পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, সময় ও মুহূর্তের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৬তম পর্ব)

সংখ্যা: ২৮৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

৩৪তম ফতওয়া হিসেবে

“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট

বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরকী ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের অকাট্ট দলীলের আলোকে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-ক্বুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের সর্বোত্তম ওসীলা মুবারক এবং মানুষের সম্মানিত আক্বীদাহ মুবারক এবং সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক। সুবহানাল্লাহ!

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে সম্মানিত মুসলমান উনাদের সম্মানিত ঈমান এবং সম্মানিত আমল উনাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে সম্মানিত মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিন মুবারকসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে সম্মানিত মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! যেমন তারা বলে থাকে যে, সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! সম্মানিত ও পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!

অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নি‘য়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে খবীছ উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নি‘য়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!

তাদের উপরোক্ত বক্তব্য চরম বিভ্রান্তিকর, সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত এবং আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নি‘য়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। এ সম্পর্কে কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-

اِسْتِحْلَالُ الْـمَعْصِيَةِ كُفْرٌ

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” নাউযুবিল্লাহ! (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে ‘সূ’দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের সম্মানিত আক্বীদাহ্ মুবারক ও সম্মানিত ঈমান উনাদের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ উলামায়ে ‘সূ’দের এই কুফরীমূলক বক্তব্য সম্মানিত মুসলমান উনাদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা, যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা এবং হক্বপন্থি ও সমঝদার মুসলমানগণ উনারা যেন উনাদের সম্মানিত ঈমান ও সম্মানিত আমল মুবারক হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ মোতাবেক বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্ মুবারক পোষণ করে এবং সঠিক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী রিযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি” প্রকাশ করা হলো।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন ও সময়ের গুরুত্ব, ফযীলত ও আহকাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফাতাওয়া

পূর্ব প্রকাশিতের পর

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জুমাদাল ঊলা শরীফ মাসে প্রকাশিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফসমূহ

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ তারীখ মুবারক= ৬টি

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফ= ৯টি

৪. খ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২২ শে জুমাদাল ঊলা শরীফ:

উম্মু আবীহা, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জবান মুবারক-এ) সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা:

সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি কুরাইশদের নিকট যেই জবাব দিয়েছেন, তাতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খুবই সন্তুষ্ট মুবারক হয়েছিলেন। যা তিনি পরবর্তীতে প্রকাশ করেছেন। যখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার নিকট আবূ জেহেলের কন্যাকে নিসবতে আযীম শরীফ দিতে চেয়েছিলো, তখন তা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট থেকে জানতে পেরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত খুতবা মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,

اَمَّا بَعْدُ اَنْكَحْتُ حَضْرَتْ اَبَا الْعَاصِ بْنَ الرَّبِيْعِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَحَدَّثَنِـىْ وَصَدَقَنِـىْ وَاِنَّ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرَ الرَّابِعَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) بِضْعَةٌ مِّـنِّــىْ وَاِنِّـــىْ اَكْرَهُ اَنْ يَّسُوْءَهَا وَاللهِ لَا تَـجْتَمِعُ بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبِنْتُ عَدُوِّ اللهِ عِنْدَ رَجُلٍ وَّاحِدٍ فَتَـرَكَ اِمَامُ الْاَوَّلِ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَلْـخِطْبَةَ

অর্থ: “আমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত, উম্মু আবীহা, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর ইবনে রবী আলাইহিস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিয়েছি। তিনি আমার সাথে প্রশংসনীয় আচরণ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি পরম সত্যবাদী এবং এমন একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক, যিনি উনার কথা মুবারক রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! নিশ্চয়ই আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুজাসসাম মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জিসিম মুবারক তথা শরীর মুবারক) উনার সম্মানিত গোশত মুবারক উনার একখানা টুকরো মুবারক। আমি উনার কষ্ট বরদাশত করতে পারি না। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত আলাইহাস সালাম তিনি এবং মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রুর কন্যা একই ব্যক্তির নিকট থাকতে পারে না। অতঃপর ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি তাদের প্রস্তাবকে প্রত্যাখান করেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ ইত্যাদি)

উম্মু আবীহা, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম:

উম্মু আবীহা, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মোট তিন জন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালম উনারা ছিলেন। উনারা হচ্ছেন-

১। সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতে যিন নূর আলাইহাস সালাম:

সিব্ত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতে যিন নূর আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ আলাইহাস সালাম) তিনি অনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ সংঘটিত হওয়ার পরের দিন তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ৫০তম বছর মুবারক পার হয়ে ৫১তম বছর মুবারক চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ! আর সিব্ত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতে যিন নূর আলাইহাস সালাম তিনি ৪৫ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৭শে ছফর শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইওয়ামুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৪৬ বৎসর ২ মাস ২৯ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

২. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম:

সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম) তিনি ছিলেন সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতে যিন নূর আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ভাই। সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হিজরত মুবারক করার ১৩ মাস ১৬ দিন পূর্বে তথা ১ বছর ১ মাস ১৬ দিন পূর্বে ২৬শে মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!  আর তিনি ১৫ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল আহাদ শরীফ সম্মানিত ইয়ারমূক জিহাদ মুবারক উনার ময়দানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ১৫ বছর ৫ মাস ১৪ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

৩. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আছ ছানী আলাইহিস সালাম:

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি ২য় হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৮ই শাওওয়াল শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

৪. গ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২২শে জুমাদাল ঊলা শরীফ:

সাইয়্যিদু কুরাইশ, সাইয়্যিদুন নাস, মালিকু আহলি বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদু কুরাইশ, সাইয়্যিদুন নাস, মালিকু আহলি বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক হচ্ছেন- তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দাদাজান আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! এ জন্য উনাকে ‘সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা হয়। তিনি সকলের মাঝে ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম’ হিসেবে পরিচিত। তবে উনার মূল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম’। উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক- আবূ আব্দিল্লাহ আলাইহিস সালাম, আবুল হারিছ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুন নাস, সাইয়্যিদু কুরাইশ, সাইয়্যিদুল আরব ওয়াল আজম, আল ফাইয়্যায, যুল মাজদি ওয়াস সু’দাদ, মুত্ব‘ইমুল ইন্সি ওয়াল ওয়াহ্শি ওয়াত ত্বইর, সাইয়্যিদুল বাত্বহা’, আবুল বাত্বহা’, শায়বাতুল হামদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মালিকু আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইত্যাদি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! তবে তিনি সকলের মাঝে ‘সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বেমেছাল মায়া-মুহব্বত, স্নেহ ও সম্মান মুবারক করতেন। তিনি ছিলেন সমস্ত কুরাইশ উনাদের সাইয়্যিদ। সুবহানাল্লাহ! সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের প্রতি উনার অবদান মুবারক অপরিসীম। তিনি সম্মানিত জমজম কূপ মুবারক পুনঃখনন করা, আবরাহার বাহিনীর বিরুদ্ধে বদদোয়া করে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লখতে জিগার সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত কুরবানী মুবারক করার জন্য সমস্ত কার্যক্রম মুবারক সম্পন্ন করা এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত লালন-পালন মুবারক এবং মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে এক বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার সাক্ষর রেখেছেন। যেখানে কায়িনাতের বুকে আর কারো পৌঁছা আদৌ সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে প্রথম স্তর মুবারক-এ। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক:

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক কি এই বিষয়ে সীরাতগ্রন্থগুলোতে অনেক বর্ণনা রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক হচ্ছেন- ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আমির আলাইহিস সালাম’। আবার কেউ কেউ বলেছেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক হচ্ছেন- ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম’। আবার কেউ কেউ বলেছেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাতুল হামদ আলাইহিস সালাম’।

এই বিষয়ে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বোত্তম ফায়ছালা মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “প্রকৃপক্ষে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক ছিলেন, ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! তবে একজন মানুষের যেমন একাধিক নাম থাকে সেই হিসেবে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরো একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক ছিলেন, ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আমির আলাইহিস সালাম’। আর ‘শায়বাতুল হামদ’ হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ লক্বব মুবারক।” সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকলের মাঝে ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম’ হিসেবে মশহূর হওয়ার কারণ:

এই বিষয়েও সীরাতগ্রন্থগুলোতে অনেক মত পরিলক্ষিত হয়। তবে বিশুদ্ধ কথা হচ্ছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে উনার মহাসম্মানিত নানাজান আলাইহিস সালাম উনার বাড়ীতে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে থাকেন। দুনিয়াবী দৃষ্টিতে যখন উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ৬, ৭ বা ৮ বছর, তখন উনার মহাসম্মানিত চাচা সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ আনার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ যান। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার অনুমতিক্রমে সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ নিয়ে আসেন। তারপর তিনি উনাকে অত্যন্ত আদর-যত্ম ও মায়া-মুহব্বত মুবারক করে লালন-পালন মুবারক করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত চাচা সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার নিকট সর্বাধিক প্রিয় ও মুহব্বতের পাত্র ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর আরবীতে ‘আবদ’ শব্দ মুবারক উনার একখানা অর্থ মুবারক হচ্ছেন, ‘হাবীব, মাহবূব, প্রিয়’। যেহেতু সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সবচেয়ে বেশি মুহব্বত মুবারক করতেন, তাই সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তথা সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার প্রিয়পাত্র’ বলে সম্বোধন মুবারক করা হতো। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেখান থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকলের মাঝে ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম’ হিসেবে পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’:

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দৃষ্টিকাড়া বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চেহারা মুবারক-এ) সবসময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঝলমল করতেন। সুবহানাল্লাহ! কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

وَنُوْرُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُضِـىْءُ فِـىْ غُرَّتِهٖ

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মালাহাহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কপাল মুবারক-এ) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঝলমল করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ শরীফ)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

وَكَانَ نُوْرُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُضِـىْءُ فِـىْ غُـرَّتِـهٖ اَىْ جَبْهَتِهٖ بَــيِّــنًا وَاضِحًا

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মালাহাহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কপাল মুবারক-এ) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্পষ্টভাবে, অত্যন্ত সমুজ্জ্বলভাবে ঝলমল করতেন।” (শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

عَلـٰى شَيْـبَةِ الْـحَمْدِ الَّذْىْ كَانَ وَجْهُهٗ …

يُضِيْءُ ظَلَامَ اللَّيْلِ كَالْقَمَرِ الْبَدْرِىِّ

অর্থ: “পূর্ণ চাঁদের মতো শায়বাতুল হামদ সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চেহারা মুবারক) অন্ধকার রাতকে আলোকিত করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (শারহুয যারক্বানী)

সম্মানিত বিশেষ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ:

عَنْ حَضْرَتْ كَعْبِ الْاَحْبَارِ رَضِـىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ نُـوْرَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَـمَّا صَارَ اِلـٰى سَيِّدِنَا حَضْرَتْ جَدِّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ  الْـمُطَّلِبِ  عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَاَدْرَكَ نَامَ يَوْمًا فِــىْ الْـحِجْرِ فَانْـتَـبَهَ مَكْحُوْلًا مَدْهُوْنًا قَدْ كَسِىَ حُلَّةَ الْبَهَاءِ وَالْـجَمَالِ فَـبَقِىَ مُتَحَيِّـرًا لَا يُدْرِىْ مَنْ فَـعَلَ بِهٖ ذٰلِكَ فَاَخَذَهٗ اَبُـوْهُ بِيَدِهٖ ثُـمَّ انْطَلَقَ بِهٖ اِلـٰى كَهَنَةِ قُـرَيْشٍ فَاَخْبَـرَهُمْ بِذٰلِكَ فَـقَالُوْا لَهٗ اِعْلَمْ اَنَّ اِلـٰـهَ السَّمَاوَاتِ قَدْ اَذِنَ لِــهٰذَا الْغُلَامِ اَنْ يَّــتَـزَوَّجَ

অর্থ: “হযরত কা’ব ইবনে আহবার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে স্থান্তরিত হলেন এবং সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াবী দৃষ্টিতে পরিণত বয়স মুবারক-এ উপনীত হলেন, তখন তিনি একদিন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার হাতিম-এ ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখলেন যে, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চোখ মুবারক-এ) সুরমা লাগানো, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক) উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতাহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চুল মুবারক-এ) তৈল লাগানো এবং তিনি এক সেট অতি উজ্জ্বল ও সুন্দর মূল্যবান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত তাক্বওয়া মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লিবাস মুবারক তথা কাপড় মুবারক) পরিহিত। সুবহানাল্লাহ! সমস্ত লোক উনার সৌন্দর্য মুবারক ও মাহাত্ম মুবারক দেখে অবাক হয়ে গেলো যে, তিনি এটা কিভাবে পেলেন? কে উনাকে এই উচ্চ মর্যাদায় ভূষিত করলেন? এই ঘটনার পর উনার মহাসম্মানিত চাচা আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে কুরায়শদের কয়েকজন বিশেষ ব্যক্তি যারা আসমানী কিতাবসমূহের ইলিম রাখতেন, উনাদের নিকট নিয়ে গেলেন এবং উনাদেরকে সমস্ত ঘটনা খুলে বললেন। উনারা বললেন, আপনি জেনে রাখুন, যিনি সাত আসমানের রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ করার ইযাযত মুবারক দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ শরীফ)

(অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৯

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০