পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৬২

সংখ্যা: ২৮২তম সংখ্যা | বিভাগ:

৩৩তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”- পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

সম্মানিত চার মাযহাব হানাফী, মালিকী, শাফিয়ী ও হাম্বলী উনাদের সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম উনাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক

সম্মানিত শরীয়ত অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের ফায়ছালা মতে প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা, জ্বিন-ইনসান সকলের জন্য সম্মানিত চার মাযহাব উনাদের যেকোনো একটি সম্মানিত মাযহাব উনাদের অনুসরণ করা যেরূপ ফরয-ওয়াজিব তদ্রƒপ সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মাযহাব পরিবর্তন করা বা এক মাযহাবের অনুসারী হয়ে অন্য মাযহাবের উপর আমল করা জায়িয নেই।

এ প্রসঙ্গে মুসলিম শরীফ উনার বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার প্রখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘মুসলিম শরীফ উনার’ টিকায় এবং ইমাম তাহাবী ‘দুররুল মুখতার’ কিতাবের হাশিয়াতে লিখেন-

عَلَيْكُمْ يَا مَعْشَرَ الْـمُؤْمِنِيْنَ اِتِّبَاعُ الْفِرْقَةِ النَّاجِيَةِ الْـمُسَمَّاةِ بِأَهْلِ السُّنَّةِ وَالْـجَمَاعَةِ فَأِنَّ نَصْرَةَ اللهِ وَحِفْظهٗ وَتَوْفِيْقَهٗ فِيْ مُوَافِقَتِهِمْ وَخَذَلًالَّهٗ وَسَخْطَهٗ وَمَقْتَهٗ فِيْ مُـخَالِفَتِهِمْ وَهٰذِهِ الطَّائِفَةُ النَّاجِيَةُ قَدْ اِجْتَمَعَتِ الْيَوْمَ فِيْ مَذْهَبِ أَرْبَعٍ وَهُمُ الْـحَنَفِيُّوْنَ وَالْـمَالِكِيُّوْنَ وَالشَّفِعِيُّوْنَ وَالْـحَنَبِلِيُّوْنَ رَحِـمَهُمُ اللهُ وَمَنْ كَانَ خَارِجًا مِّنْ هٰذِهِ الْأَرْبَعَةِ فَهُوَ أَهْلُ الْبِدْعَةِ وَالنَّارِ.

অর্থ: হে ঈমানদারগণ! আপনারা নাজিয়া (নাজাতপ্রাপ্ত) দলকে অনুসরণ করে চলুন যা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ নামে মশহূর। কারণ মহান আল্লাহ পাক উনার সাহায্য, হিফাযত ও তাওফীক্ব অর্জন সম্মানিত আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের অনুসরণের মাধ্যমেই সম্ভব এবং মহান আল্লাহ পাক উনার অসন্তুষ্টি, গযব ও অপদস্ততা উনাদের সাথে বিরোধিতার কারণেই। আর ‘আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত’ বর্তমান যুগে চার মাযহাবে বিভক্ত। উনারাই হলেন সম্মানিত হানাফী, মালিকী, শাফিয়ী ও হাম্বলী মাযহাব। আর যারাই বর্তমানে এ ৪ মাযহাব বহির্ভূত তারাই বিদয়াতী ও জাহান্নামী। (তাম্বিহ ৪৬৬ পৃষ্ঠা)

অনুসরণীয় সকল ইমাম মুজতাহিদ উনারা এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন যে, অনুসরণীয় ও গ্রহণযোগ্য মাযহাব হচ্ছে চারটি। ১। হানাফী ২। মালিকী ৩। শাফিয়ী ৪। হাম্বলী।

সম্মানিত হানাফী মাযহাব উনার প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক হচ্ছেন ইমাম আ’যম ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি।

সম্মানিত মালিকী মাযহাব উনার প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক হচ্ছেন হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি।

সম্মানিত শাফিয়ী মাযহাব উনার প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক হচ্ছেন হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি।

সম্মানিত হাম্বলী মাযহাব উনার প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক হচ্ছেন হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি।

নিম্নে সংক্ষিপ্তভাবে উনাদের পরিচিতি ও সাওয়ানেহ উমরী মুবারক তুলে ধরা হলো-

সম্মানিত হানাফী মাযহাব উনার প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম সাইয়্যিদুনা ইমামে আ’যম হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক!

 

হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বাইয়াত গ্রহণ ও ইলমে তাছাওউফ হাছিল

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-

اَلْعِلْمُ عِلْمَانِ عِلْمٌ فِـى الْقَلْبِ فَذَاكَ الْعِلْمُ النَّافِعُ وَعِلْمٌ عَلَى اللِّسَانِ فَذَالِكَ حُجَّةُ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ عَلٰى اِبْنِ اٰدَمَ

অর্থ : “ইলম দু’প্রকার। (১) ক্বলবী ইলম, যা উপকারী ইলম। (আর এটাই ইলমে তাছাওউফ নামে খ্যাত) (২) লিসানী ইলম, যেটা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আদম সন্তানের জন্য দলীল স্বরূপ।” (যাকে ইলমে ফিক্বাহ বলা হয়) (মিশকাত শরীফ, মুকাশাফাতুল কুলূব)

ইমামুল মুসলিমীন, শায়খুল মুহাদ্দিছীন, হাকিমুল হাদীছ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত দু’প্রকার ইলিমই হাছিল করেছেন এবং প্রচার-প্রসার করেছেন। অবশ্য সেকালে বর্তমানের ন্যায় দু’প্রকর ইলিম হাছিলের জন্য পৃথক পৃথক ব্যবস্থা ছিল না। আর জরুরতও হয়নি। কারণ, সেকালে প্রায় সবাই আমলের জন্য, মা’রিফাত-মুহব্বত-সন্তুষ্টি হাছিলের জন্যই ইলিম হাছিল করতেন। সকলেই ইলিম অনুযায়ী আমল করতেন। সবাই ছিলেন তাক্বওয়া বা পরহেযগারীতার অধিকারী। বর্তমানের ন্যায় গাইরুল্লাহ উদ্দেশ্যে, দুনিয়াবী ফায়দা লাভের জন্য খুব কম লোকেই ইলিম হাছিল করতেন। তারপরেও মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফাত-মুহব্বত, সন্তুষ্টি- রেযামন্দি মুবারক লাভের লক্ষ্যস্থল হিসেবে মাশহুর ছিলেন হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ইমামগণ।

সে সময় যারা ইমামুল মুত্তাক্বীন, আহলে বাইতে রসূল, ইমামুল খামিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ছোহবত ইখতিয়ার না করেছেন, উনার কাছ থেকে ইলিম হাছিল না করেছেন তারা কামালিয়তে বা পূর্ণতায় পৌঁছতে পারতেন না। সবাই ছিলেন উনার ইলিম ও মুবারক ছোহবতের মুহতাজ। আর হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ইমামগণই ছিলেন ইলমে তাছাওউফ উনার ধারক-বাহক।

ইমামুল মুসলিমীন, শায়খুল মুহাদ্দিসীন, হাকিমুল হাদীছ, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি  উনাদের মুবারক ছোহবত ইখতিয়ার করেছেন। সেই ছোহবত মুবারক উনার গুরুত্বও তাৎপর্য্য সম্পর্কে বলেছেন-

لَوْلَا سَنَتَانِ لَـهَلَكَ اَبُوْ نُعْمَانَ

অর্থ: “আবু নু’মান (ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি) যদি দুটি বৎসর না পেতেন তাহলে তিনি হালাক বা ধ্বংস হতেন।” (সাইফুল মুকাল্লিদীন, তোহফায়ে ইছনা আশারিয়া)

তিনি ইমামুল মুত্তাকীন, শায়খুল মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস আলাইহিস সালাম উনার মুবারক সাক্ষাত লাভের উদ্দেশ্যে পবিত্র মদীনা শরীফে গেলেন। উনাকে দূর থেকে এক ব্যক্তি আসতে দেখে ইমামুল মুত্তাকীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস আলাইহিস সালাম উনার নিকটবর্তী হলেন। ইমাম আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার দিকে তাকিয়ে কি যেন বললো। তীক্ষèমেধা সম্পন্ন, খাছ ইলমে লাদুন্নীপ্রাপ্ত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বুঝতে বাকী রইল না যে, উনারই বিরুদ্ধে বলা হয়েছে। তিনি উনার নিকটবর্তী হয়ে সালাম দিলেন। কিন্তু ইমামুল মুত্তাকীন, সাইয়্যিদুনা ইমামুল খ¦মিস আলাইহিস সালাম সালামের জওয়াব দিলেন না। বরং উনার চেহারা মুবারক ডানদিকে ফিরিয়ে নিলেন। তিনি আবার ডান দিকে গিয়ে সালাম দিলেন। উনি বাম দিকে চেহারা মুবারক ফিরে নিলেন। উনি আবার বাম দিকে গিয়ে সালাম দিলেন।

তখন উনি বললেন, আপনি না সেই ব্যক্তি যিনি আমার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উপর নিজের ক্বিয়াসকে প্রাধান্য দিয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার খিলাফ আমল করে থাকেন?

হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পানাহ চাচ্ছি! আপনি তাশরীফ রাখুন, আমি আপনার ক্বদম মুবারকে আরয করি, আপনার ইজ্জত ও হুরমাত বজায় রাখা আমাদের উপর এত জরুরী, যে রকম আপনার নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি আদব-ইতিহরাম, ইজ্জত রক্ষা করা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের উপর জরুরী ছিল। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ্বামিস আলাইহিস সালাম তিনি তাশরীফ রাখলেন এবং হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও উনার সামনে বসলেন এবং আরয করলেন, আমি আপনার থেকে তিনটি বিষয় জানতে চাই, আপনি এর সমাধান দিলে অত্যান্ত খুশি হবো।

প্রথম প্রশ্ন হল- পুরুষ দুর্বল না মহিলা দুর্বল? তিনি বললেন, মহিলা।

অতঃপর ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরয করলেন, হে আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহিলাদের মীরাস- কত অংশ? তিনি বললেন, মহিলার অংশ পুরুষের অর্ধেক। এ উত্তর শুনে ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন-

هٰذَا قَوْلُ جَدِّكَ وَلَوْ حَوَّلْتُ دِيْنَ جَدِّكَ لَكَانَ يَنْبَغِىْ فِـى الْقِيَاسِ اَنْ يَّكُوْنَ لِلرَّجُلِ سَهْمُ وَلِلْمَرْأَةِ سَهْمَانِ لِأَنَّ الْـمَرْأَةَ اَضْعَفُ مِنَ الرَّجُلِ

অর্থ: এটা আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক, যদি আমি ক্বিয়াসের মাধ্যমে আপনার নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক পরিবর্তন করতে চাইতাম তখন পুরুষকে এক অংশ দিতাম ও মহিলাকে দ্বিগুণ দিতে বলতাম। কেননা মহিলাগণ পুরুষের চেয়ে দুর্বল। কিন্তু আমি তা বলিনা। আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা বলেছেন সেটাই পালন করি ও বলি।

অতঃপর ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি দ্বিতীয় প্রশ্ন তুলে ধরলেন এবং বললেন, হে আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নামায উত্তম, না রোযা? সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, নামায। তখন ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন-

هٰذَا قَوْلُ جَدِّكَ وَلَوْ حَوَّلْتُ دِيْنَ جَدِّكَ فَالْقِيَاسُ اَنَّ الْـمَرْأَةَ اِذَا طَهَرَتْ مِنَ الْـحَيْضِ اَمَرْتُـهَا اَنْ تَقْضِىَ الصَّلٰوةَ وَلَا تَقْضِى الصَّوْمَ

অর্থ: তা আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইরশাদ মুবারক। যদি আমি ক্বিয়াসের দ্বারা আপনার সম্মানিত নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে পরিবর্তন করতে চাইতাম তাহলে মহিলা যখন স্বাভাবিক মা’জূরতা থেকে পবিত্রতা লাভ করবেন তখন যুক্তি দিয়ে বলতাম, সে রোযা ক্বাযা করার পরিবর্তে যেন নামায কাযা করে। কিন্তু আমি তা বলিনা। বরং আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা নির্দেশ দিয়েছেন সেটাই করি ও বলি। সুবহানাল্লাহ!

অতঃপর ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তৃতীয় প্রশ্ন করলেন, হে আহলে বাইতে রসূল আলাইহিস সালাম! ইস্তিঞ্জা বেশি নাপাক, না মণি? সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইস্তিঞ্জা। তখন হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “এটা আপনার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বাণী মুবারক। যদি আমি যুক্তি দিয়ে আপনার নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক পরিবর্তন করতে চাইতাম তাহলে আমি ফতওয়া দিতাম ইস্তিঞ্জা করলে গোসল করতে হবে এবং মণি বের হলে অযু করতে হবে। কেননা মণি থেকে ইস্তিঞ্জা বেশি নাপাক। কিন্তু আমি আপনার নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দ্বীন পরিবর্তন করা থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আশ্রয় কামনা করছি।” সুবহানাল্লাহ!

অপর একটি বর্ণনায় আছে, তিনি আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খ¦মিস আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে আরয করলেন, হে আওলাদে রসূল আলাইহিস সালাম আমি লটারী হারাম-নাজায়িয ফতওয়া দেই। যেটা আপনার সম্মানিত নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই ফতওয়া। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সফরে যাওয়ার সময় হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে কাকে সাথে নিবেন তা লটারির মাধ্যমে ঠিক করতেন। আমি সেই লটারী মুবারককে নাজায়িয ফতওয়া দেই না। বরং তা জায়িয বলি ও করি। সুবহানাল্লাহ!

এ কথা শুনা মাত্রই আহলে বাইতে রসূল হযরত ইমামুল খ¦মিস আলাইহিস সালাম তিনি উনার আসন মুবারক থেকে উঠে উনার সাথে মুয়ানাকা বা কোলাকুলি করলেন। উনার কপাল মুবারকে বুছা দিলেন। আর বললেন, হে ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনার এরূপ সীমাহীন ইলিম, আক্বল, সমঝই আপনাকে শত্রু বানিয়েছে। অর্থাৎ আপনার সীমাহীন ইলিম, আক্বল, সমঝের কারণে মানুষ ঈর্ষান্বিত হয়ে আপনার সাথে শত্রুতা করে। তারপর উনাকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে উনার মুবারক ছোহবতে রেখে তা’লীম-তরবিয়ত দান করলেন। অবশ্য তিনি উনার ছোহবত মুবারক বেশি দিন ইখতিয়ার করতে পারেননি। অল্প কিছুদিন পরই তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। পরে উনারই গদ্দীনসীন হন আহলে বাইতে রসূল হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম। তিনি উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেন। উনার নিকট থেকেই খিলাফত মুবারক লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ!

অসমাপ্ত- (পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৯

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০