পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, সময় ও মুহূর্তের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া১১ (১৪তম পর্ব)

সংখ্যা: ২৫২তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা)  ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং  ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭.  ইসলামের  নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-২৩৭), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২০৩তম সংখ্যা), ৩২. হানাফী মাযহাব মতে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে ‘আমীন’ অনুচ্চ আওয়াজে বা চুপে চুপে পাঠ করাই শরীয়তের নির্দেশ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১২তম সংখ্যা), ৩৩. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২২০তম সংখ্যা থেকে যা এখনো চলছে) পেশ করার পাশাপাশি-

৩৪তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!

অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-

استحلال الـمعصية كفر.

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি”  প্রকাশ করা হলো।

সম্মানিত ইসলামী মাস, বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় সমূহ সম্পর্কে এবং চন্দ্র ও সূর্যের গতিবিধির ব্যাপারে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার ২৬ খানা পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

সূর্য ও চন্দ্র এই দু’টি ইসলামী মাস, রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় নিরুপনের ব্যাপারে মানদ- হিসেবে বিবেচিত। অর্থাৎ সূর্য ও চন্দ্র উনাদের আবর্তনের কারণে বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময়গুলো সুচারুরূপে আগমণ করে থাকে। এজন্য আমরা ইসলামী মাস, রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় ইত্যাদীর আলোচনার পাশাপাশি চন্দ্র ও সূর্যের আবর্তন ও তাদের গতিবিধি সম্পর্কে আলোচনা করবো। যাতে করে বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে যায় এবং বুঝতে সহজ হয়। নিম্নে এ সম্পর্কিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হলো:

সপ্তাহের সাত দিনের ফযীলত

১. يوم الاثنين العظيم ‘ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম’ বা আল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার উনার ফযীলত

عَنْ اَبِىْ قَتَادَةَ الاَنْصَارِىِّ رضى الله عنه قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَقْبَلَ عَلَيْهِ عُمَرُ عليه السلام فَقَالَ يَا نَبِىَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَوْمُ يَوْمِ الاِثْنَيْنِ؟ قَالَ يَوْمٌ وُلِدْتُ فِيهِ وَيَوْمٌ اَمُوْتُ فِيهِ.

অর্থ: হযরত আবূ ক্বতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমরা একদা নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছুহবত মুবারকে ছিলাম, এমন সময় সেখানে হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন এবং আরজ করলেন, হে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার উনার মধ্যে রোযা রাখা কেমন? জাওয়াবে তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন: আমি এ দিন মুবারকে দুনিয়ায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছি এবং এ দিন মুবারকে বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করব। অর্থাৎ এ দিন মুবারকে রোযা রাখা অত্যন্ত বরকতময়। সুবহানাল্লাহ। (ছহীহ ইবনি খুযাইমাহ কিতাবুছ ছিয়াম বাবু ইস্তিহ্বাবি ছওমি ইয়াওমিল্ ইছনাইন ইযিন্ নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বুলিদা ইয়াওমুল্ ইছনাইনি ওয়া ফীহি ঊহিয়া ইলাইহি ওয়া ফীহি মাতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লেখক: হযরত আবূ বকর মুহাম্মাদ বিন ইসহাক্ব বিন খুযাইমাহ সুলামী নীসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩১১ হিজরী)

عن مالك رحمة الله عليه انه بلغه: ان رسول الله صلى الله عليه و سلم توفى يوم الاثنين

অর্থ: হযরত মালিক রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত আছে যে, নিশ্চয়ই উনার নিকট খবর পৌঁছেছে যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার। সুবহানাল্লাহ! (আল্ মুয়াত্তা লিল্ ইমাম মালিক লেখক: ইমাম হযরত আবূ আব্দিল্লাহ মালিক বিন আনাস আছবাহী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৯৫ হিজরী ওয়াফাত: ১৭৯ হিজরী পরিচ্ছেদ: মা জায়া ফী দাফনিল মাইয়্যিত)

عَنْ أَبِى قَتَادَةَ الأَنْصَارِىِّ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم … وَسُئِلَ عَنْ صَوْمِ يَوْمِ الاِثْنَيْنِ قَالَ ذَاكَ يَوْمٌ وُلِدْتُ فِيهِ وَيَوْمٌ بُعِثْتُ أَوْ أُنْزِلَ عَلَىَّ فِيهِ.

অর্থ: হযরত আবূ ক্বতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার উনার দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি জওয়াবে বলেছিলেন, ইহা এমন একখানা দিন মুবারক যে দিনে আমি দুনিয়ায় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছি এবং এ দিনে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত প্রাপ্ত হয়েছি তথা এ দিনে আমার উপর পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল শুরু হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (ছহীহ মুসলিম লেখক: হযরত ইমাম আবুল হাসাঈন মুসলিম বিন হাজ্জাজ বিন মুসলিম কুশাইরী নীসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ: ইস্তিহবাবু ছিয়ামি ছালাছাতি আইয়ামিন মিন্ কুল্লি শাহরিন ওয়া ছাওমি ইয়াওমি আরাফাতা ওয়া আশূরা ওয়াল ইছনাঈন ওয়াল খমীছ)

عَنْ أَبِى قَتَادَةَ رضى الله تعالى عنه قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَرَأَيْتَ صَوْمَ يَوْمِ الاِثْنَيْنِ وَيَوْمِ الْخَمِيسِ قَالَ فِيهِ وُلِدْتُ وَفِيهِ أُنْزِلَ عَلَىَّ الْقُرْآنُ.

অর্থ: হযরত আবূ ক্বতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার ও খমীস বা বৃহস্পতিবার উনাদের দিনে রোযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি জওয়াবে বলেন, ইহা এমন একখানা দিন মুবারক যে দিনে আমি দুনিয়ায় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছি এবং এ দিনে আমার উপর পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল শুরু হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (সুনানু আবী দাঊদ লেখক: হযরত ইমাম আবূ দাঊদ সুলাইমান বিন আশয়াছ সিজিস্তানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ: ফী ছাওমিদ্ দাহরি তাতাওউয়ান)

عن حضرت انس بن مالك رضى الله تعالى عنه قال: بعث النبي صلى الله عليه و سلم يوم الأثنين وصلى حضرت على عليه السلام يوم الثلاثاء.

অর্থ: হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াতপ্রাপ্ত হন ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার আর হযরত আলী আলাইহিস সালাম তিনি উনার প্রতি ঈমান আনেন ছুলাছা বা মঙ্গলবার। (আল্ জামিউ ওয়াস্ সুনান লিত্ তিরমিযী লেখক: হযরত ইমাম মুহাম্মাদ বিন ঈসা আবূ ঈসা তিরমিযী সুলামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি)

عن أبي هريرة ان رسول الله صلى الله عليه و سلم قال: تفتح أبواب الجنة يوم الإثنين ويوم الخميس فيغفر لكل عبد مسلم لا يشرك بالله شيئا.

অর্থ: হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত জান্নাত উনাদের দরজাসমূহ ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার ও খমীস বা বৃহস্পতিবার উনাদের দিনে খোলা হয়। র্শিক করে না এমন ব্যক্তিদের অপরাপর গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হয়। (আল্ মুয়াত্তা লিল্ ইমাম মালিক লেখক: ইমাম হযরত আবূ আব্দিল্লাহ মালিক বিন আনাস আছবাহী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৯৫ হিজরী ওয়াফাত: ১৭৯ হিজরী পরিচ্ছেদ: মা জায়া ফিল্ মুহাজিরাহ, ছহীহ মুসলিম বাবুন নাহয়ি আনিশ্ শাহনা ওয়াত তাহাজুর, আল্ জামিউ ওয়াস সুনানু লিত্ তিরমিযী বাবু মা জায়া ফিল্ মুতাহাজিরীন)

عَن حضرت أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله تعالى عنه عَنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ تُعْرَضُ أَعْمَالُ النَّاسِ فِى كُلِّ جُمُعَةٍ مَرَّتَيْنِ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَيَوْمَ الْخَمِيسِ.

অর্থ: হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রতি জুমুয়াহ-এ (প্রতি সপ্তাহে) বান্দার আমল দু’বার উত্তোলন করা হয়, ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার ও খমীস বা বৃৃহস্পতিবার উনার দিন। (ছহীহ মুসলিম লেখক: হযরত ইমাম আবুল হুসাঈন মুসলিম বিন হাজ্জাজ বিন মুসলিম কুশাইরী নীসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ: আন্ নাহী আনিশ্ শাহনা ওয়াত্ তাহাজুর, আল্ মুয়াত্তা লিল্ ইমাম মালিক লেখক: হযরত ইমাম আবূ আব্দিল্লাহ মালিক বিন আনাস আছবাহী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৯৫ হিজরী ওয়াফাত: ১৭৯ হিজরী পরিচ্ছেদ: বাবুন মা জায়া ফিল্ মুহাজিরাহ)

عن حضرت أبي هريرة رضى الله تعالى عنه : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال تعرض الأعمال يوم الإثنين والخميس فأحب أن يعرض عملى وأنا صائم.

অর্থ: হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার ও খমীস বা বৃৃহস্পতিবার উনার দিন বান্দার আমল সমূহ উত্তোলন করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি আমার আমল রোযা থাকা অবস্থায় উত্থিত হোক। (আল্ জামিউ ওয়াস্ সুনানু লিত্ তিরমিযী লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন ঈসা আবূ ঈসা তিরমিযী সুলামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ: মা জায়া ফী ছাওমি ইয়াওমিল্ ইছনাইন ওয়াল খমীস)

عَنْ حضرت أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله تعالى عنه قَالَ أَخَذَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِى فَقَالَ خَلَقَ الله عَزَّ وَجَلَّ التُّرْبَةَ يَوْمَ السَّبْتِ وَخَلَقَ فِيهَا الْجِبَالَ يَوْمَ الأَحَدِ وَخَلَقَ الشَّجَرَ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَخَلَقَ الْمَكْرُوهَ يَوْمَ الثُّلاَثَاءِ وَخَلَقَ النُّورَ يَوْمَ الأَرْبِعَاءِ وَبَثَّ فِيهَا الدَّوَابَّ يَوْمَ الْخَمِيسِ وَخَلَقَ آدَمَ عَلَيْهِ السَّلاَمُ بَعْدَ الْعَصْرِ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فِى آخِرِ الْخَلْقِ وَفِى آخِرِ سَاعَةٍ مِنْ سَاعَاتِ الْجُمُعَةِ فِيمَا بَيْنَ الْعَصْرِ إِلَى اللَّيْلِ.

অর্থ: হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমর হাত ধরে বললেন: মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি সাবত বা শনিবারে মাটি (যমীন) তৈরি করেছেন। তাতে পাহাড় তৈরি করেছেন আহাদ বা রবিবার। গাছ-পালা তৈরি করেছেন ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার। ছুলাছা বা মঙ্গলবার অপছন্দনীয় জিনিষগুলো তৈরি করেছেন। আরবিয়া বা বুধবার পবিত্র নূর তৈরি করেছেন। খমীস বা বৃহস্পতিবার যমীনের মধ্যে প্রাণীর বিস্তার ঘটিয়েছেন। জুমুয়াবার বাদ আছর হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে তৈরি করেছেন, এটা ছিল দিনের শেষ সময় আছর থেকে রাত্রি আসার পূর্ব মুহুর্ত। (ছহীহ মুসলিম লেখক: হযরত ইমাম আবুল হাসাঈন মুসলিম বিন হাজ্জাজ বিন মুসলিম কুশাইরী নীসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ: বাবু ইবতিদায়িল খলক্বি ওয়া খলক্বি আদম আলাইহিস সালাম)

قَالَ حضرت ابْنُ عُمَرَ رضى الله تعالى عنه سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ يَقُولُ: … وَاحْتَجِمُوا يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَالثُّلاَثَاءِ، وَاجْتَنِبُوا الْحِجَامَةَ يَوْمَ الأَرْبِعَاءِ.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট থেকে শুনেছি যে, তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন: তোমরা ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার ও ছুলাছা বা মঙ্গলবার শিঙ্গা লাগাবে। কিন্তু আরবিয়া বা বুধবার শিঙ্গা লাগাবে না। (সুনানু ইবনি মাজাহ লেখক: হযরত ইমাম ইবনু মাজাহ আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইয়াযীদ কাযবীনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ: ফী আইয়্যিল আইয়ামি ইউহতাজাম)

২. يوم الثلاثاء ‘ইয়াওমুছ ছুলাছা বা ছুলাছাবার (মঙ্গলবার) উনার ফযীলত

عن حضرت انس بن مالك رضى الله تعالى عنه قال: بعث النبي صلى الله عليه و سلم يوم الأثنين وصلى علي عليه السلام يوم الثلاثاء.

অর্থ: হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত প্রাপ্ত হন ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার আর হযরত আলী আলাইহিস সালাম তিনি উনার প্রতি ঈমান আনেন ছুলাছা বা মঙ্গলবারে। (আল্ জামিউ ওয়াস্ সুনান লিত্ তিরমিযী লেখক: হযরত ইমাম মুহাম্মাদ বিন ঈসা আবূ ঈসা তিরমিযী সুলামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি)

عَن حضرت أَبِي رَافِعٍ رَضِيَ الله عَنْهُ قَالَ نُبّيَ النَّبِيُّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَأَسْلَمَ عَلِيُّ يَوْمَ الثُّلاَثَاءِ.

অর্থ: হযরত আবূ রাফি’ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত নাবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত প্রাপ্ত হন ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার আর হযরত আলী আলাইহিস সালাম তিনি উনার প্রতি ঈমান আনেন ছুলাছা বা মঙ্গলবারে। (মুসনাদুল্ বাযযার অর্থাৎ আল্ বাহরুয্ যুখখার লেখক: হযরত আবূ বকর আহমাদ বিন আমর বিন আব্দুল খালিক্ব বাযযার রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ২৯২ হিজরী)

قَال حضرت ابْنُ عُمَرَ رضى الله تعالى عنه سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ يَقُولُ: … وَاحْتَجِمُوا يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَالثُّلاَثَاءِ، وَاجْتَنِبُوا الْحِجَامَةَ يَوْمَ الأَرْبِعَاءِ.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি হযরত সাইয়্যিদুনা রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট থেকে শুনেছি যে, তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন: তোমরা ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার ও ছুলাছা বা মঙ্গলবার শিঙ্গা লাগাবে। কিন্তু আরবিয়া বা বুধবার শিঙ্গা লাগাবে না। (সুনানু ইবনি মাজাহ লেখক: হযরত ইমাম ইবনু মাজাহ আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইয়াযীদ কাযবীনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ: ফী আইয়্যিল আইয়ামি ইউহতাজাম)

مُحَمَّدُ بْنُ سَعْدٍ رحمة الله عليه قَالَ حَدَّثَنِى الْوَاقِدِىُّ رحمة  الله: أَنَّ إِبْرَاهِيمَ ابْنَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَاتَ يَوْمَ الثُّلاَثَاءِ لِعَشْرِ لَيَالٍ خَلَوْنَ مِنْ شَهْرِ رَبِيعٍ الأَوَّلِ سَنَةَ عَشْرٍ وَدُفِنَ بِالْبَقِيعِ. …

অর্থ: হযরত মুহাম্মাদ ইবনে সা’দ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার কাছে হযরত ওয়াক্বিদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন যে: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আওলাদ, সাইয়্যিদুল বাশার, আকরামুন্নাস, ইমামুল খইর, হাবীবুল্লাহ, ইবনু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র রবীউল আউয়াল শরীফ মাস উনার দশম রাত ছুলাছা বা মঙ্গলবার-এ বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। জান্নাতুল্ বাক্বীতে উনার রওযা শরীফ হয়। (আস্ সুনানুল কুবরা লিল্ বাইহাক্বী  লেখক: হযরত আবূ বকর আহমাদ বিন হুসাঈন বিন আলী বাইহাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ: মা ইউসতাদাল্লু বিহী আলা জাওয়াযি ইজতিমায়িল্ খুসূফি ওয়াল্ ঈদি লিজাওয়াযি উকূয়িল্ খুসূফি ফিল্ আশির মিনাশ্ শাহ্র)

ইয়াওমুছ্ ছুলাছা তথা মঙ্গলবার উনার ফযীলত সম্পর্কে উল্লেখিত ইবারত থেকে যা প্রমানিত হল তা হচ্ছে: ১. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ  হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আওলাদ, সাইয়্যিদুল বাশার, আকরামুন্নাস, ইমামুল খইর, হাবীবুল্লাহ, ইবনু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র রবীউল আউয়াল শরীফ মাস উনার দশম রাত ছুলাছা বা মঙ্গলবার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। ২. প্রথম খলীফাহ হযরত ছিদ্দীক্ব আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন এই দিনে। ৩. হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ইসলাম কবূল করেন এই দিনে। ৪. সৃষ্টির সূচনায় মহান আল্লাহ তায়ালা এই দিনে অপছন্দনীয় জিনিষগুলো তৈরি করেছিলেন। ৫. ছুলাছা বা মঙ্গলবার সিঙ্গা লাগানো জায়িয।

৩. يوم الاربعاء ‘ইয়াওমুল আরবিয়া বা আরবিয়াবার (বুধবার) উনার ফযীলত

عَن حضرت أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله تعالى عنه قَالَ أَخَذَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِى فَقَالَ  خَلَقَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ التُّرْبَةَ يَوْمَ السَّبْتِ وَخَلَقَ فِيهَا الْجِبَالَ يَوْمَ الأَحَدِ وَخَلَقَ الشَّجَرَ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَخَلَقَ الْمَكْرُوهَ يَوْمَ الثُّلاَثَاءِ وَخَلَقَ النُّورَ يَوْمَ الأَرْبِعَاءِ وَبَثَّ فِيهَا الدَّوَابَّ يَوْمَ الْخَمِيسِ وَخَلَقَ آدَمَ عَلَيْهِ السَّلاَمُ بَعْدَ الْعَصْرِ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فِى آخِرِ الْخَلْقِ وَفِى آخِرِ سَاعَةٍ مِنْ سَاعَاتِ الْجُمُعَةِ فِيمَا بَيْنَ الْعَصْرِ إِلَى اللَّيْلِ.

অর্থ: হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম তিনি আমার হাত ধরে বললেন: মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি শনিবারে মাটি (জমিন) তৈরি করেছেন। তাতে পাহাড় তৈরি করেছেন রবিবার। গাছ-পালা তৈরি করেছেন ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার, ছুলাছা বা মঙ্গলবার অপছন্দনীয় জিনিষগুলো তৈরি করেছেন। বুধবার পবিত্র নূর তৈরি করেছেন। বৃহস্পতিবার জমিনের মধ্যে প্রাণীর বিস্তার ঘটিয়েছেন। জুমুয়াবার বাদ আছর হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে তৈরি করেছেন, এটা ছিল দিনের শেষ সময় আছর থেকে রাত্রি আসার পূর্ব মুহুর্ত। (ছহীহ মুসলিম লেখক: হযরত ইমাম আবুল হাসাঈন মুসলিম বিন হাজ্জাজ বিন মুসলিম কুশাইরী নীসাবূরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরিচ্ছেদ: বাবু ইবতিদায়িল খলক্বি ওয়া খলক্বি আদম আলাইহিস সালাম)

ইয়াওমুল্ আরবিয়া তথা বুধবার উনার ফযীলত সম্পর্কে উল্লেখিত ইবারত থেকে যা প্রমানিত হল তা হচ্ছে: ১. সৃষ্টির সূচনায় মহান আল্লাহ তায়ালা এই দিন মুবারকে পবিত্র নূর তৈরি করেছিলেন। ২. আরবিয়া বা বুধবার সিঙ্গা লাগানো নিষেধ।

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৫

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৬

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৭