এগারো হিজরী সনের পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার ইয়াওমুল আরবিয়ায়িল আখির বা শেষ বুধবারের সঠিক তারিখ প্রসঙ্গে

সংখ্যা: ২৫৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

‘পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ’ আমাদের কাছে অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ এবং বরকত, রহমত, সাকীনা হাছিলের দিন। হাদিয়া মুবারক দেয়া এবং দান-ছদক্বা করার দিন। ‘আখির’ অর্থ শেষ এবং ‘চাহার শোম্বাহ’ অর্থ ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার।

হিজরী সনের পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবারকে পবিত্র ‘আখিরী চাহার শোম্বাহ’ শরীফ বলা হয়। কারণ এগারো হিজরী সনের পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার দিন আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বেশ কিছু দিন মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করার পর এই দিনে ছিহহাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। ফলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এই দিনে খুশি মুবারক হয়ে সাধ্যমতো হাদিয়া মুবারক দিয়েছিলেন। কিন্তু চাঁদের গণনা অনুযায়ী ‘শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার ২৯ তারিখে ছিলো, নাকি ৩০ তারিখে ছিলো’ তা আমাদের আলোচ্য বিষয়।

এখানে প্রথমেই যে বিষয়টি মনে রাখতে হবে, তা হচ্ছে- পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বিশেষ দিনগুলোর ক্ষেত্রে যে তারিখ পাওয়া যায়, তার সাথে সঙ্গতি রেখেই তারিখ বিশ্লেষণ করতে হবে। যেমন, ১০ম হিজরী সনের পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার আরাফার পবিত্র দিন (৯ তারিখ) ছিলো জুমুয়াবার।

আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ উনার তারিখ পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার। আবার পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার শেষ বার ছিলো ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার। ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবারে পবিত্র ছফর শরীফ মাস শেষ না হলে পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার হবে না। অবশ্যই পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস, ইয়াওমুল খামীস বা বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়েছিলো।

এখন প্রশ্ন, সেই ১১ হিজরী সন উনার পবিত্র ছফর শরীফ মাস ২৯ দিনে, নাকি ৩০ দিনে হয়েছিলো- তা নির্ণয় করতে হলে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে প্রাপ্ত তারিখগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে গণনা করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে ১০ হিজরী সনের পবিত্র যিলক্বদ শরীফ মাস থেকে গণনা করলে আমাদের হিসাব মিলাতে সুবিধা হবে। ১০ হিজরী সনের পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার আমাবস্যা সংঘটিত হয়েছিলো ২৫শে ফেব্রুয়ারি ৬৩২ ঈসায়ী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা বা মঙ্গলবার।

চাঁদ তালাশ করা হয়েছিলো ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার। সেদিন চাঁদের বয়স ছিলো ১৮ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট, উচ্চতা ৭ ডিগ্রি ২৬ মিনিট, কৌণিক দূরত্ব ৯ ডিগ্রি ৪৭ মিনিট। পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে চাঁদ দৃশ্যমান হয়েছিলো কিন্তু পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে চাঁদ দৃশ্যমান হয়নি।

পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার চাঁদ দেখা গিয়েছিলো বলেই ইয়াওমুল খামীস বা বৃহস্পতিবার দিন ছিলো পবিত্র পহেলা যিলহজ্জ শরীফ এবং ইয়াওমুল জুমুয়াহ বা জুমুয়াবার ছিলো পবিত্র ৯ই যিলহজ্জ শরীফ (আরাফার দিন)।

কিন্তু পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে চাঁদ দেখা যায়নি; তার প্রমাণ হচ্ছে- ইয়াওমুল খামীস বা বৃহস্পতিবার থেকে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস গণনা করলে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার বার ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার মিলানো অসম্ভব। সুতরাং আমরা এবার পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মাস গণনা নিয়েই আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

পবিত্র যিলক্বদ শরীফ মাস ইয়াওমুল খামীস বা বৃহস্পতিবার ৩০ দিনে পূর্ণ করে পবিত্র পহেলা যিলহজ্জ শরীফ মাস শুরু হয়েছিলো ইয়াওমুল জুমুয়াহ বা জুমুয়াবার। পবিত্র ২৯শে যিলহজ্জ শরীফও ছিলো ইয়াওমুল জুমুয়াহ বা জুমুয়াবার। পবিত্র ২৯শে যিলহজ্জ শরীফ, জুমুয়াবার পবিত্র মুহররম শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও চাঁদ দেখা যায়নি। তাই পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হয়েছিলো। ফলে ৩০শে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ ছিলো ইয়াওমুস সাবত বা শনিবার। অতঃপর পবিত্র পহেলা মুহররম শরীফ ছিলো ইয়াওমুল আহাদ বা রবিবার। আর পবিত্র ২৯শে মুহররম শরীফও ছিলো ইয়াওমুল আহাদ বা রবিবার।

পবিত্র ২৯শে মুহররম শরীফ, ইয়াওমুল আহাদ বা রবিবার পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখা যাবার সম্ভাবনা থাকলেও চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে পবিত্র মুহররম শরীফ মাসও ত্রিশ দিনে পূর্ণ হয়।

পবিত্র ৩০শে মুহররম শরীফ ছিলো ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার। আর পবিত্র পহেলা ছফর শরীফ ছিলো ইয়াওমুছ ছুলাছা বা মঙ্গলবার। সেদিন পবিত্র ছফর মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনারও ৩০ দিন গণনা করা হয়। আর সে বছর পবিত্র ২৯শে ছফর শরীফও ইয়াওমুছ ছুলাছা বা মঙ্গলবার। পবিত্র ৩০শে ছফর শরীফ ছিলো ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার।

সুতরাং প্রতিভাত ও প্রমাণিত হচ্ছে যে, ১১ হিজরী সনের পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার ছিলো ৩০শে ছফর শরীফ।

সে সময় পরপর কয়েকটি মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হবার কয়েকটি কারণ বর্ণনা করা হলো-

(১) এখন মোবাইলের যুগে আমরা বিভিন্ন অঞ্চলের খবর সহজেই পেয়ে যাই; তখন তা সম্ভব ছিলো না। ফলে প্রতিটি শহর আলাদাভাবে চাঁদ দেখতো।

(২) সে সময় ঘনবসতি ছিলো না। ফলে কোনো কারণে কোনো অঞ্চলের আকাশ মেঘলা থাকলে লোকজন চাঁদ দেখতে না পেলে তারিখ পরিবর্তিত হয়ে যেতো।

(৩) ১০ হিজরী সনের পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস এবং ১১ হিজরী সনের পবিত্র মুহররম শরীফ মাস এবং পবিত্র ছফর মাস শুরু হয়েছিলো গ্রীষ্মকালে (মার্চ-এপ্রিল)। অর্থাৎ সে সময় পবিত্র মদীনা শরীফ উনার আকাশ মেঘলা থাকাই ছিলো স্বাভাবিক।

(৪) মরুঝড় অনেক সময় চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।

প্রকৃত কারণ মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই ভালো জানেন।

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম