খাতামুন নাবিইয়ীন, খাতামুল মুরসালীন, খতীবুল আম্বিয়ায়ি ওয়াল উমাম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত

সংখ্যা: ২২১তম সংখ্যা | বিভাগ:

قل لا اسئلكم عليه اجرا الا الـمودة فى القربى

অর্থ : “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন, (হে বিশ্ববাসী) আমি তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাইনা। তবে আমার আত্মীয়-স্বজন উনাদেরকে মুহব্বত ও তা’যীম-তাকরীম করবে।” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)

আওলাদুর রসূল অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশধরগণ উনাদের ফযীলত সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে- রইসুল মুফাসসিরীন, ওলীয়ে কামিল আল্লামা হযরত কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, পবিত্র এ আয়াত শরীফ উনার এরূপ  ব্যাখ্যা করি যে-

لا اسئلكم اجرا الا ان تودوا اقربائى واهل بيتى وعترتى وذلك لانه صلى الله عليه وسلم كان خاتم النبين لا نبى بعده وانما انتصب للدعوة الى الله بعده صلى الله عليه علماء امته من اهل الظاهر والباطن ولذلك امر الله تعالى نبيه صلى الله عليه وسلم ان يأمر امته بمودة اهل بيته لان عليا رضى الله تعالى عنه والائمة من اولاده كانوا قطبا بالكمالات الولاية.

অর্থ : “আমি তোমাদের নিকট প্রতিদান চাইনা তবে তোমরা আমার নিকটাত্মীয়, আহলে বাইত শরীফ ও বংশধরগণ উনাদের (সম্মান প্রদর্শন কর) হক্ব আদায় কর। কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন আখিরী বা শেষ নবী। উনার পরে কেউ নবী হিসেবে আগমন করবেন না।” সুতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দাওয়াতের দায়িত্ব কেবলমাত্র উনার উম্মতগণের মধ্যে যারা ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফে পরিপূর্ণ উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের উপরই বর্তিয়েছে। আর সে জন্যই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নির্দেশ করেছেন যে, তিনি যেন স্বীয় উম্মতগণকে নির্দেশ দেন, তারা যেন উনার আওলাদগণ উনাদেরকে সম্মান (তা’যীম-তাকরীম) করে। কেননা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিত বংশধরগণ উনাদের মধ্যে ইমামগণই ছিলেন কামালাত ও বিলায়েত সম্পন্ন কুতুব।” (তাফসীরে মাযহারী ৮ম জিলদ ৩২০ পৃষ্ঠা)

উপরোক্ত আলোচনায় যেটা প্রতীয়মান হচ্ছে তা হলো- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরে যেহেতু আর কেউ নবী হবেন না; সেহেতু নুবুওওয়াত উনার এ মহান দায়িত্ব পালনের একচ্ছত্র অধিকারী হচ্ছেন যাঁরা উনার ওয়ারিছ, বংশধর বা আওলাদগণ অথবা যাঁরা নায়িবে নবী বা ওয়ারাছাতুল আম্বিয়া হিসেবে স্বীকৃত উনারা।

এ সম্পর্কে “তাফসীরে মাযহারী” কিতাবের ৮ম জিলদ ৩২০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে-

ومن اجل ذالك ترى كثيرا منا المشائخ تنتهى الى ائمة اهل البيت ومضى كثيرا من الاولياء فى السادات العظام منهم غوث الثقلين محى الدين عبد القادر الجيلانى الحسنى الحسينى وبهاء الدين النقشبندى والسيد السند مودود چيشتی وسيد معين الدين الچيشتی وابو الحسن الشاذلى وغيرهم

অর্থ : “আর এ জন্যই পীর-মাশায়িখ উনাদের অনেক সিলসিলা দেখা যায়; যা হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ইমামগণ পর্যন্ত শেষ হয়েছে এবং অসংখ্য আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম অতীত হয়েছেন উনারা এ (সাইয়্যিদ) বংশেরই অন্তর্ভুক্ত। যেমন- গাউছে ছাক্বালাইন মুহিউদ্দীন হযরত বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমামুদ দুনিয়া ফি ইলমিল ফিক্বহে ওয়াত তাছাউফ আল্লামা হযরত বাহাউদ্দীন নকশবন্দী বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা হযরত সাইয়্যিদ মওদুদ চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি, সুলতানুল আরিফীন ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত সাইয়্যিদ খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি, শায়খুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ হযরত আবুল হাসান সাজালী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রমুখ। তদ্রূপ বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউসুল আ’যম, হাবীবুল্লাহ রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্তর্ভুক্ত।

আওলাদে রসূল তথা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশধরগণ উনাদের ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে-

হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,

والله لادخل قلب امرئى مسلم ايمان حتى يحبكم لله ولقرابتى

অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক উনার কছম! ততক্ষণ পর্যন্ত কোন মুসলমান ব্যক্তির অন্তরে ঈমান দাখিল হবে না (হাক্বীক্বীভাবে ঈমানদার হবে না) যতক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্য, আমার বংশধর হওয়ার কারণে আমার আওলাদ উনাদেরকে মুহব্বত না করবে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, ইবনে কাছীর শরীফ ৭/১৮০) অর্থাৎ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত ঈমানের অঙ্গ।

এ সম্পর্কে ইমামুল আইম্মাহ, ইমামুল আ’যম, হাকিমুল হাদীছ হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার জীবনী মুবারক-এর একটি ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। একবার তিনি একস্থানে বসে স্বীয় ছাত্রদেরকে দরস দিচ্ছিলেন। তখন তিনি কিছুক্ষণ পর পর বারবার দরস বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যেতেন। যার কারণে ছাত্রদের পড়া বুঝতে ও ধরতে অসুবিধা হতো। যখন দরস শেষ হলো, তখন ছাত্ররা প্রশ্ন করল, “হে হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি! বেয়াদবী ক্ষমা করবেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, আপনি বারবার দর্স বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন এর পিছনে কি কারণ রয়েছে?” উত্তরে তিনি বললেন যে, “তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছ যে, আমাদের দরসগাহের পাশেই কিছু ছোট ছেলেরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। তন্মধ্যে অমুক ছেলে উনি বারবার আমার নিকটবর্তী হলেই আমি দাঁড়িয়ে যেতাম।” ছাত্ররা বললো যে, “হ্যাঁ, আমরা তা লক্ষ্য করেছি। তবে এ ছোট ছেলেটি আপনার নিকটবর্তী হলে কেন দাঁড়িয়ে যেতেন, অনুগ্রহ করে তার কারণ আমাদেরকে জানিয়ে দিন।” তখন ইমামে আ’যম হযরত আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন যে, “এ ছেলেটি আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এই ছেলেটির সাথে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রক্ত মুবারক উনার সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্য যখনই তিনি আমাদের দর্সগাহের নিকটবর্তী হয়েছেন তখনই আমি উনার সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে যাই। কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওলাদগণ উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শন করা ঈমানের অঙ্গ তথা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশ মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!

 মুহম্মদ আলাউদ্দীন আল আযাদ

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম