তাফসীরুল কুরআন সুমহান সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল

সংখ্যা: ২৮৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

يَاۤ اَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَآءَتْكُمْ مَّوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَشِفَآءٌ لِّمَا فِىْ الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِيْنَ. قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْـمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مِّـمَّا يَـجْمَعُوْنَ

তরজমা: “হে মানুষেরা! তোমাদের মহাসম্মানিত রব তায়ালা উনার তরফ থেকে মহান নছীহতকারী, অন্তরের মহান আরোগ্য দানকারী, মহান হিদায়েত দানকারী এবং মু’মিনদের জন্য মহান রহমত দানকারী তোমাদের নিকট তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছেন। (অতএব, আমার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি (উম্মতদেরকে) বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ফদ্বল ও মহাসম্মানিত রহমত স্বরূপ আপনাকে যে তারা পেয়েছে, সেজন্য তাদের প্রতি কর্তব্য তথা ফরয হচ্ছে খুশি মুবারক প্রকাশ করা। এই খুশি মুবারক প্রকাশের ইবাদত হচ্ছে, তাদের সমস্ত ইবাদত অপেক্ষা উত্তম বা শ্রেষ্ঠ।” (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭, ৫৮)

তাফসীর: উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে যিনি লিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি কায়িনাতবাসীর প্রতি  দায়িমীভাবে উনার মহাসম্মানিত হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ামত মুবারক সমূহের  জামি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ তিনি সকলের জন্য নছীহত মুবারক দানকারী, শিফা মুবারক দানকারী, হিদায়েত মুবারক দানকারী, রহমত মুবারক দানকারী। এই সুমহান ও সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মুবারক কায়িনাতবাসী লাভ করার কারণে শোকরানা স্বরূপ তাদেরকে খুশি মুবারক প্রকাশ করতে আদেশ মুবারক করা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, এই খুশি মুবারক প্রকাশ করার বিষয় মুবারক, ইবাদত বা আমল মুবারক সমস্ত ইবাদত বা আমল থেকে শ্রেষ্ঠ। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই, মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত স্বরূপ পাওয়ার কারণে কায়িনাতবাসীকে অবশ্যই শুকরিয়া আদায় করতে হবে। এটা ফরযে আইন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَأَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ

অর্থ: আপনার মহান রব তায়ালা উনার দেয়া নিয়ামত মুবারক প্রকাশ করতে বলুন।  (পবিত্র সূরা দ্বুহা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম  হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত স্বরূপ পাওয়ার কারণে কায়িনাতবাসী তথা সমস্ত বান্দা-বান্দী ও উম্মত, জিন-ইনসান, পুরুষ-মহিলা, ছেলে-মেয়ে, ছোট-বড় সকলকে অবশ্যই শুকরিয়া আদায় করতে হবে।

এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ ۖ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِيْ لَشَدِيْدٌ

অর্থ: স্মরণ করুন ঐ সময়ের কথা যখন তোমাদের রব তায়ালা মহান আল্লাহ পাক তিনি ঘোষণা করলেন, যদি তোমরা (নিয়ামত মুবারক উনার) শুকরিয়া আদায় করো, তবে অবশ্য অবশ্যই আমি তোমাদেরকে আরো অধিক নিয়ামত দান করবো। আর যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় না করো তাহলে জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আমার আযাব অত্যন্ত কঠোর। অর্থাৎ তোমাদের  জন্য কঠোর শাস্তি অপেক্ষা করছে। নাউযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ০৭)

সুতরাং, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে উনার প্রতি যারা ঈমান আনবে না, উনার প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা বা সুধারণা পোষণ  করবে না, উনার প্রতি মুহব্বত প্রকাশ করবে না, উনার ছানা-ছিফত মুবারক করবে না, উনার ইত্তিবা, আনুগত্য বা অনুসরণ করবে না এ সমস্ত লোকেরাই নাশোকর বা অকৃতজ্ঞ বান্দা ও উম্মতের অন্তর্ভুক্ত এবং এরাই  জাহান্নামের কঠিন শাস্তির উপযুক্ত। নাউযুবিল্লাহ!

অপরপক্ষে শোকরগোযার বান্দা ও উম্মত হচ্ছেন উনারা যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনার সাথে সাথে উনার প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা ও সুধারণা পোষণ করেন, উনাকে সবকিছু থেকে বেশি মুহব্বত করেন, উনার ছানা-ছিফত মুবারক করেন, উনাকে যথাসাধ্য ইত্তিবা বা অনুসরণ করার কোশেশ করেন। আর উনাদের জন্যেই রয়েছে চূড়ান্ত কামিয়াবী ও সন্তুষ্টি মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

স্মরণীয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য শুকরিয়া মুবারক, খুশি মুবারক ও ছানা-ছিফত মুবারক প্রকাশ করার পদ্ধতি সম্পর্কে সুপ্রসিদ্ধ আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-

مَنْ هَيَّاَ طَعَامًا لِّاَجْلِ قِرَائَةِ مَوْلِدِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاَخْلٰى مَكَانًا وَجَـمَعَ اِخْوَانًا وَاَوْقَدَ سِرَاجًا وَلَبِسَ جَدِيْدًا وَعَمِلَ اِحْسَانًا وَتَبَخَّرَ وَتَعَطَّرَ تَعْظِيْمًا لِّـمَوْلِدِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَشَرَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَعَ الْفِرْقَةِ الْاُوْلٰى مِنَ النَّبِيِّيْنَ وَكَانَ فِـىْ اَعْلٰى عِلِّيِّيْنَ.

অর্থ: যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ তথা উনার ছানা-ছিফত মুবারক প্রকাশার্থে খাবারের ব্যবস্থা করলো, জায়গা নির্দিষ্ট করলো, লোকজনকে একত্রিত করলো, মজলিসে বাতি জ্বালানোর বা আলোর  ব্যবস্থা করলো, নতুন বা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করলো, উত্তমভাবে তথা সুন্নাহভিত্তিক আমল করলো এবং সুগন্ধি ও আতর ব্যবহার করলো মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রথম কাতারে হাশর করাবেন এবং সে ব্যক্তি সম্মানিত জান্নাতে সুউচ্চ মাক্বামে অবস্থান করবেন। সুবহানাল্লাহ!

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী