পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩৫

সংখ্যা: ২৫৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয যুহর আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা)  ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-চলমান), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করার পর-

৩২তম ফতওয়া হিসেবে

 

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”-

পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

 

সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয

পূর্ব প্রকাশিতের পর

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দৃষ্টিতে আত তাক্বলীদুশ শরয়ী বা শরীয়সম্মত অনুসরণ-অনুকরণ

(৬৩৯-৬৪৬)

عَنْ اُنَاسٍ مِنْ اَهْلِ حِمْصَ مِنْ اَصْحَابِ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رضى الله عنه اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا اَرَادَ اَنْ يَّبْعَثَ مُعَاذًا رضى الله عنه اِلَى الْيَمَنِ قَالَ كَيْفَ تَقْضِىْ اِذَا عَرَضَ لَكَ قَضَاءٌ قَالَ اَقْضِىْ بِكِتَابِ اللهِ قَالَ فَاِنْ لَمْ تَجِدْ فِىْ كِتَابِ اللهِ قَالَ فَبِسُنَّةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَاِنْ لَمْ تَجِدْ فِىْ سُنَّةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ فِى كِتَابِ اللهِ قَالَ اَجْتَهِدُ رَأْيِىْ وَلاَ آلُو فَضَرَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَدْرَه وَقَالَ اَلْحَمْدُ لله الَّذِى وَفَّقَ رَسُوْلَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِمَا يُرْضِىْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم.

অনুবাদ: হিম্ছ অধিবাসীদের মধ্যে হযরত মুয়ায বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার সঙ্গি-সাথীদের কতক বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিত আছে। নিশ্চয়ই নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন হযরত মুয়ায বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাকে ইয়ামান এলাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন, তখন তিনি উনাকে পাঠানোর সময় জিজ্ঞাসা করলেন: যখন কোন সমস্যা দেখা দিবে তখন আপনি কিভাবে তার ফায়সালা করবেন? তিনি বললেন, আমি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কিতাব উনার দ্বারা ফায়সালা করব। তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: আপনি যদি পবিত্র কিতাবুল্লাহ উনার মধ্যে সরাসরি সমাধান না পান! তাহলে কি করবেন? উত্তরে তিনি বললেন, তাহলে পবিত্র সুন্নাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বারা ফায়সালা করব। তিনি আবারো ইরশাদ মুবারক করলেন: আপনি যদি পবিত্র সুন্নাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে এবং পবিত্র কিতাবুল্লাহ উনার মধ্যে সরাসরি সমাধান না পান! তাহলে কি করবেন? উত্তরে তিনি বললেন, তাহলে আমি আমার রায় বা সমাধান বের করতে ইজতিহাদ বা ক্বিয়াস করব; এতে আমি চেষ্টায় কোন ত্রুটি করব না। তখন নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার প্রতিনিধি ছহাবী উনার বুক মুবারকে পবিত্র হাত মুবারক দ্বারা স্পর্শ্ব করে বললেন: মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সমস্ত প্রসংশা! যিনি উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রসূল বা প্রতিনিধিকে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুতাবিক কথা বলার তাওফীক্ব দিয়েছেন। (সুনানু আবী দাঊদ লেখক: হযরত আবূ দাঊদ সুলাইমান বিন আশয়াছ সাজিস্তানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছে ১১: বাবু ইজতিহাদির রায় ফিল্ ক্বদ্বা ৩য় খণ্ড ৩৩০ পৃষ্ঠা হাদীছ শরীফ নম্বর: ৩৫৯৪ প্রকাশক: দারুল কিতাবিল আরাবী-বইরূত লেবনান, মোট ৪ খণ্ডে সমাপ্ত; আল-জামিউ ওয়াস্ সুনান লিত্ তিরমিযী, মুসনাদ আহমাদ বিন হাম্বাল, মুসনাদুত্ ত্বয়ালাসী, মুছান্নাফ ইবনু আবী শাইবাহ, সুনানুদ দারিমী, আস-সুনানুল্ কুবরা লিল্ বাইহাক্বী, মিশকাতুল মাছাবীহ)

অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ফাতাওয়া, ফায়সালা, বিচার-মিমাংসা ইত্যাদী করার তারতীব শিক্ষা দেয়া হয়েছে। ইমাম বা ফায়সালাকারী শরীয়াত অনুযায়ী ফায়সালা দিবেন আর তা জনসাধারণ নির্দিধায় মেনে নিবেন এমনটি স্পষ্ট করা হয়েছে। আর ইহাই হচ্ছে মাযহাব মান্য করা।

(৬৪৭-৬৫০)

عَنْ حضرت حُذَيْفَةَ رضى الله عنه قال كنا عند النبى صلى الله عليه و سلم جلوسا فقال اِنِّىْ لاَ اَدْرِىْ مَا قَدْرُ بَقَائِىْ فِيكُمْ فَاقْتَدُوْا بِاللَّذَيْنِ مِنْ بَعْدِىْ وَاَشَارَ اِلى اَبِىْ بَكْرٍ عليه السلام وَعُمَرَ عليه السلام.

অনুবাদ: ছহাবী হযরত হুযাইফাহ ইবনে ইয়ামান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন: আমরা একদা নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছুহবাতে বসা ছিলাম। সে অবস্থায় তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: আমি জানি না (অর্থাৎ আমি বলব না) যে; আর কত দিন আপনাদের মধ্যে যাহির থাকব। তাই আমার পরে যে দু’জন থাকবেন আপনারা উনাদেরকে ইক্তিদা (অর্থাৎ তাক্বলীদ বা অনুসরণ-অনুকরণ) করবেন। এতে তিনি ছিদ্দীক্বে আকবার হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ও ফারূক্বে আ’যম হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনাদের দিকে ইঙ্গিত করলেন। (মুসনাদুল ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল লেখক: আল-ইমামুল মুতলাক, ইমামুল মাযহাবিল হানাবিলাহ, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল আবূ আব্দিল্লাহ শাইবানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৪১ হিজরী পরিচ্ছেদ: হাদীছু হুযাইফাহ বিন ইয়ামান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আনিন্ নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৫ম খণ্ড ৩৮৫, ৩৯৯ ও ৪০২ পৃষ্ঠা প্রকাশক: মুয়াসসিসাতু কুরতুবাহ- ক্বাহেরা, মোট ৬ খণ্ডে সমাপ্ত; আল-জামে’ ওয়াস সুনান লিত্ তিরমিযী লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন ঈসা আবূ ঈসা তিরমিযী সুলামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ ১৬: বাবুন ফী মানাক্বিবি আবী বকর ওয়া উমর আলাইহিমাস সালাম কিলাইহিমা ৫ম খণ্ড ৬১০ পৃষ্ঠা, পরিচ্ছেদ ৩৫: বাবু মানাক্বিবি আম্মার বিন ইয়াসার রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ৫ম খণ্ড ৬৬৮ পৃষ্ঠা, প্রকাশক: দারু ইহইয়ায়িত্ তুরাছির আরাবী- বইরূত, তাহক্বীক্ব: আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির ও অন্যান্যরা, মোট ৫ খণ্ডে সমাপ্ত; সুনানে ইবনু মাজাহ লেখক: আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইয়াযীদ ক্বযবীনী ইবনু মাজাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৭৩ হিজরী, পরিচ্ছে ১১: বাবুন ফী ফাদ্বায়িলি আছাহাবি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ফাদ্বলু আবী বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ১ম খণ্ড ৭৩ পৃষ্ঠা, প্রকাশক: মাকতাবাতু আবিল মায়াত্বী, মোট ৫ খণ্ডে সমাপ্ত; মিশকাতুল মাছাবীহ লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ খত্বীব তাবরীযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ ৫: বাবু মানাক্বিবি আবী বকর ওয়া উমর আলাইহিমাস সালাম ৩য় খণ্ড ৩২০ পৃষ্ঠা, প্রকাশক: আল-মাকতাবুল ইসলামী- বইরূত লেবনান)

অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে  ‘ইক্তাদূ অর্থাৎ আপনারা অনুসরণ করতে থাকবেন’ আমর বা নির্দেশমূলক শব্দ মুবারকখানা শরয়ী তাক্বলীদ বা অনুসরণ-অনুকরণকে ওয়াজিব বা ফরয করে প্রমাণ করে।

(৬৫১)

عَنْ ام الـمؤمنين حضرت عَائِشَةَ عليها السلام قَالَتْ … فَجَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتّى جَلَسَ عَنْ يَسَارِ اَبِىْ بَكْرٍ عليه السلام، فَكَانَ اَبُوْ بَكْرٍ عليه السلام يُصَلِّىْ قَائِمًا وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّىْ قَاعِدًا، يَقْتَدِىْ اَبُوْ بَكْرٍ عليه السلام بِصَلاَةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ مُقْتَدُونَ بِصَلاَةِ اَبِىْ بَكْرٍ عليه السلام.

অনুবাদ: উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেছেন … একদা (মারীদ্বী শান মুবারক অবস্থায়) নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এসে ছিদ্দীক্বে আকবার হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার বাম দিকে বসলেন। এতে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি দাঁড়িয়ে নামায পড়ছিলেন, আর নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বসে নামায পড়াচ্ছিলেন। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নামায মুবারক উনার ইক্তিদা বা অনুসরণ করছিলেন, আর অন্যান্য সকল ছহাবাহ কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম উনার নামায মুবারক উনার ইক্তিদা করছিলেন। (আল-জামিউছ ছহীহু লিল্ বুখারী লেখক: আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈর বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৫৬ হিজরী, পরিচ্ছে ৪০: বাবুর রজুলু ইয়া’তাম্মু বিল্ ইমামি ওয়া ইয়া’তাম্মুন নাসু বিল্ মা’মূম ১ম খণ্ড ১৮২ পৃষ্ঠা, হাদীছ শরীফ নম্মর: ৭১৩ প্রকাশক: বাবুশ শুয়াব-ক্বাহেরা, মোট ৯ খণ্ডে সমাপ্ত)

অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম উনাকে ইক্তিদা বা অনুসরণ করার বিষয়টি স্পষ্ট।

(৬৫২-৬৫৩)

عَنْ حضرت اَبِى وَائِلٍ رحمة الله عليه قَالَ جَلَسْتُ اِلى شَيْبَةَ بن عثمان رضى الله عنه فَقَالَ جَلَسَ عُمَرُ بن الخطاب عليه السلام فِى مَجْلِسِكَ هذَا فَقَالَ لقد هَمَمْتُ اَنْ لاَ اَدَعَ فِى الكعبة صَفْرَاءَ وَلاَ بَيْضَاءَ اِلاَّ قَسَمْتُهَا بَيْنَ الناسِ قال قُلْتُ ليس ذلك لك قد سَبَقَكَ صَاحِبَاكَ لَمْ يَفْعَلَا ذلك فَقَالَ هُمَا الْمَرْانِ يُقْتَدَى بِهِمَا.

 অনুবাদ: তাবিয়ী হযরত আবূ ওয়ায়িল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন: আমি একদা ছহাবী হযরত শাইবাহ বিন উছমান রদ্বিয়াল্লাহ আনহু উনার নিকট বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় তিনি বললেন: আমীরুল মু’মিনীন খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত উমর ফারূক আলাইহিস সালাম তিনি ঠিক আপনার বসার এই জায়গাতেই বসে বলেছিলেন; আমার ইচ্ছা হয় যে, পবিত্র কা’বা শরীফ উনার মধ্যে সংরক্ষিত সকল সোনা-রূপা মুসলমান মানুষদের মধ্যে বন্টন করে দেই। তখন তিনি (হযরত শাইবাহ বিন উছমান রদ্বিয়াল্লাহ আনহু) বললেন, আমি বললাম: আপনার তো সেই অধিকার নেই। কেননা, আপনার পূর্বে দু’জন (প্রথমজন নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও অপরজন প্রথম খলীফাহ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম) এমন কাজটি করেননি। ইহা শুনে তিনি বললেন: উনাদের দু’জনের ইক্তিদা বা অনুসরণ-অনুকরণ করা অবশ্যই উচিৎ অর্থাৎ ফরয-ওয়াজিব। (মুসনাদুল ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল লেখক: আল-ইমামুল মুতলাক, ইমামুল মাযহাবিল হানাবিলাহ, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল আবূ আব্দিল্লাহ শাইবানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৪১ হিজরী পরিচ্ছেদ:  ৩য় খ- ৪১০ পৃষ্ঠা, হাদীছ শরীফ নম্বর: ১৫৪১৯ ও ১৫৪২০ প্রকাশক: মুয়াসসিসাতু কুরতুবাহ- ক্বাহেরাহ, মোট ৬ খণ্ডে সমাপ্ত; মুয়াসসিসাতু কুরতুবাহ- ক্বাহেরা, মোট ৬ খণ্ডে সমাপ্ত; আল-জামিউছ ছহীহু লিল্ বুখারী লেখক: আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈর বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৫৬ হিজরী, পরিচ্ছে ২: বাবুল ইক্তিদাহ বিসুনানি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ৯ম খ- ১১৪ পৃষ্ঠা, হাদীছ শরীফ নম্মর: ৭২৭৫ প্রকাশক: বাবুশ শুয়াব-ক্বাহেরা, মোট ৯ খণ্ডে সমাপ্ত)

এখানে يُقْتَدَى ‘ইউক্তাদা অর্থাৎ অনুসরণ করা উচিৎ’ শব্দ মুবারকখানা ব্যবহার করা হয়েছে। যা শরয়ী তাক্বলীদ বা অনুসরণ-অনুকরণকে ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত করে।

(৬৫৪-৬৬১)

عَنْ حضرت عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: اِنَّ اللّهَ لاَ يَقْبِضُ الْعِلْمَ انْتِزَاعًا يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ وَلَكِنْ يَقْبِضُ الْعِلْمَ بِقَبْضِ الْعُلَمَاءِ حَتَّى اِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا اتَّخَذَ النَّاسُ رُؤُوسًا جُهَّالاً فَسُئِلُوا فَافْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ فَضَلُّوا وَاَضَلّوا.

অনুবাদ: ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আছ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আমি বলতে শুনেছি যে, তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি বান্দাদের অন্তর থেকে ছিনিয়ে নেয়ার মাধ্যমে ইল্ম উনাকে তুলে নিবেন না, বরং আলিম উনাদেরকে উঠিয়ে নেয়ার মাধ্যমে ইল্ম উনাকে তুলে নিবেন। এভাবে একজন আলিমও যখন থাকবেন না, তখন মানুষেরা মুর্খদেরকে তাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে গ্রহণ করবে। তাই তারা কোন কিছু জিজ্ঞাসিত হলে অজ্ঞতাপ্রসূত ফাতাওয়া দিবে। যার ফলে তারা নিজেরাও গোমরা হবে এবং অন্যদেরকেও গোমরাহ করবে। (আল-জামিউছ ছহীহু লিল্ বুখারী  কিতাবুল ঈমান পরিচ্ছেদ ৩৪: বাবু কাইফা ইউক্বাদুল ইল্ম মুসনাদু আহমাদ বিন হাম্বাল, ছহীহ মুসলিম, আল-জামিউ ওয়াস্ সুনানু লিত্ তিরমিযী, সুনানু ইবনি মাজাহ, ছহীহ ইবুন হিব্বান, মুসনাদুল্ বায্যার, মিশকাতুল মাছাবীহ)

অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আমলদার হক্কানী আলিম উনাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করার গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে। উনারা না থাকলে জাতী যে মুর্খদের ফাতাওয়া দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গোমরাহ হয়ে যাবে তাও বলে দেয়া হয়েছে। তাই আলিম উনাদেরকে অনুসরণ করা জরুরী প্রমাণিত হয়।

(৬৬২-৬৬৩)

عَنْ حضرت اَبِىْ عُثْمَانَ الطُّنْبُذِىّ رَضِيعِ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَرْوَانَ قَالَ سَمِعْتُ اَبَا هُرَيْرَةَ رضى الله عنه يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: مَنْ اُفْتِىَ بِغَيْرِ عِلْمٍ كَانَ اِثْمُه عَلى مَنْ اَفْتَاه.

অনুবাদ: তাবিয়ী হযরত আবূ উছমান তুনবুযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত, যিনি ছিলেন আব্দুল মালিক বিন মারওয়ান-এর দুধভাই। তিনি (তাবিয়ী হযরত আবূ উছমান তুনবুযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার কাছ থেকে শুনেছি যে তিনি বলেছেন- মূলত: নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন: যাকে ইল্ম ছাড়া ফাতাওয়া দেয়া হল, এতে গুনাহ তারই হবে যে ইল্ম ছাড়া ফাতাওয়া দিয়েছে। (সুনানু আবী দাঊদ লেখক: আবূ দাঊদ সুলাইমান বিন আশয়াছ সাজিস্তানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৭৫ হিজরী অধ্যায় ২০: কিতাবুল ইল্ম পরিচ্ছেদ ৮: বাবুত্ তাওয়াক্কী ফিল্ ফুত্ইয়া, আল-মুস্তাদারক আলালছ্ ছহীহাঈন লেখক: আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ হাকিম নীসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি কিতাবুল ইল্ম)

অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফখানা তাক্বলীদ বা ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের আনুগত্যতার সপক্ষে এক মজবূত দলীল। কেননা, তাক্বলীদ শারীয়াত অনুমোদিত না হলে অজ্ঞতাপ্রসূত ফাতাওয়া প্রদানের সকল দায়-দায়িত্ব মুফতী ছাহেবের একার ঘাড়ে চাপতো না।

(৬৬৪-৬৬৫)

عَنْ حضرت اِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمنِ الْعَذَرِىِّ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: يَرِثُ هذَا الْعِلْمَ مِنْ كُلِّ خَلَفٍ عُدُولُه يَنْفُونَ عَنْهُ تَاْوِيلَ الْجَاهِلِينَ وَانْتِحَالَ الْمُبْطِلِينَ وَتَحْرِيفَ الْغَالِينَ.

অনুবাদ: ছাহাবী হযরত ইবরাহীম ইবনে আব্দুর রহমান আযারী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: সুযোগ্য উত্তরসূরীরা পূর্ববর্তীদের কাছ থেকে ওয়ারিছ হিসেবে এই ইলম গ্রহণ করবে। আর মুর্খদের ভুল ব্যাখ্যা, বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচার এবং বাড়াবাড়িকারীদের বাড়াবাড়ি থেকে এই ইল্ম উনাকে হিফাযত করবে। (আস-সুনানুল কুবরা লিল্ বাইহাক্বী পরিচ্ছেদ ৫০: বাবুর রজুল মিন আহলিল ফিক্হ ইউসয়ালু আনির রজুলি মিন আহলিল্ হাদীছ ফাইয়াকূলু কুফফূ আন্ হাদীছিহী লিআন্নাহূ ইয়াগলাতু আও ইউহাদ্দিছু বিমা লাম ইয়াসমা’ আও আন্নাহূ লা ইউবছিরুল ফুতইয়া, মুসনাদুল বায্যার)

পবিত্র শরীয়াত উনার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে মুর্খদের ব্যাখ্যার কঠোর নিন্দা করে এখানে বলা হয়েছে যে, জাহিল-মুর্খদের হাত থেকে ইল্ম উনাকে হিফাযত করা প্রত্যেক যুগের হক্কানী আলিম উনাদের পবিত্র দায়িত্ব-কর্তব্য। সুতরাং পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের নির্ভুল অনুসরণের জন্য উনাদেরকেই অনুসরণ করতে হবে। আর এটাই তো তাক্বলীদ বা মাযহাব মান্য করা।

(৬৬৬-৬৭০)

وَيُذْكَرُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ائْتَمُّوا بِى وَلْيَاْتَمَّ بِكُمْ مَنْ بَعْدَكُم.

অনুবাদ: নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে, তোমরা আমাকে ইক্তিদা কর, আর তোমাদের পরবর্তীরা তোমাদেরকে দেখে ইক্তিদা বা অনুসরণ করবে। (আল-জামিউছ ছহীহু লিল্ বুখারী পরিচ্ছেদ ৪০: বাবুর রজুল ইয়া’তাম্মু বিল্ ইমাম ওয়া ইয়া’তাম্মুন্ নাস বিল্ মা’মূম, ছহীহ মুসলিম, মুসনাদু আহমাদ বিন হাম্বাল, ছহীহ ইবনে খুযাইমাহ, মুসনাদুত্ ত্বয়ালাসী)

এখানে স্পষ্টভাবে ইমাম-মুজতাহিদ তথা ওলীআল্লাহ উনাদেরকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করতে নির্দেশ করা হয়েছে। যা মূলত: ফরয উনার অন্তর্ভুক্ত।

(৬৭১)

عَنْ حضرت سَهْلٍ رحمة الله عليه عَنْ اَبِيهِ رضى الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّ امْرَاَةً اَتَتْهُ فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم انْطَلَقَ زَوْجِى غَازِيًا وَكُنْتُ اقْتَدِى بِصَلاَتِه اِذَا صَلّى وَبِفِعْلِه كُلّه فَاخْبِرْنِىْ بِعَمَلٍ يُبْلِغُنِى عَمَلَه حَتّى يَرْجِعَ.

অনুবাদ: হযরত সাহ্ল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা (হযরত আবূ সাহ্ল রদ্বিয়াল্লাহু আনহু) উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, একদা জনৈক মহিলা ছহাবী নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে হাযির হয়ে আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার স্বামী জিহাদে গেছেন। উনি থাকতে আমি উনার নামায ও অন্যান্য কাজের অনুসরণ করতাম। এখন উনি ফিরে আসা পর্যন্ত এমন কোন আমল আমাকে জানিয়ে দিন, যা উনার আমলের সমপর্যায়ে আমাকে পৌঁছে দিবে। (মুসনাদু আহমাদ বিন হাম্বাল পরিচ্ছেদ: হাদীছু মুয়ায বিন আনাস আল-জুহানী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু)

লক্ষ্য করুন! মহিলা ছহাবী সুস্পষ্ট ভাষায় নিজের ছলাত বা নামাযসহ যাবতীয় আমলের ইক্তিদা করার ঘোষণা দিচ্ছেন, অথচ নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এতে কোন রকম অসম্মতি প্রকাশ করেননি। সুবহানাল্লাহ।

উল্লেখিত ৯ খানা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে তাক্বলীদ বা শরীয়াত সম্মত আনুগত্যতা যে পবিত্র দীন ইসলাম উনার অন্যতম জরুরী ফরয বিধান তা স্পষ্টই প্রমাণিত হচ্ছে। আর ইহাই তো মাযহাব মান্য করা।

 

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৯

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০