পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২০

সংখ্যা: ২৩৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লّীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহর বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা)  ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-চলমান), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করার পর-

৩২তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”-

পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয

পূর্ব প্রকাশিতের পর

পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার সমর্থনে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম

 

পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমাউল উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দলীল-আদিল্লাহ মোতাবেক সম্মানিত ইসলামী শরীয়াত উনার যাবতীয় হুকুম-আহকাম মেনে চলার জন্য কারো অনুসরণ করাকে ‘আত-তাকলীদুশ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ বলে। উনাকে ‘তাকলীদুল ইসলাম’, ‘তাকলীদুদ্ দীন’ ও ‘তাকলীদুদ্ দালায়িলিল আরবায়াহ’ অর্থাৎ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার চারখানা দলীল উনাদের অনুসরণও বলা হয়ে থাকে।

নিম্নে পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার সমর্থনে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উল্লেখ করে উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম বা বিধি-বিধান আলোচনা করা হলো-

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ১৩

يا ايها الذين امنوا اطيعوا الله واطيعوا الرسول واولى الامر منكم فان تنازعتم فى شىء فردوه الى الله والرسول ان كنتم تؤمنون بالله واليوم الاخر ذلك خير واحسن تأويلا. (سورة النساء شريف ৫৯ الاية)

অর্থাৎ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্য করো, সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন-অনুকরণ করো এবং তোমাদের মধ্যে যাঁরা উলিল আমর (আদেশদাতা) উনাদের অনুসরণ করো। তোমাদের মধ্যে যদি কোন বিষয়ে মতবিরোধ হয়, তাহলে উক্ত বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করো অর্থাৎ যেই উলিল আমর উনার পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দলীল বেশি এবং যিনি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ মোতাবেক পরিপূর্ণ আমল করেন সেই উলিল আমর উনাকেই অনুসরণ করো। যদি তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাকো। এটাই কল্যানকর ও পরিনতির দিক দিয়ে উত্তম। (পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ৫৯)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার-

واولى الامر منكم فان تنازعتم فى شىء فردوه الى الله والرسول

অংশ দ্বারা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ, উলামা, আউলিয়া কিরাম ও উমারা-খলীফাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করতে নির্দেশ করা হয়েছে এবং ইজমাউল উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস যে মহা সম্মানিত শরীয়াত উনার দলীল তাও প্রমাণ করা হয়েছে। যেমনটি সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য সকল তাফসীর উনার কিতাব উনাদের মধ্যে উল্লেখ আছে।

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার বিশুদ্ধ তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৪১৯)

قال عطاء رحمة الله عليه: اطيعوا الله فى فريضته والرسول فى سنته.

وقال ابن زيد رحمة الله عليه: فى أوامره ونواهيه، والرسول ما دام حيا وسنته بعد وفاته.

وقيل: فيما شرع والرسول فيما شرح.

وقال ابن عباس رضى الله عنه وابو هريرة رضى الله عنه والسدي رحمة الله عليه وابن زيد رحمة الله عليه: اولوا الأمر هم الأمراء. وقال مجاهد رحمة الله عليه: اصحاب الرسول صلّى الله عليه وسلّم.

وقال التبريزى رحمة الله عليه: الـمهاجرون والأنصار رضى الله عنهم.

وقيل: الصحابة رضى الله عنهم والتابعون رحمة الله عليهم.

وقيل: الخلفاء الأربع عليهم السلام.

وقال عكرمة رحمة الله عليه: ابو بكر وعمر عليهما السلام.

وقال جابر رضى الله عنه والحسن وعطاء وابو العالية ومجاهد رحمة الله عليهم ايضا: العلماء، واختاره مالك رحمة الله عليه.

وقال ميمون ومقاتل والكلبي رحمة الله عليهم: أمراء السرايا أو الأئمة من اهل البيت او عليّ عليه السلام وحده أيضا. والظاهر أنه كل من ولي أمر شيء ولاية صحيحة. قالوا: حتى المرأة يجب عليها طاعة زوجها والعبد مع سيده والولد مع والديه واليتيم مع وصيه فيما يرضى الله وله فيه مصلحة.

وقال الزمخشري رحمة الله عليه: والمراد بأولي الأمر منكم امراء الحق.

وقيل: هم العلماء الدّينون الذين يعلمون الناس الدّين يأمرونهم بالمعروف وينهونهم عن المنكر.

وقال سهل التستري رحمة الله عليه: اطيعوا السلطان في سبعة: ضرب الدنانير والدراهم والمكاييل والأوزان والأحكام والحج والجمعة والعيدين والجهاد. وإذا نهى السلطان العالم ان يفتى فليس له ان يفتي، فإن أفتى فهو عاص وإن كان اميرا جائرا.

وقال ابن خويز منداد رحمة الله عليه: واما طاعة السلطان فتجب فيما كان فيه طاعة ولا تجب فيما كان فيه معصية. قال: ولذلك قلنا: ان امراء زماننا لا تجوز طاعتهم ولا معاونتهم ولا تعظيمهم، ويجب الغزو معهم متى غزوا والحكم من قبلهم وتولية الإمامة والحسبة وإقامة ذلك على وجه الشريعة. فان صلوا بنا وكانوا فسقة من جهة المعاصي جازت الصلاة معهم، وإن كانوا مبتدعة لم تجز الصلاة معهم إلا أن يخافوا فتصلى معهم تقية، وتعاد الصلاة فيما بعد.

وقال ابو عبد الله الرازي رحمة الله عليه: واولي الامر منكم إشارة إلى الإجماع … وموجب ذلك أنّ إجماع الأمة حجة. (تفسير البحر المحيط اى تفسير ابي حيان المؤلف: محمد بن يوسف بن علي ابو حيان النحوي الأندلسي رحمة الله عليه تاريخ الوفاة ৭৪৫ هجري سورة النساء ৫৯ الاية)

অর্থ: হযরত আত্বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: ‘আত্বীউল্লাহ’ দ্বারা ফরদ্ব এবং ‘আত্বীর্উ রসূল’ দ্বারা সুন্নাত পালন উদ্দেশ্য। হযরত ইবনু যায়েদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: ‘আত্বীউল্লাহ’ দ্বারা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আদেশ সমূহ পালন করা ও নিষেধকৃত বিষয়সমূহ বর্জন করা উদ্দেশ্য। আর ‘আত্বীর্উ রসূল’ দ্বারা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করা এবং উনার বিছাল শরীফ উনার পর উনার সুন্নাত অনুসরণ করা উদ্দেশ্য।

কতক মুফাসসিরীন কিরাম বলেন: যা শরীয়াত নাযিল হয়েছে এবং উনার ব্যাপারে হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা ব্যাখ্যা করেছেন তার অনুসরণ করা।

হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হযরত সুদ্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইবনু যায়েদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন: উলিল্ আমর হচ্ছেন হযরত উমারা তথা খলীফা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ওয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা।

হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: উনারা হলেন হযরত আছহার্বু রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

হযরত তাররীযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: উনারা হলেন হযরত মুহাজিরীন ও আনছার রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা।

কেউ বলেন: উনারা হলেন হযরত ছাহাবাহ কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ও হযরত তাবিঊন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম।

কারো মতে: উনারা হলেন ইসলাম উনার প্রথম চারজন খলীফাহ আলাইহিমুস্ সালাম।

হযরত ইকরামাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: উনারা হলেন হযরত আবূ বকর আলাইহিস সালাম ও হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম।

হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হাসান বছরী, আত্বা, আবুল্ আলিয়াহ ও মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম বলেন: উলিল্ আমর হচ্ছেন হযরত উলামা তথা আউলিয়া কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। এ মতটি হযরত ইমাম মালিক রহমাতুল্লাহি আলাইহি পছন্দ করেছেন।

হযরত মাইমূন, মুক্বাতিল ও কালবী রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: উনারা হলেন সেনাপতি। অথবা হযরত আহলু বাইত শরীফ উনাদের ইমাম আলাইহিমুস্ সালাম উনারা, অথবা এককভাবে হযরত আলী আলাইহিস সালাম।

প্রকাশ্য কথা হলো, প্রত্যেক ঐ অভিভাবক যিনি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন উনিই উলিল্ আমর। মুফাসসির উনারা বলেন: মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে সন্তুষ্ট করার শর্তে মহিলার জন্য তার স্বামীর আনুগত্য করা, দাস কর্তৃক তার মনীবের আনুগত্য করা, সন্তান কর্তৃক তার পিতা-মাতার আনুগত্য করা এবং ইয়াতীম কর্তৃক তার ওয়াছিয়াতকারীর আনুগত্য করা ওয়াজিব। আর এটাই হচ্ছে সমতা বা হক্ব।

হযরত যামাখশারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: উলিল্ আমর দ্বারা উদ্দেশ্য হলেন সত্যনিষ্ঠ উমারা তথা খলীফা উনারা।

কারো মতে: উনারা হলেন দ্বীনী হক্কানী উলামা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম, যাঁরা মানুষদেরকে দ্বীনী তা’লীম দেন, তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ করেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করে থাকেন।

হযরত সাহ্ল তাস্তারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: সুলতান বা খলীফাকে সাতটি ব্যাপারে অনুসরণ করতে হবে। (১) সুলতানের নির্ধারিত মুদ্রা ব্যবহার করতে হবে, (২) সুলতান কর্তৃক পরিমাপক যন্ত্রকে ব্যবহার করতে হবে, (৩) উনার শরীয়াত সম্মত হুকুম মানতে হবে, (৪-৬) হজ্জ, জুমুয়াহ ও দু’ঈদের ইমাম হবেন তিনিই এবং (৭) জিহাদের পৃষ্ঠপোষকতা করবেন তিনিই।

যখন কোন সুলতান বা খলীফা কোন আলিমকে ফাতাওয়া দিতে নিষেধ করবেন তখন তার জন্য ফাতাওয়া দেয়া জায়িয হবে না। এরপরও যদি তিনি ফাতাওয়া দেন তাহলে ভুলকারী হিসেবে বিবেচিত হবেন। আর যদি আদেশটি খলীফার না হয়ে রাদশাহের হয়, তাহলে হক্কানী আলিম কর্তৃক বাদশাহের অনুমতি ছাড়া ফাতাওয়া দেয়া জায়িয।

হযরত ইবনু খুওয়াইয মানদাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: সুলতান পরিপূর্ণ শরীয়াত উনার অনুসরণকারী হওয়ার শর্তে উনার আনুগত্য করা ওয়াজিব। সুলতান যদি গুনাহগার হয় তাহলে তাকে অনুসরণ করা ওয়াজিব নয়। এজন্য আমরা ফাতাওয়া দেই যে, আমাদের যামানার আমীরদেরকে অনুসরণ করা ও তাদেরকে সম্মান দেখানো জায়িয নেই। তবে তাদের সাথে থেকে যুদ্ধ করা, তাদের স্বাভাবিক হুকুম পালন করা, তাদের ইমামতিতে নামায পড়া শরীয়াত উনার দৃষ্টিতে জায়িয আছে। তারা ফাসিক হওয়ার পরও যদি আমাদেরকে নিয়ে নামায আদায় করে তাহলে তাদের পিছনে নামায পড়া জায়িয হবে, আর যদি তারা বিদয়াতী হয় তাহলে তাদের সাথে নামায পড়া জায়িয হবে না। তবে যদি ভয়ের আশংকা থাকে তাহেল পড়া যেতে পারে। কিন্ত ওয়াক্ত থাকতে নামায দোহরায়ে পড়ে নিতে হবে।

হযরত আবূ আব্দিল্লাহ রাযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: উলিল্ আমর দ্বারা এখানে ইজমা’ উনার অনুসরণের দিকে ইশারা করা হয়েছে। এ বিষয়টি বিশ্বাস করা ওয়াজিব যে, নিশ্চয়ই ইজমাউল্ উম্মাহ পবিত্র শরীয়াত উনার একখানা দলীল। (তাফসীরুল্ বাহরিল্ মুহীত্ব অর্থাৎ তাফসীরু আবী হাইয়ান লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন ইউসুফ বিন আলী আবূ হাইয়ান নাহবী আন্দালুসী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭৪৫ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪২০)

يريد بهم أمراء المسلمين في عهد الرسول صلى الله عليه وسلم وبعده ويندرج فيهم الخلفاء والقضاة وأمراء السرية أمر الناس بطاعتهم بعد ما أمرهم بالعدل تنبيها على أن وجوب طاعتهم ما داموا على الحق، وقيل علماء الشرع. (انوار التنزيل واسرار التأويل اى تفسير البيضاوي المؤلف: عبد الله بن عمر بن محمد البيضاوي الشافعي رحمة الله عليه تاريخ الوفاة ৬৮৫ هجري سورة النساء ৫৯ الاية(

 অর্থ: উলিল্ আমর দ্বারা সাইয়্যিদুল্ মুরসালীন ইমামুল্ মুরসালীন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বগণ এবং পরবর্র্তী যামানার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বগণ উনারা উদ্দেশ্য। উনাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হযরত খুলাফা রাশিদীন আলাইহিমুস্ সালাম, ক্বাদ্বী বা বিচারকগণ, সেনাপতিগণ। উনাদেরকে ন্যায়নিষ্ঠার সাথে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। পরবর্তী উনারা হক্বের উপর ইস্তিক্বামাত থাকার শর্তে উনাদেরকে অনুসরণ করা ওয়াজিব। কারো কারো মতে: শরয়ী উলামা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারাই উলিল্ আমর। (আনওয়ারুত্ তানযীল ওয়া আসরারুত্ তা’বীল অর্থাৎ তাফসীরু তাফসীরুর বাইদ্বাবী লেখক: হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর বিন মুহাম্মাদ বাইদ্বাবী শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৮৫ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪২১)

فإنه يدل على أن الأحكام ثلاثة مثبت بالكتاب ومثبت بالسنة ومثبت بالرد إليهما على وجه القياس. (انوار التنزيل واسرار التأويل اى تفسير البيضاوي المؤلف: عبد الله بن عمر بن محمد البيضاوي الشافعي رحمة الله عليه تاريخ الوفاة ৬৮৫ هجري سورة النساء ৫৯ الاية)

অর্থ: অত্র আয়াত শরীফ প্রমাণ করে যে, নিশ্চয়ই শরীয়াত উনার হুকুম তিনখানা। যা কিতাবুল্লাহ দ্বারা প্রমাণিত, যা সুন্নাহ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত এবং পবিত্র ক্বিয়াস দ্বারা প্রমাণিত। (আনওয়ারুত্ তানযীল ওয়া আসরারুত্ তা’বীল অর্থাৎ তাফসীরু তাফসীরুর বাইদ্বাবী লেখক: হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর বিন মুহাম্মাদ বাইদ্বাবী শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৮৫ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪২২)

اختلفوا في اولى الامر: قال ابن عباس وجابر رضى الله عنهما وهو قول جماعة: هم العلماء والفقهاء، وقال ابو هريرة رضى الله عنه: هم الولاة والسلاطين، وقيل: هم امراء السرايا الذين بعثهم رسول الله صلى الله عليه وسلم في الحروب. وقال عكرمة رحمة الله عليه: اراد به ابا بكر وعمر عليهما السلام. (تفسير السمعاني المؤلف: ابو المظفر منصور بن محمد بن عبد الجبار السمعاني رحمة الله عليه سنة الولادة ৪২৬ هجري سنة الوفاة ৪৮৯ هجري سورة النساء ৫৯ الاية)

অর্থ: উলিল্ আমর উনার ব্যাপারে ইখতিলাফ রয়েছে। হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা, হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও একদল মুফাসসিরীন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: উনারা হলেন হযরত উলামা ও ফুক্বাহা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা। হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনি বলেন: উনারা হলেন খলীফার তরফ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব ও সুলতান। কারো কারো মতে: যুদ্ধের সেনাপতি, যাঁদেরকে হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুদ্ধে প্রেরণ করেছিলেন। হযরত ইকরামাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: উলিল্ আমর দ্বারা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ও হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাস উনারা উদ্দেশ্য। (তাফসীরুস্ সাময়ানী লেখক: হযরত আবুল মুযাফ্ফার মানছূর বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল জব্বার সাময়ানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৪২৬ হিজরী ওয়াফাত: ৪৮৯ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪২৩)

والرد إلى الكتاب والسنة واجب، ما دام في الحادثة شئ من الكتاب والسنة، فإن لم يكن فالسبيل فيه الاجتهاد. (تفسير السمعاني المؤلف: ابو المظفر منصور بن محمد بن عبد الجبار السمعاني رحمة الله عليه سنة الولادة ৪২৬ هجري سنة الوفاة ৪৮৯ هجري سورة النساء ৫৯ الاية)

অর্থ: সর্বব্যাপারে কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ শরীফ উনার দিকে প্রত্যাবর্তণ করা ওয়াজিব বা ফরদ্ব, তা কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে স্পষ্ট পাওয়া যাবে। আর যদি সে বিষয়ে উনাদের মধ্যে কোন সরাসরি ফায়সালা না পাওয়া যায় তাহলে ইজতিহাদ তথা ক্বিয়াস উনার আশ্রয় নিতে হবে। (তাফসীরুস্ সাময়ানী লেখক: হযরত আবুল মুযাফ্ফার মানছূর বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল জব্বার সাময়ানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৪২৬ হিজরী ওয়াফাত: ৪৮৯ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪২৪)

قال ابْنُ عَبَّاسٍ وجَابِرٌ رضى الله عنهما: أولو الأمْرِ هُمُ الفُقَهَاءُ والعلماءُ الَّذِينَ يعلِّمُونَ النَّاسَ دينهم. وهو قَوْلُ الحَسَنِ والضَّحاكِ ومُجاهِدٍ رحمة الله عليهم.

وقال أبُو هُرَيرَة رضى الله عنه: هم الأمَرَاءُ والوُلاة، وقال عليُّ بْنُ أبي طالبٍ عليه السلام: حقٌّ على الإمام أن يَحْكُمَ بما أنْزَلَ اللهُ ويُؤَدِّي الأمَانَة فإذا فَعَلَ ذلك حَق علي الرَّعِيَّةِ أنْ يَسْمَعُوا وَيُطِيعُوا.

وقال عكْرمَة رحمة الله عليه: اولو الامْرِ ابُو بَكْر وعُمَر عليهما السلام. وقيلَ: هم الخُلَفَاءُ الرَّاشِدُون عليهم السلام.

 وقال عَطَاء رحمة الله عليه: هم المُهَاجِرُون والأنْصَار والتَّابِعُون لهم بإحْسَانٍ. (تفسير اللباب لابن عادل المؤلف: ابو حفص عمر بن على ابن عادل الدمشقى الحنبلى رحمة الله عليه المتوفى سنة ۸۸۰ هجري سورة النساء ۵۹ الاية)

অর্থ: হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনারা বলেন: হযরত ফুক্বাহা ও উলামা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম, যাঁরা মানুষদেরকে দ্বীন ইসলাম উনার তা’লীম দিয়ে থাকেন। ইহা হযরত হাসান বছরী, দ্বাহ্হাক ও মুজাহিদ রহমাতুল্রাহি আলাইহিম উনাদের মত।

হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন: আমীর-উমরা, হযরত আলী ইবনে আবূ তালিব আলাইহিস সালাম উনি বলেন: ইমামের জন্য ফরদ্ব হলো মহান আল্লাহ তায়ালা যা নাযিল করেছে সে অনুযায়ী বিচার-ফায়সালা করা এবং আমানত প্রতিষ্ঠা করা। যখন তা প্রতিষ্ঠিত হবে তখন অধিনস্তদের জন্য তা মেনে নেয়া ও আনুগত্য করা ওয়াজিব হবে।

হযরত ইকরামাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: উলিল্ আমর হলেন হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম ও হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম। কেউ কেউ বলেন: উনারা হলেন হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম। হযরত আত্বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: উনারা হলেন হযরত মুহাজিরূন ও আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম এবং উনাদেরকে উত্তমভাবে অনুসরণকারী হযরত তাবিঊন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। (তাফসীরুল্ লুবাব লিইবনি আদিল লেখক: হযরত আবূ হাফ্ছ উমর বিন আলী ইবনু আদিল দামিশ্কী হাম্বালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৮৮০ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪২৫)

 فصل في دلالة الآية على حجية القياس دلت هذه الايةُ على أنَّ القياس حُجَّة. (تفسير اللباب لابن عادل المؤلف: ابو حفص عمر بن على ابن عادل الدمشقى الحنبلى رحمة الله عليه المتوفى سنة ৮৮০ هجري سورة النساء ৫৯ الاية)

অর্থ: এই পরিচ্ছেদ হচ্ছে ক্বিয়াস শরীয়াত উনার দলীল হওয়ার ব্যাপারে পবিত্র আয়াত শরীফ উনার প্রমাণ: অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ প্রমাণ করেছে যে, পবিত্র ক্বিয়াস সম্মানিত শরীয়াত উনার অকাট্য দলীল বা প্রমাণ। (তাফসীরুল্ লুবাব লিইবনি আদিল লেখক: হযরত আবূ হাফ্ছ উমর বিন আলী ইবনু আদিল দামিশ্কী হাম্বালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৮৮০ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

(৪২৬)

فصل في تقديم الكتاب والسنة على القياس دَلَّت هذه الايةُ على أنَّ الكِتَاب والسُنة مُقدِّمان على القِياسِ مُطْلقاً فلا نَتْرُك العَمَل بهما بِسَبَبِ القِياسِ. (تفسير اللباب لابن عادل المؤلف: ابو حفص عمر بن على ابن عادل الدمشقى الحنبلى رحمة الله عليه المتوفى سنة ۸۸۰ هجري سورة النساء ۵۹ الاية)

অর্থ: এই পরিচ্ছেদ হচ্ছে পবিত্র কিতাবুল্লাহ শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনারা পবিত্র ক্বিয়াস উনার উপর অগ্রগণ্য: অত্র আয়াত শরীফ প্রমাণ করেছে যে, পবিত্র কিতাবুল্লাহ শরীফ তথা পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ তথা হাদীছ শরীফ উনারা পবিত্র ক্বিয়াস উনার উপর প্রাধন্যযোগ্য। এজন্য পবিত্র ক্বিয়াস উনার কারণে পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের বিধান পরিত্যাগ করা যাবে না। (তাফসীরুল্ লুবাব লিইবনি আদিল লেখক: হযরত আবূ হাফ্ছ উমর বিন আলী ইবনু আদিল দামিশ্কী হাম্বালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৮৮০ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ-৫৯)

 

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৩

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৪

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৫

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া