পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, সময় ও মুহূর্তের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১২

সংখ্যা: ২৫০তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা)  ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং  ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭.  ইসলামের  নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-২৩৭), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২০৩তম সংখ্যা), ৩২. হানাফী মাযহাব মতে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে ‘আমীন’ অনুচ্চ আওয়াজে বা চুপে চুপে পাঠ করাই শরীয়তের নির্দেশ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১২তম সংখ্যা), ৩৩. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২২০তম সংখ্যা থেকে যা এখনো চলছে) পেশ করার পাশাপাশি-

৩৪তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!

অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-

استحلال الـمعصية كفر.

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি”  প্রকাশ করা হলো।

সম্মানিত ইসলামী মাস, বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় সমূহ সম্পর্কে এবং চন্দ্র ও সূর্যের গতিবিধির ব্যাপারে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার ২৬ খানা পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের তাফসীর

বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

সূর্য ও চন্দ্র এই দু’টি ইসলামী মাস, রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় নিরুপনের ব্যাপারে মানদ- হিসেবে বিবেচিত। অর্থাৎ সূর্য ও চন্দ্র উনাদের আবর্তনের কারণে বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময়গুলো সুচারুরূপে আগমণ করে থাকে। এজন্য আমরা ইসলামী মাস, রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় ইত্যাদীর আলোচনার পাশাপাশি চন্দ্র ও সূর্যের আবর্তন ও তাদের গতিবিধি সম্পর্কে আলোচনা করবো। যাতে করে বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে যায় এবং বুঝতে সহজ হয়। নি¤েœ এ সম্পর্কিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হলো:

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১৯

وايَة لَهُمُ اللَّيْلُ نَسْلَخُ مِنْهُ النَّهَارَ فَاِذَا هُمْ مُظْلِمُوْنَ. وَالشَّمْسُ تَجْرِىْ لِمُسْتَقَرّ لَهَا ذلِكَ تَقْدِيْرُ الْعَزِيْزِ الْعَلِيْمِ. وَالْقَمَرَ قَدَّرْنَاهُ مَنَازِلَ حَتّى عَادَ كَالْعُرْجُوْنِ الْقَدِيْمِ. لَا الشَّمْسُ يَنْبَغِىْ لَهَا اَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِىْ فَلَكٍ يَسْبَحُوْنَ.

অর্থ: তাদের জন্য এক নিদর্শন হচ্ছে রাত্রি, আমি তা থেকে দিনকে অপসারিত করি, তখনই তারা অন্ধকারে পড়ে যায় বা অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। সূর্য তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করে, এটা মহাপরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহ তায়ালা উনার তরফ থেকে নির্ধারিত। আমি চাঁদের জন্য মানযীল সমূহ নির্দিষ্ট করেছি, অতঃপর সে পুরাতন খেজুর শাখার ন্যায় হয়ে যায়। সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া। এবং রাত দিনের আগে চলে না। প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে আবর্তন করে থাকে। (পবিত্র সূরাহ ইয়াসীন  শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৭-৪০)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

فقال عز وجل: {وَايَةٌ لَّهُمُ اليل} يعنى علامة وحدانيته الليل {نَسْلَخُ مِنْهُ النهار} يعنى نخرج ونميز منه النهار {فَاذَا هُم مُّظْلِمُونَ} يعنى داخلون فى الظلمة ويقال يبقون فى الظلمة. ويقال ان الله خلق الدنيا مظلمة.

ثم قال: {والشمس} سراجًا فاذا طلعت الشمس صارت الدنيا مضيئة. واذا غربت الشمس بقيت الظلمة كما كانت، وهو قوله تعالى {نَسْلَخُ مِنْهُ النهار} يعنى ننزع الضوء منه {فَاذَا هُم مُّظْلِمُونَ} يعنى يبقون فى الظلمة. ويقال نسلخ الليل يعنى نخرج منه النهار اخراجًا لايبقى منه شىء من ضوء النهار، كما نسلخ الليل من النَّهَار فكذلك نسلخ النهار من الليل. فكانه يقول: الليل نسلخ منه النهار والنهار نسلخ منه الليل، …

ثم قال عز وجل: {والشمس تَجْرِى لِمُسْتَقَرّ لَّهَا} قال مقاتل رحمة الله عليه : يعنى لوقت لها. وقال الكلبى رحمة الله عليه: تسير فى منازلها حتى تنتهى الى مستقرها ولا تتجاوزها ثم ترجع الى اول منازلها. وقال القتبى رحمة الله عليه: {والشمس تَجْرِى لِمُسْتَقَرّ لَّهَا} يعنى الى مستقر لها …

{والقمر قدرناه مَنَازِلَ} يعنى قدرناه منازل فى السماء يبدو رقيقًا ثم يستوى ثم ينقص فى اٰخر الشهر. وقال الكلبى: {قدرناه مَنَازِلَ} اى قدرناه منازل بالليل، ينزل كل ليلة فى منزل ويصعد فى منزل حتى ينتهى الى مستقره الذى لا يجاوزه، ثم يعود الى ادنى منازله. ويقال: ان القمر يدور فى منازله فى شهر واحد مثل ما تدور الشمس فى منازلها فى سنة واحدة، قال مقاتل رحمة الله عليه وذلك ان القمر عرضه ثمانون فرسخًا مستديرة والشمس هكذا. وكان ضوءهما واحدًا، فاخذ تسعة وتسعون جزءًا من القمر فالحقت بالشمس. وروى عن ابن عباس رضى الله عنهما انه قال: القمر اربعون فرسخًا فى اربعين فرسخًا والشمس ستون فرسخًا فى ستين فرسخًا. وقال بعضهم: القمر والشمس عرض كل واحد منهما مثل الدنيا كلها. …

{وَكُلٌّ فِى فَلَكٍ يَسْبَحُونَ} يعناى فى دوران يجرون ويدورون ويقال: {يَسْبَحُونَ} يعنى يسيرون فيه بالانبساط، وكل من انبسط فى شيء فقد سبح فيه وقال بعضهم: السماء كالموج المكفوف والشمس والقمر والكواكب الدوارة يسبحون فيها وقال بعضهم: الافلاك كثيرة مختلفة فى السير تقطع القمر فى ثمانية وعشرين يومًا والشمس تقطع فى سنة. وقال بعضهم: الفلك واحد وجريهن مختلف، والفلك فى اللغة كل ما يدور.

অর্থ: মহান আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: (তাদের জন্য এক নিদর্শন হচ্ছে রাত্রি,) অর্থাৎ উনার একাত্ববাদের আলামত হচ্ছে রাত (আমি তা থেকে দিনকে অপসারিত করি,) অর্থাৎ আমি তার দিনকে বের করি ও আলাদা করি  (তখনই তারা অন্ধকারে পড়ে যায়।) অর্থাৎ তারা প্রবেশ করে অন্ধকারে। কেউ বলেন: তখন শুধু অন্ধকারই বাক্বী থাকে। আবার কেউ বলেন: মহান আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াকে অন্ধকার করেই তৈরি করেছেন।

অতপর তিনি বলেন: (সূর্য) আলোকবর্তিকা স্বরূপ। যখন সূর্য উদয় হয় তখন দুনিয়া আলোকিত হয়, আর যখন সূর্য ডুবে যায়  তখন শুধু অন্ধকার বাক্বী থাকে যেমন তা পূর্বে ছিল। আর সেটাই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন: (আমি রাত থেকে দিনকে অপসারিত করি,) অর্থাৎ রাত থেকে দিনের আলোকে সরিয়ে নেই (তখনই তারা অন্ধকারে পড়ে যায়) অর্থাৎ তখন শুধু অন্ধকারই বাক্বী থাকে। কেউ বলেন: রাতকে বের করে আনেন অর্থাৎ রাত থেকে দিনকে বের করার মত বের করেন, তখন দিনের আলোর কোন অংশই বাক্বী থাকে না। যেমনি আমি দিন থেকে রাতকে বের করে আনি, অনুরূপই রাত থেকে দিনকে বের করে আনি। অনুরূপই তিনি বলতে চেয়েছেন: আমি দিন থেকে রাতকে অপসারিত করি এবং রাত থেকে দিনকে অপসারিত করি। …

মহান আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: (সূর্য তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করে,) হযরত মুক্বাতিল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: অর্থাৎ তার সময়মত আবর্তন করে। হযরত কালবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: সূর্য তার কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে এমনকি সময়মত তার শেষ গন্তব্যে পৌঁছে যায় এবং তার কোন ব্যতিক্রম হয় না, অতপর সে তার কক্ষপথের প্রথমে (শুরুতে) ফিরে আসে। হযরত কুতবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: (সূর্য তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করে) অর্থাৎ তার নির্দিষ্ট সময়ে। …

(আমি চাঁদের জন্য মানযীল সমূহ নির্দিষ্ট করেছি) অর্থাৎ আকাশে তার জন্য কক্ষপথ নির্দিষ্ট করেছি। প্রথমে তাকে চিকন দেখা যায় অতপর স্বাভাবিক হয় অতপর মাসের শেষের দিকে সংকোচিত দেখা যায়। হযরত কালবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: ‘আমি চাঁদের জন্য মানযীলসমূহ নির্দিষ্ট করেছি’ অর্থাৎ আমি রাতের বেলায় চাঁদের জন্য মানযীল সমূহ নির্দিষ্ট করেছি। সে প্রত্যেক রাতে এক এক মানযীলে অবস্থান করে, এভাবে মাসের শেষ পর্যন্ত, যার কোন ব্যতিক্রম হয় না। অতপর সে তার মানযীল সমূহের কাছাকাছি আসে। কেউ বলেন: নিশ্চয়ই চন্দ্র এক মাসে তার মানযীল সমূহ ঘুরে আসে। অনুরূপ সূর্য এক বছরে তার মানযীল সমূহ ঘুরে আসে। হযরত মুক্বাতিল রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: নিশ্চয়ই গোলাকার চন্দ্রের প্রশস্ততা ৮০ ফারসাখ তথা ২৪০ মাইল, অনুরূপ সূর্যের অবস্থাও। [ব্যাখ্যা: গ্রহণযোগ্য মতে- তিন মাইলে এক ফারসাখ হয়] এদের দুটির আলো একই। চন্দ্র ৯৯টি অংশ যুক্ত করে সূর্য থেকে আলো গ্রহণ করে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, নিশ্চয়ই তিনি বলেন: চন্দ্র ৪০ ফারসাখের মধ্যে ৪০ ফারসাখ প্রশস্ত, আর সূর্য ৬০ ফারসাখের মধ্যে ৬০ ফারসাখ প্রশস্ত। কতক হযরত মুফাসসিরূন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: চন্দ্র ও সূর্য উভয়ের প্রশস্ততা দুনিয়ার প্রশস্তার সমান। …

(প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে আবর্তন করে থাকে) অর্থাৎ ঘূর্ণয়নে চলমান থাকে। বলা হয়: ‘তারা সকলেই ঘোরে’ তারা তার মধ্যে পরিভ্রমণ করে। যা কিছু উদঘাটন হয়, তা সকলেই তাদের কক্ষপথে ঘুরে। কতক মুফাসসিরীন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: মহাকাশ হচ্ছে দৃষ্টিহীন তরঙ্গ বা ঢেউ, আর সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজী তার মধ্যে প্রতিনিয়ত ঘুরছে। আরো কতক মুফাসসিরীন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন: আকাশ সমূহে বিভিন্ন রকম অসংখ্য পথ রয়েছে। চন্দ্র আটাইশ দিনে তার নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে, আর সূর্য এক বছর তথা ৩৬৫ দিনে তার কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে। আরো কতক মুফাসসিরীন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন: পৃথিবীর আকাশ একটিই, কিন্তু এর চলার পথ বিভিন্ন রকম। যার মধ্যে ঘূর্ণয়ন কাজ সম্পন্ন হয় অভিধান শাস্ত্র মতে তাকে ফালাক বা আকাশ বলা হয়ে থাকে। (বাহরুল উলূম অর্থাৎ তাফসীরুস সামারকান্দী পবিত্র সূরাহ ইয়াসীন  শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৭-৪০ লেখক: হযরত আবুল লাইছ নছর বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৭৩ হিজরী)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ ও উনার তাফসীর থেকে প্রমাণিত হলো যে- মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি উনার সৃষ্টি সূর্য ও চন্দ্রের মাধ্যমে দিন, রাত, সময়, মাস, বছরের হিসাব রক্ষা করে থাকেন। চন্দ্র উনার মাধ্যমে হজ্জ, রোযা ও বিশেষ বিশেষ দিন সমূহ পালন করা যায়। আর সূর্যের মাধ্যমে নামাযের ওয়াক্ত সমূহ সঠিকভাবে সনাক্ত করা যায়।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-২০

خَلَقَ السَّموتِ وَالْاَرْضَ بِالْحَقّ يُكَوّرُ اللَّيْلَ عَلَى النَّهَارِ وَيُكَوّرُ النَّهَارَ عَلَى اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِىْ لِاَجَلٍ مُسَمًّى اَلَا هُوَ الْعَزِيْزُ الْغَفَّارُ.

অর্থ: তিনি আকাশসমূহ ও যমীনসমূহকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন। তিনিই রাতকে দিন দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে নিয়মের অধীন করেছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবর্তন করতে থাকবে। সাবধান! তিনি মহাপরাক্রমশালী ও অতিশয় ক্ষমাশীল। (পবিত্র সূরাতুয্ যুমার শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

{خَلَقَ السموت والارض بالحق} لا بالباطل {يُكَوِّرُ الليل عَلَى النهار} يدور الليل على النهار فيكون النهار اطول من الليل {وَيُكَوِّرُ النهار عَلَى الليل} يدور النهار على الليل فيكون الليل اطول من النهار {وَسَخَّرَ} ذلل {الشمس والقمر} ضوء الشمس والقمر لبنى ادم {كُلٌّ} من الشمس والقمر والليل والنهار {يَجْرِى لاجَلٍ مُّسَمًّى} الى وقت معلوم.

অর্থ: (তিনি আকাশসমূহ ও যমীনসমূহকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন) অনর্থক সৃষ্টি করেননি। (তিনিই রাতকে দিন দ্বারা আচ্ছাদিত করেন) তিনিই রাতকে দিন দ্বারা আচ্ছন্ন করেন, যার ফলে রাতের চেয়ে দিন লম্বা হয়ে থাকে (এবং দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন) দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছন্ন করেন, যার ফলে দিনের চেয়ে রাত লম্বা হয়ে থাকে (তিনি অধীন করেছেন) নিয়মের অনুগত করেছেন (সূর্য ও চন্দ্রকে) এজন্যই হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সন্তানগণের জন্য সূর্য ও চন্দ্র আলো দেয় (প্রত্যেকেই) সূর্য, চন্দ্র, রাত ও দিন (নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবর্তন করতে থাকবে) নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অর্থাৎ ক্বিয়ামত দিবস পর্যন্ত। (তানবীরুল মাক্ববাস মিন তাফসীরি ইবনি আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা ওয়াফাত মুবারক: ৬৮ হিজরী পবিত্র সূরাতুয্ যুমার শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫ সংকলক: হযরত মুহাম্মাদ বিন ইয়া’কূব ফিরোজাবাদী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৮১৭ হিজরী)

{خَلَقَ السَّموتِ وَالارْضَ بِالْحَقّ يُكَوّرُ اللَّيْلَ عَلَى النَّهَارِ وَيُكَوّرُ النَّهَارَ عَلَى اللَّيْل} قال قتادة رحمة الله عليه: يغشى هذا هذا، كما قال: “يغشى الليل النهار” (سورة الاعراف شريف ۵۴ الاية الشريفة)، وقيل: يدخل احدهما على الاٰخر كما قال: “يولج الليل فى النهار ويولج النهار فى الليل” (سورة الحج شريف ۶۱ الاية الشريفة)، وقال الحسن رحمة الله عليه والكلبى رحمة الله عليه: ينقص من الليل فيزيد فى النهار وينقص من النهار فيزيد فى الليل، فما نقص من الليل دخل فى النهار وما نقص من النهار دخل فى الليل، ومنتهى النقصان تسع ساعات ومنتهى الزيادة خمس عشرة ساعة.

অর্থ: (তিনি আকাশসমূহ ও যমীনসমূহকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন। তিনিই রাতকে দিন দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন) হযরত ক্বতাদাহ রহমাতুল্লাহি তিনি বলেন: তিনি ইহা দ্বারা ইহাকে আচ্ছাদন করেন। যেমন মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি পবিত্র সূরাতুল আ’রাফ শরীফ উনার ৫৪ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন: ‘তিনি দিন দ্বারা রাতকে আচ্ছাদিত করেন’। কেউ বলেন: দিন ও রাত দুটির একটিকে অপরটির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেন। যেমন মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি পবিত্র সূরাতুল হজ্জ শরীফ উনার ৬১ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন: ‘তিনি রাতকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করে দেন এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করে দেন’। হযরত হাসান বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত কালবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন: তিনি রাত থেকে কিছু অংশ কেটে নেন তাই দিন লম্বা হয়, অনুরূপ দিন থেকে কিছু অংশ কেটে নেন তাই রাত লম্বা হয়ে যায়। তিনি রাত থেকে যতটুকু কেটে নেন, ততটুকু দিনের মধ্যে প্রবেশ করে দেন। অনুরূপ দিন থেকে যতটুকু কেটে নেন, ততটুকু রাতের মধ্যে প্রবেশ করে দেন। অতএব, দিন-রাত সর্বনি¤œ নয় ঘন্টা হয় এবং সর্বোর্ধ পনের ঘন্টা হয়। (মায়ালিমুত তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল বাগবী পবিত্র সূরাতুয্ যুমার শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫ লেখক:  মুহইস্ সুন্নাহ হযরত আবূ মুহাম্মাদ হুসাঈন বিন মাসঊদ বাগবী শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৫১০ হিজরী)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ ও উনার তাফসীর থেকে প্রমাণিত হলো যে- সূর্য, চন্দ্র, দিন ও রাত ইত্যাদীর নিয়ন্ত্রনকারী হচ্ছেন মহান আল্লাহ তায়ালা উনি। উনার প্রদর্শিত নিয়ম মত তারা চলে থাকে এবং হুকুম পালন করে।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-২১

وَلَقَدْ خَلَقْنَا السَّموتِ وَالْاَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِنْ لُغُوْبٍ. فَاصْبِرْ عَلى مَا يَقُوْلُوْنَ وَسَبّحْ بِحَمْدِ رَبّكَ قَبْلَ طُلُوْعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ الْغُرُوْبِ. وَمِنَ اللَّيْلِ فَسَبّحْهُ وَاَدْبَارَ السُّجُوْدِ.

অর্থ: আমি আসমানসমূহ ও যমীনসমূহ ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয়দিনে অর্থাৎ ছয় ধাপে সৃষ্টি করেছি এবং এতে আমাকে কোনরূপ ক্লান্তি স্পর্শ করেনি। অতএব তারা যা কিছু বলে তজ্জন্য আপনি ছবর করুন এবং আপনার রব তায়ালা উনার সপ্রশংস পবিত্রতা বর্ণনা করুন সূর্যোদয়ের পূর্বে (ফজরের সময়) ও সূর্যাস্তের পূর্বে (যুহর ও আছরের সময়)। এবং রাতেও (মাগরিব ও ইশার সময়) উনার পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং ফরয নামাযের পরেও। (পবিত্র সূরাতু ক্বাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৮-৪০)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

{وَلَقَدْ خَلَقْنَا السموت والارض وَمَا بَيْنَهُمَا} من الخلق والعجائب {فِى سِتَّةِ ايَّامٍ} من ايام اول الدنيا طول كل يوم الف سنة من هذه الايام اول يوم منها يوم الاحد واٰخر يوم منها يوم الجمعة {وَمَا مَسَّنَا مِن لُّغُوبٍ} … {فاصبر} يا محمد صلى الله عليه وسلم {على مَا يَقُولُونَ} على مقالة اليهود من الكذب … {وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ} صل بامر ربك {قَبْلَ طُلُوعِ الشمس} وهى صلوة الغداة {وَقَبْلَ الغروب} وهى صلوة الظهر والعصر {وَمِنَ الليل فَسَبِّحْهُ} فصل له صلاة المغرب والعشاء او التهجد {وَاَدْبَارَ السجود} وهى ركعتان بعد المغرب.

অর্থ: (আমি আসমানসমূহ ও যমীনসমূহ ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু সৃষ্টি করেছি) সৃষ্টি হিসেবে (ছয়দিনে) দুনিয়ার শুরুর দিকের দিন সমূহের মত। উক্ত প্রত্যেকটি দিন ছিল দুনিয়ার এক হাজার দিনের মত। উক্ত ছয় দিনের প্রথম দিন ছিল ইয়াওমুল আহাদ বা রবিবার আর শেষ দিনটি ছিল ইয়াওমুল জুমুয়াহ বা জুমুয়াবার। (এবং এতে আমাকে কোনরূপ ক্লান্তি স্পর্শ করেনি।)… (অতএব আপনি ছবর করুন) হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (তারা যা কিছু বলে তজ্জন্য) ইয়াহূদীরা যে মিথ্যাচারীতা করে এ ব্যাপারে ধৈর্য ধারন করুন। … (এবং আপনার রব তায়ালা উনার সপ্রশংস পবিত্রতা বর্ণনা করুন) আপনার রব তায়ালা উনার নির্দেশ অনুযায়ী ছলাত বা নামায আদায় করুন (সূর্যোদয়ের পূর্বে) তা হচ্ছে ফজর নামায (ও সূর্যাস্তের পূর্বে) যুহ্র নামায ও আছর নামায (এবং রাতেও উনার পবিত্রতা বর্ণনা করুন) উনার সন্তুষ্টির জন্য নামায আদায় করুন মাগরিব নামায ও ইশা নামায এবং তাহাজ্জুদ নামায (এবং ফরয নামাযের পরেও) মাগরিব নামাযের ফরযের পর দুই রাকয়াত সুন্নাত মুয়াক্কাদাহ নামায। (তানবীরুল মাক্ববাস মিন তাফসীরি ইবনি আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা ওয়াফাত মুবারক: ৬৮ হিজরী পবিত্র সূরাতু ক্বাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৮-৪০ সংকলক: হযরত মুহাম্মাদ বিন ইয়া’কূব ফিরোজাবাদী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৮১৭ হিজরী)

{وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ} حامدًا ربك والتسبيح محمول على ظاهره او على الصلوة فالصلوة {قَبْلَ طُلُوعِ الشمس} الفجر {وَقَبْلَ الغروب} الظهر والعصر {وَمِنَ اليل فَسَبِّحْهُ} العشاءان او التهجد {وادبار السجود} التسبيح فى اٰثار الصلوات والسجود والركوع يعبر بهما عن الصلوة، وقيل: النوافل بعد المكتوبات او الوتر بعد العشاء.

অর্থ: (আপনার রব তায়ালা উনার সপ্রশংস পবিত্রতা বর্ণনা করুন) আপনার রব তায়ালা উনার প্রশংসা করার মত প্রশংসা করুন। তাসবীহ প্রকাশ্যভাবে অথবা ইহা দ্বারা নামায উদ্দেশ্য (সূর্যোদয়ের পূর্বে) ফজর নামায (ও সূর্যাস্তের পূর্বে) যুহ্র নামায ও আছর নামায (এবং রাতেও উনার পবিত্রতা বর্ণনা করুন) মাগরিব নামায ও ইশা নামায এবং তাহাজ্জুদ নামায (এবং ফরয নামাযের পরেও) তাসবীহ হচ্ছে নামায সমূহ, সিজদাহ ও রুকূ’, যাকে নামায হিসেবেই গ্রহণ করা হয়। কেউ বলেন: তা হচ্ছে ফরয নামাযের পর নফল নামায অথবা ইশার নামাযের পর বিত্র নামায পড়া। (মাদারিকুত তানযীল ওয়া হাক্বায়িকুত তা’বীল অর্থাৎ তাফসীরুন নাসাফী পবিত্র সূরাতু ক্বাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৮-৪০ লেখক: আবুল বারাকাত আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন মাহমূদ নাসাফী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭১০ হিজরী)

{وَسَبّحْ بِحَمْدِ رَبّكَ} اى صَلِّ بامرِ ربكَ واحْمَدْهُ {قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ الْغُرُوبِ} ارادَ بذلك صلوةَ الفجرِ وصلوةَ العصرِ، وَقِيْلَ: معناهُ قبلَ الغروب الظهرَ والعصرَ {وَمِنَ اللَّيْلِ فَسَبّحْه} يعنى: صلوةَ المغرب والعشاءِ. وسُمِّيت الصلوةُ تَسبيحًا لِمَا فيها من التسبيحِ “سُبْحَانَ رَبى الْعَظِيمِ وَسُبْحَانَ رَبى الاعْلٰى”.

وقولهُ تعالى: {وَاَدْبَارَ السُّجُودِ} يعنى الرَّكعتين بعدَ المغرب وقبلَ الوترِ. وَقِيْلَ: التسبيحُ فى اواخرِ الصَّلوة يُسَبحُونَ اللهَ ثلاثاً وثلاثين ويَحمَدُون ثلاثاً وثلاثين ويُكَبرُونَ ثلاثاً وثلاثين. وعن رسولِ الله صلى الله عليه وسلم: “اَنَّه كَانَ يَقُولُ فِى اٰخِرِ صَلوتِه عِنْدَ اِنْصِرَافِه: {سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ الْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ …} اِلٰى اٰخرِ السُّورة”. وعن الشعبىِّ رحمة الله عليه والاوزاعىِّ رحمة الله عليه انَّهما قالا: ادْبَارُ السُّجُودِ: الرَّكْعَتَانِ بَعْدَ الْمَغْرِب وادْبَارُ النُّجُومِ: الرَّكْعَتَانِ قَبْلَ الْفَجْرِ. وقال ابنُ زيدٍ رحمة الله عليه: مَعْنى قَوْلِه {وَاَدْبَارَ السُّجُودِ} وَهُوَ النَّوَافِلُ وَاَدْبَارُ الْمَكْتُوبَاتِ

অর্থ: (আপনার রব তায়ালা উনার সপ্রশংস পবিত্রতা বর্ণনা করুন) আপনার রব তায়ালা উনার নির্দেশ মত নামায আদায় করুন এবং প্রশংসা করুন (সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে) আয়াত শরীফ দ্বারা এখানে ফজর নামায ও আছর নামাযকে বুঝানো হয়েছে। কেউ বলেন: ক্ববলাল গুরূব অর্থ হলো: যুহর নামায ও আছর নামায। (এবং রাতেও উনার পবিত্রতা বর্ণনা করুন) অর্থাৎ মাগরিব নামায ও ইশা নামায। এখানে নামাযকে তাসবীহ বলা হয়েছে, কেননা নামাযের মধ্যে ‘সুবহানা রাব্বিইয়াল্ আ’যীম ও সুবহানা রব্বিইয়াল আ’লা’ তাসবীহ রয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ক্বওল শরীফ: (এবং ফরয নামাযের পরেও) অর্থাৎ মাগরিব নামাযের পর দুই রাকয়াত সুন্নাত নামায এবং বিত্র নামাযের পূর্বে ২ রাকায়াত সুন্নত নামায পড়ার বিধান। কেউ বলেন: নামায আদায়ের পর ‘সুবহানাল্লাহ’ তেত্রিশবার, ‘আল্ হাম্দু লিল্লাহ’ তেত্রিশবার এবং ‘আল্লাহু আকবার’ তেত্রিশবার পাঠ করা। নূরুম মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, ‘নিশ্চয়ই তিনি যে নামাযের পর ফিরে বসতেন তাতে দুয়া’য় বলতেন: সুবহানা রব্বিকা রব্বিল ইয্যাতি আম্মা ইয়াছিফূন, ওয়া সালামুন আলাল্ মুরসালীন, ওয়াল্ হাম্দু লিল্লাহি রব্বিল আলামীন’। হযরত ইমাম শা’বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম আওযায়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন: আদবারাস্ সুজূদ হচ্ছে: মাগরিব নামাযের ফরযের পর দুই রাকয়াত সুন্নাত নামায এবং আদবারুন্ নুজূম হচ্ছে: ফজর নামাযের ফরযের পূর্বে দুই রাকয়াত সুন্নাতে মুওয়াক্কাদা নামায। হযরত ইবনু যায়েদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: আদবারাস্ সুজূদ হচ্ছে: নফল নামায সমূহ এবং ফরয নামায সমূহের পর যা করা হয়। (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম লিত্ ত্ববারানী পবিত্র সূরাতু ক্বাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৮-৪০ লেখক: আবুল ক্বাসিম সুলাইমান বিন আহমাদ বিন আইয়্যূব বিন মুত্বীর লাখমী শামী ত্ববারানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৬০ হিজরী)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ ও উনার তাফসীর থেকে প্রমাণিত হলো যে- মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামায, ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত, তাহাজ্জুদ, যাবতীয় নফল নামাযের ওয়াক্ত বর্ণনা করেছেন। যা তাফসীরের কিতাব পড়লে স্পষ্ট বুঝা যায়। অচিরেই আমরা নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে আলাদা আলোচনা করবো। ইন্শা আল্লাহ।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-২২

اَلشَّمْسُ وَالْقَمَرُ بِحُسْبَانٍ.

অর্থ: সূর্য ও চন্দ্র হিসাব মতো চলে থাকে। (পবিত্র সূরার্তু রহমান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

{الشمس والقمر بِحُسْبَانٍ} بحساب معلوم وتقدير سوىٍّ … وفى ذلك منافع للناس منها علم السنين والحساب.

অর্থ: (সূর্য ও চন্দ্র হিসাব মতো চলে থাকে) নির্দিষ্ট হিসাব মত এবং নির্দিষ্ট গণনা মত। … এদের মধ্যে মানুষের জন্য উপকার রয়েছে এবং এদের মাধ্যমে বছর সমূহের গণনা ও যাবতীয় হিসাব জানা যায়। (মাদারিকুত তানযীল ওয়া হাক্বায়িকুত তা’বীল অর্থাৎ তাফসীরুন নাসাফী পবিত্র সূরাতু ক্বাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৮-৪০ লেখক: আবুল বারাকাত আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন মাহমূদ নাসাফী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭১০ হিজরী)

ويعلم السنون والحساب فالسنة القمرية ثلاثمائة واربعة وخمسون يوما والشمسية ثلاثمائة وخسمة وستون يوما وربع يوم او اقل.

 অর্থ: সূর্য ও চন্দ্রের মাধ্যমে বছর সমূহ ও যাবতীয় হিসাব জানা যায়। ‘আস-সানাতুল ক্বমারিয়াহ তথা হিজরী সন বা চন্দ্র বছর’ হয় ৩৫৪ দিনে আর ‘আস-সানাতুশ্ শামসিয়াহ তথা সৌর বছর’ হয় ৩৬৫ দিন ছয় ঘন্টা অথবা ছয় ঘন্টার একটু কম সময়ে। (রূহুল বয়ান ফী তাফসীরিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল হাক্কী পবিত্র সূরাতু ক্বাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৮-৪০ লেখক: হযরত ইসমাঈল হাক্কী বিন মুছতফা ইস্তাম্বূলী হানাফী খালওয়াতী বারূসাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১১২৭ হিজরী)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ ও উনার তাফসীর থেকে প্রমাণিত হলো যে- মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে হিসাব বা গণনা করার জন্য তৈরি করেছেন। ৩৬৫ দিন ৬ ঘন্টা অথবা ৬ ঘন্টার একটু কম সময় নিয়ে সৌর বছর হয়। আর প্রায় ৩৫৪ দিনে হয় চন্দ্র বছর।

 

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৩

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৪

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৫