি তবে এন.জি.ও খ্রীষ্টান মিশনারী, ইহুদী, নাস্তিক তথা মুরতাদদের দোসর?
নচেৎ তারা কিভাবে মনে করতে পারেন যে, যামানার পরিবর্তনে ইসলামে বর্ণিত সুস্পষ্ট হারাম হালাল হয়ে যাবে। উল্লেখ্য যে, কোন জিনিস প্রথমে ছোট থেকেই শুরু হয়। আজ তারা যামানার দোহাই দিয়ে ছবিকে জায়িয করেছেন।
আশঙ্কা অস্বাভাবিক নয় যে, এরপরে তারা হয়তো এক সময় বলে ফেলবেন, যামানার পরিবর্তনে আর পর্দার দরকার নেই, যামানার পরিবর্তনে শরাব খেতে অসুবিধা নেই, সুদ খেতে বাধা নেই, গান-বাজনাসহ যাবতীয় হারাম কাজ করতে কোনরূপ দ্বিধা নেই।” (মাসিক আল বাইয়্যিনাত জানুয়ারী’৯৫)
বলাবাহুল্য, আজকে ৮/৯ বছর পরে আমরা দেখতে পেলাম যে, মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর সে আশঙ্কাই সত্য প্রমাণিত হয়েছে। ’৯৪ সালে যারা যামানার পরিবর্তনে, ইসলামের স্বার্থ রক্ষার জন্য ইসলামী আন্দোলনের ক্ষেত্রেও ছবি সামনে থেকে তোলাকে খারাপ মনে করত, নাজায়িয বলত, এবং যাতে আকৃতি না বোঝা যায় এরূপভাবে পেছন থেকে ছবি তোলাকে কেবল গ্রহণ করতো, আকৃতি বোঝা যায় সে ছবি তুলতে দ্বিধান্বিত ছিল তারাই এখন ছবি কেবল সামনা-সামনি তোলাই নয় বরং ’৯৪ সালে মাসিক আল বাইয়্যিনাতে উল্লিখিত বক্তব্য, “পর্দার দরকার নেই,” সেটাকেই সত্য প্রমাণ করে নারী নেতৃত্বের সাথে উঠা-বসা করছে। এমনকি নারীর সাথে সহাবস্থানের ছবিও এখন ছাপছে। পাশাপাশি চারদলীয় জোটের সরকার যখন মদের লাইসেন্স দিলো তখন তারা সবাই একসাথে চুপ মেরে রইলো। তদুপরি এখনও যে সারাদেশে সুদভিত্তিক অর্থনীতি চলছে তার বিরুদ্ধেও তাদের কোন আওয়াজ নেই। এছাড়া তারা এখন বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত, ব্যান্ড-বাজনা, নাচ-গান সবই উপভোগ তথা জায়িয করছে। অর্থাৎ ’৯৪ সালে আল বাইয়্যিনাতে লিখিত মন্তব্য, “আশঙ্কা অস্বাভাবিক নয় যে, এরপরে এরা হয়তো এক সময় বলে ফেলবে, যামানার পরিবর্তনে আর পর্দার দরকার নেই, যামানার পরিবর্তনে শরাব খেতে অসুবিধা নেই, সুদ খেতে বাধা নেই, গান-বাজনাসহ যাবতীয় হারাম কাজ করতে কোনরূপ দ্বিধা নেই” এ মন্তব্যটিই সত্য প্রমাণিত করছে। আর তা হওয়াই স্বাভাবিক।
কারণ, তারা দ্বীন ইসলাম বাদ দিয়ে করছে প্রচলিত রাজনীতি, এম.পি. মন্ত্রী হওয়ার স্বার্থবাদী নীতি তথা দ্বীন-ই-গণতন্ত্র বা দ্বীন-ই-জুমহুরী। আর দ্বীন-ই-জুমহুরীতে উপরোক্ত সবকিছুই বিলকুল জায়িয।
-মুহম্মদ কাওছার জামান, ঢাকা।