মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পরেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাক্বাম মুবারক। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে উনাদের দায়িমীভাবে এমন এক মহাসম্মানিত নিসবত মুবারক রয়েছেন, যেখানে কারো কোনো স্থান সংকুলান হয় না

সংখ্যা: ২৭৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

لِـىْ مَعَ اللهِ وَقْتٌ لَا يَسْعٰنِـىْ فِيْهِ مَلَكٌ مُّقَرَّبٌ وَّلَا نَبِـىٌّ مُّرْسَلٌ.

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে আমার দায়িমীভাবে এমন এক মহাসম্মানিত নিসবত মুবারক রয়েছেন, যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান সংকুলান হয় না।” সুবহানাল্লাহ! (সিররুল আসরার, আল মিলাল ওয়ান নিহাল লিশ শাহ্রাস্তানী ২/১০২, রূহুল মা‘য়ানী ১৬/১৫১, তাফসীরে মাযহারী ১/১০৬০, তাফসীরে হাক্কী ৭/৪৬৭, রূহুল বায়ান ৩/৭৪, গ¦রাইবুল কুরআন ওয়া রগ্বাইবুল ফুরক্বান লিন নিসাবূরী ২/৮৭, জাম‘উল ওয়াসাইল ১/২১৫, ফাইদ্বুল ক্বাদীর ৪/৮, মিরক্বাত শরীফ ৪/১৬১০, আল জামি‘উছ ছগীর ১/৪২০, শরহুশ শিফা  ২/১৯২, আশ শাক্বাইকুন নু’মানিয়্যাহ্ ১/৪৭৬ ইত্যাদি)

এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দায়িমীভাবে এমন এক মহাসম্মানিত নিসবত মুবারক রয়েছেন, যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান সংকুলান হয় না। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় উনারা শুধু যিনি  খ্বালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পরেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

প্রথম প্রমাণ

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ طَلْقِ بْنِ عَـلِــىٍّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ سَـمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ لَوْ اَدْرَكْتُ وَالِدَىَّ اَوْ اَحَدَهُـمَا وَاَنَا فِـىْ صَلـٰوةِ الْعِشَاءِ وَقَدْ قَرَاْتُ فِيْهَا بِفَاتِـحَةِ الْكِتَابِ تُنَادِىْ يَا مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَاَجَبْتُهَا لَـبَّيْكِ.

অর্থ: “হযরত ত্বল্ক্ব ইবনে আলী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনেছি, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, যদি আমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনাকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদের দুজনকে অথবা উনাদের দুজনের একজনকে দুনিয়ার যমীনে পেতাম, আর আমি সম্মানিত ইশা উনার নামায (ফরয নামায) মুবারক-এ দাঁড়িয়ে সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ পাঠ করতে থাকতাম। এমতাবস্থায় উনারা যদি আমাকে এই বলে আহ্বান মুবারক করতেন, হে মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাহলে অবশ্যই অবশ্যই ওই (সম্মানিত ইশা উনার ফরয নামায মুবারক পড়া) অবস্থায় থেকেও (নামায ছেড়ে দিয়ে) আমি উনাদের মহাসম্মানিত আহ্বান মুবারক-এ সাড়া দিয়ে ইরশাদ মুবারক করতাম, লাব্বাইক, হে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম! হে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম! আমি উপস্থিত, হাযির।” সুবহানাল্লাহ!

অপর বর্ণনায় এসেছে-

لَوْ دَعَانِـىْ وَالِدَىَّ اَوْ اَحَدُهُـمَا وَاَنَا فِى الصَّلـٰوةِ لَاَجَبْتُهٗ

অর্থ: “যদি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা দুজন অথবা উনাদের দুজনের একজন আমাকে মহাসম্মানিত নামায (ফরয নামায) মুবারক আদায় করা অবস্থায় মহাসম্মানিত আহ্বান মুবারক করতেন, তাহলে আমি অবশ্যই অবশ্যই ওই (সম্মানিত ফরয নামায মুবারক পড়া) অবস্থায় থেকেও (সম্মানিত ফরয নামায ছেড়ে দিয়ে) উনাদের মহাসম্মানিত আহব্বান মুবারক-এ সাড়া দিতাম।” সুবহানাল্লাহ! (শুয়াবুল ঈমান ১০/২৮৪, দায়লামী শরীফ ৩/৩৪৫, জামিউল আহাদীছ ১৮/৭৪, কাশফুল খফা ২/১৬০, আল মাক্বাছিদুল হাসানাহ ১/৫৫১, কানযুল উম্মাল ১৬/৪৭০, জামউল জাওয়ামি’ ১৬৮/১৩, মাসালিকুল হুনাফা ফী হুকমি ঈমানি ওয়ালিদাইল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৩৭ পৃষ্ঠা, আল হাওই শরীফ ২/২৮১ ইত্যাদি)

স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে কায়িনাতবাসীকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার অর্থৎ উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এবং পবিত্রতা মুবারক কত বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্টভাবে ইরশাদ মুবারক করেছেন যে-

لَوْ اَدْرَكْتُ وَالِدَىَّ اَوْ اَحَدَهُـمَا وَاَنَا فِـىْ صَلـٰوةِ الْعِشَا ءِ وَقَدْ قَرَاْتُ فِيْهَا بِفَاتِـحَةِ الْكِتَابِ تُنَادِىْ يَا مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَاَجَبْتُهَا لَـبَّيْكِ.

অর্থ: “যদি আমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনাকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদের দুজনকে অথবা উনাদের দুজনের একজনকে দুনিয়ার যমীনে পেতাম, আর আমি সম্মানিত ইশা উনার নামায (ফরয নামায) মুবারক-এ দাঁড়িয়ে সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ পাঠ করতে থাকতাম। এমতাবস্থায় উনারা যদি আমাকে এই বলে সম্মানিত আহ্বান মুবারক করতেন, হে মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাহলে অবশ্যই অবশ্যই ওই (সম্মানিত ফরয নামায মুবারক পড়া) অবস্থায় থেকেও (সম্মানিত ফরয নামায ছেড়ে দিয়ে) আমি উনাদের সম্মানিত আহ্বান মুবারক-এ সাড়া দিয়ে ইরশাদ মুবারক করতাম, লাব্বাইক, হে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম! হে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম! আমি উপস্থিত, হাযির।” সুবহানাল্লাহ!

তাহলে এখান থেকে অত্যন্ত সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার অর্থৎ উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এবং পবিত্রতা মুবারক কত বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ! যেখানে সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা বেকারার-পেরেশান কিভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া যায়, কিভাবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ্ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি মুবারক) নেয়া যায়। আর সেখানে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেছেন, যদি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থৎ উনারা দুনিয়ার যমীনে যাহিরীভাবে অবস্থান মুবারক করতেন, আর উনারা উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত ফরয নামায মুবারক পড়া অবস্থায় আহ্বান মুবারক করতেন, তাহলে স্বয়ং যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ফরয নামায মুবারক ছেড়ে দিয়ে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানার্থে উনাদের সম্মানিত আহ্বান মুবারক-এ সাড়া দিতেন এবং বলতেন, লাব্বাইক, হে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপাবিত্র আব্বাজান আলাইহিস সালাম! হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম! আমি উপস্থিত, হাযির। সুবহানাল্লাহ!

তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থৎ উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান এবং পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি কত বেমেছাল, সেটা কি কায়িনাতের কেউ কখনও চিন্তা-ফিকির করে মিলাতে পারবে? কস্মিনকালেও পারবে না। এক কথায় উনারা শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন সমস্ত কিছুর অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পরেই উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে উনাদের দায়িমীভাবে এমন এক মহাসম্মানিত নিসবত মুবারক রয়েছেন, যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান সংকুলান হয় না। সুবহানাল্লাহ!

দ্বিতীয় প্রমাণ

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

১ নং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ

عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْـنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصّـِدِّيْقَةِ عَلَيـْهَا السَّلَامُ )سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيـْهَا السَّلَامُ( اَنَّهَا قَالَتْ كُنْتُ اَكُوْنُ نَائِمَةً وَّرِجْلَاىَ بَيْـنَ يَدَىْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يُصَلّـِـىْ مِنَ اللَّيْلِ فَاِذَا اَرَادَ اَنْ يَّسْجُدَ ضَرَبَ رِجْلَىَّ فَقَبَضْتُّهُمَا فَسَجَدَ.

অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঘুমিয়ে থাকতাম। আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) দুখানা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে থাকত। তিনি রাতে নামায মুবারক পড়তেন। যখন সিজদা মুবারক করতে চাইতেন, তখন তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দিয়ে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) সরিয়ে দিতেন। আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) সঙ্কোচিত করে নিতাম। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারক করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাঊদ শরীফ, মুস্তাখরজে আবী আওয়ানাহ শরীফ ১/১৮৯)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক সম্পর্কে অপর বর্ণনায় এসেছে-

২ নং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ

عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْـنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصّـِدِّيْقَةِ عَلَيـْهَا السَّلَامُ )سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيـْهَا السَّلَامُ( قَالَتْ كُنْتُ اَنَامُ بَيْـنَ يَدَىْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرِجْلَاىَ فِـىْ قِـبْلَتِهٖ فَاِذَا سَجَدَ غَمَزَنِـىْ فَقَبَضْتُّ رِجْلَىَّ وَاِذَا قَامَ بَسَطْـتُّهُمَا.

অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে ঘুমিয়ে থাকতাম আর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) দুখানা উনার সম্মানিত ক্বিবলা মুবারক বরাবর থাকতো। তাই তিনি যখন (রাতে নামায পড়ার সময়) সম্মানিত সিজদা মুবারক করতেন, তখন তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দিয়ে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) সরিয়ে দিতেন। আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) সঙ্কোচিত করে নিতাম। আর যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ক্বিয়াম মুবারক করতেন (সম্মানিত নামায মুবারক-এ দাঁড়াতেন), তখন আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) প্রসারিত করতাম।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুয়াত্ত্বা শরীফ, নাসায়ী শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ, মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার, আহকামুশ শরীয়াহ ২/১১৩, শরহুস সুন্নাহ শরীফ ২/৪৫৭, মুসনাদে সিরাজ ১/১৫৮, মুছান্নাফে আব্দির রাজ্জাক্ব ২/৩২, আস সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী ২/৩৯১, আল মুখতাছরুন নাছীহ ১/৩৪০, মুস্তাখরজে আবী আওয়ানাহ শরীফ ১/১৮৯ ইত্যাদি)

উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন রাতে সম্মানিত নামায মুবারক পড়তে উঠতেন, তখন উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) দুখানা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে থাকতো। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারক করার সময় উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) নিজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দিয়ে সরিয়ে দিতেন। উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) সঙ্কোচিত করে নিতেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ক্বিয়াম মুবারক করতেন, তখন উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) প্রসারিত করতেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পুণরায় সম্মানিত সিজদা মুবারক-এ যেতেন আবার উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) নিজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দিয়ে সরিয়ে দিতেন এবং উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) সঙ্কোচিত করে নিতেন। তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারক-এ যেতেন। এভাবেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত নামায মুবারক সম্পন্ন মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল মুহব্বত মুবারক, তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক উনার বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সুবহানাল্লাহ! যেখানে সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত সৃষ্টি বেকারার-পেরেশান কিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া যায়, কিভাবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) নেয়া যায়, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) নেয়া যায়, আর সেখানে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করার সময় উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) নিজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দিয়ে সরিয়ে সম্মানিত সিজদা মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! অথচ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে শুরু করে পৃথিবীর বুকে এমন কেউ নেই যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করবেন আর এমতাবস্থায় উনার পা উনার সম্মুখে থাকবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! যে ব্যক্তি এরূপ কল্পনাও করবে, সে সর্বশেষ স্তরের কাট্টা কাফির এবং চিরজাহান্নামী হবে।

আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত নামায মুবারক-এ স্বীয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দিয়ে কারো পা সরিয়ে দিয়ে সম্মানিত সিজদা মুবারক-এ যাবেন এটা তো প্রশ্নোই উঠে না। যদি তাই হয়, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক কত বেমেছাল তা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এই বেমেছাল সম্মানিত মুহব্বত মুবারক, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক উনার বিষয়টি বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যদিও সরাসরি উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার ক্ষেত্রে প্রকাশ পেয়েছেন, তথাপি অন্যান্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের ক্ষেত্রেও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল মুহব্বত মুবারক, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক উনার বিষয়টি হুবহু একই রকম, কোন পার্থক্য নেই। সুবহানাল্লাহ! কেউ যদি পার্থক্য সূচনা করে, তার ঈমান থাকবে না। তবে এক একজনের ক্ষেত্রে একেকভাবে তা প্রকাশ পেয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

যেমন বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে বেমেছাল মুহব্বত মুবারক, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক উনার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান এবং পবিত্রতা মুবারক উনাদের বিষয়টি কত বেমেছাল সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়টি কেউ কখনো চিন্তা-কল্পনা করে মিলাতে পারবে না। তবে এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পরেই উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে উনাদের দায়িমীভাবে এমন এক মহাসম্মানিত নিসবত মুবারক রয়েছেন, যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান সংকুলান হয় না। সুবহানাল্লাহ!

তৃতীয় প্রমাণ

১ নং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ قَتَادَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُـصَـلِّـىْ وَهُوَ حَامِلٌ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ بِنْتَ ذِى النُّوْرِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمَامَةَ بِنْتَ زَيْنَبَ بِنْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) فَاِذَا سَجَدَ وَضَعَهَا وَاِذَا قَامَ حَـمَلَهَا.

 অর্থ: “হযরত আবূ ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত বানাত, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বানাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতে যিন নূর আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ আলাইহাস সালাম) উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন নুবুওওয়াহ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘাড় মুবারক-এ) নিয়ে সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করতেন। সুবহানাল্লাহ! যখন তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারক করতেন, তখন উনাকে পাশে রেখে দিতেন। আবার যখন সম্মানিত ক্বিয়াম মুবারক করতেন, তখন পুনরায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন নুবুওওয়াহ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘাড় মুবারক-এ) তুলে নিতেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী, মুসলিম, মুয়াত্তা, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, মুসনাদে আহমদ ইত্যাদি)

২ নং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ قَتَادَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ بَيْنَا نَـحْنُ فِـى الْمَسْجِدِ جُلُوْسٌ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَـحْمِلُ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ بِنْتَ ذِى النُّوْرِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمَامَةَ بِنْتَ اَبِـى الْعَاصِ بْنِ الرَّبِيْعِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ)  وَاُمُّهَا اَلنُّوْرُ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَيْـرُ وَاَفْضَلُ بَنَاتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ زَيْنَبُ بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ( وَهِىَ صَبِيَّةٌ يَّـحْمِلُهَا عَلـٰى عَاتِقِهٖ فَصَلّٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهِىَ عَلـٰى عَاتِقِهٖ يَضَعُهَا اِذَا رَكَعَ وَيُعِيْدُهَا اِذَا قَامَ حَتّٰـى قَضٰى صَلَاتَهٗ يَفْعَلُ ذٰلِكَ بـِهَا.

অর্থ: “হযরত আবূ ক্বাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ-এ উপস্থিত থাকাকালে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতে যিন নূর আলাইহাস সালাম উনাকে নিয়ে আমাদের নিকট সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন, উনার মহাসম্মানিত আম্মাজান ছিলেন আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! এ সময় (সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতে যিন নূর আলাইহাস সালাম) তিনি দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কাঁধ মুবারক-এ নিয়ে আসেন এবং উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কাঁধ মুবারক-এ নিয়েই সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন সম্মানিত রুকু মুবারক করতেন, তখন উনাকে পাশে রাখতেন। আর যখন সম্মানিত ক্বিয়াম মুবারক করতেন, তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কাঁধ মুবারক-এ তুলে নিতেন। এভাবেই তিনি উনার সম্মানিত নামায মুবারক শেষ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম, আবূ দাঊদ, নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ, ইবনে হিব্বান, শু‘য়াবুল ঈমান ইত্যাদি)

৩ নং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ كُنَّا نُصَلِّـىْ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعِشَاءَ فَاِذَا سَجَدَ وَثَبَ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ الثَّانِـىْ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْـحَسَنُ عَلَىْهِ السَّلَامُ) وَسَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ الثَّالِثُ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْـنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ) عَلَى ظَهْرِهٖ فَاِذَا رَفَعَ رَأْسَهٗ اَخَذَهُـمَا بِيَدِهٖ مِنْ خَلْفِهٖ اَخْذًا رَفِيْقًا فَيَضَعُهُمَا عَلَى الْاَرْضِ فَاِذَا عَادَ عَادَا حَتّٰـى قَضٰى صَلـٰوتَهٗ اَقْعَدَهُـمَا عَلـٰى فَخِذَيْهِ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত ইশা উনার নামায পড়ছিলাম। অতঃপর তিনি যখন সম্মানিত সিজদা মুবারক-এ গেলেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আত্বহার মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিঠ মুবারক) উনার উপর উঠে বসলেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত সিজদা মুবারক থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক) উঠালেন, তখন উভয়কে পেছন থেকে অত্যন্ত ¯েœহ মুবারক উনার সাথে আলতোভাবে ধরে যমীনে বসিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আবার সম্মানিত সিজদা মুবারক-এ গেলেন। উনারা দুজন পুনরায় উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আত্বহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিঠ মুবারক-এ) উঠে বসলেন। সম্মানিত নামায মুবারক শেষ করা পর্যন্ত উনারা দুজন এরূপ করে যাচ্ছিলেন। অতঃপর যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত নামায মুবারক শেষ করলেন, তখন উনাদের দুজনকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঊরু মুবারক উনার উপর বসালেন।” সুবহানাল্লাহ!

(মুসনাদে আহমদ ২/৫১৩, কানযুল উম্মাল ১৩/৬৬৯, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৯/১১১, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/১৩১, আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৬/২২৫ ইত্যাদি)

৪ নং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ

 عَنْ  حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْجُدُ فَيَجِىْءُ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ الثَّانِـىْ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْـحَسَنُ عَلَىْهِ السَّلَامُ) وَسَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ الثَّالِثُ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْـنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ) فَيَرْكَبُ عَلـٰى ظَهْرِهٖ فَيُطِيْلُ السُّجُوْدَ فَيُقَالُ يَا نَبِـىَّ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَطَلْتَ السُّجُوْدَ فَيَقُوْلُ ارْتَـحَلَنِـى ابْنِـىْ فَكَرِهْتُ اَنْ اُعْجِلَهٗ.

অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রায় সময়ই যখন সম্মানিত সিজদা মুবারক-এ যেতেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা এসে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আত্বহার মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিঠ মুবারক) উনার উপর উঠে বসতেন। এ কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারক লম্বা করতেন। ফলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলা হতো, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কি সম্মানিত সিজদা মুবারক লম্বা করলেন? তখন তিনি জবাবে ইরশাদ মুবারক করতেন, আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আত্বহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিঠ মুবারক-এ) আরোহন মুবারক করেছেন, তাই আমি (সম্মানিত সিজদা মুবারক থেকে) তাড়াতাড়ি উঠে যাওয়াটা পছন্দ করিনি।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আবী ইয়া’লা ৩/৩৮০, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৯/১৮১, আল মাত্বালিবুল আলীয়াহ ১৬/২১০)

৫ নং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ

عَنْ حَضْرَتْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يـَمْشِىْ عَلـٰى اَرْبَعَةٍ وَعَلـٰى ظَهْرِهٖ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ الثَّانِـىْ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْـحَسَنُ عَلَىْهِ السَّلَامُ) وَسَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ الثَّالِثُ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ  عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْـنُ  عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَهُوَ يَقُوْلُ نِعْمَ الْـجَمَلُ جَـمَلُكُمَا وَنِعْمَ الْعِدْلَانِ اَنْتُمَا.

অর্থ: “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট উপস্থিত হয়ে দেখলাম, তিনি দুই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাঁটু মুবারক এবং দুই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) উনাদের উপর ভর করে চলছেন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আত্বহার মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিঠ মুবারক) উনার উপর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা আরোহীত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি বলতেছিলেন, আপনাদের বাহন মুবারক কতই না উত্তম! আর আপনারা কতই না উত্তম আরোহী মুবারক!” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ৩/৫২, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৯/১১১, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ)

শুধু তাই নয়, স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে খুশি মুবারক করার জন্য উনাদেরকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আত্বহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিঠ মুবারক-এ) নিয়ে তিনি দুই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) এবং দুই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক-এ) চলতেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা বলতেন, মহাসম্মানিত নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! প্রত্যেকের ঘোড়ার তো  লাগাম রয়েছে, আমাদের ঘোড়ার লাগাম কোথায়? তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদেরকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চুল মুবারক) দিতেন, উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চুল মুবারক) ধরতেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা আরো বলতেন, মহাসম্মানিত নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! প্রত্যেকের ঘোড়া তো আওয়াজ করে থাকে, আমাদের ঘোড় তো আওয়াজ করে না। তখন তিনি উনাদেরকে খুশি মুবারক করার জন্য সম্মানিত আওয়াজ মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! আর উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আত্বহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিঠ মুবারক-এ) নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার একপ্রান্ত মুবারক থেকে অপর প্রান্ত মুবারক-এ যেতেন। সুবহানাল্লাহ!

এখন ফিকিরের বিষয়- যেখানে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি মুবারক) নেয়ার জন্য বেকারার পেরেশান, সেখানে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতে যুন নূর আলাইহাস সালাম উনাকে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে খুশি মুবারক করার জন্য এরূপ করতেন, তাহলে উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!

উপরোক্ত দলীলভিত্তিক বর্ণনার মাধ্যমে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পরেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দায়িমীভাবে এমন এক মহাসম্মানিত নিসবত মুবারক রয়েছেন, যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান সংকুলান হয় না। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় উনারা শুধু যিনি  খ্বালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ!

এ কারণেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْـمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.

অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.

অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম