পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, সময় ও মুহূর্তের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১১

সংখ্যা: ২০৪তম সংখ্যা, ২৪০তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, সময় ও মুহূর্তের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১১

৩য় পর্ব


 

[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-২৩৭), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২০৩তম সংখ্যা), ৩২. হানাফী মাযহাব মতে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে ‘আমীন’ অনুচ্চ আওয়াজে বা চুপে চুপে পাঠ করাই শরীয়তের নির্দেশ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১২তম সংখ্যা), ৩৩. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২২০তম সংখ্যা থেকে যা এখনো চলছে) পেশ করার পাশাপাশি-

৩৪তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

 

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

 

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!

অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-

استحلال الـمعصية كفر.

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি” প্রকাশ করা হলো।

 

ইসলামী মাস, বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় সমূহ সম্পর্কে এবং চন্দ্র ও সূর্য উভয়ের গতিবিধির ব্যাপারে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার ২৬ খানা পবিত্র আয়াত শরীফ

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-৬

انَّ رَبَّكُمُ الله الَّذِىْ خَلَقَ السَّموتِ وَالْاَرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوى عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِى اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُه حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِاَمْرِه اَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْاَمْرُ تَبَارَكَ الله رَبُّ الْعَالَمِيْنَ. سورة الاعراف شريف ۵۴ الاية

অর্থ: নিশ্চয়ই তোমাদের রব হচ্ছেন মহান আল্লাহ তায়ালা। তিনি আসমানসমূহ ও যমীনসমূহকে ছয় দিনে অর্থাৎ ছয় ধাপে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর সম্মানিত আরশ উনার প্রতি ইস্তাওয়া হয়েছেন। তিনি দিন দ্বারা রাতকে আচ্ছাদিত করেন এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি স্বীয় আদেশের অনুগামী সূর্য, চন্দ্র ও তারকারাজীকে সৃষ্টি করেছেন। জেনে রাখুন উনারই কাজ সৃষ্টি করা ও আদেশ দান করা। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি বরকতময় বিশ্বজগতের প্রতিপালক। (পবিত্র সূরাতুল্ আ’রাফ শরীফ: ৫৪)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-৭

انَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِىْ كِتَابِ اللهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّموتِ وَالْاَرْضَ مِنْهَا اَرْبَعَة حُرُم ذلِكَ الدّينُ الْقَيّمُ فَلَا تَظْلِمُوْا فِيهِنَّ اَنْفُسَكُمْ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِيْنَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُوْنَكُمْ كَافَّةً وَاعْلَمُوْا اَنَّ الله مَعَ الْمُتَّقِيْنَ. سورة التوبة شريف ۳۶ الاية

অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট উনার বিধানে আসমানসমূহ ও যমীনসমূহ সৃষ্টির দিন হতেই গণনা হিসেবে মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে ৪টি হারাম (যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ) মাস। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এ মাসগুলোর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না। তোমরা মুশরিকদের সাথে সর্বাত্মকভাবে জিহাদ করবে, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ করে থাকে। আর জেনে রাখুন! মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি মুত্তাক্বীনগণের সঙ্গে আছেন। (পবিত্র সূরাতুত তাওবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৩৬)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-৮

انَّمَا النَّسِىءُ زِيَادَة فِى الْكُفْرِ يُضَلُّ بِهِ الَّذِينَ كَفَرُوْا يُحِلُّوْنَه عَامًا وَيُحَرّمُوْنَه عَامًا لِيُوَاطِئُوْا عِدَّةَ مَا حَرَّمَ الله فَيُحِلُّوْا مَا حَرَّمَ الله زُيّنَ لَهُمْ سُوءُ اَعْمَالِهِمْ وَالله لَا يَهْدِى الْقَوْمَ الْكَافِرِيْنَ. سورة التوبة ۳۷ الاية

অর্থ: নিশ্চয়ই নাসী করা অর্থাৎ মাসকে আগে পিছে করাটা কুফরীর মাত্রাকে বৃদ্ধি করে, যার ফলে কাফিররা গুমরাহীতে পতিত হয়। এরা হালাল করে নেয় একে এক বছর এবং হারাম করে নেয় অন্য বছর, যাতে তারা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার হারামকৃত মাসগুলোকে সংখ্যা হিসেবে পূর্ণ করে। অতঃপর তারা হালাল করে যা মহান আল্লাহ পাক তিনি হারাম করেছেন। তাদের মন্দ কাজগুলো তাদের জন্যে শোভনীয় করে দেয়া হয়। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত দান করেন না। (পবিত্র সূরাতুত্ তাওবাহ শরীফ-৩৭)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-৯

هُوَ الَّذِىْ جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاءً وَالْقَمَرَ نُوْرًا وَقَدَّرَه مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السّنِينَ وَالْحِسَابَ مَا خَلَقَ الله ذلِكَ الَّا بِالْحَقّ يُفَصّلُ الْايَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُوْنَ. سورة يونس شريف ۵ الاية

অর্থ: তিনিই মহান সত্তা, যিনি সূর্যকে উজ্জ্বল আলোকময় বানিয়েছেন এবং চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে, অতপর নির্ধারিত করেছেন তার জন্য মানযিল সমূহ, যাতে করে তোমরা বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব জানতে পারো। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি এগুলোকে অযথা সৃষ্টি করেননি। তিনি এই প্রমাণাদি বা নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন সেই সকল লোকদের জন্য যারা সমঝদার। (পবিত্র সূরাতু ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১০

وَاَقِمِ الصَّلوةَ طَرَفَى النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ انَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيّئَاتِ ذلِكَ ذِكْرى لِلذَّاكِرِيْنَ. سورة هود شريف ۱۱۴ الاية

অর্থ: ছলাত কায়িম করুন বা রাখুন দিনের দুই প্রান্তে এবং রাতের প্রান্তভাগেও। নিশ্চয়ই নেককাজ পাপকে দূর করে দেয়। যারা সমঝদার বা আল্লাহওয়ালা তাদের জন্য এটি এক মহা উপদেশ। (পবিত্র সূরাতু হূদ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৪)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১১

الله الَّذِىْ رَفَعَ السَّموتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ثُمَّ اسْتَوى عَلَى الْعَرْشِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِىْ لِاَجَلٍ مُسَمّى يُدَبّرُ الْاَمْرَ يُفَصّلُ الْايَاتِ لَعَلَّكُمْ بِلِقَاءِ رَبّكُمْ تُوْقِنُوْنَ. وَهُوَ الَّذِىْ مَدَّ الْاَرْضَ وَجَعَلَ فِيْهَا رَوَاسِىَ وَاَنْهَارًا وَمِنْ كُلّ الثَّمَرَاتِ جَعَلَ فِيْهَا زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ يُغْشِى اللَّيْلَ النَّهَارَ انَّ فِىْ ذلِكَ لَايَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُوْنَ. سورة الرعد شريف ۳-۲ الايتان

অর্থ: তিনিই মহান আল্লাহ তায়ালা, যিনি স্তম্ভ ব্যতীত উর্ধ্বদেশে আকাশসমূহকে স্থাপন করেছেন। তোমরা সেগুলো দেখ। অতঃপর তিনি আরশে ইস্তাওয়া হয়েছেন এবং তিনিই সূর্য ও চন্দ্রকে অনুগত করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চলবে। তিনি সকল বিষয় পরিচালনা করেন, নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা স্বীয় রব তায়ালা উনার সাক্ষাত সম্মন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।

তিনিই যমীনকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাতে পাহাড়-পর্বত ও নদী-নালা স্থাপন করেছেন এবং প্রত্যেক ফলের মধ্যে দু’ দুপ্রকার সৃষ্টি করে রেখেছেন। তিনি দিনকে রাত দ্বারা আবৃত করেন। এতে যাঁরা চিন্তা করে তাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। (পবিত্র সূরার্তু রা’দ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২-৩)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১২

وَسَخَّرَ لَكُمُ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ دَائِبَيْنِ وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ. سورة ابراهيم شريف ۳۳ الاية

অর্থ: তিনিই তোমাদের উপকারার্থে সূর্য ও চন্দ্রকে নিয়েমের অধীন করেছেন যা অনবরত চলবে। আর তোমাদের উপকারের জন্য রাত ও দিনকেও নিয়মের অধীন করেছেন। (পবিত্র সূরাতু ইবরাহীম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১৩

وَجَعَلْنَا اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ ايَتَيْنِ فَمَحَوْنَا ايَةَ اللَّيْلِ وَجَعَلْنَا ايَةَ النَّهَارِ مُبْصِرَةً لِتَبْتَغُوْا فَضْلًا مِنْ رَبّكُمْ وَلِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السّنِينَ وَالْحِسَابَ وَكُلَّ شَىْءٍ فَصَّلْنَاهُ تَفْصِيْلًا.سورة بنى اسرائيل شريف ۱۲ الاية

অর্থ: আমি রাত ও দিনকে দু’টি নিদর্শন করেছি। অতপর নিস্প্রভ করে দিয়েছি রাতের নিদর্শন এবং দিনের নিদর্শনকে দেখার উপযোগী করেছি, যাতে তোমরা তোমাদের রব তায়ালা উনার অনুগ্রহ অন্বেষণ করো এবং যেন তোমরা জানতে পারো বছর সমূহের সংখ্যা এবং করতে পারো হিসাব। আর আমি সব বিষয়কে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছি। (পবিত্র সূরাতু বাণী ইসরাঈল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১২)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১৪

اَقِمِ الصَّلوةَ لِدُلُوْكِ الشَّمْسِ الى غَسَقِ اللَّيْلِ وَقُرْانَ الْفَجْرِ انَّ قُرْانَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُوْدًا. وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِه نَافِلَةً لَكَ عَسى اَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُوْدًا. سورة بنى اسرائيل شريف ۷۹-۷۸ الايتان

অর্থ: ছলাত ক্বায়িম করুন সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাতের আঁধার পর্যন্ত এবং ফজরে পবিত্র কুরআন শরীফ পাঠ করুন। অর্থাৎ ফজর নামায আদায় করুন। নিশ্চয়ই সকালের পবিত্র কুরআন শরীফ পাঠ অর্থাৎ ফজর নামায সাক্ষী হবে। রাতের কিছু অংশ সময় তাহাজ্জুদ আদায় করুন। এটা আপনার জন্যে নাফ্ল। অবশ্যই আপনার রব আপনাকে মাক্বামে মাহমূদ হাদিয়া করেছেন। (পবিত্র সূরাতু বাণী ইসরাঈল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭৮-৭৯)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১৫

فَاصْبِرْ عَلى مَا يَقُوْلُوْنَ وَسَبّحْ بِحَمْدِ رَبّكَ قَبْلَ طُلُوْعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوْبِهَا وَمِنْ انَاءِ اللَّيْلِ فَسَبّحْ وَاَطْرَافَ النَّهَارِ لَعَلَّكَ تَرْضى. سورة طه شريف ۱۳۰ الاية

অর্থ: সুতরাং এরা যা বলে সে বিষয়ে ছবর করুন এবং আপনার রব তায়ালা উনার পবিত্রতা ও প্রশংসা করুন সূর্যোদয়ের পূর্বে, সূর্যাস্তের পূর্বে এবং রাতের কিছু অংশে। আরো পবিত্রতা বর্ণনা করুন দিনের দুই প্রান্তে অর্থাৎ শুরুতে ও শেষে। অবশ্যই এতে আপনি সন্তুষ্ট হবেন। (পবিত্র সূরাতু ত্বো-হা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩০)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১৬

ذلِكَ بِاَنَّ اللهَ يُوْلِجُ اللَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَيُوْلِجُ النَّهَارَ فِى اللَّيْلِ وَاَنَّ اللهَ سَمِيْعٌ بَصِيْرٌ. (سورة الحج شريف ۶۱ الاية

অর্থ: এটা এজন্য যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা রাতকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করে দেন। এবং নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা সবকিছু শুনেন দেখেন। (পবিত্র সূরাতুল্ হাজ্জ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১৭

اَلَمْ تَرَ الى رَبّكَ كَيْفَ مَدَّ الظّلَّ وَلَوْ شَاءَ لَجَعَلَه سَاكِنًا ثُمَّ جَعَلْنَا الشَّمْسَ عَلَيْهِ دَلِيْلًا. ثُمَّ قَبَضْنَاهُ الَيْنَا قَبْضًا يَسِيْرًا. (سورة الفرقان شريف ۴۶-۴۵ الايتان

অর্থ: আপনি কি আপনার রব তায়ালা উনাকে দেখেন না, তিনি কিভাবে ছায়াকে লম্বা করেছেন? তিনি ইচ্ছা করলে একে স্থির রাখতে পারতেন। এরপর আমি সূর্যকে করেছি এ বিষয় দলীল বা প্রমাণ। অতপর আমি একে নিজের দিকে সহজেই গুটিয়ে নেই বা আনি। (পবিত্র সূরাতুল্ ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৫-৪৬)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১৮

وَلَئِنْ سَاَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَ السَّموتِ وَالْاَرْضَ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لَيَقُولُنَّ اللهُ فَاَنّى يُؤْفَكُوْنَ. (سورة العنكبوت شريف ۶۱ الاية

অর্থ: আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন আকাশসমূহ ও যমীনসমূহকে কে সৃষ্টি করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কে নিয়মের অধীন করেছেন? এতে তারা অবশ্যই বলবে মহান আল্লাহ তায়ালা। তাহলে তারা কোথায় প্রত্যাবর্তন করছে। (পবিত্র সূরাতুল্ আনকাবূত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১৯

اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللهَ يُوْلِجُ اللَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَيُوْلِجُ النَّهَارَ فِى اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلّ يَجْرِىْ الى اَجَلٍ مُسَمًّى وَاَنَّ اللهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ. (سورة لقمان شريف ۲۹ الاية

অর্থ: আপনি কি দেখেননি যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা রাতকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করে দেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে নিয়মের অধীন করেছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিয়মান থাকবে। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি তোমরা যা করো তার খবর রাখেন। (পবিত্র সূরাতু লুক্বমান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-২০

يُوْلِجُ اللَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَيُوْلِجُ النَّهَارَ فِى اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِىْ لِاَجَلٍ مُسَمًّى ذلِكُمُ الله رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ وَالَّذِيْنَ تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِه مَا يَمْلِكُوْنَ مِنْ قِطْمِيْرٍ. (سورة الفاطر شريف ۱۳ الاية

অর্থ: মহান আল্লাহ তায়ালা রাতকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করে দেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে নিয়মের অধীন করেছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিয়মান থাকবে। ইনিই তোমাদের মহান আল্লাহ তায়ালা, তিনিই তোমাদের পালনকর্তা, উনারই মালিকানা। উনার পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাকো তারা সামান্য খেজুরের আঁটির ছিলকারও অধিকারী নয়। (পবিত্র সূরাতুল্ ফাতির শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-২১

وايَة لَهُمُ اللَّيْلُ نَسْلَخُ مِنْهُ النَّهَارَ فَاذَا هُمْ مُظْلِمُوْنَ. وَالشَّمْسُ تَجْرِىْ لِمُسْتَقَرّ لَهَا ذلِكَ تَقْدِيْرُ الْعَزِيْزِ الْعَلِيْمِ. وَالْقَمَرَ قَدَّرْنَاهُ مَنَازِلَ حَتّى عَادَ كَالْعُرْجُوْنِ الْقَدِيْمِ. لَا الشَّمْسُ يَنْبَغِىْ لَهَا اَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِىْ فَلَكٍ يَسْبَحُوْنَ. (سورة يس شريف ۴۰-۳۷ الايات

অর্থ: তাদের জন্য এক নিদর্শন হচ্ছে রাত্রি, আমি তা থেকে দিনকে অপসারিত করি, তখনই তারা অন্ধকারে পড়ে যায় বা অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। সূর্য তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করে, এটা মহাপরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহ তায়ালা উনার তরফ থেকে নির্ধারিত। আমি চাঁদের জন্য মঞ্জিলসমূহ নির্দিষ্ট করেছি, অতঃপর সে পুরাতন খেজুর শাখার ন্যায় হয়ে যায়। সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া। এবং রাত দিনের আগে চলে না। প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে আবর্তন করে থাকে। (পবিত্র সূরাহ ইয়াসীন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৭-৪০)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-২২

خَلَقَ السَّموتِ وَالْاَرْضَ بِالْحَقّ يُكَوّرُ اللَّيْلَ عَلَى النَّهَارِ وَيُكَوّرُ النَّهَارَ عَلَى اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِىْ لِاَجَلٍ مُسَمًّى اَلَا هُوَ الْعَزِيْزُ الْغَفَّارُ. سورة الزمر شريف ۵ الاية

অর্থ: তিনি আকাশসমূহ ও যমীনসমূহকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন। তিনিই রাতকে দিন দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে নিয়মের অধীন করেছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবর্তন করতে থাকবে। সাবধান! তিনি মহাপরাক্রমশালী ও অতিশয় ক্ষমাশীল। (পবিত্র সূরাতুয্ যুমার শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-২৩

وَلَقَدْ خَلَقْنَا السَّموتِ وَالْاَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِنْ لُغُوْبٍ. فَاصْبِرْ عَلى مَا يَقُوْلُوْنَ وَسَبّحْ بِحَمْدِ رَبّكَ قَبْلَ طُلُوْعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ الْغُرُوْبِ. وَمِنَ اللَّيْلِ فَسَبّحْهُ وَاَدْبَارَ السُّجُوْدِ. سورة ق شريف ۳۸-۴۰ الايات

অর্থ: আমি আসমানসমূহ ও যমীনসমূহ ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয়দিনে অর্থাৎ ছয় ধাপে সৃষ্টি করেছি এবং এতে আমাকে কোনরূপ ক্লান্তি স্পর্শ করেনি। অতএব তারা যা কিছু বলে, তজ্জন্য আপনি ছবর করুন এবং আপনার রব তায়ালা উনার সপ্রশংস পবিত্রতা বর্ণনা করুন সূর্যোদয়ের পূর্বে (ফজরের সময়) ও সূর্যাস্তের পূর্বে (যুহর ও আছরের সময়)। এবং রাতেও (মাগরিব ও ইশার সময়) উনার পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং ফরয নামাযের পরেও। (পবিত্র সূরাতু ক্বাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৮-৪০)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-২৪

اَلشَّمْسُ وَالْقَمَرُ بِحُسْبَانٍ. سورة الرحمن شريف ۵ الاية

অর্থ: চাঁদ ও সূর্য হিসাব মতো চলে থাকে। (পবিত্র সূরার্তু রহমান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-২৫

يُوْلِجُ اللَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَيُوْلِجُ النَّهَارَ فِى اللَّيْلِ وَهُوَ عَلِيْمٌ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ. سورة الحديد شريف ۶ الاية

অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি রাতকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেন। তিনি অন্তরের অন্তস্থলের খবরও জানেন। (পবিত্র সূরাতুল্ হাদীদ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-২৬

يايُّهَا الْمُزَّمّلُ. قُمِ اللَّيْلَ الَّا قَلِيْلًا. نِصْفَه اَوِ انْقُصْ مِنْهُ قَلِيْلًا. اَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتّلِ الْقُرانَ تَرْتِيْلًا. انَّا سَنُلْقِىْ عَلَيْكَ قَوْلًا ثَقِيْلًا. سورة الـمزمل شريف ۱-۵ الايات

অর্থ: হে কম্বলাবৃত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! রাতে দন্ডায়মান হোন কিছু অংশ বাদ দিয়ে। অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কিছু কম সময়। অথবা তদপেক্ষা বেশী এবং পবিত্র কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করুন তাজবীদের সাথে অর্থাৎ সুবিন্যস্ত ও স্পষ্টভাবে। নিশ্চয়ই আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী। (পবিত্র সূরাতুল্ মুয্যাম্মিল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১-৫)


অসমাপ্ত

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৫

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৬

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৭