সময়ের ফারাকটা যত বেশীই হোক না কেন? বৈশিষ্ট্যগত প্রকৃতি বা ধরণটা কিন্তু একই রকমের। ‘উৎসব’ শব্দটি প্রাচীনকাল থেকেই ছিলো। আর ইসলাম অনুমোদিত নয় এমন সব উৎসবের প্রকৃতিও মূলতঃ একই ধরণের। সেখানে অশ্লীলতা, উদ্দামতা, বেহায়াপনা, বেলেল্লাপনা তথা নফসের পায়রবির পুরো দিকই বিদ্যমান। হিজরতের পর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একটি দিন প্রসঙ্গে জানানো হলো, “এ দিনে মদীনা শরীফের অধিবাসীরা আগে থেকেই বিভিন্ন উৎসব-আমেজে মেতে উঠতো।” এবারও সে রীতি অনুসারে উৎসবের অনুমতি প্রার্থনা করলে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্দাম উৎসবের সে রীতিকে নাকচ করে দিয়ে দ্বীন ইসলামের ধারাবাহিকতায় দু’টি পবিত্র খুশীর কথা উল্লেখ করলেন, ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আদ্বহা। কিন্তু কালের প্রেক্ষাপটে যা হয়। নফস নফসানিয়তের আনন্দ চায়, শয়তান তাতে ইন্ধন যোগায়। রং লাগায়, সংস্কৃতির, মুক্তবুদ্ধির অনুশীলনের, প্রগতিশীলতার জাতীয়তাবাদের, লাগামহীন আনন্দের। অর্থাৎ কিনা খাহেশায়াতে নফসানিয়াত আর শয়তানী ওয়াসওয়াসা দু’টোই সুযোগ পেলেই উথলে উঠতে চায়। তাই যেনো-তেনো ইস্যূতেই এর প্রকাশ ঘটে থাকে। প্রসঙ্গতঃ আজকের তথাকথিত সংস্কৃতি প্রেমিকদের ক্ষেত্রে এ কথা পুরোটুকুই প্রযোজ্য। থার্টি ফাষ্ট নাইট কালচার, র্যাগডে পার্টি, কনসার্ট, লেজার লাইট শো, বসন্তবরণ, ভ্যালেন্টাইন ডে ইত্যাদির নামে সম্প্রতি যে বেলেল্লাপনা দেখা যাচ্ছে তা সত্যিই বিশেষ মর্মপীড়ার কারণ।
প্রতিনিয়ত পত্রিকার পাতায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, অপহরণ, বস্ত্রহরণ ইত্যাদি শিরোনামে হাজার হাজার খবর পড়ে যন্ত্রণাদগ্ধ হবার পরও এর উৎসমূলে গিয়ে প্রতিকার পেতে আমরা নারাজ। অথচ অনিবার্য সত্য যে, এগুলো হচ্ছে বর্ণিত উৎসব সংস্কৃতিরই প্রত্যক্ষ ফল।
গত ১৪/২/২০০২ ঈঃ তারিখে একটি জাতীয় দৈনিকে “বসন্ত দিনে যা ঘটতে যাচ্ছিল” সংবাদ শিরোনামে বলা হয়, “দুর্ঘটনাটি ঘটে যাচ্ছিলো ঠিক বাঁধন ষ্টাইলেই। বাসন্তী রঙ্গের শাড়ি পড়ে ………… গেট পেরিয়ে রাস্তায় আসতেই আট/দশ যুবকের জটলার মধ্যে পড়ে যায়। প্রথমে তরুণীকে ঘিরে ধরে তার সঙ্গী বন্ধুটিকে সরিয়ে নেয়া হয়। এরপরেই প্রকাশ্য রাস্তায় তরুণীটিকে নিয়ে শুরু হয় টানা-হ্যাচড়া। …….. প্রকাশ্য রাস্তায় রীতিমতো বেলেল্লাপনা চলে টানা দশ/বার মিনিট ধরে। তরুণীকে উদ্ধারের জন্য কর্তব্যরত পুলিশ-আনসারদের কাউকে এগিয়ে যেতে দেখা যায়নি। ………..” বলা দরকার, পুলিশ-আনসারদের দায়িত্ব অবহেলাই এ বিষয়ে সীমাবদ্ধ হবার নয়। বসন্ত উৎসবের নামে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ‘রুচি-প্রগতিশীলতা ও সংস্কৃতির চেতনাকে সঞ্চারিত করতে পেরেছেন বলে আনন্দ প্রকাশ করেছেন,’ নাস্তিক্যঘেষা তথাকথিত জাতীয় বসন্ত উৎসব পরিষদের আহবায়ক কবি শামসুর রাহমান। এখন প্রশ্ন? তিনি কি আক্রান্ত তরুণীর হৃদয় বিদারক চিৎকারে বুঝতে সক্ষম হবেন যে, কি ধরণের চেতনা তিনি সঞ্চারিত করেছেন। এটা যে অব্যক্ত বিকৃত রুচি, প্রগতির নামে নিকৃষ্ট-দূর্গতি আর চেতনার নামে চরিত্রহীনতার অবাধ প্রেরণা; সেটা ঠাওরাতে কি তার মোহর পড়া দিলের মোহ্ এখনও কাটবে! নাকি ছিন্নভিন্ন আক্রান্ত মেয়ের বীভৎস অবস্থা দেখাই তাদের তথাকথিত সংস্কৃতিপনার মূল প্রেরণা! চারুকলার বকুলতলায় তথাকথিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব্যরা বসন্ত উৎসবের নামে রাখী পরিধান করে হৃদয়ে যত পুলক অনুভব করেছেন বসন্ত উৎসবে মাতোয়ারা তরুণদের দ্বারা আক্রান্ত তরুণীর “আপনারা এমন অসভ্যতা করছেন কেন?” এই আর্তচিৎকার তাদের সে কৃপমন্ডুক হৃদয়কে বিচলিত করবে কি?
মূলতঃ বসন্ত উৎসবের এই প্রতিচিত্র একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং বসন্ত উৎসবের উচ্ছলতার মাঝেই সুপ্তভাবে বিরাজ করে উদ্দামতার নামে এই পৈশাচিক আনন্দের শয়তানী খাহেশ। সাপের মতই ফনা তুলে থাকে তাদের নফস। কেবল কোনভাবে সুযোগ পেলেই তা উদ্ধত ছোবল হানে। এদিকে জাতীয় বসন্ত উৎসব পরিষদের পাশাপাশি বিশ্ব ভালবাসা উদযাপন পরিষদ; বাংলাদেশেও গজিয়েছে। ১৪ই ফেব্রুয়ারী ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালবাসা দিবসের নামে আরেক ধরণের অবাধ বেলেল্লাপনা উৎসবের তারা মূখ্য উৎসাহদাতা হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তথাকথিত ভালবাসা দিবসে এদের কর্মসূচী সম্পর্কে খবরে প্রকাশ- “চিত্তাকর্ষক অনুষ্ঠানটি শুরু হবে টিএসসির স্বোপার্জিত স্বাধীনতা প্রাঙ্গণে বেলা তিনটা থেকে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই থাকবে শতাধিক জুটির বর্ণাঢ্য র্যালি। লাল গোলাপ দিয়ে বরণ করে নেয়া হবে ভালবেসে বিয়ে করা ২০০ দম্পতিকে। ভালবেসে বিয়ে করা দীর্ঘদিনের নির্বাচিত ৫ দম্পতিকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হবে। আর রয়েছে প্রেমিক-প্রেমিকার মধুময় স্মৃতিচারণ, প্রেমপত্র পাঠ, কথোপকথন ও ভালবাসার গান। অনুষ্ঠানে এবারও দেশের বিশিষ্ট লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, নাট্যকর্মী, সংস্কৃতিসেবী, সাংবাদিক অংশ নেবেন।” পাঠক! উপরোক্ত খবরে একটি বিষয় একান্ত পরিস্কার যে, ভালবাসা দিবসের নামে এই মাতামাতি, গলাগলি এটি মহল বিশেষ, যারা ইসলাম বিমূখ, তাদের মধ্যেই মুখ্যত চর্চা হচ্ছে। আর এদের মাতামাতির ফলে সাধারণের মাঝেও ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় একটা প্রভাব বিস্তারিত হচ্ছে। তাই মুসলমান হিসেবে, মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ইসলাম ধর্মের আলোকে আমাদের এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে
The new Encyclopaedia Britannica x Encyclopaedia Americana
সহ আরো বহু রেফারেন্স থেকে জানা যায়, “রোমান এক খ্রীষ্টান পাদ্রি সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। চিকিৎসা বিদ্যায় তিনি ছিলেন অভিজ্ঞ। খ্রীষ্টধর্ম প্রচারের অভিযোগে ২৭০ খ্রীষ্টাব্দে রোমের সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের আদেশে ভ্যালেণ্টাইনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। তিনি যখন বন্দি ছিলেন তখন তরুণ-তরুণীরা তাকে ভালবাসা জানিয়ে জেলখানায় জানালা দিয়ে চিঠি ছুড়ে দিত। বন্দি অবস্থাতেই সেন্ট ভ্যালেন্টাইন জেলারের অন্ধ মেয়ের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়ার চিকিৎসা করেন। মেয়েটির সঙ্গে তার হৃদয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মৃত্যুর আগে মেয়েটিকে লেখা এক চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন।” অনেকের মতে, সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারেই পোপ প্রথম জুলিয়াস ৪৯৬ খ্রীষ্টাব্দে ১৪ ফেব্রুয়ারীকে ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে’ হিসাবে ঘোষণা দেন। আরো একজন ভ্যালেন্টাইনের নাম পাওয়া যায় ইতিহাসে। রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস যুদ্ধের জন্য ভাল সৈন্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে যুবকদের বিয়ে করতে নিষেধ করেন। কিন্তু সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নিয়ম ভেঙ্গে প্রেম করেন, পরে আইন ভেঙ্গে বিয়ে করেন। ফলে তার মৃত্যুদন্ড হয়। এরও বহু বছর আগে থেকে রোমানদের দুটি প্রথা চালু ছিলো, প্রেম-বিয়ে এবং সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা বিষয়ে উৎসবের জন্য। লুপারকালিয়া এসব উৎসবের অন্যতম। এই অনুষ্ঠান হতো ১৫ ফেব্রুয়ারীতে। এর আগের দিন ১৪ ফেব্রুয়ারী তরুণ-তরুণীরা লটারীর মাধ্যমে নাচের পার্টনার নির্বাচন করত। ৪০০ খ্রীষ্টাব্দ থেকে দু’দিনের পরিবর্তে একদিন ১৪ ফেব্রুয়ারী নির্ধারণ করা হয়। অনেকে মনে করত ১৪ ফেব্রুয়ারী পাখিরা তাদের সঙ্গী বেছে নেয়। দিনটি পালনের ক্ষেত্রে রোমানরা লটারী করে তাদের প্রিয়তম বা প্রিয়তমাকে নির্বাচন করত। ১৭০০ সালের দিকে ইংরেজ রমণীরা কাগজে তাদের পরিচিত পুরুষদের নাম লিখে পানিতে ছুড়ে মারত কাদামাটি মিশিয়ে। যার নাম প্রথম ভেসে উঠত সেই হতো প্রকৃত প্রেমিক। ষোড়শ শতাব্দী থেকে কাগজের কার্ড বিনিময় শুরু হয়। ১৮০০ সাল থেকে তামার প্লেটে একই ডিজাইনের অনেক কার্ড ছাপা হয়। এভাবেই ভালবাসা দিবস ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, এই তথাকথিত ভালবাসা দিবস কখনোই এদেশীয় অর্থাৎ বাঙ্গালি সংস্কৃতির অংশ ছিলনা। গত চার/পাঁচ বছর ধরে আকাশ সংস্কৃতির পঙ্কিল পথে বাংলায় বিজাতীয় সংস্কৃতির যে একটি অশ্লীল চর্চার আবির্ভাব ঘটেছে তার মধ্যে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ অন্যতম।
এখানে একটা বিষয় উল্লেখ যে, বাংলাদেশের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা তাদের ব্যবসায়ীক স্বার্থরক্ষার জন্য এই দিনটিকে কাজে লাগাচ্ছে এবং ব্যবসায়িক কারণেই অপরাপর ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এই দিবসকে মত্তকারূপে নিচ্ছে। এবং এভাবে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’কে এদেশের মানুষের কাছে পরিচিত করে তুলছে। ভালবাসা দিবস উপলক্ষ্যে ভিড় বেড়েছে নগরীর বিভিন্ন বিপণী বিতান ও গিফট শপগুলোতে। জমে উঠেছে ফুল ব্যবসা। ভালবাসার অন্যরকম এ নিদর্শনের পার্সেল অর্ডার দিয়েছে পুস্প বিতানগুলো নির্ধাারিত ঠিকানায় প্রাপককে ভালবাসার শভেচ্ছা পৌঁছে দেয়ার আয়োজন রয়েছে। খ্যাতনামা ব্যান্ড ও জাদু শিল্পীদের অনুষ্ঠানের কমতি নেই। তারাও ব্যস্ত স্টেজ শো করতে। তারকা হোটেলসহ সর্বত্র আয়োজন। সোনারগাঁও হোটেলও ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষ্যে প্রতি বছর বিশেষ পার্র্টির আয়োজন করে। এবার হোটেলের বল রুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশাল ভ্যালেনটাইন নাইট শো। রাত ৯টায় শুরু হয় এ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে হয়েছে নাচ-গান, র্যাফেল ড্র এবং বেস্ট কাপল অ্যাওয়ার্ড। গভীর রাত পর্যন্ত এ অনুষ্ঠান চলে। প্রায় ১ হাজার উৎসবপ্রেমী অংশ নেয় অনুষ্ঠানে। ভিনটেজ রেষ্টুরেন্টে রয়েছে সেট মেনু লাঞ্চ ও ডিনার। ২২৫০ টাকা মাথা পিছু খরচে গ্লাস অব ওয়াইনসহ মিলেছে অন্য রকম পরিবেশ। অর্থাৎ পাঠক! তথাকথিত ভ্যালেন্টাইন ডের অপ্রকাশিত তত্ত্বটি হচ্ছে মদ-মেয়ে ও স্ফূর্তি। যা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম। যা মুসলমান সমাজ তথা এদেশীয় সমাজ বরদাশত করতে পারেনা। এদিকে ভারতের হিন্দুরাও এই ভ্যালেন্টাইন ডের বিরুদ্ধে হুঙ্কার তুললেও এমনকি তারা ভালবাসা দিবসের পরিবর্তে ঈদ উৎসবের কথা উল্লেখ করলেও আমাদের দেশের তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনকারীরা, ইসলামের নামে তথাকথিত জামায়াত, ঐক্যজোট, শাসনতন্ত্র আন্দোলন, খেলাফত আন্দোলন কেউই ভ্যালেন্টাইন ডের নামে অশ্লীলতার বিরুদ্ধে আদৌ আওয়াজ তুলেনি। তবে এক্ষেত্রে খতীব উবায়দুল হক জাতীয় মসজিদে ভ্যালেন্টাইন ডের বিরুদ্ধে বললে সমবেত মুছল্লী যখন হাত উঠালেন তখন সমবেত মুছল্লীর মাধ্যমে গোটা দেশের মুসলিম সমাজের ভ্যালেন্টাইন দিবস বিরোধী মানসিকতা জাহির হলেও তাতে খতীব মহোদয়ের কোন কৃতিত্ব জাহির হয় কি? কারণ তিনি কিসের বিরুদ্ধে বলবেন? ভ্যালেন্টাইন ডে এখানে প্রসার লাভ করেছে আকাশ সংস্কৃতি তথা ছবির মাধ্যমে। আর খতীব মহোদয় নিজেই কি ছবি তুলছেন না? শত শত হাদীস শরীফে ছবি তোলার বিরুদ্ধে স্পষ্ট নিষেধবাণী থাকার পরও; তিনি নিজেই ছবি তোলার দ্বারা কি নিজেকেই কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ বিরোধী ব্যক্তিত্ব বলে প্রতীয়মান করছেননা? তার মেহরাবের পাশে এবং অনেক সময় মসজিদের ভিতরেও ক্যামেরাম্যানের অবস্থান গ্রহণের দ্বারা তিনিই কি জাতীয় পর্যায়ে ছবিকে জায়িয প্রতিভাত করেননি? আর এ ছবির ক্রমবর্ধমান বিস্তৃতিই কি আজকের আকাশ সংস্কৃতির মূল উৎস নয়? অপরদিকে ভ্যালেন্টাইন দিবসের বে-পর্দার বিরুদ্ধে তার বলার কিছু আছে কি? কারণ, দোসরতার তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির নেতৃবৃন্দই যখন মেয়ে লোকের সাথে উঠা-বসা, মিটিং-মিছিল, নির্বাচন করেছিলো তখন তিনি তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলেছিলেন কি?
সুতরাং আজকের ভ্যালেন্টাইন দিবসের বে-পর্দা, বেহায়াপনা সম্পর্কে কথা বলার অধিকার তার কোথায়? এটা কি নেহায়েত পক্ষপাতমূলক আচরণ নয়? তাই ভ্যালেন্টাইন দিবস সম্পর্কে খতীব ছাহেব যতই হুঙ্কার ছাড়েন সেটা আসলেই মেকী। মূলতঃ তার এবং তার সমগোত্রীয় খতীব- তথাকথিত শাইখুল হাদীস, মুফতী-মুফাস্সিরদের আর মাওলানাদের অধঃপতনই জাতিকে গোমরাহী তথা বিজাতীয় ও বিধর্মী সংস্কৃতি লালনে এতটা সাহসী করে তুলেছে।
কাজেই জাতির হিদায়েতের জন্য চাই সর্বাগ্রে সংশ্লিষ্ট উলামায়ে “ছূ”দের হিদায়েত। পাশাপাশি মুসলমান হিসেবে আল্লাহ্ পাক ও আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর ঈমান আনয়নকারী হিসেবে, হাদীস শরীফে উল্লিখিত দুটো উৎসব যথা- ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আদ্বহা ব্যতিরেকে বাকি অনৈসলামিক উৎসব হতে পরহেয হওয়া আমাদের একান্ত কর্তব্য।
-মুহম্মদ মাহ্বুবুর রহমান (জিশান), গোড়ান, ঢাকা।