মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এ বিষয়ে কারো কোনো প্রকার ওজর-আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত বিশেষ ফতওয়া মুবারক- (৫ম পর্ব)

সংখ্যা: ২৭০তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য এবং অশেষ-অসীম সম্মানিত ছলাত ও সালাম মুবারক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ। মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের খাছ রহমত, বরকত, সাকীনাহ, দয়া-দান, ইহসান মুবারক উনাদের কারণে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগ উনার তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক, সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের অকাট্ট দলীলের আলোকে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩.নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬.মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহরীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯.ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪.প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮.নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০.শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহর বা ইহতিয়াতুয্ যোহরের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) ২২.হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪.হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা)  ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-২৩৭), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা),

৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২০৩তম সংখ্যা), ৩২. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে “হানাফী মাযহাব মতে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে ‘আমীন’ অনুচ্চ আওয়াজে বা চুপে চুপে পাঠ করাই শরীয়ত উনার নির্দেশ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২১২তম সংখ্যা), ৩৩. “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২২০তম সংখ্যা-চলমান), ৩৪. “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৩৮-চলমান), ৩৫. “পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়ত উনার আলোকে খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৬৪-চলমান), ৩৬. সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে এবং বিশেষ করে সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৬৫-চলমান), পেশ করার পাশাপাশি-

৩৭তম সম্মানিত ফতওয়া মুবারক হিসেবে

‘সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত বিশেষ ফতওয়া মুবারক’ পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৪৭-৪৯)

عَنْ حَضْرَتْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اُعْطِيْتُ خَـمْسًا لَـمْ يُعْطَهُنَّ اَحَدٌ قَبْلِـىْ نُصِرْتُ بِالرُّعْبِ مَسِيْـرَةَ شَهْرٍ وَّجُعِلَتْ لِــىَ الْاَرْضُ مَسْجِدًا وَّطَهُوْرًا فَاَيُّـمَا رَجُلٍ مِّنْ اُمَّتِـىْ اَدْرَكَتْهُ الصَّلـٰوةُ فَلْيُصَلِّ وَاُحِلَّتْ لِــىَ الْمَغَانِـمُ وَلَـمْ تَـحِلَّ لِاَحَدٍ قَبْلِىْ وَاُعْطِيْتُ الشَّفَاعَةَ وَكَانَ النَّبِـىُّ يُبْعَثُ اِلـٰى قَوْمِهٖ خَاصَّةً وَّبُعِثْتُ اِلَـى النَّاسِ عَامَّةً.

অর্থ: “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমাকে এমন পাঁচটি সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে, যা আমার পূর্বে অন্য কাউকে দেয়া হয়নি। সুবহানাল্লাহ! (অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে। তবে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বিশেষভাবে পাঁচটি সম্মানিত নিয়ামত মুবারক উনাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে,) (১) আমাকে এক মাসের দূরত্বের সম্মানিত রো’ব মুবারক সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে। অর্থাৎ আমাকে এমন সম্মানিত রো’ব মুবারক সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে, যার কারণে এক মাসের দূরত্বের কাফির-মুশরিকরাও আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসম বা নাম মুবারক শুনলে ভয়ে থরথর করে কাঁপতে থাকে। সুবহানাল্লাহ! (২) আমার জন্য সমস্ত যমীনকে মসজিদ তথা নামায ও ‘ইবাদত-বন্দিগীর স্থান করে দেয়া হয়েছে এবং অত্যন্ত পবিত্র করে দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! কাজেই আমার উম্মতের মধ্যে কোন ব্যক্তির যেখানেই সম্মানিত ছলাত বা নামায উনার সময় হয়ে যাবে, সে যেন সেখানেই সম্মানিত ছলাত আদায় করে নেয়। সুবহানাল্লাহ! (৩) আমার জন্য গনীমতের মাল হালাল করা হয়েছে, যা ইতিপূর্বে কারও জন্য হালাল ছিলো না। সুবহানাল্লাহ! (৪) আমাকে সম্মানিত শাফায়াত মুবারক উনার মালিক করে দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (৫) প্রত্যেক হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রেরিত হয়েছেন শুধু উনাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের জন্য, আর আমি প্রেরিত হয়েছি সমগ্র মানব জাতির জন্য অর্থাৎ সমস্ত জিন-ইনসান, সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলের জন্য।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৫০-৫১)

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فُضِّلْتُ عَلَى الْاَنْۢبِيَاءِ بِسِتٍّ اُعْطِيْتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَاُحِلَّتْ لِــىَ الْغَنَائِمُ وَجُعِلَتْ لِــىَ الْاَرْضُ مَسْجِدًا  وَّطَهُوْرًا وَّاُرْسِلْتُ اِلَـى الْـخَلْقِ كَافَّةً وَّخُتِمَ بِــىَ النَّبِيُّوْنَ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, আমাকে ছয়টি বিষয়ে অন্যান্য সমস্ত হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর বিশেষ মর্যাদা মুবারক দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনাদের একক মালিক। তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানার্থেই সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালত মুবারকসহ সমস্ত প্রকার নি‘য়ামত ও ফযীলত মুবারক হাছিল করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তবে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে খাছভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ ছয়টি সম্মানিত নিয়ামত মুবারক উনাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে,)  (১) আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্মানিত ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (২) সম্মানিত রো’ব মুবারক দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে অর্থাৎ আমাকে সম্মানিত রো’ব মুবারক হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (৩) আমার জন্য গনীমতের মাল হালাল করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (৪) আমার জন্য সমস্ত যমীনকে মসজিদ তথা নামায ও ‘ইবাদত-বন্দিগীর স্থান করে দেয়া হয়েছে এবং অত্যন্ত পবিত্র করে দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (৫) আমি সমস্ত কায়িনাতের জন্য, সমস্ত মাখলুক্বাতের জন্য মহাসম্মানিত রসূল তথা সাইয়িদুল মুরসালীন, ইমামুল মরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যিন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। সুবহানাল্লাহ! এবং (৬) হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের আগমনের ধারাবাহিকতা আমার মাধ্যমেই শেষ করা হয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৫২-৫৪)

عَنْ حَضْرَتْ اَبِــىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ بُعِثْتُ بِـجَوَامِعِ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَبَيْنَا اَنَا نَائِمٌ رَاَيْتُنِـىْ اُتِيْتُ بِـمَفَاتِيْحِ خَزَائِنِ الْاَرْضِ فَوُضِعَتْ فِــىْ يَدِىْ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমাকে (সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত) সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম-কালাম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেই প্রেরণ করা হয়েছে, সৃষ্টি করা হয়েছে এবং আমাকে সম্মানিত রো’ব মুবারক হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে। একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। তখন আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সমস্ত পৃথিবীর, সারা কায়িনাতের যাবতীয় ধনভাণ্ডারের চাবিসমূহ এনে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) রাখা হয় অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে সমস্ত পৃথিবীর, সারা কায়িনাতের যাবতীয় ধনভাণ্ডারের চাবিসমূহ সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করে আমার একখানা সম্মানিত বিশেষ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক ঘটানো হয়।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

(৫৫-৫৬)

عَنْ حَضْرَتْ ثَوْبَانَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰی عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ زَوٰى لِـىَ الْاَرْضَ فَرَاَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَـهَا وَاِنَّ اُمَّتِـىْ سَيَبْلُغُ مُلْكُهَا مَا زُوِىَ لِـىْ مِنْهَا وَاُعْطِيْتُ الْكَنْزَيْنِ الْاَحْـمَرَ وَالْاَبْيَضَ وَاِنِّــىْ سَاَلْتُ رَبّـِــىْ لِاُمَّتِـىْ اَنْ لَّا يُهْلِكَهَا بِسَنَةٍ عَامَّةٍ وَاَنْ لَّا يُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِّنْ سِوٰى اَنْفُسِهِمْ فَيَسْتَبِيْحَ بَيْضَتَهُمْ واِنَّ رَبّـِــىْ قَالَ يَا مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّــىْ اِذَا قَضَيْتُ قَضَاءً فَاِنَّهٗ لَا يُرَدُّ وَاِنِّـىْ اَعْطَيْتُكَ لِاُمَّتِكَ اَنْ لَّا اُهْلِكَهُمْ بِسَنَةٍ عَامَّةٍ وَاَنْ لَّا اُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِّنْ سِوٰى اَنْفُسِهِمْ فَيَسْتَبِيْحَ بَيْضَتَهُمْ وَلَوِ اجْتَمَعَ عَلَيْهِمْ مَّنْ بِاَقْطَارِهَا اَوْ قَالَ مَنْ بَيْنَ اَقْطَارِهَا حَتّٰى يَكُوْنَ بَعْضُهُمْ يُهْلِكُ بَعْضًا وَّيَسْبِــىْ بَعْضُهُمْ بَعْضًا.

    অর্থ: “বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত ছাওবান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি (আমার সম্মানিত উম্মত উনাদের সম্মানিত শান-মান মুবারক উনাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্য) আমার সম্মুখে সারা কায়িনাত অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরলেন। অতঃপর আমি সারা কায়িনাতের মধ্যে যা কিছু রয়েছে এবং তার যত প্রান্তসমূহ রয়েছে সমস্ত কিছু দেখে নিলাম। (কোন কিছুই বাকী রইলো না।) আর নিশ্চয়ই আমাকে যেই পর্যন্ত দেখানো হয়েছে, অতিশীঘ্রই আমার সম্মানিত উম্মত উনাদের সম্মানিত কর্তৃত্ব মুবারক সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক সেখানে যেয়ে পৌঁছবে। সুবহানাল্লাহ! আর আমাকে (আনুষ্ঠানিকভাবে) দু’টি ধনভান্ডার সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে, একটি লাল অপরটি সাদা (অর্থাৎ, কায়সার ও কিসরার ধনভান্ডার)। আমি আমার রব উনার কাছে আমার সম্মানিত উম্মত উনাদের জন্য সম্মানিত আরজী মুবারক করেছি, যেন উনাদেরকে একই বছর ব্যাপকভাবে (দুর্ভিক্ষের দ্বারা) ধ্বংস না করা হয়। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন (আমার সম্মানিত উম্মত) উনাদের উপর স্বজাতি ব্যতীত অন্য শত্রুকে এমন কর্র্তৃত্ব দান না করেন যে, তারা (আমার সম্মানিত উম্মত) উনাদের কেন্দ্রস্থলকে দখল করে নেয়। আমার রব তা‘য়ালা, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি যখন কোন ব্যাপারে সম্মানিত ফায়ছালা মুবারক করি, তখন তা পরিবর্তন করা হয় না। আমি আপনাকে আপনার সম্মানিত উম্মত উনাদের ব্যাপারে এই সম্মানিত ওয়াদা মুবারক দিচ্ছি যে, আমি উনাদেরকে একই বছর ব্যাপকভাবে (দুর্ভিক্ষের দ্বারা) ধ্বংস করব না এবং উনাদের স্বজাতি ব্যতীত শত্রুকে উনাদের উপর এমন কর্তৃত্ব দিব না যে, তারা উনাদের কেন্দ্রস্থল দখল করতে পারে। যদিও (আপনার সম্মানিত উম্মত) উনাদের বিরুদ্ধে উনাদের কেন্দ্রস্থলের সর্বদিকে যারা রয়েছে, তারা একত্রিত হয়। (রাবী সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন,) অথবা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, আপনার সম্মানিত উম্মত উনাদের কেন্দ্রস্থলের সর্বদিকে যারা অবস্থিত রয়েছে। এমনকি তারা নিজেরাই একে অপরকে ধ্বংস করতে থাকবে এবং একে অপরকে বন্দী করতে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৫৭-৬২)

عَنْ حَضْرَتْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ لَقِيْتُ حَضْرَتْ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قُلْتُ لَه اَخْبِرْنِـىْ عَنْ صِفَةِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـى التَّوْرٰىةِ قَالَ اَجَلْ وَاللهِ اِنَّهٗ لَمَوْصُوْفٌ فِـى التَّوْرٰىةِ بِبَعْضِ صِفَتِهٖ فِـى الْقُرْاٰنِ یٰۤاَیُّہَا النَّبِـىُّ اِنَّـــاۤ اَرْسَلْنٰكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا وَّحِرْزًا لِّلْاُمِّيِّـيْـنَ اَنْتَ عَبْدِىْ وَرَسُوْلِـىْ سَـمَّـيْتُكَ الْمُتَوَكِّلَ لَيْسَ بِفَظٍّ وَّلَا غَلِيْظٍ وَّلَا صَخَّابٍ بِالْاَسْوَاقِ وَلَا يَدْفَعُ بِالسَّيِّئَةِ السَّيِّئَةَ وَلٰكِنْ يَّعْفُوْ وَيَغْفِرُ وَلَنْ يَّقْبِضَهُ اللهُ حَتّٰى يُقِيْمَ بِهِ الْمِلَّةَ الْعَوْجَاءَ بِاَنْ يَّقُوْلُوْا لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَيَفْتَحَ بِـهَا اَعْيُنًا عُمْيًا وَّاٰذَانًا صُمًّا وَّقُلُوْبًا غُلْفًا.

অর্থ: “হযরত ‘আত্বা’ ইবনে ইয়াসার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, একদা আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনুল ‘আছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে সাক্ষাৎ করে উনাকে বললাম, সম্মানিত তাওরাত শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যেই মহাসম্মানিত ছিফত মুবারক, বৈশিষ্ট্য মুবারক বর্ণিত রয়েছেন, সেই সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বললেন, হ্যাঁ, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ছিফত মুবারক, বৈশিষ্ট্য মুবারক থেকে কিছু মহাসম্মানিত ছিফত মুবারক, বৈশিষ্ট্য মুবারক সম্মানিত তাওরাত শরীফ-এ বর্ণনা করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! যেমন- আমার মহাসম্মানিত নবী-রসূল, আমার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা, সতর্ককারী হিসাবে এবং উম্মীদের রক্ষাকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি, সৃষ্টি করেছি। আপনি আমার ‘আব্দ তথা মাহবূব হাবীব এবং আমার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! আমি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক দিয়েছি ‘মুতাওয়াক্কিল বা ভরসাকারী’। আপনি অত্যন্ত দয়ালু, অত্যন্ত নরম দিল মুবারক উনার অধিকারী এবং সর্বোত্তম আদব-শরাফত মুবারক শিক্ষাদানকারী। সুবহানাল্লাহ! তিনি কোন মন্দ দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করবেন না; বরং তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন এবং মাফ করে দিবেন অর্থাৎ কেউ দোষ-ত্রুটি করেলে, তিনি সম্মানিত হিকমত মুবারক উনার মাধ্যমে তাকে পরিশুদ্ধ করে দিবেন। আমি উনাকে ততদিন পর্যন্ত দুনিয়া থেকে (আমার মহাসম্মানিত দীদার মুবারক-এ) উঠিয়ে নিবো না, যতদিন পর্যন্ত উনার সম্মানার্থে বক্রপথে চলিত, (বিভ্রান্ত) জাতিকে, (সমস্ত জিন-ইনসানকে) সৎপথের উপর প্রতিষ্ঠিত না করবো যে, তারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমাহ শরীফ পাঠ না করবে, সম্মানিত ঈমান না আনবে এবং উনার সম্মানার্থে অন্ধ ব্যক্তির চক্ষু না খুলবে, বধির ব্যক্তির শ্রবণ শক্তি ফিরে না পাবে এবং অনুভূতিহীন অন্তরসমূহ উন্মুক্ত না হবে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, আল আদাবুল মুফরাদ ১/৯৫, দালায়িলুন নুবুওওয়াহ ১/৩৭৪, শরহুস সুন্নাহ ১৩/২০৮, শু‘য়াবুল ঈমান ৩/৫, মিশকাত শরীফ)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৬৩-৬৮)

عن حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَا اَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الْاَرْضُ فَاُكْسٰى حُلَّةً مِّنْ حُلَلِ الْـجَنَّةِ ثُـمَّ اَقُوْمُ عَنْ يَّـمِيْـنِ الْعَرْشِ لَيْسَ اَحَدٌ مِّنَ الْـخَلَائِقِ يَقُوْمُ ذٰلِكَ الْمَقَامَ غَيْرِىْ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমাকে একজোড়া সম্মানিত জান্নাতী বিশেষ পোশাক মুবারক পরিধান করানো হবে। অতঃপর আমি সম্মানিত ‘আরশে ‘আযীম মুবারক উনার ডান পাশে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে সম্মানিত অবস্থান মুবারক গ্রহণ করবো। সুবহানাল্লাহ! আমি ব্যতীত সৃষ্টিজগতের অন্য কেউই উক্ত মহাসম্মানিত স্থান মুবারক-এ অবস্থান করতে পারবে না। (এই মহাসম্মানিত শান মুবারক একমাত্র আমার জন্যই নির্দিষ্ট)।” সুবহানাল্লাহ! (আল জামি‘উছ ছগীর শরীফ ১/২৩১, কাশফুল খ্বফা’ শরীফ ১/২০৩, কান্যুল ‘উম্মাল শরীফ ১১/৪০৩, মিশকাত শরীফ, তাফসীরে মাযহারী শরীফ ১/৩৫৩, তাফসীরে খাযিন শরীফ ৩/১৪)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৬৯-৭০)

عن حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ سَلُوا اللهَ الْوَسِيْلَةَ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا الْوَسِيْلَةُ قَالَ اَعْلٰى دَرَجَةٍ فِـى الْـجَنَّةِ لَا يَنَالُـهَا اِلَّا رَجُلٌ وَاحِدٌ وَاَرْجُوْ اَنْ اَكُوْنَ اَنَا هُوَ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত ওয়াসীলাহ মুবারক কামনা করুন। হযরত ছাহবায়ে ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা জানতে চাইলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সম্মানিত ওয়াসীলাহ মুবারক কী? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এটা সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সর্বোচ্চ মর্যাদার একখানা সম্মানিত বিশেষ মাক্বাম মুবারক। যা কেবলমাত্র একজন মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাকেই সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হবে। আর আমি আশা করি আমিই হব সেই মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক। অর্থাৎ আমাকে দ্বারাই সেই ‘সম্মানিত ওয়াসীলাহ্’ নামক বিশেষ মাক্বাম মুবারক সম্মানিত ও সৌন্দর্য মণ্ডিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শারীফ)

 

অসমাপ্ত-পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৬

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৭

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১