প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ৫৮তম পর্ব

সংখ্যা: ২২৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

পূর্ব প্রকাশিতের পর

(৯৯৩)

قُلْنا يا نارُ كُونِي بَرْداً وَسَلاماً عَلى إِبْراهِيمَ أى ذات برد وسلام أى ابردى بردا غير ضار قال ابن عباس لو لم يقل سلاما لمات ابراهيم من بردها قال البيضاوي وفيه مبالغات جعل النار المسخرة بقدرته مامورة مطيعة واقامة كونى ذات برد مقام ابردى ثم حذف المضاف واقامة المضاف إليه مقامه وقيل نصب سلاما بفعله أى وسلمنا سلاما عليه قال البغوي ومن المعروف في الآثار انه لم يبق يومئذ نار في الأرض الا طفئت فلم ينتفع في ذلك اليوم بنار في العالم ولو لم يقل على ابراهيم بقيت ذات برد ابدا قلت والظاهر ان النار كانت بحالها محرقة لكنه تعالى جعلها غير موذية لابراهيم خاصة كما يدل عليه قوله تعالى على ابراهيم قال السدى أخذت الملئكة بضبعي ابراهيم فاقعدوه على الأرض فإذا عين ماء عذب وورد احمر ذى حسن قال كعب ما أحرقت النار ابراهيم

الا وثاقه قالوا وكان ابراهيم في ذلك الموضع سبعة ايام وقال المنهال بن عمر وقال ابراهيم ما كنت أياما قط أنعم منى من الأيام الّتي كنت في النار وقال ابن يسار فبعث اللّه عزّ وجلّ ملك الظل في صورة ابراهيم فقعد فيها في جنب ابراهيم يونسه وقال وبعث اللّه عزّ وجلّ جبرئيل بقميص من حرير الجنة وطنفسة فالبسه وأقعده على الطنفسة وقعد معه يحدثه وقال جبرئيل يا ابراهيم ان ربك يقول اما علمت ان النار لا يضر أحبابي ثم نظر نمرود واشرف على ابراهيم من صرح له فرأه جالسا في رو ضة والملك قاعد إلى جنبه وما حوله نار يحرق الحطب فناداه يا ابراهيم كبير إلهك الّذي بلغت قدرته ان حال بينك وبين ما ارى يا ابراهيم هل تستطيع ان تخرج منها قال نعم قال هل تخشى ان أقمت فيها ان تضرك قال لا قال فقم فاخرج منها فقام ابراهيم يمشى فيها حتى خرج منها فلما خرج إليه قال له يا ابراهيم من الرجل الّذي رأيته معك في مثل صورتك قاعدا إلى جنبك قال ذلك ملك الظل أرسله ربى إلى ليونسنى فيها فقال نمرود يا ابراهيم انى مقرب إلى إلهك قربانا لما رأيت من قدرته وعزته فيما يصنع بك حين أبيت الا عبادته وتوحيده انى ذابح له اربعة آلاف بقرة قال له ابراهيم إذا لا يقبل اللّه منك ما كنت على دينك حتى تفارقه على دينى فقال لا أستطيع ترك ملكى ولكن سوف اذبحها له فذبحها له نمرود ثم كف عن ابراهيم ومنعه اللّه عزّ وجلّ منه قال شعيب الجبائي القى ابراهيم في النار وهو ابن ست عشرة سنة.

(আমি বললাম, হে আগুন! তুমি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।) : অর্থাৎ এমন শীতল হয়ে যাও, যা উনার জন্য ক্ষতিকর না হয়। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন, যদি মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি সালাম শব্দ না বলতেন, তবে শীতের কারণে তিনি কষ্ট পেতেন। আল্লামা হযরত ইমাম বাগাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, কোন কোন প্রসিদ্ধ বর্ণনায় রয়েছে : সে দিন পৃথিবীর সব আগুন নিভিয়ে দেয়া হয়েছিল। আগুন দ্বারা সে দিন কেউ কোন উপকার লাভ করতে পারেনি। যদি মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি على ابراهيم অর্থাৎ ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার জন্য’ না বলতেন, তবে চিরতরে সকল আগুন শীতল হয়ে যেত।

(মুফাসসির হযরত ইমাম ছানাউল্লাহ পানীপথী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,) আমার মতে, আগুন তার দাহিকা শক্তি অর্থাৎ জ্বালিয়ে দেয়ার ক্ষমতা নিয়েই বিদ্যমান ছিল। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার জন্য তাকে কষ্টদায়ক করেননি। বরং আরামদায়ক শীতল করেছেন।

على ابراهيم অর্থাৎ ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার জন্য’ এ পবিত্র আয়াতাংশের দ্বারা একথাই বুঝা যায়। হযরত সুদ্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার দু’বাহু মুবারক ধরে তা’যীম-তাকরীমের সাথে মাটির উপর বসিয়ে দিলেন। তিনি সেখানে নিজের সামনে মিঠা পানির ঝর্ণা ও সুন্দর লাল গোলাপ ফুলের বাগান দেখতে পেলেন। হযরত কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন, আগুন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার কোন অঙ্গ জ্বালায়নি। তবে যে রশি দ্বারা উনাকে বাঁধা হয়েছিল, শুধু সেই রশিটা জ্বলেছিল। হযরত উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন, হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে আগুনের ভিতর সাত দিন অবস্থান করেছিলেন।

হযরত মিনহাল ইবনে আমর রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত, হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যতদিন আমি আগুনে ছিলাম, ততদিন আমি যে আরাম ও শান্তি ভোগ করেছি, এরূপ শান্তি ও আরাম আমি কোন দিন ভোগ করিনি। হযরত ইবনে ইয়াসার রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ছায়ার জন্য নিয়োজিত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার আকৃতি দান করে উনার নিকট পাঠান আর তিনি উনার পাশে বসে ছায়া দেন। তিনি আরো বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে বেহেশতের একটা রেশমের জামা ও মখমলের চাদরসহ হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার নিকট পাঠান। তিনি উনাকে রেশমের জামা পরিয়ে দেন এবং মখমলের চাদরের উপর বসিয়ে দেন এবং উনার সাথে বসে কথা বলেন। হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! আপনার মহান রব তায়ালা তিনি বলেছেন, আপনি কি জানেন না, আগুন আমার বন্ধুদের কোন ক্ষতি করতে পারে না!

রাবী বলেন, এরপর নামরূদ তার বালাখানা থেকে দৃষ্টিপাত করলো এবং হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার প্রতি উঁকি দিয়ে দেখলো তিনি শান্তিময় উদ্যানে বসে আছেন এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাও উনার পাশে উপবিষ্ট আছেন। অথচ উনার চতুর্দিকে প্রজ্বলিত আগুন কাঠ জ্বালিয়ে দিচ্ছিল। এ দৃশ্য দেখে নামরূদ হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে চিৎকার করে ডেকে বললো, হে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! আপনার ইলাহ তায়ালা তিনি অনেক বড়। উনার ক্ষমতা এতই যে, তিনি আপনার ও আগুনের মাঝে প্রতিবদ্ধকতা তৈরি করে দিয়েছেন। হে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! আপনি কি এ আগুন হতে বের হয়ে আসতে পারবেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। নামরূদ বললো, আপনার কি আশঙ্কা আছে যে, আপনি ওখানে অবস্থান করলে আগুন আপনার কোন ক্ষতি করবে? তিনি বললেন, না। তখন নামরূদ বললো, তাহলে আপনি উঠে আগুন থেকে বেরিয়ে আসুন দেখি। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি উঠলেন এবং আগুনের মধ্য দিয়ে পায়ে হেঁটে বের হয়ে আসলেন। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি বের হয়ে আসার পর নামরূদ উনাকে জিজ্ঞাসা করলো, হে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! আপনার পাশে আমি আপনার আকৃতিতে কাকে বসা দেখলাম? তিনি বললেন, তিনি ছিলেন, ছায়া প্রদানের জন্য নিয়োজিত একজন হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম। আমার মহান রব তিনি উনাকে এ আগুনের মধ্যে আমার নির্জনতার কষ্ট দূর করার জন্য পাঠিয়েছিলেন। তখন নামরূদ বললো, হে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! আমি আপনার ইলাহ উনার জন্য কুরবানী পেশ করব। কারণ, আপনি যখন উনার ইবাদত ব্যতীত অন্য সকলের ইবাদত অস্বীকার করেছেন এবং কেবল উনারই তাওহীদের উপর অবিচল রয়েছেন। তখন আপনার ব্যাপারে আমি উনার যে শক্তি ও ক্ষমতা প্রকাশ করতে দেখেছি, সে কারণে আমি অবশ্যই উনার নামে চার হাজার গাভী কুরবানী করবো। তখন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি তাকে বললেন, যতক্ষণ না তুমি তোমার ধর্ম ত্যাগ করে আমার পবিত্র দ্বীন গ্রহণ করবে, ততক্ষণ মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি তোমার কুরবানী গ্রহণ করবেন না। তখন সে বললো, আমি তো আমার সা¤্রাজ্য ত্যাগ করতে পারবো না। কিন্তু আমি অবশ্যই উনার জন্য কুরবানী করবো। এরপর নামরূদ মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য চার হাজার গাভী কুরবানী করলো এবং এরপর থেকে সে, হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকলো এবং মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে নামরূদ থেকে রক্ষা করলেন। হযরত শুয়াইব জাবাঈ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়, তখন উনার বয়স মুবারক ছিল ষোল বছর।

(৯৯৪)

وَأَرادُوا بِهِ كَيْداً فَجَعَلْناهُمُ الْأَخْسَرِينَ (ج) قيل معناه انهم خسروا السعر والنفقة ولم يحصل لهم مرادهم وقيل ان اللّه أرسل على نمرود البعوض فاكلت لحومه وشربت دمائه ودخلت واحدة في دماغه فاهلكته قال محمد بن اسحق استجاب لابراهيم رجال من قومه حين رأوا ما صنع اللّه به من جعل النار عليه بردا وسلاما مع خوف من نمرود وملأهم وأمن له لوط وكان ابن أخيه وهو لوط بن هاران بن تارخ وكان ابراهيم بن تارخ وكان التارخ ابن ثالث يقال له نأخور وامنت به أيضا سارة وهى بنت عمه وهى سارة بنت هاران الأكبر عم ابراهيم فخرج من كوثى من ارض العراق هاجرا إلى ربه ومعه لوط وسارة كما قال اللّه تعالى فامن له لوط وقال انى مهاجر إلى ربى فخرج يلتمس الفرار بدينه والايمان على عبادة ربه حتى نزل حران فمكث بها ما شاء اللّه ثم خرج منها مهاجرا حتى قدم مصر ثم خرج من مصر إلى الشام فنزل السبع من ارض فلسطين وهو بريد الشام ونزل لوط بالمؤتفكة وهو من السبع على مسيرة يوم وليلة أو اقرب فبعثه اللّه نبيا،

(التفسير المظهرى المؤلف : القاضى محمد ثناء الله العثمانى المظهرى النقشبندى الحنفى الماتريدى رحمة الله عليه الولادة : ۱۱۴۳ هجرى المتوفى : ۱۲۲۵ هجرى، دار إحياء التراث العربي ، ببيروت لبنان)

(وارادوا به كيدا فجعلناهم الاخسرين আর তারা উনার ক্ষতি সাধনের ইচ্ছা করেছিল, কিন্তু আমি তাদেরকে করে দিলাম সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত।) :

কোন কোন মুফাসসির উনার অর্থ করেছেন, তাদের উদ্দেশ্য সফল হলো না এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেল। কেউ কেউ বলেন ঃ মহান আল্লাহ পাক তিনি নমরূদের উপর মশার ঝাঁক পাঠিয়ে দিলেন। মশারা তার গোস্ত ভক্ষণ করলো, শরীরের রক্ত পান করে শেষ করলো এবং একটা মশা তার (নামরূদের) মস্তিষ্কে প্রবেশ করে তাকে নিপাত করলো।

হযরত মুহম্মদ ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার আগুন শীতল ও নিরাপদ করে দিলেন তখন এ দৃশ্য দেখে তার সম্প্রদায়ের কতিপয় লোক উনার প্রতি ঈমান আনলেন। কিন্তু উনাদের অন্তরে নামরূদ ও তাদের নেতৃবর্গের ভয় ছিল। হযরত লূত আলাইহিস সালাম তিনিও তখন উনার প্রতি ঈমান প্রকাশ করেন। তিনি ছিলেন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ভাই ‘হযরত হারান ইবনে তারাখ আলাইহিস সালাম’ উনার পুত্র। আর হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন ‘হযরত তারাখ আলাইহিস সালাম’ উনার পুত্র। আর ‘হযরত তারাখ আলাইহিস সালাম’ উনার পিতা  উনার নাম মুবারক ছিল ‘হযরত ছালিছ আলাইহিস সালাম’। আর ‘হযরত ছালিছ আলাইহিস সাল্লাম’ উনাকে নাখূরও বলা হতো। হযরত সারা আলাইহাস সালাম তিনিও তখন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার প্রতি ঈমান প্রকাশ করেন। তিনি ছিলেন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার চাচাত বোন, উনার চাচা ‘হযরত হারান আল-আকবার’ উনার কন্যা। এরপর তিনি ইরাকের ‘কূসা’ নামক স্থান ত্যাগ করে উনার রব উনার উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়েন। তখন উনার সাথে ছিলেন উনার আহলিয়া হযরত সারা আলাইহাস সালাম ও ভাতিজা হযরত লূত আলাইহিস সালাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, فامن له لوط و قال انى مهاجر الى ربى ‘তখন নবী হযরত লূত আলাইহিস সালাম তিনি উনার প্রতি ঈমান প্রকাশ করলেন (ঈমান উনার বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন), আর হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমি আমার রব মহান আল্লাহ পাক উনার উদ্দেশ্যে হিজরত করছি।’ (পবিত্র সূরাতুল আনকাবুত শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬)

হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি উনার দীন ও ঈমান উনাদের হিফাযতের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করেছিলেন এবং নিশ্চিন্তে উনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করার জন্য হিজরত করেছিলেন। চলতে চলতে তিনি ‘হাওয়ান’ নামক স্থানে উপস্থিত হন এবং কিছুকাল সেখানে অবস্থান করার পর পুনরায় হিজরত করে তিনি ‘মিছর’ গমন করেন। তারপর মিছর থেকে তিনি হিজরত করে সিরিয়ার উদ্ধেশ্যে রওয়ানা হন এবং সিরিয়ার উদ্দেশ্যেই তিনি ‘ফিলিস্তীন’-এর ‘সাবউ’ নামক স্থানে যাত্রা বিরতি করেন। আর হযরত লূত আলাইহিস সালাম তিনি অবতরণ করেন ‘মু’তাফিকাহ’ নামক স্থানে। এ স্থানটা ‘সাবউ’ থেকে একদিন ও রাতের দূরত্বে অবস্থিত। আর এখানেই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে নবী হিসেবে প্রেরণ করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি পরবর্তী আয়াত শরীফ উনার মধ্যে এ বিষয়ের উল্লেখ করেছেন। (আত্ তাফসীরুল মাযহারী-ক্বাযী মুহম্মদ ছানাউল্লাহ উছমানী মাযহারী নক্বশাবন্দী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি জন্ম : ১১৪৩ হিজরী ওফাত : ১২২৫ হিজরী প্রকাশনা : দারু ইহইয়ায়িত্ তুরাছিল্ আরাবী বাইরূত-লেবনান)

উল্লেখিত বিশদ তাফসীর থেকে যা কিছু প্রমাণিত হয়, তাহলো-

১.মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, প্রাণীর ছবি ইত্যাদী তৈরি করা, তৈরি করতে সাহায্য করা, এগুলোর চর্চা করা, এগুলোকে সিজদাহ করা ও এগুলোকে সম্মান করা কুফ্রী, র্শিকী ও কাট্টা হারাম।

২.বাত্বিলের বিরুদ্ধে অবিচল থাকতে হবে। কখনোই সাহস হারা হওয়া যাবে না। কাফির, মুশরিক ও যালিমের যুলূমের কারণে ঈমানকে বিসর্জন দেয়া যাবে না কখনোই।

৩.গোত্রের বা জনগোষ্ঠীর বেদীনী নিয়ম-নীতি পালন করা যাবে না।

৪.বিপদে-আপদে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার প্রতি পূর্ণ নির্ভরশীল হতে হবে। তাহলে তিনিই সাহায্য করবেন।

৫.শক্তি সামর্থ থাকলে কুফ্রী, র্শিকী ও যাবতীয় হারাম কাজ জোড় পূর্বক বন্ধ করে দিতে হবে। না পারলে মুখে বলতে হবে। অন্যথায় অন্তত: অন্তরে ঘৃনা করে সরে পড়তে হবে।

৬. দ্বীনী প্রত্যেক কাজে ছবরের সাথে হিকমত অবলম্বন করতে হবে। এতে সফলতা বয়ে আনে।

মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি আমাদেরকে ও বিশ্ববাসীকে সমস্ত কুফ্রী, র্শিকী, বিদয়াত, বেশরা’, হারাম, নাজায়িয ও যাবতীয় নাফরমানীমূলক কাজ থেকে হিফাযত করুন এবং সন্তুষ্টি মূলক কাজ গুলো করার তাওফীক্ব হাদিয়া করুন। আমীন।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর : ৭

وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَا ابْرَاهِيمَ. اذْ قَالَ لِابِيهِ وَقَوْمِه مَا تَعْبُدُونَ. قَالُوا نَعْبُدُ اصْنَامًا فَنَظَلُّ لَهَا عَاكِفِينَ. قَالَ هَلْ يَسْمَعُونَكُمْ اذْ تَدْعُونَ. اوْ يَنفَعُونَكُمْ اوْ يَضُرُّونَ. قَالُوا بَلْ وَجَدْنَا ابَاءنَا كَذلِكَ يَفْعَلُونَ. قَالَ افَرَايْتُم مَّا كُنتُمْ تَعْبُدُونَ. انتُمْ وَابَاؤُكُمُ الْأَقْدَمُونَ. فَانَّهُمْ عَدُو لِّى الَّا رَبَّ الْعَالَمِينَ. الَّذِى خَلَقَنِى فَهُوَ يَهْدِينِ. وَالَّذِى هُوَ يُطْعِمُنِى وَيَسْقِينِ. وَاذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ. وَالَّذِى يُمِيتُنِى ثُمَّ يُحْيِينِ. (سورة الشعراء ۶۹-۸۱ الايات)

অর্থ : আর আপনি তাদেরকে হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার বৃত্তান্ত শুনিয়ে দিন। যখন তিনি উনার চাচা (আযর) ও উনার সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা কিসের উপাসনা কর? তারা বললো, মূর্তি পূজা করি এবং সারাদিন নিষ্ঠার সাথে এদেরই পূজা করি। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তোমরা প্রার্থনা করলে তারা শোনে কি? অথবা তারা কি তোমাদের উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারে? তারা বললো : না, তবে আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এরূপ করতে দেখেছি। তিনি বললেন, তোমরা কি ভেবে দেখেছ যে, তোমরা কাদের পূজা করছ? তোমরা এবং তোমাদের পিতৃপুরুষরা; তারা সকলেই আমার শত্রু, জগৎসমূহের পালনকারী তিনি ব্যতীত। যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন তিনিই আমাকে পথ প্রদর্শন করেন। তিনিই আমাকে খাদ্য ও পানীয় দান করেন। যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন। তিনিই আমার বিছাল শরীফ ঘটাবেন, অতঃপর পুনর্জীবন দান করবেন। (পবিত্র সূরাতুশ শুয়ারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৯-৮১)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের বিশদ তাফসীর অসংখ্য তাফসীরের কিতাব সমূহে বর্ণিত আছে। যাতে প্রাণীর ছবি, মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য ইত্যাদী অনুশীলন করা হারাম, কুফ্রী ও র্শিক হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।

নি¤েœ তাফসীর উনার কিতাব থেকে একখানা ইবারত অর্থসহ তুলে ধরা হলো-

(৯৯৫)

{واتل} اقرا {عَلَيْهِمْ} على قومك قريش {نَبَا ابْرَاهِيمَ} خبر ابراهيم عليه السلام فى القران {اذْ قَالَ لابِيهِ} ازر {وَقَوْمِه} عبدة الاوثان {مَا تَعْبُدُونَ قَالُواْ نَعْبُدُ اصْنَاماً} الهة {فَنَظَلُّ لَهَا عَاكِفِينَ} فنصير لها عابدين مقيمين على عبادتها {قَالَ} لهم ابراهيم عليه السلام {هَلْ يَسْمَعُونَكُمْ اِذْ تَدْعُونَ} يقول هل يجيبونكم الالهة اذا دعوتموهم {اوْ يَنفَعُونَكُمْ} في معايشكم اذا اطعتموهم {اوْ يَضُرُّونَ} فى معايشكم اذا عصيتموهم {قَالُواْ} لا {بَلْ وَجَدْنَا} ولكن وجدنا {ابَاءَنَا كَذلِكَ يَفْعَلُونَ} يعبدونها فنحن نعبدها نقتدى بهم {قَالَ} ابراهيم عليه السلام {اَفَرَاَيْتُمْ مَّا كُنتُمْ تَعْبُدُونَ أَنتُمْ وَابَاؤُكُمُ الاقدمون} وما كان يعبد اباؤكم الاولون {فَانَّهُمْ عَدُوّلى} تبرا منهم {الاَّ رَبَّ العالمين} الا من كان منهم يعبد رب العالمين {الذى خَلَقَنِى} من النطفة اى النور {فَهُوَ يَهْدِينِ} يحفظنى على الدين ويرشدنى الى الحق والهدى {والذى هُوَ يُطْعِمُنِى} يرزقنى ويشبعنى اذا جعت {وَيَسْقِينِ} يروينى اذا عطشت {وَاذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ} من المرض اذا مرضت {والذي يُمِيتُنِى} فى الدنيا {ثُمَّ يُحْيِينِ} يوم القيامة. (تنوير المقباس من تفسير ابن عباس رضى الله عنه المتوفى : ۶۸ هـجرى سورة الشعراء ۶۹-۸۱ الايات جمعه حضرت علامة محمد بن يعقوب الفيروز آبادى رحمة الله عليه المتوفى : ۸۱۷ هـجرى)

অর্থ : (আপনি তাদের নিকট বর্ণনা করে শুনিয়ে দিন) আপনার সম্প্রদায় কুরাইশদের নিকট বলে দিন (হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার বৃত্তান্ত) পবিত্র কুরআন মাজীদ উনাতে উল্লিখিত হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে বর্ণনা গুলো (যখন তিনি উনার চাচা) আযর (এবং উনার সম্প্রদায়কে বললেন) মূর্তিপূজারীদেরকে বললেন (তোমরা কিসের ইবাদত কর? তারা বললো, আমরা প্রতিমার পূজা করি) তাদেরকে উপাস্য মনে করে (এবং আমরা নিষ্ঠার সাথে সেগুলোরই পূজায় রত থাকি) আমরা সেগুলোর উপাসনা করে থাকি এবং আজীবন সেগুলোর উপাসনায় অবিচল থাকব। (তিনি বললেন,) হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বললেন, (তোমরা প্রার্থনা করলে তারা কি শোনে?) অর্থাৎ তোমরা যদি তাদেরকে ডাক তোমাদের উপাস্যগুলো কি তখন তোমাদের ডাকে সাড়া দেয়? (অথবা সেগুলো কি তোমাদের উপকার করে?) তোমরা তাদের আনুগত্য করলে, তোমাদের জীবন যাপনে তারা কি তোমাদের কোন উপকার করতে পারে? (কিংবা অপকার করতে পারে?) তোমাদের জীবন যাপনে, যদি তোমরা সেগুলোর অবাধ্য হও? (তারা বলল) না, (বরং আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে আমরা এরূপই করতে দেখেছি) তারা এগুলোর উপাসনা করত, তাদের অনুসরণে আমরাও সেগুলোর উপাসনা করছি। (তিনি বললেন) হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, (তোমরা এবং তোমাদের অতীত পিতৃপুরুষেরা কি ভেবে দেখেছ সেগুলো সম্পর্কে, তোমরা যার পূজা করছ?) তোমাদের পূর্ব পুরুষেরা কি ভেবে দেখেছে তারা যেগুলোর ইবাদত করেছে সে ব্যাপারে? (তোমরা ও তোমাদের পূর্বপুরুষরা সবাই আমার শত্রু,) এতে তিনি ওগুলোর সাথে সম্পর্ক হীনতার ঘোষণা দিলেন, (জগতসমূহের প্রতিপালক ব্যতীত,) তাদের মধ্যে যারা জগতসমূহের প্রতিপালক উনার ইবাদত করে তারা ব্যতীত। (যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন) পবিত্র নুতফা অর্থাৎ নূর মুবারক থেকে, (তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন করেন,) পবিত্র দীন উনার উপর অবিচল থাকতে হিফাযত করেন এবং আমাকে সত্য ও হিদায়াতের দিকে পথপ্রদর্শন করেন। (যিনি আমাকে খাদ্য দান করেন,) আমি ক্ষুধার্ত হলে আমাকে খাদ্য দান করেন (এবং আমাকে পানীয় পান করান) আমি পিপাসীত হলে পানীয় পান করান। (এবং রোগাক্রান্ত হলে তিনিই আমাকে রোগমুক্ত করেন,) রোগ থেকে। (তিনি আমার বিছাল শরীফ ঘটাবেন,) দুনিয়াতে (তারপর পুনর্জীবন দান করবেন,) কিয়ামতের দিন। (তানবীরুল মাক্ববাস মিন তাফসীরে ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বিছাল শরীফ ৬৮ হিজরী পবিত্র সূরাতুশ্ শুয়ারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৯-৮১ সংকলক : হযরত আল্লামা মুহম্মদ বিন ইয়া’কূব ফিরোজাবাদী ওফাত : ৮১৭ হিজরী)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর : ৮

وَابْرَاهِيم اذْ قَالَ لِقَوْمِه اعْبُدُوا الله وَاتَّقُوهُ ذلِكُمْ خَيْر لَّكُمْ ان كُنتُمْ تَعْلَمُونَ اِنَّمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللهِ اَوْثَانًا وتَخْلُقُونَ افْكًا انَّ الَّذِينَ تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللهِ لَا يَمْلِكُونَ لَكُمْ رِزْقًا فَابْتَغُوا عِندَ اللهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَه الَيْهِ تُرْجَعُونَ وَان تُكَذّبُوا فَقَدْ كَذَّبَ أُمَم مّن قَبْلِكُمْ وَمَا عَلَى الرَّسُولِ اِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِيْنُ. (سورة العنكبوت ۱۶-۱۸ الايات)

অর্থ : স্মরণ করুন! হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কথা। যখন তিনি উনার সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত কর এবং উনাকেই ভয় কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা উপলব্ধি কর। তোমরা তো মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত বাদ দিয়ে শুধু মূর্তি পূজাই করছো এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছো। তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার পরিবর্তে যাদের উপাসনা করছো, তারা তো তোমাদের রিযিকের মালিক নয়। কাজেই, মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে রিযিক তালাশ কর, উনারই ইবাদত কর এবং উনার প্রতি শুকরিয়া কর। তোমরা উনার নিকটই প্রত্যাবর্তিত হবে। তোমরা যদি মিথ্যা মনে কর তবে তোমাদের পূর্ববর্তীরাও তো মিথ্যা মনে করেছিল। স্পষ্টভাবে পয়গাম পৌঁছে দেয়াই তো হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাদের দায়িত্ব। (পবিত্র সূরাতুল আনকাবূত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬-১৮)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের বিশদ তাফসীর অসংখ্য তাফসীরের কিতাব সমূহে বর্ণিত আছে। যাতে প্রাণীর ছবি, মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য ইত্যাদী অনুশীলন করা হারাম, কুফ্রী ও র্শিক হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।

নি¤েœ পবিত্র তাফসীর শরীফ উনার কিতাব থেকে কিছু ইবারত অর্থসহ তুলে ধরা হলো-

(৯৯৬)

قوله عز وجل : {وابراهيم} يعنى : ارسلنا ابراهيم عليه السلام عطفًا على قوله : “وَلَقَدْ ارْسَلْنَا نُوحًا” ويقال : معناه واذكر ابراهيم عليه السلام {اذْ قَالَ لِقَوْمِه اعبدوا الله واتقوه} يعنى : وحدوا الله عز وجل واتقوه يعنى : اخشوه ولا تعصوه {ذلكم خَيْر لَّكُمْ} يعنى : التوحيد وعبادة الله عز وجل خير من عبادة الاوثان {ان كُنتُمْ تَعْلَمُونَ} . قوله عز وجل : {انَّمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ الله اوثانا} يعنى : اصناماً {وَتَخْلُقُونَ افْكاً} يعنى : تعملونها بايديكم ، ثم يقولون انها الهة ويقال تتخذونها الهة كذباً ثم قال : {انَّ الذين تَعْبُدُونَ مِن دُونِ الله} وهى الاصنام {لاَ يَمْلِكُونَ لَكُمْ رِزْقاً} يعنى : لا يقدرون ان يعطوكم مالاً، ولا يقدرون ان يرزقوكم {فابتغوا عِندَ الله الرزق} يعنى : الله عز وجل ، هو الذى يملك رزقكم ، فاطلبوا الرزق من الله عز وجل : {واعبدوه واشكروا لَه} اى : وحدّوه واشكروا له فى النعم ، فان مصيركم اليه {الَيْهِ تُرْجَعُونَ} بعد الممات . قال الله عز وجل للنبى صلى الله عليه وسلم : قل لاهل مكة {وَان تُكَذّبُواْ} بما اخبرتكم من قصة نوح وابراهيم عليهما السلام {فَقَدْ كَذَّبَ اُمَم مّن قَبْلِكُمْ} يعنى : كذبوا رسلهم {وَمَا عَلَى الرسول الا البلاغ المبين} يعنى : الا ان يبلغ الرسالة، ويبين امر العذاب. ويقال : الا ان يبلغ الرسالة، ويبين مراد الرسالة. (بحر العلوم “تفسير السمرقندى” سورة العنكبوت ۱۶-۱۸ الايات المؤلف : حضرت العلامة ابو الليث نصر بن محمد بن احمد بن ابراهيم السمرقندى الحنفى رحمة الله عليه المتوفى : ۳۷۵ هجرى)

 অর্থ : মহান আল্লাহ তায়ালা আয্যা ওয়া জাল্লা উনার বানী মুবারক : (স্মরণ করুন! হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কথা,) অর্থাৎ আমি হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে প্রেরণ করেছিলাম। এ বানী মুবারক যেন ঐ আয়াত শরীফ উনার প্রতি আত্ফ হয়েছে, যেখানে মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আর আমি হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনাকে প্রেরণ করেছিলাম।’ এ ব্যাখ্যার অর্থ হলো: আপনি হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কথা আলোচনা করুন। (যখন তিনি উনার সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত কর এবং উনাকেই ভয় কর।) মহান আল্লাহ তায়ালা আয্যা ওয়া জাল্লা উনাকে একক হিসেবে জেনে একনিষ্ঠভাবে উনার ইবাদত কর এবং উনাকে ভয় করো, আর কখনো উনার নাফরমানী করো না। (এটাই তোমাদের জন্য উত্তম,) অর্থাৎ পবিত্র তাওহীদ উনার প্রতি বিশ্বাস এবং মহান আল্লাহ তায়ালা আয্যা ওয়া জাল্লা উনার ইবাদত করা প্রতিমার পূজা করা হতে উৎকৃষ্ট। (যদি তোমরা উপলব্ধি কর।)

মহান আল্লাহ তায়ালা আয্যা ওয়া জাল্লা উনার বানী মুবারক : (তোমরা তো মহান আল্লাহ পাক উনাকে বাদ দিয়ে শুধু মূর্তি পূজাই করছো) অর্থাৎ প্রতিমা, প্রতিকৃতি, প্রানীর ছবি, ভাস্কর্য ম্যানিকিন, পুতুল ইত্যাদীর পূজা করছ। (এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছো।) অর্থাৎ তোমরা এগুলোকে নিজ হাতেই তৈরী র্কছ। অতপর তারা বলে যে, এগুলো ইলাহ্ বা মা’বূদ। আরো বলা হয় যে, কাফির মুশরিকরা মূর্তি গুলোকে মা’বূদ হিসেবে গ্রহণ করার কারণে এগুলোকে মিথ্যার অনুশীলন বলা হয়েছে। (তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার পরিবর্তে যাদের উপাসনা করছো,) তারা হলো মূর্তি,প্রতিমা, প্রতিকৃতি, ভাস্কর্য, পুতুল, ম্যানিকিন, প্রাণীর ছবি ইত্যাদী। (তারা তো তোমাদের রিযিকের মালিক নয়।) অর্থাৎ তারা তোমাদেরকে কোন প্রকার মাল-সম্পদ প্রদান করার ক্ষমতা রাখেনা এবং তোমাদেরকে রিযিক দেয়ারও শক্তি রাখেনা। (কাজেই, মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে রিযিক তালাশ কর,) অর্থাৎ মহান আল্লাহ তায়ালা আয্যা ওয়া জাল্লা তিনিই তোমাদের রিযিকের মালিক, অতএব মহান আল্লাহ তায়ালা আয্যা ওয়া জাল্লা উনার কাছেই রিযিক চাও। (উনারই ইবাদত কর এবং উনার প্রতি শুকরিয়া কর।) অর্থাৎ উনার তাওহীদে বিশ্বাস করো এবং উনার নিয়ামত মুবারকসমূহের যথাযথ শুকরিয়া করো। নিশ্চয়ই উনার নিকটই তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (তোমরা উনার নিকটই প্রত্যাবর্তিত হবে।) তোমাদের মঊত হওয়ার পর।

মহান আল্লাহ তায়ালা আয্যা ওয়া জাল্লা তিনি উনার হাবীব নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লক্ষ্য করে বলেন : আপনি মক্কা শরীফ উনার অধিবাসীদেরকে বলুন, (তোমরা যদি মিথ্যা মনে কর) যা আমি তোমাদেরকে হযরত নূহ আলাইহিস সালাম ও হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাদের ঘটনা বর্ণনা করেছি। (তবে তোমাদের পূর্ববর্তীরাও তো মিথ্যা মনে করেছিল।) অর্থাৎ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে তারা মিথ্যা বলেছিল। (স্পষ্টভাবে পয়গাম পৌঁছে দেয়াই তো হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের দায়িত্ব।) অর্থাৎ উনারা উনাদের প্রতি নাযিলকৃত রিসালাত পৌঁছে দিয়েছেন এবং আযাবের ব্যাপারেও স্পষ্ট বলে দিয়েছেন। বলা হয় যে, এখানে রিসালত দ্বারা স্পষ্টভাবে রিসালাত পৌঁছে দেয়াকে বুঝানো হয়েছে। (বাহরুল্ উলূম ‘তাফসীরুস্ সামারকান্দী’ পবিত্র সূরাতুল আনকাবূত শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬-১৮ মুছান্নিফ: হযরত আল্লামা আবুল লাইছ নাছ্র বিন মুহাম্মদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওফাত: ৩৭৫ হিজরী)

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর : ৯

وَقَالَ انمَا اتَّخَذْتُم مّن دُونِ اللهِ اوْثَانًا مَّوَدَّةَ بَيْنِكُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ثُمَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَكْفُرُ بَعْضُكُم بِبَعْضٍ وَيَلْعَنُ بَعْضُكُم بَعْضًا وَمَاْوَاكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُم مّن نَّاصِرِينَ. (سورة العنكبوت ۲۵ الاية)

অর্থ : হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ  আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তোমরা তো মহান আল্লাহ পাক উনার পরিবর্তে মূর্তিগুলোকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছ, পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্বের খাতিরে। পরে ক্বিয়ামতের দিন তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং পরস্পর পরস্পরকে লা’নত দিবে। তোমাদের শেষ আবাস জাহান্নামে এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী নেই। (পবিত্র সূরাতুল আনকাবূত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৫)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের বিশদ তাফসীর অসংখ্য তাফসীরের কিতাব সমূহে বর্ণিত আছে। যাতে প্রাণীর ছবি, মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য ইত্যাদী অনুশীলন করা হারাম, কুফ্রী ও র্শিক হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।

নি¤েœ পবিত্র তাফসীর উনার কিতাব থেকে একখানা ইবারত অর্থসহ তুলে ধরা হলো-

(৯৯৭-১০১৫)

{وَقَالَ انَّمَا اتَّخَذْتُمْ مِنْ دُونِ اللهِ اوْثَانًا مَوَدَّةَ بَيْنِكُمْ فِى الْحَيَاةِ الدُّنْيَا} يقول لقومه مقرِّعا لهم وموبخا على سوء صنيعهم، فى عبادتهم الاوثان: انما اتخذتم هذه لتجتمعوا على عبادتها فى الدنيا، صداقة والفة منكم، بعضكم لبعض فى الحياة الدنيا. وهذا على قراءة من نصب مَوَدَّةَ بَيْنِكُمْ ، على انه مفعول له، واما على قراءة الرفع فمعناه: انما اتخاذكم هذا يُحَصّل لكم المودة فى الدنيا فقط {ثُمَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ} ينعكس هذا الحال، فتبقى هذه الصداقة والمودة بَغْضَة وشنانا، فى {يَكْفُرُ بَعْضُكُمْ بِبَعْضٍ} اى: تتجاحدون ما كان بينكم، {وَيَلْعَنُ بَعْضُكُمْ بَعْضًا} اى: يلعن الاتباع المتبوعين، والمتبوعون الاتباع، “كُلَّمَا دَخَلَتْ امَّة لَعَنَتْ اخْتَهَا” [الاعراف: ۳۸]، وقال تعالى: “الاخِلاءُ يَوْمَئِذٍ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ الا الْمُتَّقِينَ” [الزخرف: ۶۷]، { وَمَاْوَاكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُمْ مِنْ نَاصِرِينَ} اى: ومصيركم ومرجعكم بعد عرصات القيامة الى النار، وما لكم من ناصر ينصركم، ولا منقذ ينقذكم من عذاب الله. وهذا حال الكافرين، فاما المؤمنون فبخلاف ذلك. (تفسير القران العظيم “تفسير ابن كثير” سورة العنكبوت ۲۵ الاية المؤلف : حضرت العلامة ابو الفداء اسماعيل بن عمر بن كثير القرشى الدمشقى الشافعى الاشعرى رحمة الله عليه الولادة : ۷۰۰ هجرى  المتوفى : ۷۷۴ هجرى)

অর্থ : (হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ  আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তোমরা তো মহান আল্লাহ পাক উনার পরিবর্তে মূর্তিগুলোকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছ, পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্বের খাতিরে।) আর পারস্পারিক সেই ভালোবাসার কারণেই তোমরা প্রতিমা পূজায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছো। মাওয়াদ্দাহ শব্দের মীম বর্ণে যবর দিলে এই অর্থ হয়, আর মুওয়াদ্দাহ শব্দের মীম বর্ণে পেশ দিলে অর্থ হয়- তোমরা প্রতিমা পূজা র্কছ এই কারণে যে, যাতে তোমাদের পারস্পারিক বন্ধুত্ব তৈরী হয়। (পরে ক্বিয়ামতের দিন) তোমাদের বন্ধুত্বের এই অবস্থা বিপরীত হবে এবং বন্ধুত্ব শত্রুতায় পরিনত হবে। (তারা একে অপরকে অস্বীকার করবে) অর্থাৎ দুনিয়াতে তাদের পরস্পরের মধ্যে কুফরী-র্শিকের ব্যাপারে যে বন্ধুত্ব ছিল এটাকে তারা সেদিন অস্বীকার করবে। (এবং পরস্পর পরস্পরকে লা’নত দিবে।) অর্থাৎ তাদের মধ্য হতে যারা অনুসারী তারা নেতাদেরকে অভিশাপ দিবে আর নেতারাও অনুসারীদেরকে অভিশাপ দিবে। যেমনটি ইরশাদ মুবারক হয়েছে : “যখনই একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে, তখনই তারা তাদের অনুরূপ অন্যদলকে অভিশাপ করতে থাকবে।” পবিত্র সূরাতুল্ আ’রাফ শরীফ ৩৮ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “সকল বন্ধুরাই সেদিন অর্থাৎ কিয়ামতের দিন একে অন্যের শত্রু হবে। কিন্তু যারা মুত্তাকী-পরহেযগার তারা সেদিন পরস্পর বন্ধুত্ব রক্ষা করে চলবেন।” পবিত্র সূরাতুয্ যুখরুফ শরীফ ৬৭ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ। (তোমাদের শেষ আবাস জাহান্নামে এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী নেই।) অর্থাৎ কিয়ামত দিবসে তোমাদের বিচার হবার পর সোজা তোমাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তখন জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করার জন্য কেউ তোমাদের সাহায্যের জন্য আসবে না। এটা হবে কাফিরদের অবস্থা। কিন্তু মু’মিনদের অবস্থা হবে এর থেকে আলাদা। (তাফসীরুল্ কুরআনিল্ আযীম ‘তাফসীরে ইবনু কাছীর’ সূরাতুল আনকাবূত : আয়াত শরীফ ২৫ মুয়াল্লিফ: হযরত আল্লামা আবুল ফিদা ইসমাঈল বিন উমর ইব্ন কাছীর আল-কুরাশী আদ-দামিশকী শাফিয়ী আশয়ারী রহমতুল্লাহি আলাইহি জন্ম : ৭০০ হিজরী ওফাত : ৭৭৪ হিজরী)

ভাষার তারতম্যসহ অনুরূপ ব্যাখ্যাসমূহ তাফসীরুল্ মাতুরীদী শরীফ (তা’বীলাতু লিআহলিস্ সুন্নাহ), তাফসীরুত্ ত্ববারী শরীফ, তাফরীরুল্ কুশাইরী শরীফ, তাফরীরুল্ জীলানী শরীফ, তাফসীরুল্ জালালাইন শরীফ, আদ-দুররুল্ মানছূর শরীফ, তাফসীরুল্ বাইযাবী শরীফ, তাফরীরুল্ কুরতুবী শরীফ, তাফসীরুল্ মাযহারী (তাফসীরুল পানীপথী), তাফসীরে মাদারিকুত্ তানযীল শরীফ (তাফসীরুন্ নাসাফী), আত-তাফসীরুল্ কবীর শরীফ (তাফসীরুর রাযী), তাফসীরে রূহুল্ মায়ানী শরীফ (তাফসীরুল আলূসী), তাফসীরে রূহুল্ বয়ান শরীফ (তাফসীরুল হাক্কী), তাফরীরুল্ খাযিন শরীফ, তাফসীরুল্ বাগবী শরীফ, তাফসীরুন্ নীসাবূরী শরীফ, যাদুল্ মাসীর লিল্ জাওযী শরীফ, তাফসীরুল্ মাজিদী লিদ্ দরিয়াবাদী শরীফ ইত্যাদী তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।

উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ ও তাফসীর গ্রন্থ উনাদের তিনখানা ইবারত ও তার অনুবাদ থেকে যেসকল বিধান ও বিষয় প্রমাণিত হলো তা হচ্ছে-

১.ইলাহ বা উপাস্য তিনিই যিনি প্রার্থনা শোনেন, উপকার করেন, ক্ষতি থেকে রক্ষা করেন, ইচ্ছা করলে নাফরমানকে শাস্তি দিতে পারেন, সৃষ্টি করেন, পথ প্রদর্শন করেন, খাদ্য ও পানীয় দান করেন, রোগাক্রান্তকে আরোগ্য দান করেন, মঊত ঘটান, ইন্তিকালের পর ক্ববরে জীবন দান করেন এবং তিনি যা ইচ্ছা তা-ই করে থাকেন।

২. মূর্তি, প্রতিমা, প্রতিকৃতি, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন, পুতুল, প্রাণীর ছবি ইত্যাদী উপাস্য হওয়ার, ঘরে আলমারিতে থাকার, সঙ্গে থাকার এবং সম্মান পাওয়ার কোনই যোগ্যতা রাখে না। কারণ এগুলো নিথর-নিস্তব্দ, শক্তিহীন, অকেজো ও বাকশক্তিশুন্য। তাই এগুলোর পূজা করা, সম্মান করা, দেখা, ঘরে রাখা, দেখতে সাহায্য করা, এগুলো বিস্তারকারী যন্ত্র ঘরে রাখা, এগুলোর চর্চা করা ইত্যাদী সবই হারাম কুফ্রী র্শিক ও বড় ধরনের নাফরমানী।

৩. মূর্তি পূজা করা, প্রাণীর ছবি তোলা, আঁকা, দেখা ইত্যাদী অনুশীলন করার অর্থই হলো মহান আল্লাহ তায়ালা উনার প্রতি অবিশ্বাস করা এবং উনার সাথে শরীক করা।

৪. মূর্তি, প্রতিমা, প্রতিকৃতি, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন, পুতুল, প্রাণীর ছবি ইত্যাদীর পূজা করা, সম্মান করা, দেখা, ঘরে রাখা, দেখতে সাহায্য করা, এগুলো বিস্তারকারী যন্ত্র ঘরে রাখা, এগুলোর চর্চা করা ইত্যাদী সবই হারাম কুফ্রী র্শিক ও বড় ধরনের নাফরমানী। এগুলোর অনুশীলনকারী ব্যক্তি জাহান্নামী। ক্বিয়ামতের দিন এদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবে না।

৫. মূলত: মূর্তি, প্রতিমা, প্রতিকৃতি, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন, পুতুল, প্রাণীর ছবি ইত্যাদীর অনুশীলন করা হারাম, কুফ্রী ও র্শিক। এগুলোকে সম্মান দেখানোর অর্থ হলো মহান আল্লাহ তায়ালা উনার পরিবর্তে অন্য ইলাহ বা উপাস্যকে গ্রহণ করা। নাঊযু বিল্লাহ।

অতএব সকল মু’মিন-মুসলমান ইনসান-জিন পুরুষ-মহিলা সকলের দায়িত্ব কর্তব্য হলো এই যে, উল্লেখিত ও যাবতীয় হারাম, কুফ্রী, র্শিক ও নাফরমানীমূলক কাজ থেকে দূরে থাকা। আর মহান আল্লাহ সুবহানাহূ তায়ালা উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি-রেযামন্দী মুবারক অর্জন করার কোশেশ করা।

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৯

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০