পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১৯

সংখ্যা: ২৩৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লّীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা)  ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-চলমান), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করার পর-

৩২তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”-

পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

 সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয 


পূর্ব প্রকাশিতের পর

পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার সমর্থনে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম

 

পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমাউল উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দলীল-আদিল্লাহ মোতাবেক সম্মানিত ইসলামী শরীয়াত উনার যাবতীয় হুকুম-আহকাম মেনে চলার জন্য কারো অনুসরণ করাকে ‘আত-তাকলীদুশ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ বলে। উনাকে ‘তাকলীদুল ইসলাম’, ‘তাকলীদুদ্ দীন’ ও ‘তাকলীদুদ্ দালায়িলিল আরবায়াহ’ অর্থাৎ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার চারখানা দলীল উনাদের অনুসরণও বলা হয়ে থাকে।

নিম্নে পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার সমর্থনে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উল্লেখ করে উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম বা বিধি-বিধান আলোচনা করা হলো-

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ১৩

يا ايها الذين امنوا اطيعوا الله واطيعوا الرسول واولى الامر منكم فان تنازعتم فى شىء فردوه الى الله والرسول ان كنتم تؤمنون بالله واليوم الاخر ذلك خير واحسن تأويلا. (سورة النساء شريف ৫৯ الاية)

অর্থাৎ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্য করো, সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন-অনুকরণ করো এবং তোমাদের মধ্যে যাঁরা উলিল আমর (আদেশদাতা) উনাদের অনুসরণ করো। তোমাদের মধ্যে যদি কোন বিষয়ে মতবিরোধ হয়, তাহলে উক্ত বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করো অর্থাৎ যেই উলিল আমর উনার পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দলীল বেশি এবং যিনি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ মোতাবেক পরিপূর্ণ আমল করেন সেই উলিল আমর উনাকেই অনুসরণ করো। যদি তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাকো। এটাই কল্যানকর ও পরিনতির দিক দিয়ে উত্তম। (পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ৫৯)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার-

واولى الامر منكم فان تنازعتم فى شىء فردوه الى الله والرسول

অংশ দ্বারা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ, উলামা, আউলিয়া কিরাম ও উমারা-খলীফাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করতে নির্দেশ করা হয়েছে এবং ইজমাউল উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস যে মহা সম্মানিত শরীয়াত উনার দলীল তাও প্রমাণ করা হয়েছে। যেমনটি সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য সকল তাফসীর উনার কিতাব উনাদের মধ্যে উল্লেখ আছে।

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার বিশুদ্ধ তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৪০৩)

والشيخُ اولو الامر على الـمريد، وامامُ كل طائفة ذو الامر عليهم. (لطائف الاشارات اى تفسير القشيري المؤلف: عبد الكريم بن هوازن بن عبد الملك القشيري رحمة الله عليه المتوفى ৪৬৫ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: শায়েখ তথা মুরশিদ ক্বিবলা মুরীদদের মাঝে উলিল্ আমর অর্থাৎ আদেশদাতা। তেমনি প্রত্যেক গোত্রে ইমাম হচ্ছেন উলিল্ আমর। (লাত্বায়িফুল্ ইশারাত অর্থাৎ তাফসীরুল্ কুশাইরী লেখক: হযরত আব্দুল করীম বিন হাওয়াযিন বিন আব্দুল মালিক কুশাইরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৪৬৫ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪০৪)

وقال جابرُ بن عبدِ الله والحسنُ والضحَّاك ومجاهدُ رحمة الله علهيم: هُمُ الْفُقَهَاءُ وَالْعُلَمَاءُ اَهْلُ الدِّيْنِ وَالْفَضْلِ الَّذِيْنَ يُعَلِّمُونَ النَّاسَ مَعَالِمَ دِيْنِهِمْ؛ وَيَاْمُرُونَهُمْ بالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ، فَاَوْجَبَ اللهُ عَلَى الْعِبَادِ طَاعَتَهُمْ. (تفسير القرآن العظيم للإمام الطبراني سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: علامة حضرت أبو القاسم سليمان بن أحمد بن أيوب بن مطير اللخمي الشامي الطبراني رحمة الله عليه الولادة سنة ২৬০ هجري المتوفى سنة ৩৬০ هجري)

অর্থ: হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত দ্বহহাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন: উলিল আমর হলেন- হযরত ফুক্বাহা, দীনদার উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। যাঁরা মানুষদেরকে দীনী তা’লীম দিয়ে থাকেন। এবং উনারা সৎকাজের আদেশ করেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন। মহান আল্লাহ তায়ালা উনাদের আনুগত্য করাকে ওয়াজিব করেছেন। (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম লিত্ ত্ববারানী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: আল্লামা হযরত আবুল ক্বাসিম সুলাইমান বিন আহমাদ বিন আইয়্যূব বিন মুত্বীর লাখমী শামী ত্ববারানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ২৬০ হিজরী, ওয়াফাত: ৩৬০ হিজরী)

(৪০৫)

عَنْ ابِيْ هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ هُمْ اُمَرَاءُ السَّرَايَا.

عَنْ ابِيْ هُرَيْرَةَ رضى الله عنه فِيْ قوله عَزَّ وَجَلَّ: “اََطِيعُوا اللهَ وَاَطِيعُوا الرَّسُولَ وَاُولِي الاَمْرِ مِنْكُمْ” قال: هم الاُمراء.

عَنْ اَبي عبيدة رضى الله عنه: وَاُولِي الاَمْرِ مِنْكُمْ اي: ذوي الامر، الدليل عَلى ذلِكَ ان واحدها ذو.

عَنْ مجاهد رحمة الله عليه فِيْ قوله عَزَّ وَجَلَّ “اَطِيْعُوا اللهَ وَاَطِيْعُوا الرَّسُولَ وَاُولِي الاَمْرِ مِنْكُمْ” قَالَ: اصحابُ مُحَمَّد صلى الله عليه وسلم وأهل العقل والفقه والدين.

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله عنهما قوله: {اَطِيْعُوا اللهَ وَاَطِيْعُوا الرَّسُولَ وَاُولِي الاَمْرِ مِنْكُمْ} قَالَ: اُولِي الاَمْرِ: أَهْلُ طَاعَةِ اللهِ الَّذِينَ يُعَلِّمُوْنَ النَّاسَ مَعَانِيَ دِينِهِمْ وَيَأْمُرُونَهُمْ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَهُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ فَأَوْجَبَ اللهُ جَلَّ وَعَزَّ طَاعَتَهُمْ عَلَى الْعِبَادِ.

عَنْ جَابِرٍ رضى الله عنه: {وَأُولِي الأَمْرِ مِنْكُمْ} قَالَ: الْفُقَهَاءُ.

عَنْ عطاء رحمة الله عليه قَالَ أولي الفقه والعلم.

عَنْ عطاء رحمة الله عليه فِي قوله عَزَّ وَجَلَّ {أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الأَمْرِ مِنْكُمْ} قَالَ: أولي العلم والفقه وطاعة الرسول صلى الله عليه وسلم واتباع الكتاب والسنة.

عَن الضحاك رحمة الله عليه فِي قوله عَزَّ وَجَلَّ {أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الأَمْرِ مِنْكُمْ} قَالَ: علماء الْمُسْلِمِينَ وفقهاؤهم.

عَنْ مجاهد وعكرمة رحمة الله عليهما {وَأُولِي الأَمْرِ مِنْكُمْ} قَالَ: أولي العلم. (تفسير ابن المنذر المؤلف: ابو بكر محمد بن ابراهيم بن المنذر النيسابوري رحمة الله عليه المتوفى ৩১৯ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন: উলিল্ আমর হচ্ছেন সেনাপতিগণ।

হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি

اََطِيعُوا اللهَ وَاَطِيعُوا الرَّسُولَ وَاُولِي الاَمْرِ مِنْكُمْ

উনার ব্যাখ্যায় বলেন: উনারা হলেন সেনাপতি হযরত আবূ উবাইদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, উলিল্ আমর হলেন আদেশদাতা। উলূ শব্দটি ذو শব্দের বহুবচন।

হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি اََطِيعُوا اللهَ وَاَطِيعُوا الرَّسُولَ وَاُولِي الاَمْرِ مِنْكُمْ উনার ব্যাখ্যায় বলেন: উনারা হলেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা, সমঝদারগণ, ফক্বীহগণ ও আক্বায়িদ বিশারদগণ।

হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি

اََطِيعُوا اللهَ وَاَطِيعُوا الرَّسُولَ وَاُولِي الاَمْرِ مِنْكُمْ

উনার ব্যাখ্যায় বলেন: উলিল্ আমর হলেন মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্যকারী মানুষকে দ্বীন ইসলাম উনার শিক্ষাপ্রদানকারী আলিমগণ, যাঁরা মানুষকে সৎকাজের আদেশ দান করেন আর অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করে থাকেন। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি এমন ব্যক্তিত্ব উনাদেরকে অনুসরণ করতে বান্দাদের জন্য ওয়াজিব করে দিয়েছেন।

হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন: উলিল্ আমর হলেন হযরত ফুক্বাহা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম।

হযরত আত্বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: উলিল্ আমর হলেন ফক্বীহগণ ও বিজ্ঞ আলিমগণ।

হযরত আত্বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি

اََطِيعُوا اللهَ وَاَطِيعُوا الرَّسُولَ وَاُولِي الاَمْرِ مِنْكُمْ

উনার ব্যাখ্যায় বলেন: উলিল্ আমর হলেন- বিজ্ঞ আলিম, ফক্বীহ, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্যকারীগণ এবং কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের অনুসরণকারীগণ।

হযরত দ্বহ্হাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি

اََطِيعُوا اللهَ وَاَطِيعُوا الرَّسُولَ وَاُولِي الاَمْرِ مِنْكُمْ

উনার ব্যাখ্যায় বলেন: উলিল্ আমর হলেন- মুসলমানদের উলামায়ে কিরাম ও ফুক্বাহায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিমগণ।

হযরত মুজাহিদ ও ইকরামাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা উনারা বলেন: উলিল্ আমর হলেন- হক্কানী উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। (তাফসীরু ইবনিল্ মুনযির লেখক: হযরত আবূ বকর মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম বিন মুনযির নীসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩১৯ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪০৬)

عَنْ مجاهد رحمة الله عليه فِي قوله عَزَّ وَجَلَّ {فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ} قَالَ إِلَى الله: إِلَى كتابه وإلى رسوله: إِلى سنة نبيه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

عَنْ ميمون بْن مهران رحمة الله عليه قَالَ: فِي قوله عَزَّ وَجَلَّ {فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِيْ شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ} قَالَ: إِلى كتابه {وَالرَّسُولِ} قَالَ: مَا دام حيا، فإذا قبض فإلى سنته.

عَنْ قتادة رحمة الله عليه {فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِيْ شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ} يَقُول: ردوه إِلى كتاب الله وسنة رسوله صلى الله عليه وسلم. (تفسير ابن المنذر المؤلف: ابو بكر محمد بن ابراهيم بن المنذر النيسابوري رحمة الله عليه المتوفى ৩১৯ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা উনার বাণী-

فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ

উনার ব্যাখ্যায় বলেন: ‘ইলাল্লাহ’ উনার দ্বারা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কিতাব এবং ‘ইর্লা রসূল’ দ্বারা হযরত নাবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নাত তথা হাদীছ শরীফ উনাদের দিকে প্রত্যাবর্তন করা উদ্দেশ্য করা হয়েছে।

হযরত মাইমূন বিন মিহরান রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: ‘ইলাল্লাহ’ দ্বারা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কিতাব তথা পবিত্র কুরআন মাজীদ এবং ‘ইর্লা রসূল’ দ্বারা উনার পবিত্র হায়াত মুবারকে উনাকেই উদ্দেশ্য করা হয়েছে আর উনার পর্দা মুবারক করার পর উনার সুন্নাহ তথা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে।

হযরত ক্বতাদাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি

فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِيْ شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ

পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলেন: তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কিতাব ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নাহ শরীফ উনাদের দিকে প্রত্যাবর্তণ করো। (তাফসীরু ইবনিল্ মুনযির লেখক: হযরত আবূ বকর মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম বিন মুনযির নীসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩১৯ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪০৭)

اختلفوا في {أُولِي الأمْرِ} قال ابن عباس رضى الله عنهما وجابر رضي الله عنه: هم الفقهاء والعلماء الذين يعلِّمون الناس معالِمَ دينهم، وهو قول الحسن والضحاك ومجاهد رحمة الله عليهم.

وقال ابو هريرة رضى الله عنه: هم الأمراء والولاة.

وقيل: المراد أمراء السرايا،

وقال عكرمة رحمة الله عليه: أراد بأولي الأمر أبا بكر وعمر رضى الله عنهما.

وقال عطاء رحمة الله عليه: هم المهاجرون والأنصار والتابعون لهم بإحسان. (معالم التنزيل اى تفسير البغوي المؤلف: محيي السنة أبو محمد الحسين بن مسعود البغوي الشافعي رحمة الله عليه المتوفى ৫১০ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: ‘উলিল্ আমর’ উনার ব্যাখ্যায় হযরত মুফাসসিরীনে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইখতিলাফ করেছেন। হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা ও হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনারা বলেন: উলিল্ আমর হলেন হযরত ফুক্বাহা ও উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা, যাঁরা মানুষদেরকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার তা’লীম দিয়ে থাকেন। এটা হযরত হাসান, দ্বহ্হাক ও মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরও মত।

হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন: উলিল্ আমর হলেন আমীর-উমারা ও রাজা-বাদশা।

কেউ কেউ বলেন: সেনাপতি উনারা।

হযরত ইকরামাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: এখানে উলিল্ আমর দ্বারা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ও হযরত উমর বিন খত্তাব আলাইহিস সালাম উনারা উদ্দেশ্য।

হযরত আত্বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: উলিল্ আমর হচ্ছেন হযরত মুহাজিরূন ও আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম  এবং উনাদেরকে উত্তমভাবে অনুসরণকারী হযরত তাবিঊনে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা। (মায়ালিমুত্ তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল্ বাগবী লেখক: মুহইস্ সুন্নাহ হযরত আবূ মুুহাম্মাদ হুসাঈন বিন মাসঊদ বাগবী শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৫১০ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪০৮)

{فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُول} أي: إلى كتاب الله وإلى رسوله صلى الله عليه وسلم ما دام حيا وبعد وفاته إلى سُنّته، والرُّد إلى الكتاب والسنة واجب إن وُجد فيهما، فإن لم يُوجد فسبيله الاجتهاد. (معالم التنزيل اى تفسير البغوي المؤلف: محيي السنة أبو محمد الحسين بن مسعود البغوي الشافعي رحمة الله عليه المتوفى ৫১০ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: (তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে প্রত্যাবর্তণ করো) অর্থাৎ মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কিতাব তথা পবিত্র কুরআন মাজীদ এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হায়াতে তাইয়্যিবায় উনাকে আর উনার পর্দা মুবারক করার পর উনার সুন্নাহ তথা হাদীছ শরীফ উনার দিকে প্রত্যাবর্তণ করো। এমতাবস্থায় কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দিকে প্রত্যাবর্তণ করা ওয়াজিব। যদি উনাদের মধ্যে সরাসরি কোন ফায়সালা না পাওয়া যায় তাহলে ইজতিহাদ বা ক্বিয়াস উনার পথ অবলম্বন করতে হবে। (মায়ালিমুত্ তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল্ বাগবী লেখক: মুহইস্ সুন্নাহ হযরত আবূ মুুহাম্মাদ হুসাঈন বিন মাসঊদ বাগবী শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৫১০ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪০৯)

وطاعة الله واجبة على كافة الخلق. وكذا طاعة رسوله صلّى الله عليه وسلّم واجبة ايضا لقوله تعالى واطيعوا الله واطيعوا الرسول فاوجب طاعة رسول الله صلّى الله عليه وسلّم على الخلق. واختلف العلماء في أولي الأمر الذين اوجب طاعتهم بقوله وأولي الأمر منكم. يعني وأطيعوا أولي الأمر منكم قال ابن عباس رضى الله عنهما وجابر رضى الله عنه هم الفقهاء والعلماء الذين يعلمون معالم الناس دينهم وهو قول الحسن والضحاك ومجاهد رحمة الله عليهم وقال ابو هريرة رضى الله عنه الأمراء والولاة وهي رواية عن ابن عباس رضى الله عنهما ايضا.

… قال العلماء طاعة الإمام واجبة على الرعية ما دام على الطاعة فإذا زال عن الكتاب والسنة فلا طاعة له وإنما تجب طاعته فيما وافق الحق. (لباب التأويل في معاني التنزيل اى تفسير الخازن المؤلف: علاء الدين علي بن محمد بن ابراهيم البغدادي الشافعي الشهير بالخازن رحمة الله عليه الوفاة ৭৪১ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্য করা সমস্ত মাখলূক্বাতের উপর ফরয। অনুরূপ সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করা মাখলূক্বাতের উপর ফরয। যেমনটি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার বাণী মুবারক: তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করো। এখানে হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য বা অনুসরণ-অনুকরণ করাকে মাখলূক্বাতের উপর ফরয করে দেয়া হয়েছে।

উলিল্ আমর উনাদের আনুগত্য করাও ওয়াজিব বা ফরয। তবে উলিল্ আমর কারা এ ব্যপারে ইখতিলাফ রয়েছে। হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা ও হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনারা বলেন: উলিল্ আমর হলেন হযরত ফুক্বাহা ও উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম যাঁরা মানুষদেরকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার তা’লীম দিয়ে থাকেন। ইহা হযরত হাসান, দ্বহ্হাক ও মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরও মত। হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন: উলিল্ আমর হলেন আমীর-উমারা ও রাজা-বাদশাগণ। এটা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনার একটি মত।

হযরত উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: মহান আল্লাহ তায়ালা ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পূর্ণ আনুগত্যকারী ইমাম-মুজতাহিদ উনাদেরকে অনুসরণ করা ফরয। কিন্তু যদি তারা কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আনুগত্য থেকে সরে যায় তাহলে তাদেরকে অনুসরণ করা যাবে না। নিশ্চয়ই হক্বের উপর ইস্তিক্বামাত থাকার শর্তে ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের আনুগত্য করা ফরয। (লুবাবুত্ তা’বীল ফী মায়ানিত্ তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল্ খাযিন লেখক: হযরত আলাউদ্দীন আলী বিন মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম বাগদাদী শাফিয়ী খাযিন রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭৪১ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪১০)

والرد إلى كتاب الله وسنة رسوله صلّى الله عليه وسلّم واجب ان وجد ذلك الحكم في كتاب الله اخذ به فان لم يوجد في كتاب الله ففي سنة رسوله صلّى الله عليه وسلّم فان لم يوجد فى السنة فسبيله الاجتهاد. (لباب التأويل في معاني التنزيل اى تفسير الخازن المؤلف: علاء الدين علي بن محمد بن ابراهيم البغدادي الشافعي الشهير بالخازن رحمة الله عليه الوفاة ৭৪১ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: পবিত্র কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দিকে প্রত্যাবর্তন করা ফরয। কোন বিষয়ে কিতাবুল্লাহ উনার মধ্যে দলীল থাকলে তা-ই অনুসরণ করতে হবে। যদি কিতাবুল্লাহ উনার মধ্যে না থাকে তাহলে সুন্নাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে প্রত্যাবর্তণ করতে হবে। আর যদি সুন্নাহ শরীফ উনার মধ্যেও পাওয়া না যায় তাহলে ইজতিহাদ তথা ক্বিয়াস উনার পথ অনুসরণ করতে হবে। (লুবাবুত্ তা’বীল ফী মায়ানিত্ তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল্ খাযিন লেখক: হযরত আলাউদ্দীন আলী বিন মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম বাগদাদী শাফিয়ী খাযিন রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭৪১ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪১১)

وعن عبد الله رضى الله عنه ومجاهد رحمة الله عليهما وجماعة: أولو الأمر: أهل القرآن والعلم، فالأمرعلى هذا التأويل أشار إلى القران والشريعة. (المحرر الوجيز اى تفسير ابن عطية المؤلف: ابو محمد عبد الحق بن غالب بن عبد الرحمن بن تمام بن عطية الأندلسي المحاربي رحمة الله عليه المتوفى ৫৪২ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও একদল মুফাসসিরীনে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: উলুল্ আমর হচ্ছেন আহলুল্ কুরআন ও বিজ্ঞ আলিম উনারা। আমর উনার ব্যাখ্যায় এটাই ইঙ্গিত বহণ করে যে, তা হচ্ছে পবিত্র কুরআন মাজীদ ও সম্মানিত দ্বীনী শরীয়াত। (আল্ মুর্হারারুল ওয়াজীয অর্থাৎ তাফসীরু ইবনি আতিয়্যাহ লেখক: হযরত আবূ মুহাম্মাদ আব্দুল হক্ব বিন গালিব বিন আব্দুর রহমান বিন তাম্মাম বিন আতিয়্যাহ আন্দালুসী মাহারিবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৫৪২ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪১২)

والرد إلى الله: هو النظر في كتابه العزيز، والرد إلى الرسول: هو سؤاله فى حياته والنظر فى سنته بعد وفاته عليه الصلوة والسلام هذا قول مجاهد والأعمش وقتادة والسدي رحمة الله عليهم، وهو الصحيح. (الـمحرر الوجيز اى تفسير ابن عطية المؤلف: ابو محمد عبد الحق بن غالب بن عبد الرحمن بن تمام بن عطية الأندلسي الـمحاربي رحمة الله عليه المتوفى ৫৪২ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: মহান আল্লাহ তায়ালা উনার দিকে প্রত্যাবর্তণ দ্বারা মহিমান্বিত কিতাব তথা পবিত্র কুরআন মাজীদ উদ্দেশ্য। আর হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে প্রত্যাবর্তন দ্বারা উনার হায়াত মুবারকে উনাকে জিজ্ঞাসা করা আর উনার পবিত্র বিছাল শরীফ উনার পর উনার সুন্নাহ শরীফ তথা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আনুগত্য করা উদ্দেশ্য। ইহা হযরত মুজাহিদ, আ’মাশ, ক্বতাদাহ ও সুদ্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মত। এ মতটি ছহীহ বা বিশুদ্ধ। (আল্ মুর্হারারুল ওয়াজীয অর্থাৎ তাফসীরু ইবনি আতিয়্যাহ লেখক: হযরত আবূ মুহাম্মাদ আব্দুল হক্ব বিন গালিব বিন আব্দুর রহমান বিন তাম্মাম বিন আতিয়্যাহ আন্দালুসী মাহারিবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৫৪২ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪১৩)

(وَأُوْلِي الأمر) هم: الولاة، وقيل: العلماء نزلت في عبد الله بن حذافة رضى الله عنه بعثه رسول الله صلى الله عليه وسلم في سرية. (التسهيل لعلوم التنزيل اى تفسير ابن جزي المؤلف: محمد بن احمد بن محمد بن جزي الكلبي الغرناطي المالكي رحمة الله عليه الولادة ৬৯৩ هجري الوفاة ৭৪১ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: (উলিল্ আমর) উনারা হলেন: রাজা-বাদশাগণ। কেউ বলেন: হযরত উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উদ্দেশ্য। পবিত্র আয়াত শরীফখানা হযরত আব্দুল্লাহ বিন হুযাফাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার শানে নাযিল হয়, যখন উনাকে হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিহাদে প্রেরণ করেছিলেন। (আত্ তাসহীল লিউলূমিত্ তানযীল অর্থাৎ তাফসীরু ইবনি জুযী লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন জুযী কালবী গারনাত্বী মালিকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৬৯৩ হিজরী ওয়াফাত: ৭৪১ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪১৪)

{وأولي الأمر منكم} أولوا الأمر: هم الأمراء والعلماء من المسلمين. (ايسر التفاسير المؤلف: ابو بكر الجزائري رحمة الله عليه سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: (তোমরা উলিল্ আমর উনাদের অনুসরণ করো) উলুল্ আমর হলেন: মুসলমান উনাদের মধ্যে আমীর-উমারা ও হযরত উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। (আইসারুত্ তাফাসীর লেখক: হযরত আবূ বকর জাযায়িরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪১৫)

قال جابر رضى الله عنه وجماعةٌ: أُولُو الأَمْرِ: أهل القران والعِلْمِ.

قال عطاءٌ رحمة الله عليه: طاعةُ الرَّسُولِ صلى الله عليه وسلم هي اتباع سُنَّته يعني بعد موته، ولفظ ابْنِ العَرَبِيِّ في ্রاحكامه قال: قوله تعالى {وَأُوْلِي الأمر مِنْكُمْ} فيها قولان:

الأوَّل: قال ميمونُ بْنُ مِهْرَانَ رحمة الله عليه هم أصحاب السَّرَايَا، وروى في ذلك حديثاً، وهو اختيار البُخَاريِّ، وروي عن ابْنِ عباس رضى الله عنهما أنَّها نزلَتْ في عبد الله بْنِ حُذَافَة رضى الله عنه إذْ بعثه النبيُّ صلى الله عليه وسلم في سرِيَّة.

والثاني: هم العلماءُ، وبه قال أكثر التابِعِينَ رحمة الله عليهم، واختاره مالكٌ والطبريُّ رحمة الله عليهما.

والصحيحُ عِنْدِي: أنهم الأمراء والعلماء، أمَّا الأمراء فَلأنَّ الأمْرَ منهم والحُكْمَ إلَيْهم، وأمَّا العلماء فَلأنَّ سؤالهم متعيِّن على الخَلْق، وجوابهم لازمٌ، وامتثال فَتْوَاهم واجبٌ، ويدخُلُ فيه تَأَمُّر الزَّوْج على الزَّوْجَةِ؛ لأنَّه حاكِمٌ عليها. (الجواهر الحسان في تفسير القران اى تفسير الثعالبي المؤلف: ابو زيد عبد الرحمن بن محمد بن مخلوف الثعالبي رحمة الله عليه المتوفى ৮৭৫ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও একদল মুফাসসিরীনে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: আহলুল্ কুরআন ও বিজ্ঞ আলিম উনারা। হযরত আত্বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: ত্বয়ার্তু রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বারা উনার পবিত্র বিছাল শরীফ উনার পর উনার সুন্নাত উনার ইত্তিবা করা উদ্দেশ্য।

হযরত ইবনুল্ আরাবী মালিকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার তাফসীর ‘আহকামুল কুরআন’ উনার মধ্যে বলেন: উলিল্ আমর উনার ব্যাপারে দু’টি মত রয়েছে। এক: হযরত মাইমূন বিন মিহরান রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উলিল্ আমর হচ্ছেন জিহাদের সেনাপতি। এ ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণনা রয়েছে। হযরত ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ মতটি পছন্দ করেছেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হয় হযরত আব্দুল্লাহ বিন হুযাফাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার ব্যাপারে, যখন হযরত নাবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে কোন জিহাদে প্রেরণ করেছিলেন।

দ্বিতীয়: উলিল্ আমর হলেন হযরত উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি। অধিকাংশ তাবিয়ীন রহমাতুল্লাহি আলাইহিম এটাই বলেছেন। হযরত ইমাম মালিক ও ত্ববারী রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা এ মতটিকে পছন্দ করেছেন।

আমার নিকট বিশুদ্ধ মত এই যে: উলিল্ আমর হলেন হযরত উমারা ও উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। কেননা, আমীরগণ আদেশ করে থাকেন এবং মানুষদেরকে হুকুম করে থাকেন। আর উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে মানুষেরা জিজ্ঞাসা করে থাকে। তাদের জাওয়াব দেয়া, ফাতাওয়া দেয়া ওয়াজিব। এর দ্বারা স্ত্রীর উপর স্বামী আদেশদাতা প্রমাণিত হয়। কেননা, স্বামী তার স্ত্রীর উপর হাকিম বা কর্তৃত্বকারী। (আল্ জাওয়াহিরুল্ হাস্সান ফী তাফসীরিল্ কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুছ্ ছায়ালাবী লেখক: হযরত আবূ যায়েদ আব্দুর রহমান বিন মুহাম্মাদ বিন মাখলূফ ছায়ালাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৮৭৫ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪১৬)

والرَّدُّ إلى الله هو النَّظْرُ في كتابِهِ العزيزِ ، والرَّدُّ إلى الرسولِ هو سؤَالُه صلى الله عليه وسلم في حياتِه، والنَّظْرُ فى سُنَّته بعد وفاته، هذا قولُ مجاهد رحمة الله عليه وغيرِه، وهو الصحيحُ. (الجواهر الحسان في تفسير القران اى تفسير الثعالبي المؤلف: ابو زيد عبد الرحمن بن محمد بن مخلوف الثعالبي رحمة الله عليه المتوفى ৮৭৫ هجري سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: মহান আল্লাহ তায়ালা উনার দিকে প্রত্যাবর্তণ দ্বারা মহিমান্বিত কিতাব তথা পবিত্র কুরআন মাজীদ উদ্দেশ্য। আর হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে প্রত্যাবর্তণ দ্বারা উনার হায়াত মুবারকে উনাকে জিজ্ঞাসা করা আর উনার পবিত্র বিছাল শরীফ উনার পর উনার পবিত্র সুন্নাহ শরীফ তথা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আনুগত্য করা উদ্দেশ্য। এটা হযরত মুজাহিদ ও অপরাপর মুফাসসিরীনে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মত। এ মতটি ছহীহ বা বিশুদ্ধ। (আত্ তাসহীল লিউলূমিত্ তানযীল অর্থাৎ তাফসীরু ইবনি জুযী লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন জুযী কালবী গারনাত্বী মালিকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৬৯৩ হিজরী ওয়াফাত: ৭৪১ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪১৭)

عن ابي هريرة رضى الله عنه فى قول الله تعالى واولى الامر منكم قال: امراء السرايا.

عن مجاهد رحمة الله عليه قوله: واولى الامر منكم قال: اولو العلم والفقه.

عن أبى العالية وبكر بن عبد الله المزنى رحمة الله عليهما انهما قالا: العلماء.

عن الحسن رحمة الله عليه في قول الله تعالى واولى الامر منكم قال: اولى العلم والفقه والعقل والراى.

عن عكرمة رحمة الله عليه في قول الله تعالى واولى الامر منكم قال: ابو بكر عليه السلام وعمر عليه السلام.

عن عكرمة رحمة الله عليه واولي الامر منكم قال: كان عمر عليه السلام من اولى الامر.

عن الضحاك رحمة الله عليه قوله: واولى الامر منكم قال: هم اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم هم الدعاة الرواة. (تفسير ابن ابى حاتم المؤلف: الإمام الحافظ ابو محمد عبد الرحمن بن ابي حاتم الرازي رحمة الله عليه سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার বানী: ‘উলিল্ আমরি মিনকুম’ উনার ব্যাখ্যায় বলেন: উনারা হলেন সেনাপতি।

হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: উলিল্ আমর হচ্ছেন বিজ্ঞ হক্কানী আলিম ও ফক্বীহ উনারা।

হযরত আবুল আলিয়াহ ও বকর বিন আব্দুল্লাহ মাযানী রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা উনারা বলেন: উনারা হলেন হক্কানী উলামায়ে কিরাম তথা হযরত আওলিয়া কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম।

হযরত হাসান বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উলিল্ আমর উনার ব্যাখ্যায় বলেন: উনারা হলেন- বিজ্ঞ আলিম, ফক্বীহ, বুঝদারগণ ও মুজতাহিদগণ।

হযরত ইকরামাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: উলিল্ আমর হলেন- হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ও হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম।

হযরত ইকরামাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন: হযরত উমর ইবনুল্ খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি উলিল্ আমর উনাদের অন্তর্ভুক্ত।

হযরত দ্বহ্হাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: উলিল্ আমর হচ্ছেন আছহাবে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। (তাফসীরে ইবনু আবী হাতিম লেখক: ইমাম হাফিয হযরত আবূ মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান বিন আবী হাতিম রাযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪১৮)

(واولى الامر منكم) يعني خالد بن الوليد رضى الله عنه لأن النبى صلى الله عليه وسلم كان ولاه أمرهم، فأمر الله عز وجل بطاعة أمراء سرايا رسول الله صلى الله عليه وسلم.

(فإن تنازعتم في شيء) من الحلال والحرام يعني خالدا وعمارا (فردوه إلى الله) يعنى إلى القران (والرسول) يعنى سنة النبى صلى الله عليه وسلم نظيرها فى النور. (تفسير مقاتل بن سليمان المؤلف: ابو الحسن مقاتل بن سليمان بن بشير الأزدي البلخي رحمة الله عليه سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة)

অর্থ: (তোমাদের মধ্যে যাঁরা উলিল্ আমর উনাদেরকে অনুসরণ করো) অর্থাৎ হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু। কেননা, হযরত নাবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিহাদের সেনাপতি বানিয়েছিলেন। আর মহান আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা তিনি হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কর্তৃক নিয়োগকৃত জিহাদের সেনাপতিকে মানতে আদেশ করেছেন। (তোমাদের মধ্যে যদি কোন বিষয়ে মতবিরোধ হয়) হালাল ও হারাম বিষয়ে, অর্থাৎ হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও হযরত আম্মার রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাদের ব্যাপারে (তাহলে প্রত্যাবর্তন করো মহান আল্লাহ তায়ালা উনার দিকে) অর্থাৎ পবিত্র কুরআন মাজীদ উনার দিকে (ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে) অর্থাৎ হযরত নাবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নাত উনার দিকে। যার দৃষ্টান্ত হলো নূর বা হিদায়াত। (তাফসীরে মুক্বাতিল বিন সুলাইমান লেখক: হযরত আবুল হাসান মুক্বাতিল বিন সুলাইমান বিন বাশীর আযদী বালখী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৫

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৬

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৭