মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১তম পর্ব)

সংখ্যা: ২৮৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।

পূর্ব প্রকাশিতের পর

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জুমাদাল ঊলা শরীফ মাসে প্রকাশিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফসমূহ

 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ তারীখ মুবারক= ৬টি

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফ= ৯টি

৬) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৯শে জুমাদাল ঊলা শরীফ:

সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ, মালিকুল কায়িনাত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ তারীখ:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৩ জন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নেয়ার ধারাবাহিকক্রম মুবারক অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আল হাদিয়াহ ‘আশার অর্থাৎ ১১তম’। এ জন্য উনাকে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ ‘আশার আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। তিনি সকলের মাঝে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ ‘আশার আলাইহাস সালাম’ হিসেবেই মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! আর উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা কাট্টা কুফরী। যারা উনার শান-মান মুবারক নিয়ে চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে, উনার মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক হচ্ছেন- ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত রমলাহ্ আলাইহাস সালাম।’ সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন- ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু হাবীবাহ্ আলাইহাস সালাম’। উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা হচ্ছেন- বিশিষ্ট ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান হচ্ছেন- সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার আপন ফুফু সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছফিয়্যাহ্ বিনতে আবুল ‘আছ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা-মাতা উভয় দিক থেকেই সম্মানিত কুরাইশ বংশের বিশিষ্ট শাখা উমাইয়্যাহ্ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত এবং উভয় দিক থেকে তিনি ৫ম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নসব মুবারকগত দিক থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অধিক নিকটবর্তী। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,

لَـيْسَ فِــىْ اَزْوَاجِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ هِىَ اَقْـرَبُ نَسَبًا اِلَـيْهِ مِنْـهَا وَلَا فِـىْ نِسَائِهٖ مَنْ هِىَ اَكْـثَـرُ صَدَاقًا مِنْـهَا وَلَا مَنْ تَـزَوَّجَ بِـهَا وَهِىَ نَائِيَةُ الدَّارِ اَبْـعَدُ مِنْـهَا

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নসব মুবারকগত দিক থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনিই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অধিক নিকটবর্তী ছিলেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মোহরানা মুবারকই সবচেয়ে বেশি ছিলেন। উনার চেয়ে বেশী দূরে অবস্থান মুবারক করা অবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে অন্য কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হননি।” সুবহানাল্লাহ! (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ ৩/১৯৩)

তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালত মুবারক প্রকাশের ১৭ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৯শে জুমাদাল ঊলা শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ (মঙ্গলবার) সম্মানিত কুরাইশ বংশে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার শাদী মুবারক হয়েছিলো ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে জাহাশের সাথে। তখন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাবীবাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা’ নামে উনার একজন সম্মানিতা আওলাদ বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। উনার সম্মানিত নাম মুবারকেই তিনি ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু হাবীবাহ আলাইহাস সালাম’ এই সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে জাহাশ ছিলো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার ভাই। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার আহাল ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে জাহাশ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সূচনালগ্নেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি উনার আহাল ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে জাহাশসহ হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে জাহাশ সেখানে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করে এবং খ্রিষ্টান অবস্থায় সেখানে মারা যায়। না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি একখানা বিশেষ বরকতময় স্বপ্ন মুবারক দেখেন। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি ঘুমের মধ্যে (স্বপ্ন মুবারক-এ) দেখি যে, একজন আগন্তুক এসে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলছেন,

يَا اُمَّ الْـمُؤْمِنِيْـنَ فَـفَزِعْتُ فَاَوَّلْـتُـهَا اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ يَــتَـزَوَّجُنِـىْ

অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম!’ এতে আমি চিন্তিত হলাম। তারপর আমি এই বরকতময় স্বপ্ন মুবারক উনার ব্যাখ্যা মুবারক করলাম যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, তারীখুল খমীস, তারীখে ত্ববারী ইত্যাদি)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইদ্দত মুবারক পূর্ণ হওয়ার পর মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ‘আমর ইবনে উমাইয়্যাহ্ দ্বম্রী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে আবিসিনিয়ার বাদশাহ হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট প্রেরণ করেন, যাতে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক পেশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার খাদিমাহ্ হযরত আবরাহাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক পেশ করেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক পেয়ে অত্যন্ত খুশি মুবারক প্রকাশ করেন এবং সংবাদ বাহক হযরত আবরাহাহ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনাকে উনার সমস্ত রূপার অলঙ্কারগুলো হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! সন্ধ্যায় হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত জা’ফর ইবনে আবূ ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে এবং সেখানে অবস্থানরত সমস্ত মুসলমান উনাদেরকে উনার দরবারে উপস্থিত হওয়ার জন্য বললেন। তারপর সকলের উপস্থিতিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অনুষ্ঠান মুবারক সম্পন্ন হন। সুবহানাল্লাহ! হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে ৪০০ দিনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মোহরানা মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর হযরত নাজ্জাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওলীমা মুবারক উনার ব্যবস্থা করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হাবশাহ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক নেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খায়বরে অবস্থান মুবারক করছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খায়বর থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নেয়ার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নেন। সুবহানাল্লাহ!

এই মহাসম্মানিত তারীখ মুবারকখানা ছিলেন- ৭ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবত্রি ৩রা ছফর শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ)। তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৩৬ বছর ৮ মাস ৪ দিন। সুবহানাল্লাহ! তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ৪ বছর ১ মাস ৯ দিন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন।  সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সম্মানার্থে ‘সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুমতাহিনাহ্ শরীফ উনার ৭ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ’ নাযিল হন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

عَسَى اللهُ اَنْ يـَّجْعَلَ بَــيْـنَكُمْ وَبَــيْـنَ الَّذِيْنَ عَادَيْـتُمْ مِّنْـهُمْ مَّوَدَّةً

অর্থ: “অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের মধ্যে এবং যারা আপনাদের শত্রু তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ!

মূলত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার কারণে সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম উনার সাথে এবং সমস্ত কুরাইশদের সাথে মুহব্বতপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ফলশ্রম্নতিতে সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম তিনি এবং সমস্ত কুরাইশরা দলে দলে সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সংবাদ মুবারক যখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম (তিনি তখনও ঈমান আনেননি) উনার নিকট পেঁৗছে, তখন তিনি বলেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এমন এক সম্ভ্রান্ত কুফু মুবারক যা প্রত্যাখান করা যায় না।” সুবহানাল্লাহ!

হুদায়বিয়ার সন্ধির একটি ধারা অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার পার্শ্ববর্তী বনূ খুযা‘আহ্ গোত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সম্মানিত মুসলমান উনাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। কুরাইশরা এই চুক্তি ভঙ্গ করে ঐ গোত্রের উপর অত্যাচার চালায়। তখন বনূ খুযা‘আহ্ গোত্র বিষয়টি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন এবং উনার সম্মানিত সাহায্য মুবারক প্রার্থনা করেন। কুরাইশরা বিষয়টি শুনে শঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা সন্ধিচুক্তি বহাল রাখার জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ পাঠায়। এ সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছেন-

خَرَجَ حَضْرَتْ اَبُـوْ سُفْيَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ حَتّٰـى قَدِمَ عَلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِيْـنَةَ فَدَخَلَ عَلَى ابْـنَتِهٖ اُمِّ الْمُؤْمِنِـيْـنَ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلْـحَدِيَةِ عَشَرَ عَلَيْـهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ حَبِيْـبَةَ عَلَيْـهَا السَّلَامُ) فَـلَمَّا ذَهَبَ لِـيَجْلِسَ عَلـٰى فِرَاشِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَوَتْهُ فَـقَالَ يَا بُـنَـيَّةُ مَا اَدْرِىْ اَرَغِبْتِ بِـىْ عَنْ هٰذَا الْفِرَاشِ اَوْ رَغِبْتِ بِهٖ عَنِّـىْ فَـقَالَتْ هُوَ فِرَاشُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاَنْتَ مُشْرِكٌ نَـجِسٌ فَـلَمْ اُحِبَّ اَنْ تَـجْلِسَ عَلـٰى فِرَاشِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

অর্থ: “তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম তিনি (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে) বের হয়ে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার নিকট যান। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছানা মুবারক-এ যখন তিনি বসতে গেলেন, তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি তা ভাঁজ করে নেন, গুটিয়ে নেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ! আমি জানি না যে, (আপনি কি মনে করে তা গুটিয়ে নিলেন-) আমি কি এই বিছানার উপযুক্ত নই? না কি এই বিছানা মুবারক আমার উপযুক্ত নয়? (জওয়াবে) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, এটা হচ্ছেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বিছানা মুবারক আর আপনি হচ্ছেন, একজন নাপাক মুশরিক। কাজেই আমি এটা পছন্দ করি না যে, আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছানা মুবারক-এ বসেন।” সুবহানাল্লাহ! (আস সীরাতুন নুবুওইয়্যাহ্ লিইবনে হিব্বান ১/৩২২, দালাইলুন নুবুওওয়াহ্ ৫/৮, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৫/২০৬, তারীখে ত্ববারী ৩/৪৬, আল কামিল ফিত তারীখ ২/১১৭, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/২৮০ ইত্যাদি)

(অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৯

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০