পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, সময় ও মুহূর্তের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৭তম পর্ব)

সংখ্যা: ২৬৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

৩৪তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!

অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-

اِسْتِحْلَالُ الْـمَعْصِيَةِ كُفْرٌ.

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি”  প্রকাশ করা হলো।

মহাসম্মানিত পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার ফাযায়িল-ফযীলত ও গুরুত্ব

আস-সানাতুল্ ক্বমারিয়্যাহ তথা হিজরী বছর উনার মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে মহাসম্মানিত পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস একটি বিশেষ মর্যাদাময় মাস। যেমনটি মহান আল্লাহ তায়ালা রব্বুল আলামীন তিনি উনার পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ তথা পবিত্র কুরআন মাজীদ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّ عِدَّةَ الشُّهُوْرِ عِنْدَ اللهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِىْ كِتَابِ اللهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ مِنْهَا اَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذٰلِكَ الدِّيْنُ الْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوْا فِيْهِنَّ اَنْفُسَكُمْ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِيْنَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُوْنَكُمْ كَافَّةً وَاعْلَمُوْا اَنَّ اللهَ مَعَ الْمُتَّقِيْنَ.

অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট উনার বিধানে আসমানসমূহ ও যমীনসমূহ সৃষ্টির দিন হতেই গণনা হিসেবে মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে ৪টি হারাম (যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ) মাস। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এ মাসগুলোর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি যুলূম করো না। তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে জিহাদ করবে, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ করে থাকে। আর জেনে রাখুন! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি মুত্তাক্বীন উনাদের সঙ্গে আছেন। (পবিত্র সূরাতুত তাওবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৩৬)

 

মহাসম্মানিত পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার কতিপয় বরকতময় ঐতিহাসিক বিশেষ রাত ও দিন

 

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মহাসম্মানিত পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার কতিপয় বরকতময় ঐতিহাসিক বিশেষ রাত ও দিন

(২৩)

মহাপবিত্র ১৩ই রবীউল আউওয়াল শরীফ

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ১৩ই রবীউল আউওয়াল শরীফ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন কুতুবুল আলম, কুতুবুজ্জামান, ওলীয়ে কামিল, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম, আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম, আবূ ইমামিল উমাম, ছূফিয়ে বাতিন, আওলাদুর রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। নি¤েœ সংক্ষিপ্তভাবে উনার পবিত্র সাওয়ানেহ মুবারক তুলে ধরা হলো-

উনার মূল পরিচিতি মুবারক: ওলীয়ে কামিল, ছূফিয়ে বাতিন, কুতুবুজ্জামান, ছাহিবুল ইল্ম ওয়াল হিকাম, ছাহিবুল কাশফ ওয়াল কারামত, ছাহিবুত তাক্বওয়া, ফখরুল উলামা, আওলাদুর রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত মাওলানা আলহাজ্জ সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম- যিনি বিশ্ববিখ্যাত ও বিশ্বসমাদৃত হক্ব সিলসিলা রাজারবাগ শরীফ সিলসিলা উনার মহাসম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম নামে কায়িনাতে মশহূর। অর্থাৎ তিনি বর্তমান পঞ্চদশ হিজরী শতকের ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, মুজাদ্দিদ আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যূমুল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদুর রসূল, মাওলানা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

কায়িনাতের মাঝে যিনি একজন প্রজ্ঞাবান মানুষ, সূক্ষ্মদর্শী আলিম, সত্য ও মিথ্যা পার্থক্য করার এক অনন্য মহান ব্যক্তিত্ব এবং হক্ব প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠার এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। উনার প্রত্যয়ী ব্যক্তিত্বের প্রত্যয়ে মানুষ মিথ্যাকে ঘৃণা করতে শিখেছে, সত্যে ব্রতী হতে উদ্যোগী হয়েছে। তিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মতে মত এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম উনার পথে দায়িম-ক্বায়িম হতে মানুষকে অনুপ্রেরণা ও সাহস যুগিয়েছেন। তিনি ছিলেন মুস্তাজাবুদ্ দা’ওয়াত অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার দোয়া সবসময় কবূল করেছেন। তিনি ছিলেন কুতুবুজ্জামান, আরিফ বিল্লাহ। তিনি আজীবন পবিত্র সুন্নত উনার উপর পরিপূর্ণরূপে অধিষ্ঠিত থেকে হক্ব প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অকুতোভয় ও আপোসহীন এক সিপাহসালার। যিকিরে-ফিকিরে, মহান আল্লাহ পাক উনার ধ্যান ও খেয়ালে, মুরাকাবা-মুশাহাদা ও ইবাদত-বন্দেগীতে তিনি মশগূল থেকেছেন সারাজীবন। সুন্নত অনুসরণ-অনুকরণে তিনি ছিলেন এক অতুলনীয় দৃষ্টান্ত। উনার পবিত্র হায়াত মুবারকে উনার পবিত্র সময়গুলো ব্যয় করেছেন সত্য প্রতিষ্ঠার জিহাদে। এ জিহাদ তিনি করেছেন কথায়, কাজে, আমলে ও আচরণে। সূক্ষ্মদর্শী মানুষ ছাড়া অন্য কারো পক্ষে উনার কামালতপূর্ণ উদারতা, পবিত্র অন্তর উনার বিশালতা, চরিত্রের মাধুর্যতা, অন্তর্দৃষ্টির গভীরতা, হৃদয়ের নির্মলতা, বদান্যতা, সৌজন্য ও শালীনতা উপলদ্ধির উপায় ছিল না। হিদায়াতপূর্ণ মানুষ ও সমাজ নির্মাণের স্বপ্নদ্রষ্টা এই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ আচরণ ও বিচরণে ছিলেন দৃঢ়চেতা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক কামিয়াব মানুষ। তিনি হক্কুল্লাহ্ ও হক্কুল ইবাদ যথাযথ আদায় করেছেন আজীবন। সুবহানাল্লাহ!

বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ এবং মুবারক নসব (বংশ) পরিচিতি: সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হিদায়াতের আলোকবর্তিকা হাত মুবারকে নিয়ে ১৯০৮ ঈসায়ী সনে বর্তমান নূরানীগঞ্জ (নারায়নগঞ্জ) জেলার আড়াইহাজার থানাধীন প্রভাকরদী শরীফ গ্রামের পূণ্যভূমিতে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম উনারাও ছিলেন মহান আল্লাহ পাক উনার লক্ষ্যস্থল ওলী এবং মহাসম্মানিত হযরত আওলাদে রসূল আলাইহিমুস সালাম ও মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তুর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম উনাদের দিক থেকে বংশপরম্পরায় তিনি ছিলেন সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে সম্পৃক্ত। মহাপবিত্র নূরুন্ নাজাত মুবারক (রক্ত মুবারক) উনার ধারাবাহিকতায় তিনি ছিলেন আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাইশী তথা মহাসম্মানিত হযরত আওলাদে রসূল আলাইহিস সালাম এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

পথভ্রষ্ট ও গোমরাহীতে নিমজ্জিত মানুষকে হিদায়াত দানের লক্ষ্যে সুলত্বানুল হিন্দ, হাবীবুল্লাহ, গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তী সানজিরী আলাইহিস সালাম তিনি বিভিন্ন দেশ হিজরত ও সফরের শেষ পর্যায়ে মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে ৫৬১ হিজরীতে আজমীর শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক আনেন। উনারই অন্তরঙ্গ সঙ্গী হিসেবে ওই যামানায় মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ ওলী, ওলীয়ে মাদারযাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম তিনিও একই লক্ষ্যে আরব থেকে আজমীর শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক আনেন। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রচারে কাজে নিমগ্ন হয়ে তিনি আজমীর শরীফ-এ থেকে যান এবং সেখানেই বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

উনারই মহাসম্মানিত বংশধর, আওলাদ, ওলীয়ে মাদারযাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম এবং ওলীয়ে মাদারযাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ সালাহুদ্দীন আলাইহিস সালাম উনারা এগারশত হিজরী শতকের শেষার্ধে হিদায়াত উনার আলো নিয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে আগমণ করেন। উনারা ছিলেন দুই ভাই। সেখানে সাময়িক অবস্থানের পর উনারা দুজনই বর্তমান নূরানীগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) জেলার সোনারগাঁও-এ তাশরীফ মুবারক আনেন। সুবহানাল্লাহ!

ওলীয়ে মাদারযাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ সালাহুদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি সোনারগাঁও-এ অবস্থান করেন এবং সেখানেই হিদায়াত উনার কাজে ব্যাপৃত থাকেন এবং মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। ওলীয়ে মাদারযাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি সোনারগাঁও-এ এসে অল্প কিছুদিন অবস্থানের পর একই জেলার আড়াইহাজার থানাধীন যে জনপদে হিদায়াত উনার কেন্দ্রভূমি গড়ে তোলেন, তার বর্তমান নাম ‘প্রভাকরদী শরীফ’।

ওলীয়ে মাদারযাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ, ওলীয়ে মাদারযাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদ মালাউদ্দীন আলাইহিস সালাম  এবং উনার মহাসম্মানিত আওলাদ, ওলীয়ে মাদারযাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদ ইলাহী বখ্শ আলাইহিস সালাম এবং উনার মহাসম্মানিত আওলাদ, ওলীয়ে মাদারযাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদ  হযরত ওয়ালী বখ্শ আলাইহিস সালাম এবং উনার মহাসম্মানিত আওলাদ, ওলীয়ে মাদারযাদ, আবূ সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলাহ সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাইশী। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাদের নসবনামা মুবারক এক ও অভিন্ন:

প্রাণপ্রিয় শায়েখ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের দিক থেকে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরানী নসবনামা (বংশধারা) মুবারক এক ও অভিন্ন। যা নিম্নরূপ:

সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নসবনামা মুবারক:

* সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান, ক্বায়িম মাক্বামে সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ওলীয়ে মাদারজাদ, আফদ্বালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়াল কারামাত, মুস্তাজাবুদ দা’ওয়াত, ছাহিবে ইসমে আ’যম, গরীবে নেওয়াজ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম

* উনার মহাসম্মানিত পিতা, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়ালী বখ্শ আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আলাইহিস সালাম

* উনার মহাসম্মানিত পিতা, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইলাহী বখ্শ আল হাসানী ওয়াল হুসানী আলাইহিস সালাম

* উনার মহাসম্মানিত পিতা, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত মালাউদ্দীন আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আলাইহিস সালাম

* উনার মহাসম্মানিত পিতা, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত আলাউদ্দীন আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আলাইহিস সালাম

* উনার মহাসম্মানিত উর্ধ্বতন পূরুষ, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর মুজাদ্দিদী আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আলাইহিস সালাম।

সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার নসবনামা মুবারক:

*সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আম্মাজান, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ত্বাহিরাহ, ত্বইয়্যিবাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম।

* উনার মহাসম্মানতি পিতা, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুছ ছবূর আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আলাইহিস সালাম

* উনার মহাসম্মানিত পিতা, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত মুফীজুদ্দীন আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আলাইহিস সালাম

* উনার মহাসম্মানিত পিতা, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত আনীসুদ্দীন আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আলাইহিস সালাম

* উনার মহাসম্মানিত পিতা, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত সালাহুদ্দীন আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আলাইহিস সালাম

* উনার মহাসম্মানিত উর্ধ্বতন পুরুষ, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর মুজাদ্দিদী আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আলাইহিস সালাম।

প্রাণপ্রিয় শায়েখ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, মুজতাহিদ ও ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের দু’ দিক থেকে মহাসম্মানিত নসবনামা মুবারক ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর মুজাদ্দিদী আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী আলাইহিস সালাম উনার নিকট মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! সঙ্গতকারণেই সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি “আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী” অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত নূরানী বংশধর। তিনি মহাসম্মানিত ক্বুরাঈশ বংশ মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। তিনি মহাসম্মানিত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আহলু বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক উনার লক্ষ্যস্থল ওলী, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত পবিত্র মদীনা শরীফ উনার অধিবাসী ছিলেন। তিনি ছয়শত হিজরী শতকের মাঝামাঝি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসার, পথভ্রষ্ট ও গোমরাহীতে নিমজ্জিত জিন-ইনসানের হিদায়াত দানের লক্ষে সুলতানুল হিন্দ, খাজা গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সঙ্গী হয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের আজমীর শরীফ উনার মধ্যে তাশরীফ মুবারক নেন। সেখানে হিদায়াত দানের সুমহান কাজে নিমগ্ন থাকেন এবং সেখানেই মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিতে ইল্ম বা জ্ঞান অর্জন:

যেহেতু আবূ সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত, সেহেতু তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদত শরীফ সূত্রে সমস্ত ইল্ম ম্বুারক হাদিয়া মুবারক লাভ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তারপরও উনারা প্রতিটি বিষয়ে দুনিয়াবী হক্বও আদায় করে থাকেন। সম্মানিত ইল্ম অর্জনের পিপাসা ছিল উনার মজ্জাগত। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মা’রিফত মুবারক, নিছবত-কুরবত মুবারক এবং রিযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের নিয়ামক উপাদান সম্মানিত ইল্ম অর্জনের জন্য উনাকে শিশু বয়স মুবারকে প্রভাকরদী গ্রামের বাড়ীর মাদরাসায় ভর্তি করে দেয়া হয়। এখানকার শিক্ষা শেষ করে তিনি বর্তমান নূরানীগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) জেলার বুরন্দী মাদরাসায় ভর্তি হন। প্রাচীন এই দ্বীনী প্রতিষ্ঠানটি এখনও বহাল ও চালু আছে। এখানে তিনি সম্মানিত ইল্ম উনার বিভিন্ন শাখায় পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা লাভ করেন। এছাড়া অন্যান্য দ্বীনী প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাগ্রহণসহ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি বিভিন্ন বরেণ্য আলীম-উলামা উনাদের নিকট ইল্ম হাছিল করেন। সর্বোপরি তিনি নিজ প্রচেষ্টায় সম্মানিত ইল্ম অর্জনে বুৎপত্তি অর্জন করেন। সুবহানাল্লাহ!

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে, সম্মানিত ইল্ম অর্জনের পিপাসা ছিল উনার মজ্জাগত। সম্মানিত দ্বীনী ইল্ম হাছিলের পর দৃঢ় মনোবল ও অদম্য আগ্রহে তিনি সাধারণ শিক্ষায় ব্রতী হন। ১৯৩০ ঈসায়ী সালে তিনি স্বসম্মানে এনট্রান্স (এস এস সি সমমান) পাস করেন। এ বছরেই উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান, জাদ্দু মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়ালী বখ্শ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন। অতঃপর তিনি ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল থেকে ১৯৩৫ ঈসায়ী সালে সাব ওভারশীয়ার (….) পাশ করেন। তারপর একই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৩৭ ঈসায়ী সালে তিনি ওভারশীয়ার (…)  পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন।

কর্মজীবন:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيْضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيْضَةِ.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: হালাল রিয্ক উপার্জন করা অন্যান্য ফরযের পরে ফরয। (শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী লেখক: হযরত আবূ বকর আহমদ বিন হুসাঈন বিন আলী বিন মূসা খুসরাওজিরদী খুরাসানী বাইহাক্বী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৪৫৮ হিজরী প্রকাশনা: মাকতাবাতুর রুশ্দ রিয়াদ, আস-সুনানুল কুবরা লিল্ বাইহাক্বী, মু’জামু ইবনিল আরাবী)

জীবৎকালে জগত সংসারে স্বাভাবিক আচরণ, বিচরণ, পানাহার, লেনদেন এবং পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন ইত্যাদি মহান আল্লাহ পাক তিনি নির্ধারণ করছেন। টাকা-পয়সা, ধন-সম্পদ, পরিবার-পরিজন ইত্যাদি গাইরুল্লাহ নয়, বরং যে বিষয়গুলো মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে ফিরিয়ে রাখে, সেগুলোই গইরুল্লাহ। এবং সেগুলিই পরিত্যাজ্য।

উপরে আলোচিত সম্মানিত শরীয়ত উনার আবশ্যিক বিধান অনুসরণে- আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হালাল পেশায় নিয়োজিত হতে ব্রতী হন। পরিবারে ঐ সময়ে বিদ্যমান আর্থিক অবস্থানুযায়ী অত্যাবশ্যকীয় না হলেও প্রত্যয়ী ব্যক্তিত্ব মুবারক হিসেবে আতœনির্ভরশীল হওয়ার মানসে তিনি চাকুরি করতে মনস্থ করেন। উনার প্রথম কর্মস্থল হয় ভারতের দার্জিলিং। সেখানে তিনি কর্মব্রত থাকেন অনেকদিন। দায়িত্ব পালনের অবসরে তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাস্সাস হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ধ্যান-খেয়াল, যিক্র-ফিক্র ও ইবাদত-বন্দেগীতে নিরন্তর মশগূল থাকেন। মাঝে মাঝে পারিবারিক মাজার শরীফ যিয়ারত করতে আসেন। দার্জেলিং থেকে বদলি হয়ে আসামের করিমগঞ্জ মিউনিসিপাল অফিসে আসেন। সেখানেও বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন। এক পর্যায়ে করিমগঞ্জ থেকে বদলি হয়ে রাজশাহীতে আসেন। রাজশাহীতে থাকতে হয় অনেকদিন। এখানে অনেকদিন পর বড় ভাই আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত মাওলানা সাইয়্যিদ মুহম্মদ সা’দূদুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাথে দেখা হয়। বড় ভাই উনার উপদেশে দীর্ঘ বিরতির পর গ্রামের বাড়ীতে আসেন। ইত্যমধ্যে চাকরিতে যোগদানের সাত বছর কেটে গেছে। পরবর্তীতে রাজশাহী থেকে বদলি হয়ে বগুড়ায় আসেন। রাজশাহী-বগুড়া হাইওয়ে উনারই তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়। অবশেষে বগুড়া থেকে বদলি হয়ে ঢাকায় আসেন।

নিসবতে আযীম শরীফ (শাদী মুবারক)

আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সাথে উম্মু মুজাদ্দিদ আ’যম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নিছবতে আযীম শরীফ (শাদী মুবারক) সম্পন্ন হয় ১৯৩৬ ঈসায়ী সনে। সুবহানাল্লাহ!

জীবিকা অর্জনের সকল ক্ষেত্রে খুছূছিয়্যাত তথা বিশেষত্ব:

চাকরি ক্ষেত্রের প্রতিকুল অবস্থা সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে অস্থির করে তোলে। অনেক সময় কর্তৃপক্ষের অসংযত আচরণ, পারিপার্শ্বিক অনাচার, নিয়মতান্ত্রিক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ইত্যাদি বহুবিধ অনভিপ্রেত কারণে চাকুরির পরিবেশ বিষময় হয়ে ওঠে। এতে দেশ ও দশের উদ্দিষ্ট কল্যাণ নস্যাৎ হয় এবং সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিত্ব উনাদের অভিযাত্রা বাধাগ্রস্থ হয়। নৈতিক অবক্ষয়ের এ ধারাবাহিকতায় কর্ম ক্ষেত্রের বৈরী পরিবেশ স্বাধীনচেতা সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে দুঃখিত ও ক্ষুব্ধ করে তোলে। একসময়ে তিনি মনে মনে বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। রীতি ও নীতির প্রশ্নে আবাল্য স্বাধীন সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার উপরস্থদের সাথে কথা কাটাকাটি কখনো তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে। কর্তৃপক্ষের সাথে মতবিরোধের চরম পর্যায়ে তিনি ছুটিতে থাকা শুরু করেন। এভাবে মোট ছুটি কাটানোর সময় হয় দীর্ঘতর। এতে দুনিয়াদার কর্তৃপক্ষ উনার প্রতি বিরূপ হয়। প্রকৃত দ্বীনদ্বার ও দুনিয়াদারদের মধ্যে প্রচলিত সাংঘর্ষিক দন্ধে অজ্ঞ কর্তৃপক্ষের নাখোশ হয়ে ওঠা অস্বাভাবিক ছিলোনা। এমতাবস্থায় অফিসের কাজ বহাল রেখে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব না হওয়ায় এবং সর্বোপরি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ধ্যাণ-খেয়াল ও মুহব্বত মুবারকে অনুক্ষন মশগূল থাকার প্রয়োজনে পরিবেশ অবাঞ্চিত হওয়ায় চাকুরীর প্রতি প্রচন্ড অনীহা ও ঘৃণা জন্মে। এমতাবস্থায় বিরাজমান ছিল দার্জিলিং, আসাম, রাজশাহী, বগুড়া এবং ঢাকায় অর্থাৎ সকল কর্মক্ষেত্রেই। উনার সৎ থাকা, ন্যায়-নীতির দরূণ উনার এতো জায়গায় বদলি হতে হয়েছিলো। এটাইতো স্বাভাবিক যে, মহান আল্লাহ পাক উনার কুরবত বা নৈকট্য মুবারক লাভের সামান্যতম ত্রুটি বিচ্যুতিও মাহবূব ব্যক্তিত্ব মুবারক উনারা ঘৃণার চোখে দেখবেন এবং বৈরী পরিবেশ পরিহার করে নিজেদেরকে হিফাযত রাখবেন। অবশেষে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অবধারিত ইচ্ছা মুবারকে আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সর্বশেষ ঢাকার কর্মস্থল থেকে সেচ্ছায় চাকুরির ইস্তফা দিয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতি জঘন্যতা থেকে নিজেকে মুক্ত করেন। সুবহানাল্লাহ! চাকুরী ছেড়ে দিয়ে স্বাধীনভাবে একাগ্রচিত্তে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মা’রিফত মুবারক, নিছবত-কুরবত মুবারক এবং রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভের দিকে কঠোরভাবে মনোনিবেশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

মুরশিদ বা শায়েখ সন্ধানে তাহক্বীক্ব, বাইয়াত  গ্রহণ এবং খিলাফত প্রাপ্তি:

হযরত ছাওয়াল পীর ছাহেব ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাতে বাইয়াত গ্রহণ: আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি মনোনীত ব্যক্তিত্ব মুবারক। তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদত শরীফ সূত্রেই মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মা’রিফত মুবারক, নিছবত-কুরবত মুবারক এবং রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাদিয়া মুবারক লাভে ধণ্য হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তারপরও তিনি যাহিরীভাবে প্রতিটি বিষয়ের হক্ব আদায় করেছেন যদিও উনার জন্য তা আবশ্যক ছিলো না। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মা’রিফত মুবারক, নিছবত-কুরবত মুবারক এবং রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভের জন্য তিনি উদ্বেলিত ও নিরন্তর ছিলেন। তিনি যোগ্য শায়েখ বা মুরশিদ তালাশ করছিলেন। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী হযরত ছাওয়াল পীর ছাহেব ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সন্ধ্যান পান। উনার নিকটেই আবু মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বাইয়াত গ্রহণ করেন। হযরত ছাওয়াল পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেই উনার হাত মুবারক অধীর আগ্রহে ও পরম মমতায় আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার দিকে প্রসারিত করে দিলেন এবং বাইয়াত করালেন। বাইয়াত হওয়ার পর তিনি একাগ্রচিত্তে মুহব্বত-মা’রিফত মুবারক লাভে মনোনিবেশ করেন এবং বাইয়াত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ মুবারকেই হযরত ছাওয়াল পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আবু মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে খিলাফত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! ইতিমধ্যেই হযরত ছাওয়াল পীর ছাহেব ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বার্ধক্যে উপনীত হয়েছেন। সকল কর্ম চাঞ্চল্য ও আরোপিত দায়িত্ব পালনের শেষে জীবনের সায়াহ্নে এসে উপনিত হয়েছেন। আরোপিত দায়িত্ব আনজাম দান শেষে মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী হযরত ছাওয়াল পীর ছাহেব ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পরম দিদারে গমণ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন! আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি স্বীয় মুরশিদ ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বাহ্যিক জুদায়ীর কারণে বিরহ কাতর হয়ে পড়েন।

হযরত শেখ বুরহানুদ্দীন ফরাজীকান্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাতে বাইয়াত গ্রহণ এবং উনার নিকট থেকে খিলাফত প্রাপ্তি: মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা মুবারকে বিরহ যন্ত্রনা নিরসনে দীর্ঘ অনুসন্ধানে নতুন মুর্শিদ উনার সন্ধান করেন। উনার নাম মুবারক হচ্ছেন হযরত শেখ বুরহানুদ্দীন ফরাজীকান্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিক বাইয়াত হওয়ার জন্য সবিনয় নিবেদন করা মাত্রই মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী হযরত শেখ বুরহানুদ্দীন ফরাজীকান্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বীয় হাত মুবারক প্রসারিত করে দিলেন। এক নিমিষেই শায়েখ উনার মুরীদ উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সোপর্দ করলেন। বাইয়াত হবার পর তিনি কঠিন রিয়াজত-মাশাক্কাতে নিমগ্ন হন। ইতিমধ্যে অনেকদিন অতিক্রান্ত হলো। সুখে-দুঃখে জীবনে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী হযরত শেখ বুরহানুদ্দীন ফরাজীকান্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এখন বয়ঃবৃদ্ধ। মুরীদগণের অনেককে তিনি খিলাফত দান করেছেন। এখন একটা মূল বিষয়বাকী রয়েছে, তা হচ্ছে সারাজীবনের লব্ধ নিয়ামত সোপর্দ করা। অবশেষে তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ মুবারকে আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে মূল খিলাফত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন এবং প্রধান খলীফা হিসেবে মনোনীত করেন। সুবহানাল্লাহ!

নিজেকে দ্বীন ইসলাম উনার খিদমতে নিয়োজিত রেখে মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী হযরত শেখ বুরহানুদ্দীন ফরাজীকান্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পরম দীদারে গমণ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন! আপন শায়েখ উনার জুদায়ীর কারণে তিনি আবারও বিরহকাতর হয়ে পড়েন।

হযরত আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাতে বাইয়াত গ্রহণ এবং উনার নিকট থেকে খিলাফত প্রাপ্তি: আমীরুশ শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, নায়িবে মুজাদ্দিদ, কুতুবুল আলম, ক্বইয়্যূমুয যামান, শায়খুল মাশায়িখ, হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বড় হুযূর ক্বিবলা নামে সমধিক মশহূর। উপমহাদেশে ইসলামী শিক্ষার আদর্শ বিস্তার এবং মুসলমানগণ উনাদের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষায় উজ্জীবিত ও অভ্যস্ত করে তোলায় উনার অবদান অপরিসীম। পশ্চিম বাংলার বায়ান্নটি জেলা সহ ভারতে, বাংলাদেশে ও বিদেশে তিনি অসংখ্য মাদরাসা, মসজিদ, মক্তক, দীনী প্রতিষ্ঠান, ইসলামী সংগঠন, সমাজ উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান ও খানকা শরীফ প্রতিষ্ঠা করেন। পাবনা জেলার পাক্শী এবং ঢাকাস্থ মীরপুরের ‘দারুস সালাম খান্কা শরীফ’ তার মধ্যে অন্যতম।

ঢাকাস্থ মীরপুর দারুস সালাম খান্কা শরীফেই আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার এবং নায়িবে মুজাদ্দিদ, শাহ ছূফী হযরত আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের সাক্ষাৎ মুবারক সুসম্পন্ন হয়। তিনি নায়িবে মুজাদ্দিদ হযরত আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বাইয়াত গ্রহন করেন। উনার নিকট থেকে আনুষ্ঠানিক খিলাফতও লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ!

হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নজম মুহম্মদ নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাতে বাইয়াত গ্রহণ: ওলীয়ে মাদারজাদ, নায়িবে মুজাদ্দিদ, হযরত আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বাইয়াত হবার অব্যবহিত পর ওলীয়ে মাদারজাদ, কুতুবুল আলম, সুলতানুল আরিফীন, হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নজম মুহম্মদ নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট ঢাকাস্থ গেন্ডারিয়া খান্কা শরীফে বাইয়াত গ্রহণ করেন। সেখানে তিনি সময় পেলেই আসা-যাওয়া করতেন। শায়েখ উনার সঙ্গে ছিলো উনার গভীর সুসম্পর্ক। সুবহানাল্লাহ!

এভাবেই, আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি স্বীয় শায়েখ উনাদের নিকট হতে খিলাফত লাভ করেন। উনার যিন্দেগী মুবারক ছিলেন কারামতে পরিপূর্ণ। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:

পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ ১৪১৯ হিজরী সনের ১৩ তারিখ মোতাবেক ২৩ আষাঢ় ১৪০৫ ফসলী সন, ০৭ জুলাই ১৯৯৮ ঈসায়ী সনে আবূ মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন। পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সময় উনার বয়স মুবারক হয়েছিলেন ঈসায়ী সন অনুযায়ী ৯০ বছর। সুবহানাল্লাহ!

জানাযা নামায:

উনার জানাযা নামায পড়ান উনারই সুযোগ্য সুমহান উত্তম চরিত্রের অধিকারী শ্রেষ্ঠ আওলাদ- খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরী‘য়াহ ওয়াত ত্বরীক্বাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ‘যম, আল গওছুল আ’যম, সুলত্বানুল আওলিয়া, মাখযানুল মা’রিফাহ, খযীনাতুর রহমাহ, মুঈনুল মিল্লাহ, লিসানুল উম্মাহ, তাজুল মুফাসসিরীন, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, ফখরুল ফুক্বাহা, হাকীমুল হাদীছ, হুজ্জাতুল ইসলাম, সাইয়্যিদুল মুজতাহিদীন, মুহইস সুন্নাহ, মাহিউল বিদয়াহ, ছাহিবুল ইলহাম, রসূলে নুমা, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, সুলত্বানুল ‘আরিফীন, ইমামুছ ছিদ্দীক্বীন, সাইয়্যিদুল মুজাদ্দিদীন, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মুর্শিদুনা শায়খুনা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম আল্হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাইশী ওয়াল হানাফী ওয়াল মাতুরীদী ওয়ান্ নক্শবন্দী ওয়াল মুজাদ্দিদী ওয়াল মুহম্মদী। সুবহানাল্লাহ! উনিই উনাকে নিজ হাত মুবারকে পর্দা মুবারক করান এবং উনার জন্য বিশেষ দুয়া’-মুনাজাত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

উনার পবিত্র মাযার শরীফ নূরানীগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার থানার প্রভাকরদী শরীফের বিখ্যাত সাইয়্যিদ বাড়ীর পারিবারিক কবরস্থানে অবস্থিত। যেখানে উনার সম্মানিত পূর্বপুরুষ হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও শায়িত আছেন। সুবহানাল্লাহ!

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৬

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৭

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১