বণী ইসরাঈলের এক ব্যক্তি যদি দুই শত বছর সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করার পরেও একবার মাত্র নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক-এ বুছা দেয়ার কারণে তার জিন্দেগীর সমস্ত গুণাহখতাগুলো ক্ষমা হয়ে যায়, তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়, তাহলে এই উম্মত যদি সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে, উনার সম্মানিত ওজূদ পাক মুবারক উনার সম্মানার্থে সম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে, তাহলে এই উম্মত কি নিয়ামত মুবারক লাভ করবে?

সংখ্যা: ২৫৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

كَانَ فِىْ بَنِىْ اِسْرَائِيْلَ رَجُلٌ عَصَى الله مِائَتَـىْ سَنَةٍ ثُمَّ مَاتَ فَاَخَذُوْا بِرِجْلِهٖ فَأَلْقَوْهُ عَلٰى مَزْبَلَةٍ فَاَوْحَى الله اِلـى حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنِ اخْرُجْ فَصَلّ عَلَيْهِ. قَالَ يَا رَبّ بَنُوْ اِسْرَائِيْلَ شَهِدُوْا اَنَّهٗ عَصَاكَ مِائَتَىْ سَنَةٍ فَاَوْحَى الله اِلَيْهِ نَعَمْ هٰكَذَا كَانَ اِلَّا اَنَّهٗ كَانَ كُلَّمَا نَشَرَ التَّوْرَاةَ وَنَظَرَ اِلَـى اسْمِ سَيّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبَّلَهٗ وَوَضَعَهٗ عَلـى عَيْنَيْهِ وَصَلّـى عَلَيْهِ فَشَكَرْتُ لَهٗ ذٰلِكَ وَغَفَرْتُ ذُنُوْبَهٗ وَزَوَّجْتُهٗ سَبْعِيْنَ حَوْرَاءَ.

   অর্থ: “বনী ইসরাঈলে একজন ব্যক্তি ছিলো।  (সে দুই শত বছর হায়াত পেয়েছিলো এবং) সে দুই শত বছর মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করেছিলো। তারপর সে ইন্তেকাল করলো। তখন লোকজন তার পায়ে ধরে তাকে টেনে হেঁচড়ে গোবর পূর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করলো। আর যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত ওহী মুবারক করলেন যে, আপনি বের হোন, যান, (উমুক জায়গায় এক ব্যক্তি ইন্তেকাল করেছে। আপনি) ঐ ব্যক্তির (গোসল, দাফন, কাফনের ব্যবস্থা করুন এবং তার) জানাযার নামায পড়–ন। হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী! বনী ইসরাঈলরা সাক্ষী দিয়েছে যে, নিশ্চয়ই এই ব্যক্তি (দুই শত বছর হায়াত পেয়েছে এবং) দুই শত বছর আপনার নাফরমানী করেছে। (কেউ তাকে কখনও কোন নেক কাজ করতে দেখিনি। তাকে সবাই ঘৃণা করে। যার কারণে তারা তার লাশ গোবর পূর্ণ স্থানে ফেলে রেখেছে।)

তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক করে বললেন, হ্যাঁ, সে এরূপই ছিলো। তবে সে (একবার তাওরাত শরীফ উনার একটা নুখসা পেয়েছিলো) তাওরাত শরীফ উনার নুসখা মুবারক খুলে যখনই সে আমার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক দেখেছিলো, তখনই সে মুহব্বতের সাথে খুশি প্রকাশ করে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক ‘সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার মধ্যে (একবার মাত্র) বুছা দিয়েছিলো এবং মুহব্বতের সাথে খুশি প্রকাশ করে উনার নাম মুবারক তার দুই চোখে লাগিয়েছিলো এবং উনার উপর সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করেছিলো। সুবহানাল্লাহ! এই কারণে আমি তাকে উত্তম প্রতিদান দান করি। সুবহানাল্লাহ! তার জীবনের সমস্ত গুণাহখতা গুলো ক্ষমা করে দেই এবং তার সাথে সত্তর জন হুরের বিবাহ দেই। সুবহানাল্লাহ!

অর্থাৎ তার উপর জাহান্নাম হারাম করে জান্নাত ওয়াজিব করে দেই এবং আপনার মতো একজন জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার জন্য তার গোসল, দাফন-কাফন করা এবং তার জানাযার নামায পড়া ফরয করে দিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ! (খছায়িছুল কুবরা ১/২৯, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৪১২, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/১৩৬, তাফসীরে দুররে মানছূর ৩/৫৭৯, রূহুল বয়ান ৭/১৮৫, তাফসীরে হাক্কী ১১/৬২, হিলইয়াতুল আউলিয়া ৪/৪২, বিদায়াহ-নিহায়াহ ৯/৩০২, শরহুয যারক্বানী ৮/৪০০, সিয়ারুছ ছালফিছ ছালিহীন, হিকায়াত ইত্যাদি)

এখন বলার বিষয় হচ্ছে, বণী ইসরাঈলের এক ব্যক্তি যদি দুই শত বছর হায়াত পেয়ে দুই শত বছরই সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করার পরেও মুহব্বতের সাথে খুশি প্রকাশ করে একবার মাত্র নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক-এ বুছা দেয়ার কারণে তার জিন্দেগীর সমস্ত গুণাহখতাগুলো ক্ষমা হয়ে যায়, তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়, জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার জন্য তার গোসল, দাফন-কাফন করা এবং তার জানাযার নামায পড়া ফরয করে দেয়া হয় এবং জান্নাতে তার সাথে সত্তর জন হুরের বিবাহ দেয়া হয়, তাহলে এই উম্মত যদি সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে, উনার সম্মানিত ওজূদ পাক মুবারক উনার সম্মানার্থে মুহব্বতের সাথে খুশি প্রকাশ করে মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে, তাহলে এই উম্মত কী নিয়ামত মুবারক লাভ করবে, কোন সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করবে? সুবহানাল্লাহ! মূলত, তা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী তা কস্মিনকালেও চিন্তা-কল্পনা করে মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে হাক্বীক্বীভাবে মুহব্বতের সাথে খুশি প্রকাশ করে সম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-আল্লামা মুহম্মদ আমীনুর রহমান

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং নিজেই সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেন

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুল ফারীক্বাইন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজেই নিজের বিলাদত শরীফ পালন করে খুশি প্রকাশ করেন

হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের খিলাফতকালে নাবিইয়ুর রহমাহ, নাজিইয়ুল্লাহ, নূরুম মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করেছেন এবং এ উপলক্ষে ব্যয় করার ফযীলতও বর্ণনা করেছেন

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেছেন

বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয হওয়ার প্রমাণ