পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে

সংখ্যা: ২৩৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১৭

[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লّীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা)  ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-চলমান), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করার পর-

৩২তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”-

পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয

পূর্ব প্রকাশিতের পর

পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার সমর্থনে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম

 

পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমাউল উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দলীল-আদিল্লাহ মোতাবেক সম্মানিত ইসলামী শরীয়াত উনার যাবতীয় হুকুম-আহকাম মেনে চলার জন্য কারো অনুসরণ করাকে ‘আত-তাকলীদুশ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ বলে। উনাকে ‘তাকলীদুল ইসলাম’, ‘তাকলীদুদ্ দীন’ ও ‘তাকলীদুদ্ দালায়িলিল আরবায়াহ’ অর্থাৎ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার চারখানা দলীল উনাদের অনুসরণও বলা হয়ে থাকে।

নি¤েœ পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার সমর্থনে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উল্লেখ করে উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম বা বিধি-বিধান আলোচনা করা হলো-

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ১৩

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا. (سورة النساء ৫৯ الاية)

অর্থ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার আনুগত্য করো, সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন-অনুকরণ করো এবং তোমাদের মধ্যে যাঁরা উলিল আমর (আদেশদাতা) উনাদের অনুসরণ করো। তোমাদের মধ্যে যদি কোন বিষয়ে মতবিরোধ হয়, তাহলে উক্ত বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে প্রত্তাবর্তন করো অর্থাৎ যেই উলিল আমর উনার পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দলীল বেশি সেই উলিল আমর উনাকেই অনুসরণ করো। যদি তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাকো। এটাই কল্যানকর ও পরিনতির দিক দিয়ে উত্তম। (পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ৫৯)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ অংশ দ্বারা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ, উলামা, আউলিয়া কিরাম ও উমারা-খলীফাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করতে নির্দেশ করা হয়েছে এবং ইজমাউল উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস যে মহা সম্মানিত শরীয়াত উনার দলীল তাও প্রমাণ করা হয়েছে। যেমনটি সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য সকল তাফসীর উনার কিতাব উনাদের মধ্যে উল্লেখ আছে।

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৩৭৭)

قال أبو بكر اختلف في تأويل أولى الأمر فروى عن حضرت جابر بن عبد اللّه وحضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما رواية والحسن وعطاء ومجاهد أنهم أولوا الفقه والعلم وعن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه رواية و حضرت أبى هريرة رضى الله تعالى عنه أنهم أمراء السرايا ويجوز أن يكونوا جميعا مرادين. (احكام القرآن للجصاص سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة باب في طاعة أولى الأمر الجلد الثالث الصفحة ১৭৭ المؤلف: حضرت احمد بن علي المكني بأبي بكر الرازي الجصاص الحنفي رحمة الله عليه الولادة: ৩০৫ هجري الوفاة: ৩৭০ هجري)

অর্থ: হযরত আবূ বকর রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উলিল আমর উনার ব্যাখ্যা নিয়ে ইখতিলাফ রয়েছে। হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা (একটি বর্ণনায়) হযরত হাসান বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আত্বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা বর্ণনা করেছেন, উলিল আমর হচ্ছেন ফক্বীহগণ ও উলামা কিরাম উনারা। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা (অপর একটি বর্ণনায়) হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত, উলিল আমর হলেন- জিহাদের সেনাপতিগণ। উভয় উদ্দেশ্য নেয়া জায়িয। (আহকামুল কুরআন লিল্ জাছছাছ সূরাতুন্ নিসা শরীফ ৫৯ নম্বর আয়াত শরীফ পরিচ্ছেদ: ফী ত্বায়াতি উলিল আমর ৩য় খন্ড ১৭৭ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত আহমাদ বিন আলী মাক্কী আবূ বকর রাযী জাছছাছ হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি জন্ম: ৩০৫ হিজরী, ওয়াফাত: ৩৭০ হিজরী)

(৩৭৮)

وقوله تعالى عقيب ذلك فَإِنْ تَنازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ يدل على أن أولى الأمر هم الفقهاء لأنه أمر سائر الناس بطاعتهم ثم قال فَإِنْ تَنازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ فأمر أولى الأمر برد المتنازع فيه إلى كتاب اللّه وسنة نبيه صلّى اللّه عليه وسلّم إذا كانت العامة ومن ليس من أهل العلم ليست هذه منزلتهم لأنهم لا يعرفون كيفية الرد إلى كتاب اللّه والسنة ووجوه دلائلهما على أحكام الحوادث فثبت أنه خطاب للعلماء. (احكام القرآن للجصاص سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة باب في طاعة أولى الأمر الجلد الثالث الصفحة ১৭৭ المؤلف: حضرت احمد بن علي المكني بأبي بكر الرازي الجصاص الحنفي رحمة الله عليه الولادة: ৩০৫ هجري الوفاة: ৩৭০ هجري)

অর্থ: فَإِنْ تَنازَعْتُمْ  অংশটি প্রমাণ করে যে, উলিল আমর অর্থ হলো- ফক্বীহ বা মুজতাহিদ উনারা। কেননা, সর্বসাধারণকে উনাদের আনুগত্য করতে বলা হয়েছে। অত্র মহা পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা উলিল আমর বা মুজতাহিদ উনাদেরকে আনুগত্য করার হুকুম দিয়ে বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলো মহা পবিত্র কুরআন শরীফ ও মহা পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে সমাধান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেননা, সাধারণ লোকের সে যোগ্যতা নেই। সুতরাং নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, মহা পবিত্র আয়াত শরীফ উনার শেষাংশে আলিম তথা মুজতাহিদ উনাদেরকেই সম্বোধন করা হয়েছে। (আহকামুল কুরআন লিল্ জাছছাছ সূরাতুন্ নিসা শরীফ ৫৯ নম্বর আয়াত শরীফ পরিচ্ছেদ: ফী ত্বায়াতি উলিল আমর ৩য় খন্ড ১৭৭ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত আহমাদ বিন আলী মাক্কী আবূ বকর রাযী জাছছাছ হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি জন্ম: ৩০৫ হিজরী, ওয়াফাত: ৩৭০ হিজরী)

(৩৭৯)

المسألة الثانية : اعلم أن هذه الآية آية شريفة مشتملة على أكثر علم أصول الفقه ، وذلك لأن الفقهاء زعموا أن أصول الشريعة أربع : الكتاب والسنة والإجماع والقياس ، وهذه الآية مشتملة على تقرير هذه الأصول الأربعة بهذا الترتيب. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ: দ্বিতীয় মাসয়ালা: জেনে রাখুন! নিশ্চয়ই অত্র মহা পবিত্র আয়াত শরীফ খানা উছূলুল্ ফিক্হ ইল্মের সংশ্লিষ্ট উৎস। যেহেতু সকল ফুক্বাহা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা মনে করেন নিশ্চয়ই মহা সম্মানিত শরীয়াত উনার উছূল হলো চারখানা। কিতাবুল্লাহ তথা মহা পবিত্র কুরআন মাজীদ, মহা পবিত্র সুন্নাহ তথা হাদীছ শরীফ, মহা পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ ও মহা পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস। অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উছূলে শরা’ উনার আলোচনা তারতীব মত উল্লেখ আছে। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৮০)

المسألة الثالثة : اعلم أن قوله : وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ يدل عندنا على أن إجماع الأمة حجة ، والدليل على ذلك أن الله تعالى أمر بطاعة أولي الأمر على سبيل الجزم في هذه الآية. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ: তৃতীয় মাসয়ালা: জেনে রাখুন! নিশ্চয়ই উলিল আমর দ্বারা আমারা দলীল নিয়েছি যে, ‘পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ’ অকাট্য দলীল। আর উক্ত দলীলে মহান আল্লাহ তায়ালা উলিল আমর উনাদেরকে নিশ্চিত ভাবে অনুসরণ করতে আদেশ করেছেন। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৮১)

لأنا بينا أن الله تعالى أوجب طاعة أولي الأمر في هذه الآية قطعا. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ: আমরা বর্ণনা করেছি যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা অত্র মহা পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা অকাট্যভাবে উলিল আমর উনাদেরকে অনুসরণ করকে ওয়াজিব করেছেন। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৮২)

المراد بقوله: وَأُولِي الْأَمْرِ أهل الحل والعقد من الأمة، وذلك يوجب القطع بأن إجماع الأمة حجة. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ: উলিল আমর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছেন উম্মতের মধ্যে মিমাংসা ও ফায়সালাকারীগণ। এটা দ্বারা অকাট্যভাবে ওয়াজিব হয় যে, ইজমাউল উম্মাহ মহা সম্মানিত শরীয়াত উনার দলীল। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৮৩)

المراد العلماء الذين يفتون في الأحكام الشرعية ويعلمون الناس دينهم، وهذا رواية الثعلبى عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه وقول الحسن ومجاهد والضحاك. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ: উলিল আমর দ্বারা উলামা কিরাম উদ্দেশ্য। যাঁরা মহা সম্মানিত শরীয়াত উনার হুকুম আহকামের ফাতওয়া দেন এবং মানুষদেরকে দ্বীনের ব্যাপারে তা’লীম দেন। হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনার থেকে হযরত ছা’লাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। অনুরূপ হযরত হাসান বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত দ্বহহাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মত। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৮৪)

والجواب : أنه لا نزاع أن جماعة من الصحابة والتابعين حملوا قوله : وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ على العلماء ، فإذا قلنا : المراد منه جميع العلماء من أهل العقد والحل لم يكن هذا قولا خارجا عن أقوال الأمة ، بل كان هذا اختيارا لأحد أقوالهم وتصحيحا له بالحجة القاطعة. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ: একদল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ও হযরত তাবিয়ীন রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উলিল আমর উনার অর্থ ‘উলামাগণ’ করেছেন। এতে কোন ইখতিলাফ নেই। যদি উহার অর্থ সমস্ত ব্যাবস্থাদাতা আলিমগণ স্বীকার করি তবে তা উম্মাতের মত সমূহের বিপরীত মত বলে গণ্য হবে না। বরং অকাট্য প্রমাণ দ্বারা উনাদের একটি মতকে মনোনীত ও ছহীহ স্থির করা হবে। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৮৫)

أن طاعة الله وطاعة رسوله واجبة قطعا، وعندنا أن طاعة أهل الإجماع واجبة قطعا، وأما طاعة الأمراء والسلاطين فغير واجبة قطعا، بل الأكثر أنها تكون محرمة لأنهم لا يأمرون إلا بالظلم. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري(

অর্থ: মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আনুগত্য করা ওয়াজিব অর্থাৎ ফরযে আইন। আমাদের মতে ইজমা’কারীগণ উনাদেরকে অনুসরণ করা ওয়াজিব। কিন্তু আমির ও সুলতানদেরকে অনুসরণ করা ওয়াজিব নয়। বরং অধিকাংশগণের মতে, তাদেরকে অনুসরণ করা হারাম, কেননা তারা সাধারণত: যুলুমেরই হুকুম দিয়ে থাকে। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৮৬)

المسألة الرابعة : اعلم أن قوله : فَإِنْ تَنازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ يدل عندنا على أن القياس حجة. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري(

অর্থ: চতুর্থ মাসয়ালা: জেনে রাখুন, মহান আল্লাহ তায়ালা উনার বানী: “তোমাদের মধ্যে যদি কোন ব্যাপারে মতোবিরোধ হয় তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করো” এ মহা পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা আমাদের নিকট ক্বিয়াস অকাট্য দলীল হিসেব স্বীকৃত। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৮৭)

المسألة الخامسة: هذه الآية دالة على أن الكتاب والسنة مقدمان على القياس مطلقا، فلا يجوز ترك العمل بهما بسبب القياس. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ: পঞ্চম মাসয়ালা: মূলত: অত্র মহা পবিত্র আয়াত শরীফ প্রমান করে যে, মহা পবিত্র কিতাবুল্লাহ ও মহা পবিত্র সুন্নাহ শরীফ ‘ক্বিয়াস’ উনার উপরে অগ্রগণ্য। তাই ক্বিয়াসের কারণে উনাদের উপর আমল তরক করা জায়িয হবে না। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৮৮)

المسألة السادسة: هذه الآية دالة على أن ما سوى هذه الأصول الأربعة: أعني الكتاب والسنة والإجماع والقياس مردود باطل. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ: ৬ষ্ঠ মাসয়ালা: মহা পবিত্র অত্র আয়াত শরীফ দ্বারা প্রমাণীত হয়েছে যে, এই চারটি উছূল তথা মহা পবিত্র কিতাবুল্লাহ, মহা পবিত্র সুন্নাহ, মহা পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ ও পবিত্র পবিত্র ক্বিয়াস ব্যতীত অন্য কিছু পরিত্যাজ্য ও বাতিল। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৮৯)

المسألة السابعة: زعم كثير من الفقهاء أن قوله تعالى: أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ يدل على أن ظاهر الأمر للوجوب. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ: ৭ম মাসয়ালা: অসংখ্য ফুক্বাহা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মতে, “তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আনুগত্য কর” দ্বারা প্রকাশ্য নির্দেশ ওয়াজিব অর্থাৎা ফরযের ফায়দা দেয় তা প্রমাণ করা হয়েছে। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৯০)

المسألة الثامنة: اعلم أن المنقول عن الرسول صلى الله عليه وسلم اما القول واما الفعل، أما القول فيجب إطاعته لقوله تعالى: أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وأما الفعل فيجب على الأمة الاقتداء به إلا ما خصه الدليل. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ: ৮ম মাসয়ালা: জেনে রাখুন! নিশ্চয়ই হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে দু’প্রকার মহা পবিত্র সুন্নাহ নক্বল করা হয়। একটি ক্বাওল অপরটি ফি’ল। ক্বাওল তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা বা নির্দেশ মুবারক উনাকে অনুসরণ করা ওয়াজিব অর্থাৎ ফরয। যেমন: মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করো। আর ফি’ল তথা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাজ মুবারক উনার অনুসরণ করাও ওয়াজিব। তবে উনার খাছ বা বিশেষ আমল উম্মাতের জন্য ওয়াজিব নয়। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৯১)

المسألة الحادية عشرة : قد دللنا على أن قوله: وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ يدل على أن الإجماع حجة فنقول: كما أنه دل على هذا الأصل فكذلك دل على مسائل كثيرة من فروع القول بالإجماع. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ:  একাদশ মাসয়ালা: উলিল আমর সম্পর্কিত মহা পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা দলীল নেয়া হয় যে, ইজমাউল উম্মাহ মহা সম্মানিত শরীয়াত উনার অকাট্য দলীল। প্রমাণীত আছে যে, মহা পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ দ্বারা অসংখ্য শাখামূলক মাসয়ালা বের করা হয়েছে। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৯২)

المسألة الثانية عشرة: ذكرنا أن قوله: فَإِنْ تَنازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ يدل على صحة العمل بالقياس، فنقول: كما أن هذه الآية دلت على هذا الأصل، فكذلك دلت على مسائل كثيرة من فروع القول بالقياس. (مفاتيح الغيب اى التفسير الكبير اى تفسير الرازي سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: الإمام حضرت محمد بن عمر المعروف بفخر الدين الرازى الشافعي الاشعري رحمة الله عليه المتوفى سنة    ৬০৬ هجري)

অর্থ:  দ্বাদশ মাসয়ালা: আমরা আলোচনা করেছি যে, মহান আল্লাহ তায়ালা উনার বানী: “তোমাদের মধ্যে যদি কোন ব্যাপারে মতোবিরোধ হয় তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দিকে প্রত্যাবর্তন করো” দ্বারা ছহীহ ক্বিয়াস উনার উপর আমল করা শুদ্ধ প্রমাণীত হয়। প্রমাণীত আছে যে, ছহীহ ক্বিয়াস দ্বারা অসংখ্য শাখামূলক মাসয়ালা বের করা হয়েছে। (মাফাতীহুল্ গইব অর্থাৎ আত্ তাফসীরুল্ কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: ইমাম হযরত মুহাম্মাদ বিন উমর ফখরুদ্দীন রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

(৩৯৩)

وقال علي بن أبي طلحة، عن ابن عباس: {وَأُولِي الأمْرِ مِنْكُمْ} يعني: أهل الفقه والدين. وكذا قال مجاهد، وعطاء، والحسن البصري، وأبو العالية: {وَأُولِي الأمْرِ مِنْكُمْ} يعني: العلماء. والظاهر والله أعلم-أن الآية في جميع أولي الأمر من الأمراء والعلماء. (تفسير القران العظيم لابن كثير سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف: علامة حضرت ابو الفداء إسماعيل بن عمر بن كثير القرشي الدمشقي الشافعي الاشعري الولادة: ৭০০ الوفاة: ৭৭৪ هجري)

অর্থ: হযরত আলী বিন আবূ ত্বলহাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনার থেকে বলেন, ফক্বীহগণ ও দীনদারগণ তোমাদের মধ্যে উলিল্ আমর হবেন। অনুরুপ হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আত্বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত হাসান বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত আবুল আলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন: উলিল আমর উনার অর্থ আলিম মুজতাহিদগণ। স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, উক্ত মহা পবিত্র আয়াত শরীফ খানা প্রত্যেক উলিল আমর অর্থাৎ আমিরগণ ও আলিমগণ উনাদের সম্বন্ধে প্রযোজ্য হবে। যেরুপ ইতিপূর্বে আলোচিত হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা অধিক জানেন। (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম লিইবনি কাছীর পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: আল্লামা হযরত আবুল ফিদা ইসমাঈল বিন উমর বিন কাছীর কুরাশী দামিশ্কী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৭০০ হিজরী, ওয়াফাত: ৭৭৪ হিজরী)

(৩৯৪)

وأخرج ابن جرير ، وَابن المنذر ، وَابن أبي حاتم والحاكم عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه فى قوله {وأولي الأمر منكم} يعني أهل الفقه والدين وأهل طاعة الله الذين يعلمون الناس معاني دينهم ويأمرونهم بالمعروف وينهونهم عن المنكر فأوجب الله طاعتهم على العباد. (الدر المنثور في التفسير بالماثور سورة النساء ৫৯ الاية الكريمة المؤلف : علامة حضرت عبد الرحمن بن أبي بكر السيوطي الشافعي الاشعري رحمة الله عليه الوفاة ৯১১ هجري)

অর্থ: হযরত ইবনু জারীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইবনুল্ মুনযির রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইবনু আবী হাতিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত হাকিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে উল্লেখ করেছেন যে, উলিল্ আমর উনার অর্থ ফক্বীহগণ, দ্বীনদারগণ ও মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ইবাদতকারী বান্দাগণ। যাঁরা মানুষদেরকে দ্বীনের মর্ম্মসমূহ শিক্ষা প্রদান করেন। তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ প্রদান করেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন। মহান আল্লাহ তায়ালা এমন বান্দা উনাদেরকে অনুসরণ করতে সকলের জন্য ওয়াজিব বা ফরয করেছেন। (আদ্ দুররুল্ মানছূর ফিত্ তাফসীরি বিল্ মা’ছূর পবিত্র সূরাতুন্ নিসা ৫৯ আয়াত শরীফ লেখক: আল্লামা হযরত আব্দুর রহমান বিন আবূ বকর সুয়ূতী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৯১১ হিজরী)

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৩

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৪

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৫