পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩৮

সংখ্যা: ২৫৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা)  ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-চলমান), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করার পর-

৩২তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”-

পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয

পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের মধ্যে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শাখছী’ অর্থাৎ নির্দিষ্ট ইমাম-মুজতাহিদ উনার অনুসরণ করা জরুরী সম্পর্কিত দলীল

 

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ১

اهدنا الصراط الـمستقيم صراط الذين انعمت عليهم.

অর্থ: “আয় মহান আল্লাহ তায়ালা! আপনি আমাদেরকে সঠিক-সরল পথ দান করুন। এমন পথ যে পথের পথিক উনাদেরকে আপনি নিয়ামত দিয়েছেন।” (পবিত্র সূরাতুল ফাতিহাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫-৬)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৮৪৬)

{اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ} والصراط المستقيم قال ابن عباس وجابر رضي الله عنهما: هو الاسلام وهو قول مقاتل. وقال ابن مسعود رضي الله عنه: هو القرآن أو روي عن علي رضي الله عنه مرفوعا “الصراط الـمستقيم كتاب الله” وقال سعيد بن جبير رضي الله عنه: طريق الجنة. وقال سهل بن عبد الله: طريق السنة والجماعة. وقال بكر بن عبد الله المزني: طريق رسول الله صلى الله عليه وسلم. وقال أبو العالية والحسن: رسول الله وآله وصاحباه

অর্থ: (আয় মহান আল্লাহ তায়ালা! আপনি আমাদেরকে সঠিক-সরল পথ দান করুন)

الصراط الـمستقيم

‘সরল-সঠিক পথ’ উনার ব্যাখ্যায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনারা বলেন, তা হচ্ছে পবিত্র ইসলাম। অনুরূপ হযরত মুক্বাতিল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন, তা হচ্ছেন পবিত্র কুরআন মাজীদ। অথবা হযরত আলী আলাইহিস্ সালাম উনার থেকে মারফূ’ সূত্রে বর্ণিত আছে যে, ‘সরল-সঠিক পথ’ হচ্ছেন, পবিত্র কিতাবুল্লাহ তথা পবিত্র কুরআন মাজীদ। হযরত সাঈদ বিন জুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন, তা হচ্ছেন জান্নাত উনার পথ। হযরত সাহ্ল বিন আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল্ জামায়াহ (তথা হানাফী, মালিকী, শাফিয়ী ও হাম্বালী মাযহাব চতুষ্ঠয়ের যে কোন একটির অনুসরণে আজীবন প্রতিষ্ঠিত থাকা) উনাদের পথ। হযরত বকর বিন আব্দুল্লাহ মাযিনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ত্বরীকা বা সুন্নাত উনার পথ। হযরত আবুল্ আলিয়াহ ও হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনারা বলেন, তা দ্বারা উদ্দেশ্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আল-আওলাদ আলাইহিমুস্ সালাম ও হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ও হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম উনাদের মত-পথ। (মায়ালিমুত্ তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল্ বাগাবী সূরাতুল্ ফাতিহাহ্ শরীফ ৫ নম্বর আয়াত শরীফ লেখক: মুহইস সুন্নাহ আল্লামা হযরত আবূ মুহাম্মাদ হুসাঈন বিন মাসঊদ বাগাবী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওফাত মুবারক: ৫১০ হিজরী)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ ও উনার তাফসীর থেকে প্রমানিত হল যে, মাযহাব চতুষ্ঠয়ের কোন একটি মাযহাব উনার অনুসরণ করা ফরয। যা মূলত ছিরাতুল মুস্তাক্বীম তথা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ উনার পথ। সুবহানাল্লাহ। এখানে নির্দিষ্ট ইমাম-মুজতাহিদ উনাদেরকে অনুসরণ করার দলীল পাওয়া যায়।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ২

الَّذِىْ جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ فِرَاشًا وَالسَّمَاءَ بِنَاءً وَاَنْزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَاَخْرَجَ بِه مِنَ الثَّمَرَاتِ رِزْقًا لّكُمْ فَلَا تَجْعَلُوْا للهِ أَنْدَادًا وَاَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ.

অর্থ: তিনিই পবিত্র সত্ত্বা, যিনি তোমাদের জন্য যমীনকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন। আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের খাদ্যের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন। অতএব, মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সাথে অন্য কাউকে শরীক করো না বা সমকক্ষ মনে করো না। আসলে তোমরা তা জানো। (পবিত্র সূরাতুল বাক্বারাহ- ২২)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৮৪৭)

کسانیکہ اطاعت ایشان بحکم خدا فرض است شش کروہ اند ازا نجملہ پیغنبر اند کہ اطاعت ایشاں در حقیقت اطاعت خداست زیر  انکہ اطلاع بر اوامر نواہی اور تعالے بدون اطاعت ایشاں صورت نمی بندد – اہ- وا زا نجملہ مجتہدین شریعت و شیوخ طریقت اند کہ حکم ایشاں بطریق واجب بخیر  نیز لازم التباع است برعوام امت زیرا نکہ فہم اسرار شریعت و دقائق طریقت ایاشاں را میسر است فاسئلوا اهل الذكر ان كنتم لاتعلمون

অর্থাৎ: মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আদেশ মত ছয়টি সম্প্রদায়ের অনুসরণ করা ফরয। প্রথমত: হযরত নাবী ও রসূল আলাইহিমুছ্ ছলাতু ওয়াস সালাম উনারা, উনাদের অনুসরণ মূলত: মহান আল্লাহ তায়ালা উনারই অনুসরণ। কেননা, হযরত নাবী ও রসূল আলাইহিমুছ্ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাদের অনুসরণ না করলে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আদেশ ও নিষেধ জ্ঞাত হওয়া যায় না। দ্বিতীয়ত: সম্মানিত শরীয়াত উনার মুজতাহিদ ও সম্মানিত ত্বরীক্বত উনার শায়েখ উনারা। উনাদের অনুসরণ করাও সর্বসাধারনের জন্য ওয়াজিব বা ফরয। কেননা, সম্মানিত শরীয়াত উনার জটিল রহস্য এবং মা’রিফাতের গভীর তত্ত্ব উনারা অবগত আছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যদি তোমরা না জান, তাহলে আহলে জিকির অর্থাৎ আল্লাহওয়ালা ব্যক্তি উনাদের নিকট থেকে জেনে নাও’। (তাফসীরে ফাতহুল আযীয সূরাতুল্ বাক্বারাহ ২২ নম্বর আয়াত শরীফ লেখক: হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ১৬৪ পৃষ্ঠা, ফতোয়ায়ে ছিদ্দীকিয়া লেখক: আল্লামা হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ নিছারুদ্দীন আহমাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ১৯৫ পৃষ্ঠা)

অত্র তাফসীর উনার ইবারত থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, ইলমুশ শারীয়াত উনার মতো ইলমুত্ ত্বরীক্বত শিক্ষা করা ফরয। আর এজন্য ইজমাউল্ উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস উনাদেরকে মেনে নেয়া এবং উনাদের মাসয়ালা অনুযায়ী আমল করা দায়িত্ব-কর্তব্য। কারণ পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ তথা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মতো ইজমাউল উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস উনাদেরকে মান্য করাও ফরয। কেননা, তা অকাট্য দলীল-আদিল্লার ভিত্তিতে প্রমাণিত আছে। এখানে ইমাম-মুজতাহিদ উনাদেরকে নির্দিষ্টভাবে অনুসরণ করার কথাও বলা হয়েছে।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ৩

وَكَذلِكَ جَعَلْنَاكُمْ اُمَّةً وَّسَطًا لِّتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا وَمَا جَعَلْنَا الْقِبْلَةَ الَّتِي كُنْتَ عَلَيْهَا اِلَّا لِنَعْلَمَ مَنْ يَتَّبِعُ الرَّسُولَ مِمَّنْ يَنْقَلِبُ عَلى عَقِبَيْهِ وَإِنْ كَانَتْ لَكَبِيرَةً اِلَّا عَلَى الَّذِينَ هَدَى الله وَمَا كَانَ الله لِيُضِيعَ اِيمَانَكُمْ إِنَّ الله بِالنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ

অর্থ: অনুরূপ আমি তোমাদেরকে উম্মতে ওয়াছাত বা সত্যপরায়ণ উম্মত হিসেবে মনোনীত করেছি, যাতে তোমরা সকল মানুষদের জন্য সাক্ষ্যদাতা হও এবং যাতে হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাক্ষদাতা হন তোমাদের জন্য। আপনি যে পবিত্র ক্বিবলা উনার উপর ছিলেন, তাকে আমি এজন্যই পবিত্র ক্বিবলা করেছিলাম, যাতে একথা স্থির হয় যে, কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করে আর কে পিছুটান দেয়। নিশ্চয়ই এটা অত্যান্ত কঠিন বা গুরুতর বিষয়, কিন্তু তাদের জন্য নয় যাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পথপ্রদর্শন করেছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা এমন নন যে, তোমাদের ঈমান নষ্ট করে দেবেন। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি মানুষদের প্রতি খুবই দয়াশীল ও করুনাময়। (পবিত্র সূরাতুল বাক্বারাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪৩)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৮৪৮)

باب قَوْلِه تَعَالَى: {وَكَذلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا} وَمَا أَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِلُزُومِ الْجَمَاعَةِ وَهُمْ أَهْلُ الْعِلْمِ.

অর্থ: পরিচ্ছেদ: মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন:

وَكَذلِكَ جَعَلْنَاكُمْ اُمَّةً وَّسَطًا

‘অনুরূপ আমি তোমাদেরকে উম্মতে ওয়াছাত বা সত্যপরায়ণ উম্মত হিসেবে মনোনীত করেছি’। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নুরুম্ মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হযরত নাবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ’ উনার অনুসরন লাযিম (ওয়াজিব বা ফরদ্ব) করে নিতে হুকুম করেছেন। আর উনারা (জামায়াত) হলেন আহলুল্ ইল্ম অর্থাৎ ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়া-উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা। (আল্ জামিউল্ মুসনাদুছ্ ছহীহুল্ মুখতাছারু মিন উমূরি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া সুনানিহী ওয়া আইয়ামিহী অর্থাৎ আছ্ ছহীহু লিল্ বুখারী কিতাবু বাদউল্ ওয়াহ্য়ী, সুনানুত্ তিরমিযী কিতাবুত্ তাফসীর বাব নম্বর ৩ সূরাতুল্ বাক্বারাহ, বুরহানুল মুক্বাল্লিদীন ১১৭ পৃষ্ঠা লেখক: আল্লামা মাওলানা মুহাম্মাদ রূহুল আমীন বশীরহাটী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি, সাইফুল মুক্বাল্লিদীন ২২৩ পৃষ্ঠা লেখক: আল্লামা মাওলানা মুহাম্মাদ ইবরাহীম মুহাব্বাতপুরী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ উনাদের ইত্তিবা বা অনুসরণকে লাযিম বা ফরয-ওয়াজিব করা হয়েছে। আর উনারা হলেন- হানাফী, মালিকী, শাফিয়ী ও হাম্বালী মাযহাব উনাদের ইমাম-মুজতাহিদ উনারা। তাই এখানেও নির্দিষ্ট ইমাম-মুজতাহিদ উনাদেরকে অনুসরণ করতে নির্দেশ করা হয়েছে।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ৪

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا.

অর্থ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্য করো, সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন-অনুকরণ করো এবং তোমাদের মধ্যে যাঁরা উলিল আমর (আদেশদাতা) উনাদের অনুসরণ করো। তোমাদের মধ্যে যদি কোন বিষয়ে মতবিরোধ হয়, তাহলে উক্ত বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করো অর্থাৎ যেই উলিল আমর উনার পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দলীল বেশি সেই উলিল আমর উনাকেই অনুসরণ করো। যদি তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাকো। এটাই কল্যানকর ও পরিনতির দিক দিয়ে উত্তম। (পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ৫৯)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৮৪৯)

(يايها الذين امَنُواْ أَطِيعُواْ الله) أي فى الفرائض (وَأَطِيعُواْ الرسول) أي في السنن. ويقال: أطيعوا الله فيما فرض، وأطيعوا الرسول فيما بيّن. ويقال أَطِيعُواْ الله بقول لا إله إلا الله، وأطيعوا الرسول بقول محمد رسول الله صلى الله عليه و سلم (وَأُوْلِى الامر مِنْكُمْ) يعني أطيعوا أولي الأمر منكم. قال الكلبي ومقاتل: يعني أمراء السرايا. وقال الضحاك: يعني الفقهاء والعلماء في الدين. ويقال: الخلفاء والأمراء ويجب طاعتهم ما لـم يأمروا بالـمعصية.

অর্থ: (হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্য করো,) অর্থাৎ ফরদ্ব সমূহ পালন করো (সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন-অনুকরণ করো) অর্থাৎ সুন্নাত সমূহ পালন করো। বলা হয়: ফরদ্ব পালনে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্য করো। আর তার ব্যাখ্যার ব্যাপারে হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করো। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা হচ্ছে আতীউল্লাহ, আর ‘মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা হচ্ছে আতীর্উ রসূলা। (এবং তোমাদের মধ্যে যাঁরা উলিল আমর উনাদের অনুসরণ করো।) অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে বিধান দাতা উনাদেরকে অনুসরণ করো। হযরত কালবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত মুকাতিল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন: উনারা হলেন সমরক্ষেত্রের সেনাপতি। হযরত দ্বহ্হাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: উনারা হলেন, হযরত ফুক্বাহা ও উলামা রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। কারো মতে: উনারা হলেন ইসলামী খলীফা ও আমীর-উমারা। উনারা যদি নাফরমানীর আদেশ না দেন তাহলে উনাদের আনুগত্য করা ওয়াজিব। (বাহরুল উলূম অর্থাৎ তাফসীরুস্ সামারকান্দী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ৫৯ লেখক: হযরত আবুল লাইছ নাছ্র বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত মুবারক: ৩৭৩ হিজরী)

(৮৫০)

(ياأيها الذين امَنُواْ أَطِيعُواْ الله وَأَطِيعُواْ الرسول وَأُوْلِي الأمر مِنْكُمْ) أي الولاة أو العلماء.

অর্থ: (হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্য করো, সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন-অনুকরণ করো এবং তোমাদের মধ্যে যাঁরা উলিল আমর উনাদের অনুসরণ করো।) অর্থাৎ উলিল্ আমর হলেন: খলীফা ও উলামা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি। (মাদারিকুত্ তানযীল ওয়া হাক্বায়িকুত্ তা’বীল অর্থাৎ তাফসীরুন নাসাফী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ৫৯ লেখক:  আবুল বারাকাত আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন মাহমূদ নাসাফী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭১০ হিজরী)

(৮৫১)

والشيخُ اولو الامر على الـمريد، وامامُ كل طائفة ذو الامر عليهم.

অর্থ: শায়েখ তথা মুরশিদ ক্বিবলা মুরীদদের মাঝে উলিল্ আমর অর্থাৎ আদেশদাতা। তেমনি প্রত্যেক গোত্রে ইমাম হচ্ছেন উলিল্ আমর। (লাত্বায়িফুল্ ইশারাত অর্থাৎ তাফসীরুল্ কুশাইরী লেখক: হযরত আব্দুল করীম বিন হাওয়াযিন বিন আব্দুল মালিক কুশাইরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৪৬৫ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৮৫২)

وقال جابرُ بن عبدِ الله والحسنُ والضحَّاك ومجاهدُ رحمة الله علهيم: هُمُ الْفُقَهَاءُ وَالْعُلَمَاءُ اَهْلُ الدِّيْنِ وَالْفَضْلِ الَّذِيْنَ يُعَلِّمُونَ النَّاسَ مَعَالِمَ دِيْنِهِمْ؛ وَيَاْمُرُونَهُمْ بالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ، فَاَوْجَبَ اللهُ عَلَى الْعِبَادِ طَاعَتَهُمْ.

অর্থ: হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত হাসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত দ্বহহাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন: উলিল আমর হলেন- হযরত ফুক্বাহা, দীনদার উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। যাঁরা মানুষদেরকে দীনী তা’লীম দিয়ে থাকেন। এবং উনারা সৎকাজের আদেশ করেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন। মহান আল্লাহ তায়ালা উনাদের আনুগত্য করাকে ওয়াজিব করেছেন। (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম লিত্ ত্ববারানী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: আল্লামা হযরত আবুল ক্বাসিম সুলাইমান বিন আহমাদ বিন আইয়্যূব বিন মুত্বীর লাখমী শামী ত্ববারানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ২৬০ হিজরী, ওয়াফাত: ৩৬০ হিজরী)

(৮৫৩)

وطاعة الله واجبة على كافة الخلق. وكذا طاعة رسوله صلّى الله عليه وسلّم واجبة ايضا لقوله تعالى واطيعوا الله واطيعوا الرسول فاوجب طاعة رسول الله صلّى الله عليه وسلّم على الخلق. واختلف العلماء في أولي الأمر الذين اوجب طاعتهم بقوله وأولي الأمر منكم. يعني وأطيعوا أولي الأمر منكم قال ابن عباس رضى الله عنهما وجابر رضى الله عنه هم الفقهاء والعلماء الذين يعلمون معالم الناس دينهم وهو قول الحسن والضحاك ومجاهد رحمة الله عليهم وقال ابو هريرة رضى الله عنه الأمراء والولاة وهي رواية عن ابن عباس رضى الله عنهما ايضا.

… قال العلماء طاعة الإمام واجبة على الرعية ما دام على الطاعة فإذا زال عن الكتاب والسنة فلا طاعة له وإنما تجب طاعته فيما وافق الحق.

অর্থ: মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্য করা সমস্ত মাখলূক্বাতের উপর ফরয। অনুরূপ সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করা মাখলূক্বাতের উপর ফরয। যেমনটি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার বাণী মুবারক: তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করো। এখানে হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য বা অনুসরণ-অনুকরণ করাকে মাখলূক্বাতের উপর ফরয করে দেয়া হয়েছে।

উলিল্ আমর উনাদের আনুগত্য করাও ওয়াজিব বা ফরয। তবে উলিল্ আমর কারা এ ব্যপারে ইখতিলাফ রয়েছে। হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা ও হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনারা বলেন: উলিল্ আমর হলেন হযরত ফুক্বাহা ও উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম যাঁরা মানুষদেরকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার তা’লীম দিয়ে থাকেন। ইহা হযরত হাসান, দ্বহ্হাক ও মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরও মত। হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন: উলিল্ আমর হলেন খলীফা ও উমারাগণ। এটা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনার একটি মত।

হযরত উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: মহান আল্লাহ তায়ালা ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পূর্ণ আনুগত্যকারী ইমাম-মুজতাহিদ উনাদেরকে অনুসরণ করা ফরয। কিন্তু যদি তারা কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আনুগত্য থেকে সরে যায় তাহলে তাদেরকে অনুসরণ করা যাবে না। নিশ্চয়ই হক্বের উপর ইস্তিক্বামাত থাকার শর্তে ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের আনুগত্য করা ফরয। (লুবাবুত্ তা’বীল ফী মায়ানিত্ তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল্ খাযিন লেখক: হযরত আলাউদ্দীন আলী বিন মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম বাগদাদী শাফিয়ী খাযিন রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭৪১ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

উল্লেখিত ইবারত গুলো থেকে প্রমানিত হল যে, আত-তাক্বলীদুশ শাখছী তথা নির্দিষ্ট ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের অনুসরণ করা ফরয-ওয়াজিব। যা মূলত অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দাবি।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ৫

وَاذَا جَاءَهُمْ امْرٌ مِنَ الْامْنِ اوِ الْخَوْفِ اذَاعُوا بِه وَلَوْ رَدُّوهُ الَى الرَّسُولِ وَالى اولِي الْامْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنْبِطُونَه مِنْهُمْ وَلَو ْلَا فَضْلُ اللهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُه لَاتَّبَعْتُمُ الشَّيْطَانَ الَّا قَلِيلًا.

অর্থ: আর যখন তাদের নিকট শান্তি কিংবা আতংকের কোন সংবাদ উপস্থিত হয়, তখন তারা তা প্রচার করে থাকে। কিন্তু যদি তারা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে এবং তাদের মধ্যে উলুল্ আমর (ইমাম-মুজতাহিদ) উনাদের কাছে উক্ত বিষয়টি উপস্থিত করতো, তবে অবশ্য উনাদের মধ্যে যাঁরা ইজতিহাদ (ক্বিয়াছ) দ্বারা উহা উৎঘাটন করতে সক্ষম উনারা তা অবগত হতে পারতেন। মূলত: যদি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ফযল (অনুগ্রহ) ও রহমত (দয়া-করুনা) তোমাদের উপর বিদ্যমান না থাকতো, তবে তোমাদের মধ্যে অল্প কতিপয় লোক ব্যতীত সবাই শয়তানের অনুসরণ করতে শুরু করতো। (পবিত্র সূরাতুন নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৩)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ তাফসীর

বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৮৫৪)

الاية دالة على امور: احدها: ان في احكام الحوادث ما لايعرف بالنص بل بالاستنباط. وثانيها: ان الاستنباط حجة. وثالثها: ان العامي يجب عليه تقليد العلماء في احكام الحوادث.

অর্থ: উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইস্তিম্বাত শব্দ কয়েকটি বিষয় বুঝায়। (১) আহকাম সম্পর্কিত নতুন উদ্ভাবিত বিষয়- নাছ (পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ) দ্বারা সরাসরি জ্ঞাত হওয়া যায় না, বরং ইজতিহাদ বা গবেষণার দ্বারা জানা যায়। (২) ইজতিহাদ বা গবেষণা বাস্তবিক পবিত্র শরীয়াত উনার দলীল। (৩) সাধারণদের জন্য আহকাম সম্পর্কিত নতুন উদ্ভাবিত বিষয়সমূহে আলিমগণকে অনুসরণ করা ওয়াজিব। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ৮৩ নং আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৮৫৫)

فثبت ان الاستنباط حجة والقياس اما استنباط او داخل فيه، فوجب ان يكون حجة اذا ثبت هذا فنقول الاية دالة على امور احدها ان في احكام الحوادث ما لايعرف بالنص بل بالاستنباط وثانيها ان الاستنباط حجة، وثالثها ان العامي يجب عليه تقليد العلماء في احكام الحوادث.

অর্থ: সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, ইস্তিম্বাত ও ইজতিহাদ সম্মানিত শরীয়াত স্বীকৃত একটি হুজ্জাত বা দলীল। আর ক্বিয়াসের প্রক্রিয়াটি ইজতিহাদের সমার্থক কিংবা অন্তর্ভুক্ত বিধায় সেটাও শরীয়াত স্বীকৃত হুজ্জাত বা দলীল। মোটকথা, এ পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে তিনটি বিষয় স্থীর হলো- প্রথমত: আহকাম সম্পর্কিত নতুন উদ্ভাবিত বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশের অবর্তমানে ইজতিহাদের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দ্বিতীয়ত: ইজতিহাদ ও ইস্তিম্বাত সম্মানিত শরীয়াত স্বীকৃত হুজ্জাত বা দলীল। তৃতীয়ত: উদ্ভুত সমস্যা ও মাসায়িলের ক্ষেত্রে আম লোকের পক্ষে আলিমগণের তাকলীদ করা ওয়াজিব। (আহকামুল কুরআন লিল্ জাছছাছ সূরাতুন্ নিসা শরীফ ৮৩ নং আয়াত শরীফ পরিচ্ছেদ: ফী ত্বায়াতি উলিল আমর ৩য় খন্ড ১৭৭ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত আহমাদ বিন আলী মাক্কী আবূ বকর রাযী জাছছাছ হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি জন্ম: ৩০৫ হিজরী, ওয়াফাত: ৩৭০ হিজরী)

(৮৫৬)

عن قتادة رحمة الله عليه: “ولو ردوه إلى الرسول وإلى أولي الأمر منهم” يقول: إلى علمائهم (لعلمه الذين يستنبطونه منهم) لعلمه الذين يفحصون عنه ويهمّهم ذلك. عن ابن جريج رحمة الله عليه: “ولو ردوه إلى الرسول” حتى يكون هو الذي يخبرهم “وإلى أولي الأمر منهم” الفقه في الدين والعقل.عن ابي العالية رحمة الله عليه: “ولو ردوه إلى الرسول والى اولي الامر منهم” العلم “الذين يستنبطونه منهم” يتتبعونه ويتحسسونه.

অর্থ: হযরত ক্বতাদাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি (কিন্তু যদি তারা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে এবং তাদের মধ্যে উলুল্ আমর উনাদের কাছে উক্ত বিষয়টি উপস্থিত করতো,) উনার ব্যখ্যায় বলেন: উনাদের মধ্যে হযরত উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের নিকট উপস্থিত করতো (তবে অবশ্য উনাদের মধ্যে যাঁরা ইজতিহাদ দ্বারা উহা উৎঘাটন করতে সক্ষম উনারা তা অবগত হতে পারতেন) উনারা তা জানতেন ও তা থেকে মাসয়ালা বের করতে পারতেন।

হযরত ইবনু জুরাইজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি (যদি তারা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে উপস্থিত করতো) উনার ব্যাখ্যায় বলেন: তাহলে তিনি তাদেরকে উহা অবগত করতেন। (এবং তাদের মধ্যে উলুল্ আমর উনাদের কাছে উক্ত বিষয়টি উপস্থিত করতো) উলিল্ আমর হলেন: দ্বীনী ফিক্হ বা দ্বীনি সহীহ সমঝ উনার অধিকারী ও সম্মানিত ও পবিত্র শরীয়তসম্মত আক্বল সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব উনারা।

হযরত আবুল্ আলিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি (যদি তারা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে এবং তাদের মধ্যে উলুল্ আমর উনাদের কাছে উক্ত বিষয়টি উপস্থিত করতো) উনার ব্যাখ্যায় বলেন: উলিল্ আমর হলেন হক্কানী আলিম উনারা। (তবে অবশ্য উনাদের মধ্যে যাঁরা ইজতিহাদ দ্বারা উহা উৎঘাটত করতে সক্ষম উনারা তা অবগত হতে পারতেন) উনারা ইজতিহাদ তথা ক্বিয়াস করে সেখান থেকে মাসয়ালা উদ্ঘাটন করতেন। (জামিউল্ বায়ান ফী তা’বীলিল্ কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুত্ ত্ববারী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ৮৩ নং আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন জারীর বিন ইয়াযীদ বিন কাছীর বিন গালিব আমালী আবূ জা’ফর ত্ববারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩০৩ হিজরী)

(৮৫৭)

{والى اولى الامر منهم} وفيهم اربعة اقوال. احدها: انهم مثل ابي بكر وعمر وعثمان وعلي عليهم السلام، قاله ابن عباس رضى الله عنهما.والثاني: انهم ابو بكر وعمر عليهما السلام، قاله عكرمة رحمة الله عليه.

والثالث: العلماء، قاله الحسن وقتادة وابن جريج رحمة الله عليهم. والرابع: امراء السرايا، قاله ابن زيد ومقاتل رحمة الله عليهما.

অর্থ: উলিল্ আমর উনার ব্যাপারে চারটি মতামত রয়েছে। এক: উনারা হলেন হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম, হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম, হযরত উছমান গনী আলাইহিস সালাম ও হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস্ সালাম। যা বর্ণনা করেছেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা।

দুই: উনারা হলেন হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ও হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম। যা বর্ণনা করেছেন হযরত ইকরামাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

তিন: উনারা হলেন হযরত উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। যা বর্ণনা করেছেন হযরত হাসান বছরী, ক্বতাদাহ ও ইবনু জুরাইজ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম।

চার: উনারা হলেন জিহাদের সেনাপতি। যা বর্ণনা করেছেন হযরত ইবনু যায়েদ ও মুক্বাতিল রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা। (যাদুল্ মাসীর ফী ইলমিত্ তাফসীর অর্থাৎ তাফসীরুল্ জাওযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ৮৩ নং আয়াত শরীফ লেখক: হযরত জামালুদ্দীন আব্দুর রহমান বিন আলী বিন মুহাম্মাদ জাওযী হাম্বালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৫৯৭ হিজরী)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি নির্দিষ্ট ইমাম-মুজতাহিদ উনাদেরকে অনুসরণ করতে বলেছেন। কারণ, মাসয়ালা ইন্তিম্বাত করা তথা নতুন উদ্ভাবিত সমস্যার সমাধান বের করার যোগ্যতা সম্পন্ন মুজতাহিদ বা আলিম উনারা নির্দিষ্টই হয়ে থাকেন। এমন উলামা ও ফুক্বাহা উনারাই হচ্ছেন মাযহাবের ইমাম-মুজতাহিদ উনারা। উনাদেরকে অনুসরণ করা ফরয-ওয়াজিব।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ৬

يايها الذين امنوا اتقوا الله و كونوا مع الصادقين.

অর্থ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে ভয় করো এবং ছাদিক্বীন (চরম-পরম সত্যবাদী) উনাদের সঙ্গী হয়ে যাও। (পবিত্র সূরাতুত্ তাওবাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ১১৯)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৮৫৮)

ثم الصادقون هم الـمرشدون الى طريق الوصول.

অর্থ: ছাদিকূন হচ্ছেন মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি লাভ করার জন্য পথ প্রদর্শনকারী মুরশিদ ক্বিবলা। (রূহুল বয়ান অর্থাৎ তাফসীরুল হাক্কী পবিত্র সূরাতুত্ তাওবাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ১১৯ লেখক: হযরত ইসমাঈল হাক্কী বিন মুছ্তফা বিন বারূসাবী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১১২৭ হিজরী)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ ও উনার তাফসীর থেকে প্রমাণিত হল যে, যার যার নির্দিষ্ট মুরশিদ বা শায়েখ উনাকে অনুসরণ করা ফরয-ওয়াজিব। আর প্রত্যেক মুরশিদ বা শায়েখ যেকোন একটি মাযহাব উনার অনুসারী হয়ে থাকেন। যেহেতু ইন্তিকাল পর্যন্ত যেকোন একটি মাযহাব উনার ইত্তিবা করা ফরযে আইন।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ৭

وَاتَّبِعْ سَبِيْلَ مَنْ اَنَابَ اِلَىَّ ثُمَّ اِلَىَّ مَرْجِعُكُمْ فَاُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ.

অর্থ: তুমি উনার পথ অনুসরণ করো, যিনি আমার দিকে রুজূ’ হয়েছেন। অতপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে। আমি তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো সে বিষয়ে, যা তোমরা আমল করতে। (পবিত্র সূরাতু লুক্বমান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৮৫৯)

 )وَاتَّبِعْ سَبِيْلَ مَنْ اَنَابَ اِلَىَّ) يعنى المؤمنين.

অর্থ: (তুমি উনার পথ অনুসরণ করো, যিনি আমার দিকে রুজূ’ হয়েছেন) অর্থাৎ মু’মিন উনাদের পথ। (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম অর্থাৎ তাফসীরু ইবনি কাছীর পবিত্র সূরাতু লুক্বমান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫ লেখক: আবুল ফিদা ইসমাঈল বিন উমর বিন কাছীর কুরাশী দামিশক্বী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৭০০ হিজরী ওয়াফাত: ৭৭৪ হিজরী)

(৮৬০)

}وَاتَّبِعْ} فى الدين {سَبِيْلَ مَنْ اَنَابَ اِلَىَّ} رجع بالتوحيد والاخلاص فى الطاعة وهم المؤمنون الكاملون.

অর্থ: (তুমি উনার পথ অনুসরণ করো, যিনি আমার দিকে রুজূ’ হয়েছেন) যিনি তাওহীদ ও একনিষ্ঠতার সাথে আনুগত্যের দিকে প্রত্যাবর্তন করেছেন। আর উনারা হলেন মু’মিনে কামিল অর্থাৎ পরিপূর্ণ বিশ্বাসী। (রূহুল বয়ান ফী তাফসীরিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল হাক্কী  লেখক: হযরত ইসমাঈল হাক্কী বিন মুছতফা ইস্তাম্বূলী হানাফী খালওয়াতী বারূসাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১১২৭ হিজরী)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ ও উনার তাফসীর থেকে প্রমাণিত হল যে, এখানে মু’মিনে কামিল তথা ঈমান-আক্বায়িদ, আমল, ইছলাছ ও পরহেযগারীতায় পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্ব উনাদেরকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। আর উনারাই হচ্ছেন যার যারা মুরশিদ বা শায়েখ এবং ইমাম-মুজতাহিদ ফক্বীহ ও উলামা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। এখানেও নির্দিষ্ট ইমাম-মুজতাহিদ ও কামিল মুরশিদ উনাদেরকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ।

 

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৪

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁ, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩২