পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়ত উনার আলোকে খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (পর্ব-৯) ৩৫তম ফতওয়া হিসেবে

সংখ্যা: ২৭২তম সংখ্যা | বিভাগ:

“পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়ত উনার আলোকে খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আলহামদুলিল্লাহ।

 

খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

 

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরকী ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বলছে। অর্থাৎ তাদের বক্তব্য হচ্ছে সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্য বাল্য বিবাহকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। তাই বাল্য বিবাহ করা বা দেয়া যাবে না। নাউযুবিল্লাহ!

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে বাল্যবিবাহকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। তাই বাল্যবিবাহ করা বা দেয়া যাবে না। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ বাল্য বিবাহ শুধু জায়িযই নয় বরং খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত। আর সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-

اِسْتِحْلَالُ الْـمَعْصِيَةِ كُفْرٌ.

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

উল্লেখ্য, বাল্যবিবাহ করতে বা দিতে হবে এরূপ বাধ্যবাধকতা সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে নেই। কারণ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত বিবাহের বয়স নির্দিষ্ট করে দেয়নি। তবে বাল্যবিবাহ যেহেতু সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে জায়িয ও সুন্নত তাই বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বলা যাবে না। বললে কুফরী হবে, ঈমান নষ্ট হবে। নাউযুবিল্লাহ!

অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে প্রয়োজন থাকা স্বত্বেও বাল্যবিবাহ থেকে বিরত থাকবে তারা একটি খাছ সুন্নত পালন করা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি অশ্লীল, অশালীন, অসামাজিক কাজে মশগুল হতে পারে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে সম্মানিত আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়ত উনার আলোকে খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়াটি” প্রকাশ করা হলো।

বাল্যবিবাহ কস্মিনকালেও স্বাস্থের, জন্য ক্ষতিকর নয়

বাল্যবিবাহ বিরোধীরা মানুষদেরকে খাছ সুন্নতী বাল্য বিবাহ থেকে নিরুৎসাহিত করার লক্ষে এই বলে মিথ্যা প্রচারণা চালায় যে, বাল্যবিবাহ স্বাস্থের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। নাউযুবিল্লাহ!

জরায়ুমুখের ক্যান্সার সচেতনতা বাড়াতে কিছুদিন পূর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে একটি র‌্যালী বের করা হয়। যার খবর বিভিন্ন পত্রিকায় আসে। এর মধ্যে নাস্তিক্যবাদের পৃষ্ঠপোষক ও কাট্টা ইসলামবিদ্বেষী পত্রিকা ‘প্রথম আলো’ সূক্ষ্মভাবে শয়তানী করে। তারা হেডলাইন দেয় “জরায়ুমুখের ক্যান্সারের প্রধান কারণ বাল্যবিবাহ”। নাউযুবিল্লাহ!

উক্ত লেখায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কয়েকজন গণ্ডমূর্খ, বকলম চিকিৎসকের দোহাই দিয়ে উল্লেখ করা হয়- “বিশ্বে নারীদের ক্যান্সারের তালিকায় বাংলাদেশ চতুর্থ স্থানে। আর দেশে এ রোগের প্রধান কারণ বাল্যবিবাহ। নাঊযুবিল্লাহ! অল্প বয়সে বিয়ে হলে বিবাহিত জীবন দীর্ঘ হয়, সন্তান জন্ম দেয়ার হার বেড়ে যায়। এতে জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।”। নাউযুবিল্লাহ! (দেখুন https://tinyurl.com/hbeqn6m)

এ ধরনের বক্তব্য খাছ সুন্নতী বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচারিতা। জরায়ুমুখের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এমন প্রমাণ কেউ দেখাতে পারবে না যে- বাল্যবিয়ে এই রোগের কারণ। অল্প বয়সে বিবাহের ব্যাপারে পৃথিবীর সব ধর্মের এক শ্রেণীর মানুষ এখন যেন দায়ভার পবিত্র ইসলাম উনার উপর চাপিয়ে দেয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। নাউযুবিল্লাহ! আর এই অসুস্থ প্রচারণার শিকার হয়ে আজ এমনকি মুসলিমরাও এর বিরুদ্ধে বলতে শুরু করেছে অথবা নানাভাবে একে পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছে। নাউযুবিল্লাহ!

মেডিক্যাল সাইন্সের প্রেক্ষাপটে বাল্যবিবাহ বিরোধী প্রপাগান্ডার কিছু অজানা দিক তুলে ধরা হচ্ছে।

জরায়ুমুখ ক্যান্সার বা জরায়ুর ক্যান্সার (ইংরেজি: Cervical cancer) নারীদের একটি রোগ । যেকোনো বয়সেই নারীদের জরায়ু ক্যান্সার হতে পারে। তবে ৩৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের নারীরা এ রোগের শিকার হয় বেশি। আবার ৫০ বছর বয়স্ক কিংবা এর থেকে বেশি বয়সের নারীরাও জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে। ২০ বছরের কম বয়সীদের এ রোগ সাধারণত হয় না। তবে উপযুক্ত চিকিৎসায় এরোগ থেকে শতভাগ আরোগ্য লাভ সম্ভব।

গন্ডমূর্খ চিকিৎসকেরা এবং ইসলামবিদ্বেষী ‘প্রথম আলো’ জরায়ুমুখের ক্যান্সারের দায় বাল্যবিয়ের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! অথচ চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন কোনো কথা সুনির্দিষ্টভাবে বলা নেই। যার প্রমাণ নিম্নে উপস্থাপন করা হচ্ছে-

(১). ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস-এর তথ্যে জরায়ুমুখের ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে যা বলা আছে-

(ক). হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি দিয়ে ৯৯ শতাংশ জরায়ুমুখ ক্যান্সার হয়। HPV একটি গ্রুপ ভাইরাস। এর প্রায় ১০০ টাইপ আছে। সাধারণত অবৈধ এবং বিকৃত শারীরিক সম্পর্কের কারণে এই ভাইরাস ছড়ায়। বেশিরভাগ ক্যান্সারের জন্য HPV-16, HPV-18 টাইপ দায়ী।

(খ). অতিরিক্ত কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে, কিন্তু যা জরায়ু ক্যান্সার হওয়ার মূল কারণ নয়, তা হলো-

* যেসব নারী ধূমপান করে।

* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে যেমন- এইডস হলে।

* জন্মনিরোধ বড়ি গ্রহণ করলে।

* * ঘন ঘন সন্তান নিলে জরায়ু ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকির ক্ষেত্রে তারা নিজেরাই বলছে- বিষয়টা ঘোলাটে, ক্লিয়ার নয়।

(সূত্র- https://tinyurl.com/cpufsby)

(২). ন্যাশনাল সারভাইকাল ক্যান্সার কোয়ালিশনের তথ্যমতে-

হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি দিয়ে ৯৯ শতাংশ জরায়ুমুখ ক্যান্সার হয়। HPV একটি গ্রুপ ভাইরাস। এর প্রায় ১০০ টাইপ আছে। সাধারণত অবৈধ এবং বিকৃত শারীরিক সম্পর্কের কারণে এই ভাইরাস ছড়ায়। বেশিরভাগ ক্যান্সারের জন্য HPV-16, HPV-18 দায়ী। (সূত্র- https://tinyurl.com/ju3eynt)

(৩). ইংল্যান্ডের ক্যান্সার রিসার্চ-এর তথ্যমতে-

* HPV ভাইরাসে আক্রান্ত পুরুষের সাথে অবৈধ এবং বিকৃত শারীরিক সম্পর্কের কারণে নারী আক্রান্ত হয়।

* খতনা: যেসকল পুরুষ খতনা করে থাকে তাদের থেকে এই ভাইরাস মহিলাদের মাঝে যায় না। মুসলিম মাত্রই খতনা করে থাকেন।

* যাদের এইডস এবং অন্যান্য যৌনবাহিত রোগ আছে তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর এইডস হয় অবৈধ এবং বিকৃত শারীরিক সম্পর্কের কারণে।

* যেসব মহিলা ধূমপান করে।

* প্রতি ১০টা কেসের একটার কারণ হলো জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল গ্রহণ করা।

* ঘন ঘন সন্তান, ১৭ বছর বয়সের আগে সন্তান নিলে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির ব্যাপারে তারা নিজেরাই বলছে- বিষয়টা ঘোলাটে, ক্লিয়ার নয়। যেমন ইংল্যান্ডের ক্যান্সার রিসার্চ বলছে- ÒWomen who have had children are at an increased risk of cervical cancer compared to those who haven’t. Having your first baby before the age of 17 also gives a higher risk, compared to women who had their first baby after the age of 25. The reasons for this are unclearÓ.

অর্থ: যে সকল মহিলাদের কোন ছেলে মেয়ে নেই তাদের চেয়ে যাদের সন্তানাদি আছে তাদের সারভিক্যাল ক্যান্সার হওয়ার উচ্চ মাত্রার ঝুঁকি থাকে। ২৫ বছর বয়সের পরে যারা সন্তান নেয় তাদের চেয়ে ক্যান্সার হবার ঝুঁকি বেশী থাকে যারা ১৭ বছরের পূর্বে প্রথম সন্তান নেয়। কি কারণে সেটা হয় তা স্পস্ট নয়।

* পরিবারের অন্য কারো পূর্ব থেকে এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত থাকলে হতে পারে।

* দরিদ্রতা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে উঠার কারণেও এই রোগ হতে পারে।

(সূত্র- https://tinyurl.com/ztuqflc)

(৪). আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি:

আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির জরায়ুমুখের ক্যান্সারের বিষয়ে কিছু রিস্ক ফ্যাক্টরের কথা বলেছে। তারা বলেছে- রিস্ক ফ্যাক্টর থাকা মানেই এমন নয় যে- সে রোগ হবেই। রিস্ক ফ্যাক্টরসমূহ বর্ণনার পূর্বে তারা বলেছে-

Several risk factors increase your chance of developing cervical cancer. Women without any of these risk factors rarely develop cervical cancer. Although these risk factors increase the odds of developing cervical cancer, many women with these risks do not develop this disease. When a woman develops cervical cancer or pre-cancerous changes, it might not be possible to say that a particular risk factor was the cause.Ó

অর্থ: “অনেকগুলো রিস্ক ফ্যাক্টর জরায়ুমুখের ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা বাড়ায়। খুব কম মহিলাই আছে, যাদের এসব রিস্ক ফ্যাক্টর ছাড়াও এ রোগ আক্রান্ত হতে পারে। যদিও এসব রিস্ক ফ্যাক্টর জরায়ুমুখের ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়, কিন্তু অনেক মহিলার এসব রিস্ক ফ্যাক্টর থাকার পরেও তারা এ রোগে আক্রান্ত হয় না। যখন কোনো মহিলার জরায়ু ক্যান্সার কিংবা ক্যান্সার হওয়ার পূর্ববর্তী লক্ষণ দেখা দেয়, তখন ইহা বলা সম্ভব নয় যে- কোন্ নির্দিষ্ট রিস্ক ফ্যাক্টর এ রোগের জন্য দায়ী”

আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি যেসব রিস্ক ফ্যাক্টর উল্লেখ করেছে তা হলো-

(১) হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি দিয়ে ৯৯ শতাংশ জরায়ুমুখ ক্যান্সার হয়।

(২) অতিরিক্ত কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে; কিন্তু যা জরায়ু ক্যান্সার হওয়ার মূল কারণ নয়, তা হলো-

(ক) যেসব মহিলা ধূমপান করে।

(খ) দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন AIDS আক্রান্ত মহিলা।

(গ) যারা অটোইমুইনি রোগের জন্য ইমুনিসাপ্রেসেন্ট ড্রাগ ব্যবহার করছে।

(ঘ) Chlamydia infection – এক ধরনের ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ, যা বিকৃত শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত মহিলার জরায়ুমুখের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

(ঙ) ফলফলাদি এবং শাক-সবজি কম খেলে রোগ প্রতিরোধ ঠিকমত হয় না, যার কারণে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

(চ) অতিরিক্ত ওজন হলে।

(ছ) জন্মনিরোধ বড়ি ব্যবহার করলে।

(জ) একাধিক পুরুষের সাথে বিকৃত শারীরিক সম্পর্ক।

(ঝ) যেসব মহিলার ৩-এর অধিক বাচ্চা রয়েছে তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনার ক্ষেত্রে তারাই বলছে- কেউ জানে না, কেন ইহাকে সত্য বলা হচ্ছে। তারা বলছে- ÒWomen who have had 3 or more full-term pregnancies have an increased risk of developing cervical cancer. No one really knows why this is true”.

অর্থ: যে সকল মহিলারা পর পর তিনবার বা তার অধিক গর্ভধারণ করেছে তাদের সারভিক্যাল ক্যান্সার হবার উচ্চমাত্রার ঝুঁকি থাকে। কেউ সঠিক জানে না কেন তা হয়।

এ বিষয়ে যেসব থিউরী তারা দিয়েছে তারও কোনো ভিত্তি নাই।

(ঞ) ঘন ঘন সন্তান, ১৭ বছর বয়সের আগে সন্তান নিলে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির ব্যাপারে তারা নিজেরাই বলছে- বিষয়টা ঘোলাটে, ক্লিয়ার নয়। যেমন- Women who were younger than 17 years when they had their first full-term pregnancy are almost 2 times more likely to get cervical cancer later in life than women who waited to get pregnant until they were 25 years or older.

অর্থ: যে সকল মহিলাদের বয়স ১৭ বছরের চেয়ে কম এবং প্রথম গর্ভধারণ করে তাদের পরবর্তী জীবনে সারভিক্যাল ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে দ্বিগুণ, তাদের চেয়ে যারা ২৫ বছর বা তার চেয়ে বেশী বয়স হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে গর্ভধারণের জন্য।

(ট) দরিদ্রতা।

(ঠ) পরিবারের অন্য কারো পূর্ব থেকে এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত থাকলে হতে পারে।

(সূত্র- https://tinyurl.com/zhmoykh)

তাহলে দেখা যাচ্ছে- জরায়ুমুখের ক্যান্সারের জন্য মূল দায়ী হলো একটি ভাইরাস, যার নাম HPV। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি দিয়ে ৯৯ শতাংশ জরায়ুমুখ ক্যান্সার হয়। যা অবৈধ এবং বিকৃত শারীরিক সম্পর্কের কারণে ছড়ায় বেশি। কোনোক্রমেই অল্প বয়সে বিয়ের কারণ নয়। এখানে রিস্ক ফ্যাক্টরের কোনোটিতেই জোর বলা হয়নি যে- অল্প বয়সে বিয়ে হলে এই রোগ হয়।

কুচক্রী ‘প্রথম আলো’ এবং মূর্খ ডাক্তারেরা বাল্যবিয়েকে মূল কারণ হিসেবে বলেছে। তারা বলেনি যে- HPV নামক ভাইরাস মূল কারণ। যেখানে চিকিৎসা বিজ্ঞানই বলছে- ৯৯ ভাগ মূল কারণ হলো HPV, সেখানে তারা কি করে বলতে পারে- বাল্যবিয়ে মূল কারণ? নাঊযুবিল্লাহ!

তারা বলেছে যে- এই রোগ ছড়ায় বিকৃত শারীরিক সম্পর্কের/আচরণের মাধ্যমে, অল্প বয়সে বিয়ের কারণে নয়। বরং অল্প বয়সে বিয়ে করলে পুরুষের একাধিক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক কিংবা নারীর একাধিক পুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্ক হবে না এবং এ রোগ থেকে রক্ষা পাবে। পাশ্চাত্য সমাজে অবৈধ, অনৈতিক, বিকৃত শারীরিক সম্পর্কের/আচরণের কারণে তাদের দেশে এই রোগের প্রকোপ বেশি; কিন্তু মুসলিম দেশে নয়।

আজকে যারা খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহকে স্বাস্থের জন্য হুমকি স্বরূপ বা জরায়ুমুখের ক্যান্সারের মূল কারণ বলে কুৎসা রটনা করছে, তারা মুসলিম সমাজে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নোংরামী, অনৈতিকতা ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে অল্প বয়সে বিবাহ কিছুতেই স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর নয় বা জরায়ুমুখের ক্যান্সারের কারণ নয়, বরং অল্প বয়সে বিয়েই এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম। আর এ কারণেই বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নত। কারণ বাল্যবিবাহ যদি ক্ষতির কারণ হতো তবে সম্মানিত শরীয়ত কখনই বাল্যবিবাহকে সমর্থন করতো না। সুবহানাল্লাহ!

শিশু মৃত্যুর হার নিয়ে একটি জরিপ

বাংলাদেশের এক জরিপে ইউনিসেফ বাল্য বিয়ের বিরোধীতা করতে গিয়ে বলছে “অল্প বয়সে বিয়ে এবং সন্তানধারণের কারণে প্রতি বছর তেইশ হাজার (২৩,০০০) শিশু মারা যায়।

বাংলাদেশ সরকারের হিসেবে অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি ঘণ্টায় ১৪ জন শিশু মারা যায়। সে হিসেবে বছরে মারা যায়, ১ লক্ষ ২২ হাজার ৬৪০ জন।

অল্প বয়সে বিয়ে করলে যদি ২৩ হাজার শিশু মারা যায়, তবে বাকি (১২২৬৪০-২৩০০০)=৯৯,৬৪০ জন শিশু মারা যায় তথাকথিত প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের গর্ভকালীন মৃত্যুতে। বাল্যবিবাহ থেকে যে শিশু জন্ম নেয় তা থেকে মাত্র ২৩ হাজার মারা যায় অথচ প্রাপ্ত বয়স্ক নারীদের সন্তান মৃত্যুর হার দেখানো হচ্ছে ৯৯,৬৪০। তাহলে বাল্যবিবাহে সন্তান মৃত্যুর হার তাদের মত অনুযায়ী তারাই বলছে কম। আসলে এর সংখ্যা হবে উপরে বর্ণিত সংখ্যার ৫০ ভাগেরও কম। অতএব, বাল্য বিবাহতেই শিশু মৃত্যুর হার কম এবং প্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ের ক্ষেত্রে শিশু মৃত্যুর হার অনেক বেশি। (বিশ্ব জরিপ ফাউন্ডেশন)

উল্লেখ্য, বিশ্ব জরিপ ফাউন্ডেশনের জরিপ মোতাবেক বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এখনো বাল্য বিবাহ শতকরা ৭৫% হয়ে থাকে। সুবহানাল্লাহ!

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৪

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁ, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩২