একই অঙ্গে বহু রূপে সজ্জিত স, আ, ত, ম আলাউদ্দিনের  বিকৃত রুচি সম্পন্ন লিখার প্রতিবাদে

সংখ্যা: ১০৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

          সম্মানিত পাঠক সমাজ! মূর্খ সম্রাট আকবরের দরবারে বা তার সমসাময়িক যে সমস্ত দুনিয়াদার আলিম সমাজ স্বার্থের তাগিদে কুরআন-সুন্নাহ্র বিরোধীতা করে সম্রাট আকবর ও তৎকালীন সাধারণ মানুষকে গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট করে ফেলেছিলো তাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ্ সুলতান পুরী, মোল্লা আব্দুন্ নবী, মোল্লা আবু সাঈদ পানিপথী, মোল্লা মুবারক (নাগরী), আবুল ফযল ও ফৈজী প্রমুখ প্রধান ছিল। এই সমস্ত হিংসুক, ঝগড়াটে  স্বার্থান্বেষী, পথভ্রষ্ট উলামায়ে “ছূ”রা বাদশাহ্র শাহী দরবারে কুরআন-হাদীসের উপর সাড়াশি অভিযান চালিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে কুফরী ফতওয়া দিতো এবং তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলতো কে বাদশাহর নেক নজরে পড়ে তার থেকে উত্তম পারিতোষিক নিতে পারে।    আব্দুল্লাহ্ সুলতান পুরী ও আব্দুন্ নবীর মধ্যে এ ধরণের ঝগড়া হতো। একজন বলতো, “তোমার মধ্যে মারাত্মক ত্রুটি, এ জন্য তোমার পিছনে নামায জায়িয হবেনা।” আরেকজন বলতো, “তুমি তোমার বাপের নাফরমান (অবাধ্য) ছেলে, অতএব তোমার পিছনেই নামায পড়া নাজায়িয।”        বাহাস ও বিতর্কের সময় ইমাম-মুজতাহিদগণের দলীল পেশ করা হলে আবুল ফযল বলতো, “ওমুক হালুয়া বিক্রেতা এবং ওমুক চামড়াওয়ালার কথা দ্বারা তোমরা আমার যুক্তিকে খন্ডন করতে চাও?” ফৈজী শরাব পান করার সময় বলতো, “আমি এই পিয়ালা ফক্বীহ্দের অন্ধত্ব ও গোড়ামীর নামে পান করছি।”

 একজন মাওলানা ফতওয়ায় লিখলো, শরীরীক সুস্থতার জন্য ওষুধ হিসেবে যদি শরাব ব্যবহার করা হয় এবং তা পান করার ফলে যদি কোন ফিৎনা-ফ্যাসাদের সৃষ্টি না হয় তাহলে যে কোন অবস্থায় শরাব পান করা জায়িয।” (নাউযুবিল্লাহ্) মোল্লা আবু সাঈদ পানিপথী দাঁড়ী মুন্ডানোর দলীল ও যুক্তি এভাবে পেশ করলো, “জনৈক ছাহাবীর ছেলে দাঁড়ি মুন্ডন করে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, ‘বেহেশতবাসীদের আকৃতি এরূপই হবে।”  (নাউযুবিল্লাহ্)

সমসাময়িক ঐতিহাসিক “মুনতাখাবুত তাওয়ারীখের” মুছান্নিফ আব্দুল কাদের বাদায়ুনী বলেন, “এ সমস্ত দলীল যুক্তি প্রমাণ পেয়ে ৯৯০ হিজরীতে বাদশাহ এবং দরবারের বড় বড় কথিত আলিম-ফাযিলরা সকলেই দাঁড়ী মুন্ডন করে ফেলেন।” (নাউযুবিল্লাহ)

মাওলানা মাখদুমুল মুলূক ‘হজ্ব ফরয নয়’ বলে ফতওয়া দিলো। যাকাত সম্পর্কে সে টালবাহানা করে সকলকে এই বলেছিল, “প্রতি ছ’মাস অন্তর সম্পদের মালিক পরিবর্তন করে নিতে। ফলে পুরো এক বৎসর কেউ আর সম্পদের মালিক থাকবেনা সুতরাং যাকাত কারো উপর ফরয হবেনা।” (নাউযুবিল্লাহ)    একদা ঈদের চাঁদ নিয়ে শরীয়তের নির্ধারিত প্রমাণের পূর্বেই আকবর দুনিয়াদার আলিমদের দ্বারা ঈদের ঘোষণা দিয়ে মানুষের রোযা ভঙ্গ করায়। একজন বুযুর্গ আবুল ফজলের সাথে সাক্ষাৎ করেন রোযাদার অবস্থায়। আবুল ফযল বললো, ‘বাদশাহ্ স্বয়ং চাঁদ দেখে রোযা ভঙ্গ করেছেন।” বুযুর্গ ব্যক্তি বললেন, “চাঁদ সম্পর্কে শরীয়তের কোন সাক্ষ্য মিলেনি। আর বর্তমান বাদশাহ্ হচ্ছেন বেদ্বীন। অতএব তার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য নয়।”  তখন আবুল ফযল গ্লাস ভর্তি পানি জোর করে বুযুর্গের মুখের নিকট তুলে ধরেন। এতে তিনি ভীষণ রাগান্বিত হন এবং আবুল ফযলকে বলেন, “আলিমের সঙ্গে সৌজন্যমূলক আচরণ করা উচিত।” এতে আবুল ফযল লজ্জিত হয় এবং বুযুর্গের নিকট ক্ষমা চেয়ে নেয়।

পাঠক সমাজ! অনারবী মোল্লা মোবারক নাগরীর ইল্মের গভীরতা সম্পর্কে কিতাবে এতটুকু পর্যন্ত বর্ণিত আছে, “নুকতা বিহীন অক্ষর দ্বারা পবিত্র কুরআন শরীফের তাফসীর লিখে সে সেই জামানার আলিম, মুজতাহিদ, ইমামদেরকে তাক লাগিয়ে দেয়। তার নুকতাবিহীন অক্ষর দ্বারা লিখিত তাফসীরটির নাম হলো “সাওয়াতিউল ইলহাম।”  শোনা যায়, সে ইজতিহাদের দরজা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। কিন্তু এত যোগ্যতা থাকার পরও মোল্লা মোবারক নাগরী দরবারের অন্যান্য দুনিয়াদার আলিমদের মতই শরাব পান করা, সুদ, জুয়া হালাল হওয়া, দাঁড়ী মুন্ডানো, ফরয গোসল অস্বীকার করা, বাদশাহ্কে সিজদা করা, পর্দা প্রথা উঠিয়ে দেয়া, হজ্ব করতে না যাওয়া ও যাকাত দানে অনুৎসাহিত করা সম্পর্কে একমত ছিলো।  আর মূর্খ আকবর তার তোষামোদকারী এই সমস্ত দুনিয়াদার আলিমদেরকে যুগের হযরত ফখরুদ্দীন রাযী  রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইমাম গায্যালী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর চেয়েও বেশী বড় মনে করতো।

পাঠকবর্গ! বাদশাহ্ আকবরের সময়কার দুনিয়াদার আলিম সমাজ আর বর্তমান সময়ের নামধারী মুখোশপরা পার্থিব স্বার্থ পূজারী মাওলানাদের মধ্যে ব্যবধান কোথায়?  বর্তমানে সমগ্রবিশ্বে একদিনে ঈদ করা, পর্দা প্রথা, ছবি তোলা, হরতাল, মিটিং-মিছিল করা, ভোট দেয়া, মুর্তি তৈরী, কুশপুত্তলিকা দাহ্, সহশিক্ষা জায়িয করা, ব্যাংক-বীমার সুদী অর্থ হালাল হওয়া, ক্লোনিং এবং টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদান করার ব্যাপারে দুনিয়াদার আলিমরা সকলেই একমত হয়েছে।  গণতন্ত্রের ব্যাপারে কেউ কেউ বলছে, “ছিদ্দীকে আকবর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে খলীফা নির্বাচিত হয়েছেন, বিধায় বর্তমান সময় গণতন্ত্র করা ও ভোট দেয়া সম্পূর্ণ শরীয়ত সম্মত এবং বৈধ।” (নাউযুবিল্লাহ্)    আবার এক শ্রেণীর মাওলানারা বলে থাকে, “ওমুক ইফতা, ফিক্বাহ বোর্ড ও ওমুক ওমুক দেশের গ্রান্ড মুফতীগণ ছবি তোলা ও ব্যাংকের সুদ জায়িয বলেছেন।” (নাউযুবিল্লাহ্)   আবার কারো কারো ধারণা যে, “সৌদি আরব আমাদের চেয়ে একদিন আগে ঈদ করে। আমরা কেন তাদের সাথে মিলে একদিনে ঈদ করিনা? আমাদের মাওলানা-মৌলভীরা কি নবীর দেশের আলিমদের চেয়ে বড় হয়ে গেলেন? তারা কি আপনাদের চেয়ে কুরআন-হাদীস কম বুঝেন? ইত্যাদি ইত্যাদি।” এই হচ্ছে হাল জামানার দুনিয়াদার আলিম তথা উলামায়ে ‘ছূ’দের অবস্থা।    এই জামানার উলামায়ে ‘ছূ’দের দেখে আফসুস হয় এজন্য যে, তারা কুরআন-হাদীসের ইল্ম অর্জন করার পরও বাদশাহ আকবরের সেনাপতি মানসিংহ ও টোডরমল হতে নিম্নের স্তরে চলে গিয়েছে। কারণ সুস্থ বুদ্ধি সম্পন্ন মানসিংহ ও টোডরমল মূর্খ বাদশাহ আকবরের বিকৃত মস্তিষ্ক সম্পন্ন দ্বীন-ই-ইলাহীর নীতিমালা সম্পূর্ণরূপে বর্জন করেছিল। তারা কখনো এটা মেনে নিতে পারেনি। কিন্তু এই জামানার তথাকথিত আলিম তথা উলামায়ে ‘ছূ’র দল সকল নীতি ও বিবেক বুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে কুরআন-সুন্নাহ্র সম্পূর্ণ বিরোধীতা করে নফ্সের গোলামী করছে। বর্তমানে আমাদের সমাজে ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন ফিরক্বাবন্দী। যেমন, এদের মধ্যে খারিজী, ওহাবী, কাদিয়ানী, মুনাফিক নামধারী সুন্নী, লা-মাযহাবী, আহ্লে হাদীস ইত্যাদি ফিরক্বাগুলো সবাই যার যার মতো কুরআন-হাদীসের অপব্যাখ্যা করে সাধারণ মুসলমানদের ধোকা দিয়ে তাদের মূল্যবান ঈমানটুকু হরণ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।   “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” প্রকাশ হবার পর থেকে এ সমস্ত ঈমান বিধ্বংসী বাতিল ফিরক্বাগুলোর হাক্বীক্বত উন্মোচিত হয়ে যায়। মানুষ সত্যিকার ভাবে বুঝতে পারে কুরআন-সুন্নাহ ও সত্যিকারের দ্বীন কি? তাই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দ্বীনি বিষয়ে নানা মাসয়ালা-মাসায়িল এবং সমসাময়িক উদ্ভূত পরিস্থিতির মুকাবিলায় বিবিধ সমস্যার ব্যাপারে মাসিক “আল বাইয়্যিনাত-এর গবেষণা কেন্দ্রে” সমাধান চেয়ে থাকে। আজ মানুষ বুঝতে পেরেছে, একমাত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাতই কুরআন-সুন্নাহ, ইজ্মা ও ক্বিয়াসের সূক্ষ্ম দৃষ্টির আলোকে এর সমাধান দিতে সক্ষম।”  আর এজন্যই ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, মুযাদ্দিদুয্ যামান, আওলার্দু রসূল ঢাকা রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বাংলা মূলুকের যে স্থানেই যাননা কেন এমনকি তিনি যদি প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলেও মাহ্ফিল করতে যান তবে সেখানেও লোকজন অত্যন্ত আদবের সাথে তাঁকে বিভিন্ন সুওয়াল, জিজ্ঞাসা করে তার জবাব শুনে নেন।       কতক খারিজী ও নামধারী সুন্নী মাওলানারা যারা তাঁর বিরোধীতা করে তারা পর্যন্ত ফতওয়ার ব্যাপারে রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর মুখাপেক্ষী হয়ে আছে।     কাজেই প্রকাশ্যে বিরোধীতা করলেও আসলে তারা রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর  ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর হক্ব হওয়া সম্পর্কে কুরআনে বর্ণিত কাফিরদের অনুরূপ আপন সন্তান-সন্তুতির চেয়েও অধিক ভালরূপে অবগত। কিন্তু তারপরেও নিজেদের সম্মান ভুলুক্তিত হয় বিধায়- নিজেদের মুনাফিক রূপে সাব্যস্ত করে থাকে।

পাঠক বর্গ! যতক্ষণ পর্যন্ত সাপ মরে সোজা সটান হয়ে শুয়ে না পড়বে ততক্ষণ পর্যন্ত লাঠি চলতেই থাকবে। চিন্তা করুন, মুনাফিক ভেজাল সুন্নী মুরুব্বীদের মুহব্বতের নমুনা দেখে। আমরা তাদের মরে যাওয়া মুরুব্বীদের প্রসঙ্গ টানতে আগ্রহী নই। অথচ এই মুনাফিক সুন্নীরা তাদের তথাকথিত মুরুব্বীদের কবর থেকে টেনে-হিচড়ে বের করে আমাদের সামনে পেশ করে অনুরোধ জানায় যাতে আমরা তাদের কাফির, মুশরিক, আজাযিল, ইহুদী, পথভ্রষ্ট বলে ঘোষণা দেই। যেমন, আব্দুর রহমান চোহরভী ছাহেব তার দরুদ শরীফের কিতাবে এবং আহমদ রেযা খান তার “ফতওয়ায় আফ্রিকাতে” হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মাটির তৈরী মানুষ বলেছেন। অথচ সুন্নীরা মাঠে-ময়দানে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘আল্লাহ্ পাক-এর জাতি নূর’ বলে গলাবাজি করছে।  এমনকি ২০০১/ঈসায়ী শিয়া তত্বে বিশ্বাসী রেজভীদের মুখপত্র নভেম্বর সংখ্যার ৩২ পৃষ্ঠায় ছদ্মবেশী ‘বৈঠক খানার’ লেখক ‘মনাম’ লিখেছে, “নবীকে প্রথম মাটির মানুষ বলেছিল আযাযিল ইবলিস খন্নাস।” উক্ত সংখ্যার ৩৩ পৃষ্ঠায় সে আরো লিখেছে, “সেই মাহবুবে খোদা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যারা দাস বলে, সাধারণ মানুষ বলে, মাটির মানুষ বলে থাকে তারা কুরআনের হুকুম মুতাবিক ইহুদীদের দোসর! মুনাফিক!! কুফফার!!!”   পাঠক বর্গ! তাদেরই কথামত প্রমাণিত হলো, চোহরভী ছাহেব এবং আহমদ রেযা খাঁ আযাযিল, খন্নাস, ইহুদীদের দোসর, মুনাফিক এবং কাফিরের অন্তর্ভুক্ত।  রেজভী লিখকরা পীরে কামিল হযরত মাওলানা মুহম্মদ শামসুদ্দোহা, মাওলানা সাইয়্যিদ শোয়াইব আহমদ, মাওলানা মুহম্মদ আব্দুল হালীম, মুফতী মুহম্মদ ইবনে ইসহাক, মাওলানা মুহম্মদ ফজলুল হককে মিথ্যা যুক্তি দেখিয়ে অন্যায়ভাবে কাফির ফতওয়া দিয়েছে।

এ ফতওয়া যদিও তাদের প্রতি প্রযোজ্য নয়; তবুও তারা সবাই জীবিত। জীবিত লোকদের তওবা করার সুযোগ থাকে; কিন্তু চোহ্রভী ছাহেব এবং আহমদ রেযা খানের কি হবে? এদের জন্য তো সে সুযোগ শেষ হয়ে গেছে।  অতএব প্রমাণিত হলো, তারা কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। পাঠক সমাজ! ২০০২/ঈসায়ী ফেব্রুয়ারী-মার্চ সংখ্যায় ৫৫ পৃষ্ঠায় নাদান স.আ.ত.ম আলাউদ্দীন লিখেছে, “এই সঙ্গীন মূহূর্তে মু’যিযায়ে রাসূলে আরাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম …… আহমদ রেযা খান বেরেলীর নেতৃত্বের কল্পনাই করা যায়না। …… মুসলমানদের কি হতো …. ।” (নাউযুবিল্লাহ্।   আসতাগফিরুল্লাহ! আহমদ রেযা খাঁ নাকি রসূলের মু’জিযা? নবী-রসূলের মু’জিযাতে কোন ভুল-ভ্রান্তি থাকে নাকি?           খান ছাহেব যে ভুলের মহা সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে, “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় তার ফতওয়া, মাসয়ালার ভুলের ফিরিস্তি, ইবারত কারচুপি ও জালিয়াতীর ইতিহাস তুলে দেয়া হচ্ছে। যদি বুকের পাটা থাকে তাহলে রেজভী মূর্খরা অন্তত একটার জবাব দিক। কিন্তু তারা সেটা পারবেনা।      আফসুস! খান ছাহেবের জন্য। নিজের মত প্রতিষ্ঠার জন্য সে জোড়া-তালি দিয়ে ফতওয়ার কিতাবের পৃষ্ঠাই শুধু ভরেছে। আর তার মূর্খ জাহিল অনুসারীরা সেটাকে “রসূলের মু’জিযার সাথে তুলনা করে হযরত নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র মু’জিযার প্রতি সন্দেহ পোষণ করে নিজেদেরকে চির জাহান্নামী হিসেবে সাব্যস্ত করলো।” কেননা নবী রসূলের মু’জিযা সকল প্রকার ভুলত্রুটি থেকে মুক্ত।    পাঠক সমাজ! এরপর ৫৮ পৃষ্ঠায় এই জাহিলটা লিখেছে, “আল বাইয়্যিনাত নাকি মানতিক(যুক্তিবিদ্যা) ও হিকমত (দর্শন)কে নাপাক ইল্ম বলেছে।”

এর জবাবে বলা যায়, “আল বাইয়্যিনাত” কখনো তার নিজের থেকে কিছু বাড়িয়ে বলেনা। “আল বাইয়্যিনাত সকল সময় কুরআন-সুন্নাহ ও পূর্ববর্তী ইমাম-মুজতাহিদ সলফে সালিহীনদের অনুসরণ অনুকরণ করে থাকে। ” যুক্তি বিদ্যা ও দর্শনের সেটুকুই পড়া জায়িয যা মুসলিম দর্শনের সাথে সম্পৃক্ত।  কিন্তু গ্রীকদর্শন বিশেষ করে অ্যারিষ্টোটল ও প্লেটোর যুক্তি ও দর্শন  থেকে মুসলিম মনীষী, ছূফী, আলিমগণ মানুষকে দূরে থাকার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি গ্রীক দর্শনের বিরোধীতায় মুসলিম মনিষীগণ অনেক কিতাবও লিখেছেন। কারণ মানতিক ও দর্শনের বাড়াবাড়ির দরুণ শেষ পর্যন্ত মানুষের মূল্যবান ঈমানটুকু পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়।  এজন্য পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী ইমাম-মুজতাহিদ ও আলিমগণ যারা ইল্মে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফের সাথে মানতিক ও দর্শন চর্চা করেছেন। তারা সেটাকে অতিরিক্ত বা চতুর্থ বিষয় হিসেবে চর্চা করেছেন। কিন্তু কেউই এ দুটি বিষয়কে ইল্মে দ্বীনের প্রধান বিষয় হিসেবে নেননি। তাছাউফবিহীন মানতিক ও দর্শনের চর্চা যে আত্মা ও শরীরের জন্য কত ক্ষতিকর তার উদাহরণ ‘মুহাদ্দিস ইবনে হাজম।’  ইবনে খালকানের মতে, “মানতিক সম্পর্কে ‘ইবনে হাজমের’ বাড়াবাড়ির দরুণ তৎকালীন ফক্বীহগণ তাকে দ্বীপান্তর পর্যন্ত করে ছাড়েন।” আল্লামা শিবলী তাঁর “ইলমুল কালাম” গ্রন্থে বলেন, “মানতিক এবং কালামের প্রতি ঝুঁকে পড়াই ছিল ‘ইবনে হাজমের’ সবচেয়ে বড় অপরাধ।”  মানতিকের বাড়াবাড়ি সম্পর্কে মাওলানা রুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “যুক্তিবাদীদের (মানতিকবাদীদের) পদযুগল কাষ্ঠ নির্মিত। এগুলো শক্ত হয় বটে, তবে কোথাও ঠিক হয়ে বসেনা।”   তিনি আরো বলেন, “এই তর্কালোচনা(মানতিক) যদি আক্বল দ্বারা কাজ হতো তাহলে ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহিই ধর্মের গুপ্ত রহস্য সম্পর্কে জ্ঞানী হবেন।  হিকমত (দর্শন) এর ক্ষতিকারক ইল্ম সম্পর্কে “মসনবীতে” আরো বর্ণিত আছে, “দার্শনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দর্শনের ক্ষেত্রে শতাধিক ফযীলত ও কামালিয়াতের অধিকারী। কিন্তু এই জালিম তার নিজের সম্পর্কেই বে-খবর।”   দার্শনিক খুবই নিম্নমানের বোধগম্য বস্তুর কথা বলে, তার জ্ঞান এখনও দহলিজের বাইরে পা রাখেনি। আল্লামা মুরতাযা হুসাইনী শরহে ইহ্ইয়া উলূম গ্রন্থে বলেন, “যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম মানতিকের দোষত্রুটি উদ্ঘাটন করেন তিনি হলেন, আবু সাঈদ সীরাফী। অতঃপর কাজী আবু বকর, কাজী আব্দুল জাব্বার, জুবাই, ইবনে জুবাই, আব্দুল মায়ানী, আবুল কাসেম আনসারী, ইবনে তাইমিয়া প্রমুখ। এতদ্ভিন্ন গ্রীক দার্শনিকদের যুক্তি ও হিকমত (দর্শন) খন্ডন করার জন্য হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম আল গায্যালী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর তোহফাত আল ফালসাফা, মিশকাতুল আনোয়ার, জাওয়াহিরুল কুরআন, শায়খে ইশরাক-এর আল ইশরাক, হিকমাতুল ইশরাক, ইবনে তাইমিয়ার আর রদ্দে আলাল মানতিক, রদ্দে ফালসাফা (হিকমত) ইমাম হযরত ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর শরহে ইশারাত, মাবাহিসে মাশরি, ফিয়াহ, রদ্দে আলাল মানতিক, মাতালিবে আলীয়া, নিহায়াতুল উকুল প্রমুখ ইমামদের লিখিত গ্রন্থ রয়েছে মানতিক ও হিকমত বিদ্যার ত্রুটি ও অসারতা সম্পর্কে। কলেবর বৃদ্ধির দরুণ আরো অধিক গ্রন্থের আলোচনা আমাকে এড়িয়ে যেতে হলো। মানতিক বিদ্যা ও দর্শনের খারাবী সম্পর্কে একটি ঘটনা বর্ণনা করা হলো, যা থেকে পরিস্কারভাবে প্রমাণিত হবে, তাছাউফবিহীন মানতিক, হিকমত (দর্শন) বিদ্যা কেবল নাপাকই নয় বরং তার চেয়েও ক্ষতিকর। বিশ্বখ্যাত “নাফাহাতুল উন্স” গ্রন্থে হযরত মোল্লা জামী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, “একদা হযরত বড় পীর আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর খলীফা শায়খ আবূ নজীব সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ভাতিজা হযরত শেখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে সাথে নিয়ে হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দরবার শরীফে যান। তিনি বলেন, “হে শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি! আমার এই ভাতিজা হিকমত (দর্শনের) প্রতি অধিক ঝুঁকে আছে। আমি বারবার তাকে চেষ্টা করি এই বিষয় থেকে ফিরাতে কিন্তু সে আমার কথা শুনেনা। আপনি যদি দয়া করে তার প্রতি নেক দৃষ্টি দিতেন।”  বলা বাহুল্য, তখন বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি জালালী দৃষ্টিতে হযরত শেখ শিহাবুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দিকে তাকালেন, সাথে সাথে তার আত্মা থেকে হিকমত তথা মানতিকের নাপাক ও কুফরী ইল্ম দূরীভূত হয়ে গেলো। এ ব্যাপারে হযরত শেখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বয়ং বলেন, “গাউসুল আযম হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি যখন জালালী দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন তখন আমি নিজেকে সম্পূর্ণ দর্শন (হিকমত) শুন্য অবস্থায় পেলাম।” (সুবহানাল্লাহ)     পাঠক! এ ঘটনা থেকে পরিস্কারভাবেই বুঝা যায় যে, কোন কোন ক্ষেত্রে দর্শন ও যুক্তিবিদ্যা মানুষকে কুফরী পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয়।

পাঠক সমাজ! আল বাইয়্যিনাত ৯৯তম সংখ্যায় লিখা হয়েছিল, “রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর উছীলায় আসমান-যমীন, মরুভূমি ও পর্বতের গুহায় বসবাসকারী সবাই ফয়েজপ্রাপ্ত হয়ে থাকে।”        এর জবাবে কটাক্ষ করে এই মূর্খটা লিখেছে, “এত ফয়েজ কোন্ পাইপ লাইন দিয়ে তার কাছে আসে? তিনি কি চট্টগ্রামের ফয়েজ লেক লিজ নিয়েছেন?”     এর উত্তরে এই মূর্খটাকে যদি শুধু নাদান, জাহিল, বেয়াকুফ বলা হয় তাতেও কম বলা হবে। কারণ, সে বোধ হয় কোন দিন কোন বুযুর্গের থেকে বিন্দু থেকে বিন্দুতম তাওয়াজ্জুহ্-ফয়েজ তার আত্মায় উপলব্দি করেনি। যদি করতো তবে সে এভাবে কথা বলতো না। আর সে বুঝবে কি করে? কারণ, তাদের মুরুব্বীরা যুগ যুগ ধরে পাকিস্তান সীমান্ত দেশ থেকে চাঁদাবাজি করার জন্য এদেশে এসে সব হাতড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে এবং যাচ্ছে। কাজেই চাঁদাবাজি আর পেট পূঁজার ধান্ধায় যাদের নফ্স মরদুদ, ইবলিস হয়ে গিয়েছে তারা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ্ বুঝবে কি করে? আর মুরুব্বীরা যেখানে ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ্ বুঝতে অক্ষম সেখানে সাগরীদদের কথা তো মূখে না নেয়াই ভাল। পাঠক সমাজ! এরপর ছদ্মবেশী আলাউদ্দীন লিখেছে, “যদি একটি হাদীস মেশকাত শরীফে থাকে, সে হাদীসখানা মেশকাতের যত ব্যাখ্যাগ্রন্থ আছে তার সবটিতে তো থাকবেই। সুতরাং মেশকাত উল্লেখ করার পর …. সমস্ত ব্যাখ্যা গ্রন্থ গুলোর নাম …. উল্লেখ করার প্রয়োজন নাই …. যা উলামায়ে কিরামদের দৃষ্টিতে জালিয়াতী।”  পাঠক সমাজ! এর জবাবে তারা আমাদের বুঝিয়ে দিলো, মিশকাত শরীফের একটি শরাহ তাদের কণ্ঠনালীর নীচে নেমেছে।  সম্মানিত পাঠক সমাজ! সাধারণতঃ পরীক্ষায় পাশ করা বা কোন রকম উত্তীর্ণ হবার জন্য নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক পাঠ করাই যথেষ্ট; কিন্তু যখন বোর্ড ষ্ট্যান্ড বা প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করার বাসনা কারো থাকে তখন পাঠ্য পুস্তক ব্যতিরেকেও সিলেবাসের বাইরে তাকে প্রচুর কিতাবের রেফারেন্স এবং বহু লেখকের উদৃতি  পরীক্ষার প্রশ্ন পত্রে তুলে ধরতে হয়। যাতে সর্বোচ্চ বা অধিক নাম্বারের উপযোগী হয়। কাজেই “আল বাইয়্যিনাত”-এ একটি হাদীস শরীফের একাধিক শরাহ্ উল্লেখ করার অর্থই হচ্ছে, “মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর গবেষকদের নিকট একাধিক শরাহ্-এর ইল্ম রয়েছে এবং বাইয়্যিনাত সমগ্র মুসলিম বিশ্বে প্রথম শ্রেণীর ইসলামি পত্রিকাগুলোর মধ্যে প্রথম সারির।”   পাঠক সমাজ! এরপর লক্ষ্য করুন, বে-আদব, পথভ্রষ্ট, গোমরাহ্, খৃষ্টান-ইহুদীদের চেয়েও নিকৃষ্ট থেকে নিকৃষ্টতর কতিপয় রেজভী গন্ড-মূর্খদের আক্বল সমঝের মাত্রা। তাদের শিয়া তত্ত্বের মুখপত্রের ফেব্রুয়ারী-মার্চ সংখ্যায় ৮ পৃষ্ঠার মাসের ফজিলত বিষয়টির উপর একবার দৃষ্টিপাত করুন। সেখানে উপরে লিখা হয়েছে, “এ মাসে ওফাত প্রাপ্ত কয়েকজন আউলিয়া।” এরপর প্রথমেই রেজভী মুরুব্বী আব্দুর রহমান চোহারভী এবং পাচঁ নম্বরে দিয়েছে, হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্বনামধন্য অন্যতম জলিলুল ক্বদর ছাহাবী হযরত আবু যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর নাম মুবারক।

পাঠকবর্গ! বেয়াদবি এবং মূর্খতারও একটা সীমা আছে। কিন্তু এখানে সমস্ত সীমা অতিক্রম করে সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে তারা কি এটাই বোঝাতে চায় যে, জলিলুল ক্বদর ছাহাবী হযরত আবূ যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর মর্যাদা-ফযীলত আব্দুর রহমান চোহারভীর চেয়ে অনেক নিম্নে? (নাউযুবিল্লাহ্) আমরা দ্ব্যর্থহীন ও সোচ্চার কক্তে বলতে চাই, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একজন উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ছাহাবীর মর্যাদা নিয়ে কে তাদের ছিনিমিনি খেলার অধিকার দিল? হাশরে, মিজানে, পুলসিরাতে তারা কিভাবে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মুখ দেখাবে? আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি প্রশ্ন করেন, “কি কারণে একটি সাধারণ আদনা উম্মতের নীচে আমার বরকতময় দর্শন ও ছোহবত প্রাপ্ত ছাহাবীর নাম লিখা হল? তোমাদের নিকট কি আমার এই বাণী পৌঁছেনি যে, আমার ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ আল্লাহ পাক-এর রাস্তায় অর্ধ ছা গম দান করে যে ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, পরবর্তী উম্মতগণ উহুদ পাহাড় সমপরিমাণ স্বর্ণ দান করলেও সেই ফযীলত প্রাপ্ত হবেনা।”   সম্মানিত পাঠক সমাজ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এই প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া, অতঃপর কতিপয় রেজভীদের নিরুত্তর থাকা, তারপর আস্তে আস্তে জাহান্নামের জলন্ত অংগার হওয়া ব্যতীত তাদের আর কোন গত্যন্তর আছে কি?  তখন কি এই বাহানা কোন কাজে আসবে যে, “ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! জিলহজ্ব মাসের প্রথম তারিখে চোহারভী জন্মগ্রহণ করেছে বলে তার নাম আগে দিয়েছি এবং হযরত আবু যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ৮ই জিলহজ্বে পয়দায়েশ হয়েছেন বলে তাঁর নাম পাঁচ নম্বরে রেখেছি।”  বিদগ্ধ সূধী পাঠক সমাজ! আপনারা হয়তো পাশ্চাত্যের খৃষ্টান লেখক মাইকেল এইচ হার্টের নাম শুনে থাকবেন। সে তার শত মনীষী রচনা সমগ্র বইয়ে (তাদের নবী ও রসূল) হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আগে যমীনে তাশরীফ এনেছেন তথাপি আদব ও তাযীমের খাতিরে সে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক তার বইয়ের প্রথমেই স্থান দিয়েছে। তারপর দ্বিতীয় স্থানে রেখেছে হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালামকে। এ থেকে সে সমস্ত জগৎবাসীকে বুঝিয়ে দিলো, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদিও সবশেষে যমীনে আগমন করেছেন; কিন্তু তাঁর মর্যাদা, ফযীলত আশরাফিয়াত সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের চেয়েও অনেক অনেক উর্ধ্বে। মাইকেল এইচ হার্ট ভাল করেই জানেন। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে আল্লাহ্ পাক তাদের জাতি ও ইহুদী সম্প্রদায়কে সরাসরি স্পষ্টভাষায় বিভ্রান্ত ও গযবপ্রাপ্ত বলেছেন। তথাপি সে সজ্ঞানে, স্বেচ্ছায় এই আদব দেখালো। অথচ মুসলমান নামধারী মুনাফিক, তথাকথিত সুন্নীদের জন্য হাজারো আফসুস। তারা নামকাওয়াস্তে কালেমা পড়া মুসলমান হয়েও খৃষ্টান মাইকেল এইচ হার্টের চেয়েও নিকৃষ্ট স্তরে নামলো। তাদের এই বিষয়টি দেখে সকল বিদগ্ধ পাঠক সমাজ বুঝে নিলেন, আসলে আদব প্রকাশের ব্যাপারে তারা খৃষ্টান লেখক মাইকেল এইচ হার্টের চেয়েও অধম।  পরিশেষে, আমরা ছদ্মবেশী আলাউদ্দীন মনামের মত লিখকদের বলতে চাই, যদি তারা তাদের মুরুব্বীদেরকে জনগণের রোষানল থেকে বাঁচাতে চায় তবে তাদের মুখে তালা লাগানো উচিত।  অন্যথায় মাসিক আল বাইয়্যিনাত তাদের লিখিত কিতাব থেকে ভুলত্রুটি তুলে দিয়ে তাদের মুরুব্বীদের হাল-হাক্বীক্বত ও গোমর ফাঁস করে দিবে।

-মুহম্মদ শফিকুল আলম, মতিঝিল, ঢাকা।

“মাসিক আল বাইয়্যিনাত”  আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের মুখপত্র  (দ্বিতীয় পর্ব)   

খতমে নুবওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) (তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড)

রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের পূর্বে র্ববহৃত লক্বব বা উপাধি এবং তার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ

ইলমে আকলিয়ার দৈন্য এবং বিলায়েতের অনুপস্থিতির কারণে প্রকৃত আলিমে দ্বীন তৈরি হচ্ছে না।

একই অঙ্গে বহু রূপে সজ্জিত স,আ, ত, ম আলাউদ্দিনের বিকৃত রুচি সম্পন্ন লিখার প্রতিবাদে