মহাপবিত্র কুরআন শরীফ ও মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়ত উনার আলোকে মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (পর্ব-২২)

সংখ্যা: ২৮৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

৩৫তম ফতওয়া হিসেবে

“মহাপবিত্র কুরআন শরীফ ও মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ মহাসম্মানিত শরীয়ত উনার আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আলহামদুলিল্লাহ।

চূড়ান্ত ফায়ছালা

“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক তা স্বীকার করে নেয়া যে পবিত্র ফরয” ইহাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ এবং পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের পবিত্র নির্দেশ মুবারক। আর তা অস্বীকার করা হচ্ছে কাট্টা কুফরী

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন্ নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ইত্বায়াত বা অনুসরণ-অনুকরণ অর্থাৎ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক পালন করা প্রত্যেক বান্দা-বান্দী ও উম্মত উনাদের জন্য ফরযে আইনের অন্তর্ভুক্ত।

কারণ, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

مُـحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ

অর্থ : “নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফাতহ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)

অর্থাৎ, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার যাবতীয় কার্যক্রম মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবেই তিনি সম্পন্ন করেন। তাই, উনার কর্তৃক সম্পাদিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারকও তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবেই করেছেন। আর উম্মতের জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সমস্ত মুবারক আমলসমূহ অনুসরন করা এবং অনুসরনীয় বলে বিশ্বাস করা ফরয। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَطِيْـعُوا اللهَ وَرَسُوْلَهٗ اِنْ كُنْـتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ

অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে অনুসরণ করো যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাকো।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১)

তাহলে উম্মতের জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক অবশ্যই অনুসরনীয় এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে মেনে নেয়াও ফরয। তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হওয়ার কারণে সমস্ত আমল মুবারকই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক অনুযায়ীই সম্পন্ন করেন। আর এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَا يَـنْطِقُ عَنِ الْـهَوٰى. اِنْ هُوَ اِلَّا وَحْيٌ يُّـوْحٰى

অর্থ : “আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ হতে কোন কথা মুবারক বলেন না। (কোন কাজ মুবারকও করেন না, কোন সম্মতি মুবারকও প্রকাশ করেন না) উনার প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক না করা ব্যতীত।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নজম শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩,৪)

অর্থাৎ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক ব্যতিত কোন কিছুই করেননা, কোন কথা মুবারক বলেননা, কোন বিষয়ে সম্মতি মুবারক দেননা। অর্থাৎ তিনি সার্বিকভাবেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাহলে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারকও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক দ্বারাই সম্পাদিত হয়েছেন। আর সে জন্যই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক সম্পর্কে কোন বান্দা-বান্দি কারো পক্ষে কোন বিরূপ মত পোষণ করা জায়িয নেই।

বিশেষভাবে স্মরণীয়, মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার কোন পবিত্র হুকুম-আহকাম মুবারক মানুষের আকল দিয়ে, সমঝ দিয়ে, বিবেক দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, উপমা দিয়ে, ভিন্ন দেশের তুলনা দিয়ে, সূত্র দিয়ে, যুক্তিতর্ক দিয়ে ফায়সালা করা যাবে না। যেমন এ প্রসঙ্গে “আবূ দাউদ শরীফ” কিতাবের ১ম খণ্ডের ২৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে

عَنْ سَيِّدِنَا اِمَامِ الْاَوَّلِ حَضْرَتْ (عَلِىٍّ) كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ : لَوْ كَانَ الدِّيْنُ بِالرَّأْيِ، لَكَانَ اَسْفَلُ الْـخُفِّ اَوْلٰى بِالْمَسْحِ مِنْ اَعْلَاهُ وَقَدْ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَـمْسَحُ عَلٰى ظَاهِرِ خُفَّيْهِ

অর্থ : “সাইয়্যিদুনা ইমামুল আউওয়াল হযরত (আলী) কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে; তিনি বলেন, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার হুকুম আহ্কাম গুলো যদি মানুষের আকল, সমঝ, বিবেক, বুদ্ধি দিয়ে ফায়সালা করা হতো, তাহলে মোজার উপরের অংশে মাসেহ না করে মোজার নিচের অংশে মাসেহ করাই অধিক উত্তম হতো। অথচ আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনার মোজাদ্বয়ের উপরের অংশে মাসেহ করতে দেখেছি।” সুবহানাল্লাহ!

অতএব প্রমাণিত হলো সম্মানিত শরীয়ত তথা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার হুকুম আহ্কামগুলো মানুষের আকল দিয়ে, সমঝ দিয়ে, বিবেক দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, উপমা দিয়ে, ভিন্ন দেশের তুলনা দিয়ে, সুত্র দিয়ে, যুক্তিতর্ক দিয়ে ফায়সালা করা যাবে না।

কাজেই যুক্তিতর্ক দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক উনার বিরোধিতার অর্থই হচ্ছে প্রকৃত পক্ষে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সরাসরি বিরোধিতার শামিল। নাঊযুবিল্লাহ! যা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার অনুভূতিতে ও সম্মানিত মুসলিম উম্মাহ উনাদের অনুভূতিতে তীব্র আঘাত হানার নামান্তর। যার ফলে পরকালে নাজাত ও জান্নাত লাভ করতে পারবেন না।

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَّلَا مُؤْمِنَةٍ اِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُوْلُهٗ اَمْرًا اَنْ يَّكُوْنَ لَـهُمُ الْـخِيَـرَةُ مِنْ اَمْرِهِمْ ۗ وَمَنْ يَّـعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ فَـقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِيْـنًا

অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যে মুবারক ফায়ছালা করেছেন, সে মুবারক ফায়ছালার মধ্যে কোন মু’মিন নর-নারীর জন্য জায়িয হবে না চু-চেরা, ক্বীল ও ক্বাল করা অর্থাৎ নিজস্ব মত পোষণ করা বা পেশ করা। আর যে ব্যক্তি নিজস্ব মত পেশ করবে সে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নাফরমানী বা বিরোধিতা করবে ফলে সে অবশ্যই প্রকাশ্য গোমরাহীতে গুমরাহ হবে। অর্থাৎ কাট্টা কাফির হবে।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)

অর্থাৎ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক সম্পর্কে নিজস্ব কোন মত পেশ করার কোন সুযোগ নেই এবং করা জায়িযও নেই। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে যাই বর্ণিত রয়েছেন তাই মানতে হবে। যে তা না মেনে নিজস্ব মত পেশ করবে সে প্রকাশ্য গোমরাহীতে গোমরাহ হবে। আরো স্মরণীয় যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কারণে তিনিই হচ্ছেন উত্তম আদর্শ মুবারক। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِىْ رَسُوْلِ اللهِ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

অর্থ : “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ মুবারক রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহ্যাব শরীফ : সম্মানিত পবিত্র আয়াত শরীফ ২১)

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক উত্তম আদর্শ অর্থাৎ উসওয়ায়ে হাসানাহ উনার অন্তর্ভুক্ত। শুধু এতটুকু নয়, বরং সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّكَ لَعَلٰى خُلُقٍ عَظِيْمٍ

অর্থ : “আপনি (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি) অবশ্যই মহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ক্বলম শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক সর্বোত্তম আদর্শ অর্থাৎ খুলুক্বিন আযীম উনার অন্তর্ভুক্ত। আর এই উসওয়ায়ে হাসানাহ ও খুলুক্বিন আযীম কাদের জন্য অনুসরণীয় এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

قُلْ يَاۤ اَيُّـهَا النَّاسُ اِنِّـىْ رَسُوْلُ اللهِ اِلَيْكُمْ جَـمِيْـعًا

অর্থ : “আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন, আমি তোমাদের সবার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আরাফ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৮)

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক সকলের জন্যই অনুসরনীয়। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে মেনে নেয়া সকলের জন্যই ফরয। এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন,

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اُرْسِلْتُ اِلَى الْـخَلْقِ كَافَّةً

অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমাকে সমস্ত সৃষ্টির জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে পাঠানো হয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারাও পবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক সকলের জন্যই অনুসরনীয়। অর্থাৎ পবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে মেনে নেয়া সকলের জন্যই ফরয। আর প্রত্যেক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারকই যে প্রত্যেক উম্মতের জন্য সুন্নত হিসেবে মেনে নেয়া ফরয সে প্রসঙ্গেই মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَاۤ اٰتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَـهَاكُمْ عَنْهُ فَانْـتَـهُوْا ۚ وَاتَّـقُوا اللهَ ۖ اِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ

অর্থ : “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি তোমাদের যা আদেশ মুবারক করেন, তা আঁকড়িয়ে ধর। আর যা থেকে বিরত থাকতে বলেন, তা থেকে বিরত থাক। এবং এ বিষয়ে মহান আল্লাহ্ পাক উনাকে ভয় কর। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হাশর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২১)

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার নির্দেশ মুতাবিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারকসহ সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারকগুলোই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে মেনে নেয়া ফরয, ফরয, ফরয।

বিশেষ স্মরণীয় যে, বহু সংখ্যক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্ নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক করেছেন। তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে মুসলমানগণ কেন মানবে না?

অর্থাৎ, উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ মুতাবিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত হিসেবে মেনে নেয়াটা সমস্ত মুসলমানের জন্য ফরয, ফরয, ফরয। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক করা বা দেয়া শর্ত নয়। বরং শর্ত হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে মেনে নেয়াটা ফরয, ফরয, ফরয।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত অর্থাৎ কন্যা সন্তান আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকেও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক দিয়েছেন। তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনেকের বাল্য বিবাহে সম্মতি মুবারক প্রদান করেছেন। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ করা-করানো, বাল্য বিবাহে সম্মতি দেয়া, পৃষ্ঠপোষকতা করা সবই খাছ ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনারই অন্তর্ভুক্ত।

তাহলে মুসলমানগণ কেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে পালন করবে না? এবং করলে কেন শাস্তি হবে? মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক বিরোধীদেরকে এর জওয়াব অবশ্যই দিতে হবে।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক পালন করা যে ফরয সে প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, হাম্বলী মাযহাব উনার ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একবার ফতওয়া দিলেন যে, “ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারকগুলো পালন করা ফরয।” তিনি যখন এ ফতওয়া দিলেন তখন উনার সময়কার যারা ইমাম, মুজতাহিদ ও ফক্বীহ ছিলেন উনারা উনার নিকটে আসলেন।

এসে বললেন, ‘হে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি! আমরা আপনাকে ইমাম, মুজতাহিদ ও ফক্বীহ মনে করি। অথচ আপনি কি করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে ফরয বলে ফতওয়া দিলেন? এর স্বপক্ষে আপনার কোন দলীল আছে কি? কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি তো বলেন-

هَاتُـوْا بُـرْهَانَكُمْ اِنْ كُنْـتُمْ صَادِقِيْنَ

অর্থ : “তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে দলীল পেশ করো।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১১১)

হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “হ্যাঁ, এ ব্যাপারে আমার ক্বিত্য়ী বা অকাট্য দলীল রয়েছে। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ থেকে দলীল রয়েছে। আর তা হলো, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَاۤ اٰتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَـهَاكُمْ عَنْهُ فَانْـتَهُوْا ۚ وَاتَّـقُوا اللهَ اِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ

অর্থ : “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদের কাছে যা নিয়ে এসেছেন, তোমরা তা দৃঢ়তার সাথে গ্রহণ করো আর যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাকো। এবং এ বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হাশর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)

এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারকসমূহ পালন করা ফরয হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।”

তিনি যখন এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করলেন তখন যে সকল ইমাম, মুজতাহিদ ও ফক্বীহগণ আগমন করেছিলেন, উনারা সকলেই বললেন, বুঝতে পেরেছি। তখন ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আপনারা এতদিনে বুঝতে পারেননি এখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করা মাত্রই বুঝে ফেললেন? উনারা বললেন, আমরা পূর্বে ফিকির করিনি। আপনি বলার পর ফিকির করেছি এবং বুঝতে পেরেছি যে, সত্যিই পবিত্র সুন্নত মুবারকসমূহ পালন করা অবশ্যই ফরয।

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারাও প্রমাণিত হলো, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক খাছ সুন্নত এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে মেনে নেয়াও অবশ্যই ফরয। আর বিরোধিতা করলে অবশ্যই কঠিন শাস্তির সম্মুখিন হতে হবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُـؤْمِنُـوْنَ حَتّٰى يُـحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَـيْـنَهُمْ ثُـمَّ لَا يَـجِدُوْا فِيْۤ اَنْـفُسِهِمْ حَرَجًا مِّـمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا

অর্থ : “আপনার মহান রব তায়ালা উনার কসম, তারা কখনই ঈমানদার হতে পারবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা তাদের পরস্পরের মধ্যে সৃষ্ট সমস্ত মত বিরোধে বা সমস্ত বিষয়ে আপনাকে ফায়সালাকারী হিসাবে মেনে না নিবে। শুধু মেনে নিবে এতটুকু নয়, মেনে তো নিতেই হবে বরং সাথে সাথে আপনার ফায়সালাকৃত বিষয়ে তারা তাদের নিজেদের অন্তরেও কোন রকম চু-চেরা, ক্বীল ও ক্বাল অর্থাৎ কোন প্রকার সংকীর্ণতাও অনুভব করতে পারবে না। শুধু এতটুকুই নয় বরং সাথে সাথে তা আনুগত্যের সহিত আনন্দচিত্তেও মেনে না নিবে।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৫)

এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার শানে নুযুল সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে, হযরত মুফাসসিরীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন, এক ব্যক্তি ছিল মুনাফিক, তার নাম ছিল বিশর। সে মুসলমান দাবী করতো, হাক্বীক্বীত সে ছিলো মুনাফিক। এই মুনাফিক্ব বিশরের সাথে এক ইহুদীর কোনো এক বিষয়ে ইখতিলাফ হয়। তখন ফায়সালার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে তারা আসলো। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের বিচার করলেন। বিচারে মুনাফিক্ব বিশরের বিরুদ্ধে, ইহুদীর পক্ষে রায় পড়লো। মুনাফিক্ব বিশর সেখানে তা বাহ্যিকভাবে মেনে নিলেও দরবারে নববী শরীফ থেকে বের হয়ে বললো, বিচারটা আমার মনঃপূত হয়নি। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ!! নাঊযুবিল্লাহ!!!

তখন ইহুদী বললো, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিচার যদি তোমার মনপুত না হয়ে থাকে, তাহলে কার বিচার তোমার মনপুত হবে? তখন মুনাফিক্ব বিশর বললো, হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার বিচার। তখন ইহুদী তাতে সম্মতি প্রকাশ করে। ফলে মুনাফিক্ব বিশর ইহুদীকে নিয়ে পুণরায় বিচারের জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকট গেলো। কারণ তিনিও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক অনুমতিক্রমে বিচারকাজ করতেন। বিশর ভেবেছিল, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন-

اَشِدَّآءُ عَلَى الْكُفَّارِ

অর্থ : “সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি কাফিরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফাতহ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)

তাই বিচারের রায় হয়তো তার পক্ষেই আসবে। কিন্তু ইহুদী ছিল অত্যন্ত ধূর্ত। সে শুরুতেই বললো, হে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! এই বিশর আমাকে নিয়ে এসেছে আপনার কাছে বিচারের জন্য, অথচ এই মাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে বিচার করে দিয়েছেন। রায় বিশরের বিরুদ্ধে হওয়ার কারণে বিশর সে বিচার মানতে নারাজ; সেজন্য সে পুনরায় আপনার দ্বারা বিচার করানোর জন্য আপনার কাছে এসেছে। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি একথা শুনে বললেন, ঠিক আছে তোমরা বস, আমি তোমাদের বিচার করবো। উনি ঘরে প্রবেশ করে সবচেয়ে বেশি ধারালো তরবারী এনে মুনাফিক্ব বিশরকে এক কোপে দু’ভাগ করে দিলেন এবং বললেন, এটাই হচ্ছে তোমার উপযুক্ত বিচার।

কারণ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে বিচার করেছেন, সেটা তুমি মাননি। সেজন্য তোমার শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড। যখন উনি তাকে হত্যা করে ফেললেন, তখন মুনাফিক্ব বিশরের আত্মীয়-স্বজন সরাসরি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকটে যাওয়ার সাহস করলো না বরং তারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে যেয়ে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার কর্তৃক বিশরকে হত্যা করার অভিযোগ করলো। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, এটা কি করে সম্ভব? হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি তো বিশেষ ব্যক্তিত্ব।

উনার প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ كَانَ بَعْدِىْ نَبِىٌّ لَكَانَ عُمَرُ بْنُ الْـخَطَّابِ عَلَيْهِ السَّلَامُ

অর্থ : “হযরত উক্ববাহ্ ইবনে ‘আমির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার পরে যদি কেউ নবী হতেন, তাহলে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নবী হতেন।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)

কাজেই উনার পক্ষে এটা কি করে সম্ভব, ঠিক আছে উনাকে এখানে আসার জন্য সংবাদ দেয়া হোক। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সংবাদ পেয়ে সেখানে উপস্থিত হলেন। তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “হে ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আপনি নাকি একজন মুসলমানকে হত্যা করেছেন?” সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

আপনি আমাকে বিচার করার দায়িত্ব দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আমি বিচার করেছি। অর্থাৎ বিচারে বিশরের শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড তাই আমি তাকে দিয়েছি। অর্থাৎ, আমি তাকে মহাসম্মানিত শরীয়ত অনুযায়ী শাস্তি স্বরূপ হত্যা করেছি। কারণ হচ্ছে- সে মুনাফিক। ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি যে তার বিচার করেছিলেন, সে বিচার সে মানেনি, সেজন্য আমি তাকে শাস্তি স্বরূপ মৃত্যুদণ্ড দিয়েছি এবং হত্যা করেছি। তখন মুনাফিক্ব বিশরের আত্বীয়-স্বজন বললো, “হে ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আপনি যাকে হত্যা করেছেন, সে যে মুনাফিক্ব ছিলো, তার প্রমাণ কি? তাহলে আপনি স্বাক্ষী পেশ করুন। যেহেতু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে সাক্ষী ছাড়া কোনো কথা গ্রহণযোগ্য নয়।

সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি চুপ করে রইলেন। কারণ, সেখানে কোনো স্বাক্ষী ছিলোনা। তখন সাথে সাথে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই সাক্ষী হয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে জানিয়ে দিলেন-

فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُـؤْمِنُـوْنَ حَتّٰى يُـحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَـيْـنَهُمْ ثُـمَّ لَا يَـجِدُوْا فِيْۤ اَنْـفُسِهِمْ حَرَجًا مِّـمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا

অর্থ : “আপনার মহান রব তায়ালা উনার কসম, তারা কখনই ঈমানদার হতে পারবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা তাদের পরস্পরের মধ্যে সৃষ্ট সমস্ত মত বিরোধে বা সমস্ত বিষয়ে আপনাকে ফায়সালাকারী হিসাবে মেনে না নিবে। শুধু মেনে নিবে এতটুকু নয়, মেনে তো নিতেই হবে বরং সাথে সাথে আপনার ফায়সালাকৃত বিষয়ে তারা তাদের নিজেদের অন্তরেও কোন রকম চু-চেরা, ক্বীল ও ক্বাল অর্থাৎ কোন প্রকার সংকীর্ণতাও অনুভব করতে পারবে না। শুধু এতটুকুই নয় বরং সাথে সাথে তা আনুগত্যের সহিত আনন্দচিত্তেও মেনে না নিবে।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৫)

অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতিটি বিষয় বিনা চু-চেরা, ক্বীল-ক্বাল অর্থাৎ কোন প্রকার সংকীর্ণতা ছাড়াই আনুগত্যের সাথে আনন্দচিত্তে মেনে নিতে হবে। বিরোধিতা করা তো দূরের কথা, সামান্য ইহানত ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যও যদি কেউ করে তবে সে মুরতাদ হয়ে কাফির হয়ে যাবে এবং তার শরঈ শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড।

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আয়াত শরীফ অনুযায়ীও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক সম্পর্কিত মতোবিরোধের ফায়সালাও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী করতে হবে। আর তা হলো, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খাছ সুন্নত মুবারক যা মেনে নেয়া ফরয এবং তা অবশ্যই অনুসরণীয়। আর বিরোধিতা করা হলো কাট্টা হারাম যা কুফরী এবং এর ফলে কঠিন শাস্তির উপযুক্ত হবে। অর্থাৎ মুরতাদ হবে এবং সাথে সাথে মুরতাদের শাস্তিও বর্তাবে।

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্ নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক সম্পর্কে ইতায়াত বা অনুসরণ-অনুকরণ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে মেনে নেয়া ফরয সাব্যস্ত হয়েছে। মূলত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ উনার বিরোধিতা করা, অবহেলা বা অবজ্ঞা করা, অপরাধ ও ক্ষতির কারণ বলাসহ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক উনার প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করা কোনভাবেই জায়িয নেই। বরং সুস্পষ্ট হারাম, নাজায়িয ও কুফরী।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক কতটুকু এবং কিরূপভাবে অনুসরণ করতে হবে? মূলতঃ মাথার তালু হতে পায়ের তলা, হায়াত হতে মউত পর্যন্ত, প্রতিটি ক্ষেত্রে ও প্রতিটি বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হুবহু অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। কোন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক সম্পর্কেই নিজস্ব মত পেশ করে নিজের আক্বল-বুদ্ধি অনুযায়ী আমল করা যাবে না। করলে সেটাও কবীরা গুনাহ এবং কুফরী হবে। সে প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামে পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُـوْا لَا تُـحَرِّمُوْا طَيِّبَاتِ مَاۤ اَحَلَّ اللهُ لَكُمْ وَلَا تَـعْتَدُوْا ۚ اِنَّ اللهَ لَا يُـحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ

অর্থ : “হে ঈমানদারগণ! মহান আল্লাহ্ পাক তিনি তোমাদের জন্যে পবিত্র বস্তু হতে যা হালাল করেছেন, তোমরা তা হারাম করোনা। আর এ বিষয়ে সীমালঙ্ঘন করোনা। কেননা নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সীমালঙ্ঘনকারীকে মুহব্বত করেন না।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মায়িদাহ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৭)

অর্থাৎ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক যে হালাল করা হয়েছে তা হারাম করো না, হারাম করলে সীমালঙ্ঘন করা হবে আর সীমালঙ্ঘনকারীকে মহান আল্লাহ পাক তিনি মুহব্বত করেন না। ফলে সে মুরতাদ হয়ে কাফির হবে। এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যেও বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ تَـرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ لَكَفَرْتُـمْ

অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যদি তোমরা তোমাদের নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক (অবজ্ঞা বা অপছন্দ করো) তরক করো, তবে তোমরা অবশ্যই কাফির হয়ে যাবে।” (আবূ দাঊদ শরীফ)

এজন্য এ প্রসঙ্গে আক্বাঈদ উনার কিতাবেও উল্লেখ করা হয়েছে-

اِهَانَةُ السُّنَّةِ كُفْرٌ

অর্থ : “ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইহানত বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা কাট্টা কুফরী।”

অর্থাৎ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক খাছ সুন্নত মুবারক। অতএব, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে যারা অবজ্ঞা ও অপছন্দ করবে এবং ক্ষতির কারণ বলে তরক করবে, তারা শরঈ ফতওয়া মুতাবেক মুরতাদ হয়ে কাফির হবে এবং তাদের উপর মুরতাদের শাস্তি বর্তাবে ফলে তারা জাহান্নামী হবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَمَنْ يُّشَاقِقِ الرَّسُوْلَ مِنْ بَعْدِ مَا تَـبَيَّنَ لَهُ الْـهُدٰى وَيَـتَّبِعْ غَيْـرَ سَبِيْلِ الْمُؤْمِنِيْنَ نُـوَلِّهٖ مَا تَـوَلّٰى وَنُصْلِهٖ جَهَنَّمَ ۖ وَسَآءَتْ مَصِيْـرًا

অর্থ : “সুস্পষ্টভাবে হেদায়েত প্রকাশিত হওয়ার পর যে বা যারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করবে এবং মু’মিনগণ উনাদের প্রচলিত পথ ছেড়ে বিপরীত পথ অনুসরণ করবে, সে যে দিকে রুজু হয়েছে আমি তাকে সেদিকেই ফিরিয়ে দিবো এবং আমি তাকে জাহান্নামে পৌঁছিয়ে দিবো। তা নিকৃষ্ট জায়ে ঠিকানা।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৫)

অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক প্রমাণিত হওয়ার পর এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও হযরত ইমাম ও মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের প্রচলিত পথ বা তর্জ-ত্বরীক্বা প্রমাণিত হওয়ার পরও যারা কাফির-মুশরিকদের অনুসরনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক উনার বিরোধিতা করবে, তারা কাট্টা জাহান্নামী হবে। এতে কোন সন্দেহ নেই।

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হদ বা সীমা সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন-

تِلْكَ حُدُوْدُ اللهِ ۚ وَمَنْ يُّطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَـجْرِىْ مِنْ تَـحْتِهَا الْاَنْـهَارُ خَالِدِيْنَ فِيْـهَا ۚ وَذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ. وَمَنْ يَّـعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ وَيَـتَعَدَّ حُدُوْدَهٗ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيْـهَا وَلَهٗ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ

অর্থ : “এটা মহান আল্লাহ পাক উনার হদ বা সীমা। যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন করবে, তাকে এমন চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে যার তলদেশে নহর প্রবাহিত রয়েছে। এবং ইহা মহান সফলতা।

আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের নাফরমানী করবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হদ অমান্য করবে, তাকে চিরস্থায়ী জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে। তার জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক লাঞ্চিত শাস্তি।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩-১৪)

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্ নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক সম্পর্কে ইতায়াত বা অনুসরণ-অনুকরণ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে মেনে নেয়া ফরয সাব্যস্ত হয়েছে। মূলত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ উনার বিরোধিতা করা, অবহেলা বা অবজ্ঞা করা, অপরাধ ও ক্ষতির কারণ বলাসহ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক উনার প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করা কোনভাবেই জায়িয নেই। বরং সুস্পষ্ট হারাম, নাজায়িয ও কুফরী।

আর ইহাই মহান আল্লাহ পাক উনার হদ বা সীমা। এই হদ বা সীমা লঙ্ঘন করে যারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাল্য বিবাহ মুবারক উনার বিরোধিতা করবে, অবজ্ঞা-অবহেলা করবে, ক্ষতির কারণ বলবে এবং অপরাধ বলাসহ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিদ্বেষ পোষণ করবে, তাদের সম্পর্কে শরঈ ফায়সালা হলো দুনিয়ায় তাদের প্রতি মুরতাদের শাস্তি বর্তাবে। কারণ, তারা মুরতাদ ও কাফির। তাদের পরকালে জায়ে ঠিকানা হলো নিকৃষ্ট জাহান্নাম।

(অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)

 

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৪

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁ, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩২