একটি কথোপকথন লংমার্চ, হরতাল, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী, কুশপুত্তলিকা দাহ; অতঃপর কি আপনারা এই পথের ………অভিমুখে

সংখ্যা: ১১৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

আচ্ছা আল বাইয়্যিনাতে যে প্রায়ই বলা হয় বিজাতীয় অনুসরণ-অনুকরণ হারাম; সে কথা কি ঠিক?  ঃ হ্যাঁ, ঠিক। ু বিশেষ করে এ প্রসঙ্গে আল বাইয়্যিনাতে ‘‘হে নবী (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্ পাককে ভয় করুন। আর কাফিরদের ও মুনাফিকদের অনুসরণ করবেন না।’’ “যে ব্যক্তি দ্বীন-ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম  (বিধর্মী ও বিজাতীয়দের নিয়ম-নীতি ও তর্জ-তরীকা) তলব বা অনুসরণ করে, তার থেকে তা কখনই গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে (অবশ্যই) ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হবে। সুরা আহযাব-এর এ আয়াত শরীফ ও সূরা আলে ইমরান-এর আয়াত  শরীফ কি সত্য নয়? হ্যাঁ, অবশ্যই সত্য। এর ব্যাখ্যায় যে হাদীস, মাসিক আল বাইয়্যিনাতে দেয়া হয়, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।’’ (মুসনাদে আহমদ, সুনানে আবু দাউদ) এ হাদীস শরীফ কি সত্য নয়? জ্বী, তা সত্য তো বটে। তাহলে লংমার্চ -এর প্রবর্তক কি কট্টর নাস্তিক মাওসেতুং নয়? হ্যাঁ, তাই। হরতালের প্রবর্তক কি কট্টর হিন্দু গান্ধী নয়? হ্যাঁ, গান্ধীই হরতালের প্রবর্তক। মৌলবাদের প্রবক্তা কি খ্রীস্টান প্রোটেস্ট্যান্ট নয়? হ্যাঁ, তারাই। ব্লাসফেমী আইন কি ইহুদী-নাছারার ধর্ম রক্ষার আইন নয়? হ্যাঁ, তাই। কুশ পুত্তলিকা দাহ কি হিন্দু সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত নয়?  হ্যাঁ, দৃশ্যত তাই। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে কুরআন-সুন্নাহর স্পষ্ট নিষেধ থাকার পরও আপনারা তা করছেন কেন? আসলে আমরা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে তা করছি। যেহেতু লংমার্চ, হরতাল, ব্লাসফেমী, মৌলবাদ, কুশপুত্তলিকাদাহ্ এগুলো এখন সারা বিশ্বে প্রতিবাদের কর্মসূচী তথা ভাষা হিসেবে বহুল অনুসৃত তথা সারা বিশ্বে প্রচলিত। কাজেই এ ভাষায়ই প্রতিবাদ জানালে তাতে সারা বিশ্বের মিডিয়া তৎপর হয়, সরকার বিব্রত বোধ করে। অন্যথায় সনাতন ইসলামী পদ্ধতিতে কাজ করলে, মিডিয়া তাতে আমল দেয়না, স্বদেশ-বিশ্ব কোথাও সাড়া পড়েনা। মিডিয়ার দৃষ্টি আকৃষ্ট হওয়া, স্বদেশ-বিশ্বে সাড়া পড়াটাই তাহলে প্রতিবাদের ভাষার পিছনে মুখ্য হওয়া উচিৎ। হ্যাঁ, তবেই তো প্রতিবাদ সফল। ইরাকের উপর আমেরিকার হামলা সমর্থন করেন? মোটেও নয়। এরও তো তাহলে প্রতিবাদ করা দরকার। হ্যাঁ, অবশ্যই প্রতিবাদ করা দরকার। জ্বি এরও প্রতিবাদ হয়েছে। আপনি যেভাবে বলেছেন, মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষিত হওয়া, সারা বিশ্বে টনক নড়া সেভাবেই হয়েছে। আপনার মতাদর্শের আলোকে মন্তব্য করা হয়েছে। ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া স্টেটের বেশ কয়েকজন মহিলা শান্তি অভিযানের ক্ষেত্রে বেশ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। বুশ প্রশাসনের ইরাকের প্রতি আগ্রাসী আচরণ এবং সেখানে যুদ্ধের প্রতিরোধ করতে তারা বিবস্ত্র হয়ে শান্তি অভিযানে নেমেছেন, বিবস্ত্র দেহের মাধ্যমে তারা ‘‘নো ওয়্যার, ‘পিস’ লিখে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।’’ এদিকে অস্ট্রেলিয়াতেও ৭শরও বেশী নারী বিবস্ত্র শরীর দিয়ে নো ওয়ার লিখে যুদ্ধের প্রতিবাদ জানিয়েছে।      নিউ সিটিতে ৩০ জন বিবস্ত্র দেহে সেন্ট্রাল পার্ক পরিভ্রমণ করে। তুষারপাতের মধ্যে হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে বিবস্ত্র নারীরা ৫ ইঞ্চি বরফের উপর শুয়ে পড়ে। তখন তারা “নো বুশ” লেখায় পরিণত হয়।

এর আগে গত নভেম্বরে সানফ্রান্সিসকোতে নারীরা বিবস্ত্র হয়ে ইরাকে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে।”    অর্থাৎ এ কথা এখন বলতে হয় যে, বিবস্ত্র হয়ে প্রতিবাদ করা, বিবস্ত্র শরীরে অক্ষর লেখা এখন হাল যামানার প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে গণ্য! এ প্রসঙ্গে প্রতিবাদী নেত্রী শিহানের বক্তব্য “আমরা সবাই সাধারণ মধ্যবিত্ত এবং মার্জিত পরিবারের সদস্য। আমরা সাধারণতঃ গোসল করতে গিয়েও সম্পূর্ণ কাপড় খুলে রাখিনা। কিন্তু সেই আমরাই প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমাদের বিবস্ত্র দেহকে ব্যবহার করছি।”   উল্লেখ্য, তাদের এ মন্তব্য আর আপনাদের বক্তব্যের মাঝে অমিলটা কোথায়? কি রকম? যেমন তারাও বলছে যে তারা এমন লোক যারা গোসল করতে গেলেও বিবস্ত্র হয়না; এখন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, প্রতিবাদের তীব্র ভাষা হিসেবে প্রকাশ্যেই বিবস্ত্র হচ্ছে। আর আপনারাও বলছেন যে, বিজাতীয়-বিধর্মীয় আদর্শ, ছবি তোলা, নারী নেতৃত্ব সমর্থন ইত্যাদি হারাম-নাজায়িয তা আপনারা মানেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে প্রতিবাদের বলিষ্ঠ ভাষা হিসেবে আপনারা লংমার্চ, হারতাল, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী, কুশপুত্তলিকা দাহ, এসব বিজাতীয় কর্মসূচী আপনারা পালন করছেন।

সুতরাং পরিস্থিতির প্রেক্ষিতেই যদি যেনোতেনো কিছু করতে হয়; তাহলে প্রতিবাদী বিবস্ত্র নারীর বিবস্ত্র হওয়ার প্রবনতা, আর আপনাদের হারাম কর্মসূচী মানসিকতা; ইসলামের দৃষ্টিতে কি দুটোই হারামের মধ্যেই পড়েনা? এখন প্রশ্ন হল যে, এসব কর্মসূচী দ্বারা কি আপনারা নিজেদের সফল মনে করছেন? এসব কর্মসূচীর দ্বারা জানানো প্রতিবাদে কি কর্তৃপক্ষের টনক নড়েছে? তারা সাড়া দিয়েছে? না পড়েনি। তারা সাড়া দেয়নি।  তাহলে কি আপনাদের প্রতিবাদ এখনও যথেষ্ট জোরদার হয়নি? হ্যাঁ, খুব জোরদার হয়েছে তা বলা যায়না। এরপরে তাহলে কি প্রতিবাদের ভাষাও আরো জোরদার করার জন্য আমেরিকার প্রতিবাদী নারী শিহানের মত বিবস্ত্র হয়ে প্রতিবাদ জানাবেন?

কারণ প্রতিবাদী নারী শিহানের মত এটাই বর্তমানে সবচেয়ে শক্ত প্রতিবাদের ভাষা। সেটা আমাদের আমীর, শাইখ, মুফতি, মাওলানা সাহেবরাই ঠিক করবেন। কিন্তু তাহলে আপনারা সেই বিজাতীয় অনুসরণের পাল্লায়ই পড়লেন। কারণ, যদিও এখন কানাডা, ক্যালিফোর্নিয়া, অষ্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মেয়েরা এরূপ বিবস্ত্র হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু এধারণার প্রবর্তক হচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ার ৭২ বছর বয়সী মহিলা চিত্রকর ডোনা শীহান। সে স্বপ্নে এই কর্মসূচী পেয়েছে বলে দাবী করেছে। বলাবাহুল্য, ইবলিছই তাকে এ স্বপ্ন দেখিয়েছে।

অর্থাৎ তাহলে আপনারা লংমার্চ এর মাওসেতুং হরতালের গান্ধী, মৌলবাদ এর খ্রীষ্টান প্রোটেষ্ট্যান্ট; ব্লাসফেমীর ইহুদী-নাছারার মত; এরপরে বিবস্ত্র হয়ে প্রতিবাদের ক্ষেত্রে ক্যালিফোর্নিয়ার ডোনা শীহান এর অনুসারী হবেন? (নাউযুবিল্লাহি মিন  যালিক)

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান।

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৪

প্রসঙ্গঃ গণতন্ত্র; এখনই চরম সময়, বিষয়টি ভাবিবার- ১০

একটি অভূতপূর্ব ওয়াজ শরীফ এবং কম্পিউটারে কুরআন শরীফ, মাজার শরীফের উপরে ভাসমান দৃশ্য ও তাঞ্জানিয়ার সেই ছেলের কথা

প্রসঙ্গঃ দরসে বুখারীর পঞ্চদশ বছর পূর্তি নামধারী জাহিরী আলিমদের ডামাডোলের বিপরীতে মুজাদ্দিদুয্ যামানের পরিচয়

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৫