মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত বিশেষ ফতওয়া মুবারক (২৯তম পর্ব)

সংখ্যা: ২৯৪তম সংখ্যা |

[সমস্ত প্রশংসা খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য এবং অশেষ-অসীম সম্মানিত ছলাত ও সালাম মুবারক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ। মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের খাছ রহমত, বরকত, সাকীনাহ, দয়া-দান, ইহসান মুবারক উনাদের কারণে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগ উনার তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের অকাট্ট দলীলের আলোকে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩.নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬.মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯.ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪.প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা

এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে র্ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮.নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০.শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহরের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) ২২.হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪.হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা)  ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি অঁাকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-২৩৭), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২০৩তম সংখ্যা), ৩২. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে “হানাফী মাযহাব মতে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে ‘আমীন’ অনুচ্চ আওয়াজে বা চুপে চুপে পাঠ করাই শরীয়ত উনার নির্দেশ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২১২তম সংখ্যা), ৩৩. “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২২০তম সংখ্যা-চলমান), ৩৪. “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ ও মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৩৮-চলমান), ৩৫. “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ মহাসম্মানিত শরীয়ত উনার আলোকে খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৬৪-২৮৬), ৩৬. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে এবং বিশেষ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৬৫-চলমান), পেশ করার পাশাপাশি-

৩৭তম সম্মানিত ফতওয়া

মুবারক হিসেবে

‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত বিশেষ ফতওয়া মুবারক’ পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।

(পূর্বপ্রকাশিতের পর)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়ার বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ

থেকে দলীল:

৪ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ

এবং উনার তাফসীর বা ব্যাখ্যা

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন-

اِنْصَرَفَ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ جَدُّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ الْمُطَّـلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) اِلـٰى قُـرَيْشٍ فَاَخْبَـرَهُمُ الْـخَبَـرَ وَاَمَرَهُمْ بِالْـخُرُوْجِ مِنْ مَّكَّةَ وَالتَّحَرُّزِ فِـىْ شَعَفِ الْـجِبَالِ وَالشِّعَابِ تَـخَوُّفًا عَلَيْهِمْ مِنْ مَّعَرَّةِ الْـجَيْشِ ثُـمَّ قَامَ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ جَدُّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاَخَذَ بِـحَلْقَةِ بَابِ الْكَعْـبَةِ وَقَامَ مَعَهٗ نَـفَرٌ مِّنْ قُـرَيْشٍ يَدْعُوْنَ اللهَ وَيَسْتَـنْصِرُوْنَهٗ عَلـٰى اَبْـرَهَةَ وَجُنْدِهٖ فَـقَالَ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ جَدُّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ اٰخِذٌ بِـحَلْقَةِ بَابِ الْكَعْبَةِ

لَا هُمَّ اِنَّ الْعَبْدَ يَـمْ … نَعُ رَحْلَهٗ فَامْنَعْ حَلَالَكْ

لَا يَـغْلِـبَـنَّ صَلِـيْـبُـهُمْ … وَمِـحَالُـهُمْ غَدْوًا مِـحَالَكْ

اِنْ كُـنْتَ تَارِكَهُمْ وَ … قِـبْـلَـتَـنَا فَاَمْرٌ مَّا بَدَا لَكْ

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুরাইশদের নিকট ফিরে এসে তাদেরকে সমস্ত সংবাদ জানালেন এবং তাদেরকে আবরাহার সৈন্যদের সম্ভাব্য যুলুম-অত্যাচার থেকে আত্নরক্ষা করার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে বেরিয়ে পার্শ্ববর্তী পাহাড় পর্বতের গোপন গুহাগুলোতে আশ্রয় নেয়ার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক দিলেন। এরপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে কুরাইশদের একদল লোককে সাথে নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দরজা মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চৌকাঠ মুবারক আঁকড়ে ধরে দাঁড়ালেন এবং যালিম আবরাহা এবং তার সৈন্য-সামন্তের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সাহায্য চেয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ মুবারক করতে লাগলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চৌকাঠ মুবারক ধরে বলতে লাগলেন,

لَا هُمَّ اِنَّ الْعَبْدَ يَـمْ … نَعُ رَحْلَهٗ فَامْنَعْ حَلَالَكْ

لَا يَـغْلِـبَـنَّ صَلِـيْـبُـهُمْ … وَمِـحَالُـهُمْ غَدْوًا مِـحَالَكْ

اِنْ كُـنْتَ تَارِكَهُمْ وَ … قِـبْـلَـتَـنَا فَاَمْرٌ مَّا بَدَا لَكْ

‘আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! একজন বান্দাও তার দলবলকে রক্ষা করে থাকে। অতএব আপনি আপনার অনুগত লোকদেরকে রক্ষা করুন। ওদের নিকৃষ্ট ক্রুশ এবং শক্তি যেন আপনার অসীম শক্তির উপর বিজয়ী না হয়। আমাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলা মুবারক উনাকে আপনি যদি ওদের উপর ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার যা খুশি করুন’।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে হিশাম)

অন্য বর্ণনায় রয়েছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার গিলাফ মুবারক ধরে বলতে লাগলেন,

اَللّٰهُمَّ اَنَّ الْمَرْءَ يَـمْنَعُ + رَحْلَهٗ فَامْنَعْ رِحَالَكْ

وَانْصُرْ عَلـٰى اٰلِ الصَّلِـيْبِ + وَعَابِدِيْهِ الْيَـوْمَ لَكْ

لَا يَـغْلِـبَـنَّ صَلِـيْـبُـهُمْ + وَمِـحَالُـهُمْ اَبَدًا مِـحَالَكْ

جَرُّوْا جَـمِيْعَ بِلَادِهِمْ + وَالْفِيْلَ كَىْ يَسُبُّـوْا عِيَالَكْ

عَمَدُوْا حَـمَّالَ بَـلِـيْدِهِمْ + جَهْلًا وَمَا رَقَـبُـوْا جَلَالَكْ

অর্থ: “আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! নিশ্চয়ই বান্দা তার জায়গার হিফাযত করে। কাজেই আপনি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক হিফাযত করুন। ক্রুশের অধিকারী এবং ক্রুশের উপাসনাকারীদের মুকাবিলায় আপনার অনুসারীদের সাহায্য করুন। ওদের ক্রুশ এবং ওদের প্রচেষ্টা আপনার ইচ্ছার উপর কখনো বিজয়ী হতে পারে না। সুবহানাল্লাহ! সৈন্য-সামন্ত ও হাতি নিয়ে যালিম আবরাহা এসেছে আপনার প্রতিবেশীদের গ্রেফতার করতে। না‘ঊযুবিল্লাহ! আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়ে জিহালতীর কারণে তারা এই সংকল্প করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা আপনার বড়ত্ব ও শক্তির প্রতি কোনো ভ্রƒক্ষেপ করছে না।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (দালাইলিনু নুুবুওওয়াহ, মাদারিযুন নবুওওয়াত, সীরাতুল মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

তিনি আরো বললেন, “আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আপনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক উনার মালিক এবং হিফাযতকারী। আমি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক উনার দেখাশুনার দায়িত্বে ছিলাম। আমি তা যথাযথ পালন করার চেষ্টা করেছি। এখন যালিম আবরাহা এসেছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার ক্ষতি করার জন্য। সে যে পরিমাণ সৈন্য-সামন্ত এবং অস্ত্রপাতি নিয়ে এসেছে, তাকে বাধা দেয়ার মত আমাদের প্রস্তুতি নেই। কাজেই, আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক আপনার হিফাযতে দিয়ে আমরা নিরাপদ দূরত্বে চলে যাচ্ছি।” সুবহানাল্লাহ!

আরো বর্ণিত রয়েছেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরাইশ উনাদেরকেও মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দু‘আ করার জন্য উৎসাহ মুবারক দেন। তিনি বলেন,

فَـلْنَدْعُ رَبَّ الْبَـيْتِ اَنْ يَّـحْمٰى بَـيْـتَهٗ

অর্থ: “সুতরাং আমাদের জন্য আবশ্যক হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দু‘আ করা, যেন তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক রক্ষা করেন।” সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন,

طُوْفُـوْا بِالْبَـيْتِ وَادْعُوْا رَبَّهٗ اَنْ يَّــقْسِمَ اَبْـرَهَةَ كَمَا قَسَمَ الْـجَبَابِرَةَ

অর্থ: “আপনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাইতুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করুন এবং রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দু‘আ করুন যেনো মহান আল্লাহ পাক তিনি যালিম আবরাহাকে তদ্রুপ ধ্বংস করে দেন, যেমন তিনি পূর্বে যালিম জাতিদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বাইতুল্লাহ শরীফ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

وَمَنْ يَّـتَجَرَّمْ اِلَيْهِ يَـقْسِمُهُ اللهُ

আর যারা (মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক উনার ইহানত করার মাধ্যমে) মহান আল্লাহ পাক উনাকে অভিযুক্ত করতে চায়, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে ধ্বংস করে দেন।” সুবহানাল্লাহ!

পরের দিন আবরাহা তার সমস্ত বাহিনী নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার ক্ষতি করার জন্য অগ্রসর হলো। কিন্তু হাতিগুলো একটাও সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলো না। কিছুক্ষণের মধ্যে দেখা গেলো- কিছু ক্ষুদ্র আকৃতির পাখি, যা আকারে কবুতরের চেয়ে ছোট। কতগুলি সাদা বর্ণের, কতগুলি কালো বর্ণের, কতগুলি নীল বর্ণের। পাখিগুলো সমুদ্রের দিক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে লাগলো। তাদের মাথা ছিলো হিংস্র জন্তুর মত, ঠোট ছিলো হাতির শুঁড়ের মত আর নখগুলি ছিলো কুকুরের মত। প্রত্যেকটি পাখি তিনটি কঙ্করময় প্রস্তর বহন করে এনেছিলো। একটি ঠোটে, দু’টি পায়ে। আর কঙ্করগুলি ছিলো ডাল অপেক্ষা বড় ও ছোলা বুট থেকে ছোট। পাখিগুলো আবরাহা ও তার বাহিনীর উপরে এসে সেই কঙ্করগুলি নিক্ষেপ করতে লাগলো। এর ফলে তৎক্ষনাৎ কিছু ধ্বংস হয়ে গেলো। কিছু আহত অবস্থায় পলায়ন করার পথে ধ্বংস হলো। কঙ্করগুলি উপর দিক থেকে পড়ে নিচ দিয়ে বের হয়ে মাটিতে অদৃশ্য হয়ে যেত। যার

কারণে যালিম আবরাহার সৈন্য বাহিনী, হস্তিবাহিনী ভক্ষিত তৃণের ন্যায় হয়ে গেলো। কুরাঈশগণ দূর থেকে এই ঘটনা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করলেন। যালিম আবরাহা ইয়েমেন পর্যন্ত পৌঁছলো এবং তার উপর দিয়ে পাখিগুলি উড়তে থাকলো। সেখানে পেঁৗছার পরে পাখির কঙ্কর নিক্ষেপের কারণে সেও ভক্ষিত তৃণের ন্যায় হয়ে গেলো। আর যালিম আবরাহার মন্ত্রী ইয়াকছুম পালিয়ে আবিসিনিয়ায় শাসকের কাছে এই সংবাদ পেঁৗছায়। তার উপর দিয়েও একটি পাখি উড়ছিলো। সে সংবাদ পেঁৗছানোর পর পাখিটি কঙ্কর নিক্ষেপ করে। তখন সেও ভক্ষিত তৃণের ন্যায় হয়ে যায়।

(অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)