ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিক পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার বরকতময় রাত্রিতে উনার সম্মানিতা চাচাতো বোন হযরত উম্মে হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার হুজরা শরীফে অবস্থান করা নিয়ে কাফির, মুশরিক, নাস্তিক ও মুনাফিকদের মিথ্যা অপপ্রচারের দলীলভিত্তিক জবাব

সংখ্যা: ২৭৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَاِنَّكَ لَعَلٰى خُلُقٍ عَظِيْمٍ

অর্থ: “নিশ্চয়ই (হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি সর্বোত্তম চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী”। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা ক্বলম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ- ৪)

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আখলাক্ব বা চরিত্র মুবারক বেমেছাল থেকে বেমেছালতম, পুত:পবিত্র, সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত চরিত্র মুবারক নিয়ে যারা চূ চেরা ও কীল ও কাল করে তাদের অন্তরে নেফাকী থাকায় তারা মনগড়া, মিথ্যা অনুমানমূলক অবমাননা করে বক্তব্য দিয়ে থাকে। নাউযূবিল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে এলোমেলো কথা তারাই বলে যারা কাট্টা কাফির মুশরিক নাস্তিক ও মুনাফিক। কারণ তারা অপবিত্র তাই তারা অন্যকেও তাদের মত মনে করে। তারা নোংড়া তাই তারা অন্যকেও অনুরুপ মনে করে। নাউযুবিল্লাহ!

উল্লেখ্য যে, মালউন ইবলীস সে সাইয়্যিদুনা আবুল বাশার হযরত ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে কষ্ট দিয়েছে এবং উনার বিরোধিতা করেছে। পরবর্তীতে ইবলীস এবং তার অনুসারীরা যুগে যুগে সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কষ্ট দিয়েছে। এখনও সেই ইবলীসের অনুসারী কাট্টা কাফির আবূ জাহিল, আবূ লাহাব ও মুনাফিক উবাইর বংশধররা রয়েছে। তাদের কাজই হলো মনগড়া দলীলবিহীন অপপ্রচার করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়া। নাউযুবিল্লাহ! বর্তমানে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিদ্বেষমূলক লেখনী প্রচার করে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ।

সমস্ত মুসলমানদেরকে সতর্ক থাকতে হবে এসব কুলাঙ্গার কাফির মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র থেকে। এদের ষড়যন্ত্রের জালে পা দিলে ধ্বংস হওয়া ছাড়া কোনই গত্যন্তর থাকবে না। কাফির মুশরিক মুনাফিকরা যেমন শুরু থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কে বিভিন্ন রকম মিথ্যা ও মানহানীকর কথা বলেছে এখনও বলছে। নাউযূবিল্লাহ!

যেমন, তারা বলছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নাকি মি’রাজ শরীফ রাতে হযরত উম্মে হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার সাথে রাত কাটিয়েছেন। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!

কাফির ও মুনাফিকদের উক্ত মিথ্যাচারের জাওয়াবে কয়েকটি বিষয় উল্লেখযোগ্য।

প্রথমত বলতে হয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াবী হায়াত মুবারক উনার ছয় বছর বয়স মুবারক পর্যন্ত উনার মহাসম্মানিতা হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মুবারক তত্ত্বাবধানে অবস্থান মুবারক করেন। অতপর, পরবর্তী দুই বছর ২ মাস দশ দিন অর্থাৎ দুনিয়াবী হায়াত মুবারক অনুযায়ী আট বছর ২ মাস দশ দিন বয়স মুবারক পর্যন্ত তিনি উনার মহাসম্মানিত দাদা হযরত সাইয়্যিদুনা জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক তত্ত্বাবধানে অবস্থান মুবারক। এরপর ৮ বছর ২ মাস দশ দিন বয়স মুবারক থেকে অবস্থান মুবারক চাচা আবু তালিব উনার নিকট। ব্যবসা সূত্রে উনার চাচার সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে ছফর মুবারকও করেন।

প্রায় ৪২ বছর ধরে আবু তালিব তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দিয়েছেন। কুরাইশদের চরম বিরোধিতা সত্বেও তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে শক্ত প্রতিবাদ করেছেন। আবু তালিব উনার যাবতীয় কার্যক্রম নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই কেন্দ্র করে।  নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন আবু তালিব উনার পরিবারের প্রধান ব্যক্তিত্ব। কাজেই, উনাদের ব্যাপার নিয়ে সমালোচনা করার কোন অবকাশ নেই।

দ্বিতীয়ত বলতে হয়, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সময় আবু তালিবকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে নিয়োজিত করেন। সে সময় তিনি স্থাবর-অস্থাবর উনার অনেক সম্পত্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতের জন্য আবু তালিব উনার জিম্মাদারিত্বে প্রদান করেন। যা আবু তালিব উনার সম্পদের সাথে মিলিত হয়ে যায়। আনুষ্ঠানিকভাবে মি’রাজ শরীফ সংঘটিত হওয়ার আগেই আবু তালিব ইন্তেকাল করেন। হযরত উম্মে হানী বিনতে আবূ তালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার হুজরা শরীফ বলতে যা বুঝানো হয়, তা মূলত আবু তালিব উনারই বাড়ীর একটা অংশ। যেখানে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারও মালিকানা রয়েছে। কাজেই, নিজস্ব সম্পদে যাতায়াত করা নিয়ে সমালোচনা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।

তৃতীয়ত বলতে হয়, হযরত উম্মে হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি আবু তালিব উনার লখতে জিগার মেয়ে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম ও হযরত জাফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের আপন বা সহদর বোন। সর্বপোরি তিনি মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আপন চাচাতো বোন। কাজেই, তখনো যেহেতু পর্দার হুকুম নাযিল হয়নি, সেহেতু চাচাতো বোনের দেখা করার বিষয়ে সমালোচনারও কোন সুযোগ নেই।

চতুর্থত বলতে হয় যে, আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র মি’রাজ শরীফ সংঘটিত হওয়ার বরকতময় রাত্রে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উম্মে হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার ঘরে একা ছিলেননা। বরং উনার সাথে আরো কয়েকজন ছিলেন। আর এ সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ করা হয়, আনুষ্ঠানিকভাবে মি’রাজ শরীফ সংঘটিত হওয়ার বরকতময় রাত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার চাচাতো বোন হযরত উম্মু হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা

উনার বাড়ির এক হুজরা শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করছিলেন। তখন উনার এক পার্শ্বে শুয়ে ছিলেন প্রাণপ্রিয় চাচাজান সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত হামযা আলাইহিস সালাম তিনি এবং অন্য পাশে ঘুমিয়ে ছিলেন চাচাতো ভাই হযরত জাফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি। এমতাবস্থায় হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনি ও হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম উনারা হুজরা শরীফ-এ প্রবেশ করে সালাম পেশ করেন এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অত্যন্ত তা’যীম-তাকরীম করে মসজিদুল হারাম (কা’বা শরীফ) উনার হাত্বীমের নিকটে নিয়ে আসেন। (ফতহুল বারী)

মূলত, সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার পূর্বে আবু তালিব উনার বাড়ী ছিলো সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রধান কেন্দ্র। যাবতীয় তা’লীম-তালকীন ও র্দস-তাদরীস এখানেই অনুষ্ঠিত হতো। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা দিনের বেলা রোজগারে বের হতেন আর মাগরিবের পরে আবু তালিব উনার বাড়ীতে একত্রিত হতেন, ছোহবত মুবারক নিতেন। বিশাল বাড়ীর বিভিন্ন কামরায় এ তা’লীম মুবারক অনুষ্ঠিত হতো। কাজেই, আনুষ্ঠানিকভাবে মি’রাজ শরীফ সংঘটিত হওয়ার রাতে হযরত উম্মে হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অবস্থান মুবারক করার কথা বলা হলেও সেটা মূলত আবু তালিব উনার বিশাল বাড়ীর অংশ বিশেষ। যা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো। হযরত উম্মে হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে জড়িয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূতপবিত্র এবং পবিত্রতা দানকারী চরিত্র মুবারক নিয়ে চু-চেরা, কীল-কাল করার কোন সুযোগ জগতের কারো নেই। উনার পূতপবিত্র এবং পবিত্রতা দানকালী চরিত্র মুবারক নিয়ে যারা এলোমেলো কথা বলে নিসন্দেহে তারা চির মালঊন, চির লাঞ্চিত, আশাদুদ দরজার জাহিল, মিথ্যাবাদী এবং কাট্টা কাফির ও চিরজাহান্নামী। এদের থেকে সাবধান থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ।

মহান আল্লাহ পাক তিনি যামানার মহান মুজাদ্দিদ ও ইমাম সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুরশিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উছীলায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে সর্বাধিক বিশুদ্ধ আক্বীদাহ এবং সর্বোচ্চ হুসনে যন পোষণ করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

-সাইয়্যিদা আহমদ আয়িশা ছিদ্দীক্বা।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম