তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

সংখ্যা: ১৮৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের পরে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হলেন হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনি নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ-এর প্রায় ২ বছর ৩ মাস ১০ দিন পর যমীনে আগমন করেন। তিনি বাল্যকাল থেকেই নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে চলা-ফেরা করতেন। তিনি বর্ণনা করেন, ‘আমি ছোট বেলা থেকে অনেকের সাথেই চলা-ফেরা করেছি। কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি যে, নূরে মজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চলা-ফেরা, উঠা-বসা, খাওয়া-দাওয়া, কথা-বার্তা, আচার-ব্যবহার ইত্যাদি কোন কিছুই আমাদের কারো সাথে মিলতো না। তখন থেকে আমার মনে হতো ইনি হয়তো বিশেষ কেউ হবেন। সত্যিই যখন তিনি উনার নুবুওওয়াত ও রিসালতের কথা প্রকাশ করলেন তখন আমার পূর্বেকার যে ধারণা ছিল তা বাস্তবে পরিণত হলো। যার কারণে আমি কোন প্রকার সংশয় সন্দেহ ও কোন রকম চিন্তা-ফিকির ও বিলম্ব না করেই নির্দ্বিধায় উনার নুবুওওয়াত ও রিসালত স্বীকার করে নিয়ে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করি।’ সুবহানাল্লাহ।

আমার ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি সম্পর্কে স্বয়ং নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা ইরশাদ করেন, “আমি যার কাছেই ইসলামের দাওয়াত পেশ করেছি তিনিই কম বেশি চিন্তা-ভাবনা বা ইতস্তত করেছেন। কিন্তু আমি যখনই হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর নিকট ইসলামের দাওয়াত পেশ করেছি তিনি কোনরূপ চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই সঙ্গে সঙ্গে তা গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ।

মূলতঃ উছূল রয়েছে-

النبى نبيا ولوكان صبيا

‘নবী তো নবীই যদিও তিনি শিশু হোন না কেন।’ (আল ইতকান)

আর যিনি নবী ও রসূলগণের সাইয়্যিদ ও ইমাম, যিনি হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তুলনা বা সাদৃশ্যতা অন্যান্যদের সাথে এক হবে কি করে?

যেখানে নবী ও রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণ নবী ও রসূল হওয়া সত্ত্বেও উনারা কেউই একথা বলেননি যে, তিনি আমাদের মতো নবী কিংবা রসূল। বরং আল্লাহ পাক-এর জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম যখন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওসীলা দিয়ে আল্লাহ পাক-এর নিকট দুয়া করলেন তখন আল্লাহ পাক জানতে চাইলেন, হে হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম! আপনি কি করে আমার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে চিনলেন? হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম বললেন, আয় বারে ইলাহী! আপনি যখন আপনার কুদরতী হাত মুবারকে আমাকে সৃষ্টি করে আমার মধ্যে রূহ মুবারক ফুকে দিলেন তখন আমি মাথা মুবারক উত্তোলন করে দেখতে পেলাম আরশের স্তম্ভের মধ্যে লিখিত রয়েছে-

لا اله الا الله محمد رسول لله

(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ)

অর্থাৎ- ‘আল্লাহ পাক ব্যতীত কোন ইলাহ (মা’বুদ) নেই। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ পাক-এর রসূল।’

আমি তখন জেনে গেলাম, আরশের স্তম্ভের মধ্যে আপনার নাম মুবারকের সাথে যাঁর নাম মুবারক লিখিত রয়েছে তিনি অন্য কোন নবী কিংবা রসূলের মতো নন বরং তিনি নবী ও রসূলগণের সাইয়্যিদ হবেন এবং তিনি আপনার হাবীব হবেন। এটা শুনে আল্লাহ পাক বললেন, হে হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম! আপনি  সঠিকই বলেছেন। আপনি জেনে রাখুন, আমি যদি উনাকে সৃষ্টি না করতাম তাহলে আপনাকেও সৃষ্টি করতাম না। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, বেহেশ্ত, দোযখ, আসমান, যমীন, লওহো, কলম, ফেরেশ্তা, জিন, ইনসান, ইত্যাদি কিছুই সৃষ্টি করতাম না।

কাজেই, নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো নবী কিংবা রসূল বলা তো দূরের কথা তা কখনও চিন্তাও করেননি। অথচ উম্মত হয়ে ফিরআউন-এর ন্যায় ‘রব’ দাবি করার মতো হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলে অভিহিত করে থাকে। নাঊযুবিল্লাহ।

মূলতঃ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যারা নিজেদের মতো বাশার বলে থাকে তারা উম্মত থেকে খারিজ, কাট্টা কাফির ও জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত।

তাফসীরুল কুরআন: সুন্নতের ইত্তিবা বা অনুসরণ ব্যতীত জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ পাওয়া অসম্ভব

তাফসীরুল কুরআন: হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালামগণকে ‘আমাদের মত বাশার’ বলা কাফিরদের স্বভাব

তাফসীরুল কুরআন: হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালামগণকে ‘আমাদের মত বাশার’ বলা কাফিরদের স্বভাব

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী