মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩তম পর্ব)

সংখ্যা: ২৯১তম সংখ্যা | বিভাগ:

(৩৪তম ফতওয়া হিসেবে)

“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।

পূর্ব প্রকাশিতের পর

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জুমাদাল উখরা শরীফ মাসে প্রকাশিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফসমূহ

 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ তারীখ মুবারক= ৭টি

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফ= ১০টি

(৩) ক. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২০শে জুমাদাল উখরা শরীফ:

সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, আন নূরুর রবি‘আহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস:

সৃষ্টির সূচনাতেই বেমেছাল অনন্য খুছূছিয়াত

মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক

‘নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

قَالَ الْكِسَائِـىُّ وَغَيْـرُهٗ لَمَّا خَلَقَ اللهُ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ خَلَقَ مِنْ ضِلْعِهِ الْاَيْسَرِ حَضْرَتْ حَوَّاءَ عَلَيْـهَا السَّلَامُ وَهُوَ فِـى الْـجَنَّةِ وَاَوْدَعَهَا حُسْنَ سَبْعِـيْـنَ حَوْرَاءَ فَصَارَتْ حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْـهَا السَّلَامُ بَـيْـنَ الْـحُوْرِ الْعِـيْـنِ كَالْقَمَرِ بَـيْـنَ الْكَواكِبِ وَكَانَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ نَائِمًا فَـلَمَّا اسْتَـيْـقَظَ مَدَّ يَـدَهٗ اِلَيْـهَا فَـقِـيْلَ لَهٗ حَـتّٰـى تُـؤَدِّىَ مَهْرَهَا قَالَ وَمَا هُوَ قَالَ اَنْ تُصَلِّـىَ عَلـٰى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَّقِـيْلَ حَـتّٰـى تَـعَلَّمَهَا مَعَالِـمَ دِيْــنِهَا وَكَانَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَوْدَعَهُ اللهُ مِنَ الْـحُسْنِ وَالْكَمَالِ حَـتّٰـى اَنَّ خَدَّهُ الْاَيْـمَنَ يَـغْلِبُ شُعَاعَ الشَّمْسِ وَكَانَ نُـوْرُ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـىْ خَدِّهِ الْاَيْسَرِ يَـغْلِبُ عَلَى الْقَمَرِ وَكَانَ حَضْرَتْ يُـوْسُفُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِـيْهِ فَـلَمَّا نَظَرَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِـىْ وَجْهِ حَضْرَتْ حَوَّاءَ عَلَيْـهَا السَّلَامُ نَظَرَتْ حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْـهَا السَّلَامُ فِـىْ وَجْهِ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ يَا حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْـهَا السَّلَامُ مَا اَرٰى اَنَّ اللهَ تَـعَالـٰى خَلَقَ خَلْقًا اَحْسَنَ مِنْكِ وَمِنِّـىْ فَاَوْحَى اللهُ تَـعَالـٰى اِلـٰى حَضْرَتْ جِبْـرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ خُذْ بِـيَدِ حَضْرَتْ حَوَّاءَ عَلَيْـهَا السَّلَامُ وَحَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِلَـى الْفِرْدَوْسِ الْاَعْلـٰى وَافْـتَحْ لَـهُمَا قَصْرًا مِّنَ الْقُصُوْرِ فَـفَتَحَ بَابَ قَصْرٍ مِّنَ الْيَاقُـوْتِ الْاَحْـمَرِ فِـيْهِ قُــبَّةٌ مِّنَ الْكَافُـوْرِ عَلـٰى قَـوَائِمِهِ الزَّبَـرْجَدِ فِـىْ رَوْضَةٍ مِّنْ زَعْفَرَانَ فَـفَتَحَ حَضْرَتْ جِبْـرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بَابَ الْقُبَّةِ فَـرَاٰى سَرِيْـرًا مِّنَ الذَّهَبِ قَـوَائِمَهٗ مِنَ الدُّرِّ عَلَيْهِ جَارِيَةٌ لَّـهَا نُـوْرٌ وَّشُعَاعٌ عَلـٰى رَاْسِهَا تَاجٌ مِّنْ ذَهَبٍ مُّرَصَّعٌ بِالْـجَوَاهِرِ لَـمْ يَـرَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَحْسَنَ مِنْهُ عَلَيْهِ صُوْرَةً جَـمِيْـلَةً قَالَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَا رَبِّ مَنْ هٰذِهِ الصُّوْرَةُ قَالَ اَلنُّـوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُـنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءُ عَلَيْـهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُـنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْـهَا السَّلَامُ) بِنْتُ نَـبِـىِّ سَيِّدِنَا مَوْلـٰـنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَا رَبِّ مَنْ يَّكُوْنُ بَـعْلُهَا فَـقَالَ اللهُ تَـعَالـٰى يَا حَضْرَتْ جِبْـرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِفْـتَحْ بَابَ قَصْرٍ مِّنْ يَّاقُـوْتٍ فَـفَتَحَ لَهٗ فَـرَاٰى فِـيْهِ قُـبَّةً مِّنَ الْكَافُـوْرِ فِـيْـهَا سَرِيْـرٌ مِّنْ ذَهَبٍ عَلَيْهِ شَابٌّ حُسْنُهٗ كَحُسْنِ حَضْرَتْ يُـوْسُفَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَـقَالَ هٰذَا بَـعْلُهَا اِمَامُ الْاَوَّلِ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ كَـرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ (حَضْرَتْ عَلِـىُّ بْنُ اَبِـىْ طَالِبٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ) فَـقَالَ يَا رَبِّ هَلْ لَّـهُمْ اَوْلَادٌ فَاَمَرَ اللهُ تَـعَالـٰى حَضْرَتْ جِبْـرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنْ يَّـفْتَحَ بَابَ قَصْرٍ مِّنَ اللُّؤْلُؤِ فَـفَتَحَ بَابَ قَصْرٍ مِّنَ اللُّؤْلُؤِ فِـيْهِ قُــبَّـةٌ مِّنَ الزَّبَـرْجَدِ فِـيْـهَا سَرِيْـرٌ مِّنَ الْعَـنْۢـبَـرِ عَلَيْهِ صُوْرَةُ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اِمَامِ الثَّانِـىْ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْـحَسَنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَسَيِّدِنَا حَضْرَتْ اِمَامِ الثَّالِثِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْـنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) فَـرَجَعَ حَضْرَتْ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِلـٰى مَوْضِعِهٖ

অর্থ: “হযরত ইমাম কিসায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ আরো অনেকেই বর্ণনা করেন, সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি মুবারক করার পর উনার বাম পাঁজরের হাড় মুবারক থেকে উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাকে সৃষ্টি মুবারক করেন। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার মধ্যে ৭০ জন সম্মানিতা  হূর উনাদের সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! ফলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক সকল সম্মানিতা হূর উনাদের মাঝে এরূপভাবে ফুটে উঠলেন যেমন সমস্ত তারকারাজির মাঝে চন্দ্রের সৌন্দর্য। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনাকে বেমেছাল সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন তিনি ঘুম থেকে উঠলেন, তখন তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার দিকে স্বীয় হাত মুবারক বাড়ালেন। তখন উনাকে বলা হলো, সম্মানিত মোহরানা মুবারক আদায় করা ব্যতীত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনাকে স্পর্শ করা যাবে না। সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক কী? মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ তিনবার সম্মানিত দুরূদ শরীফ পাঠ করুন। সুবহানাল্লাহ! আর কেউ কেউ বলেন, (কোনো কোনো বর্ণনা মতে), আপনি উনাকে সম্মানিত দ্বীনী তা’লীম দিবেন- এই শর্তে স্পর্শ মুবারক করতে পারবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক এবং পূর্ণতা মুবারক হাদিয়া মুবারক করলেন। ফলে উনার সম্মানিত ডান গাল মুবারক উনার সৌন্দর্য মুবারক সূর্যের আলোক উজ্জ্বলকে হার মানালেন। যা ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নূর মুবারক উনার এক অংশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সম্মানিত বাম গাল মুবারক-এ এমন সৌন্দর্য মুবারক রাখা হলো, যা চন্দ্রের আলো থেকে সমুজ্জ্বল। আর এটা সাইয়্যিদুনা হযরত ইঊসুফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক উনার দিকে এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক উনার দিকে দৃষ্টি মুবারক দিলেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম! আমার দেখা মতে মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার এবং আমার চেয়ে আর কাউকে এতো অধিক সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেননি। সুবহানাল্লাহ! তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত আদেশ মুবারক করলেন, (হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম!) আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত হাত মুবারক ধরে উনাদেরকে ‘ফিরদাউসে আলা’ উনার নিকট নিয়ে যান এবং উনাদের জন্য সেখানকার সম্মানিত বালাখানাসমূহ থেকে দুইটি সম্মানিত বালাখানা মুবারক খুলে দিন। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি লাল ইয়াকুত পাথরের একটি সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দ্বার মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে জাফরানের বাগানের মধ্যে কপূর্রের একখানা সম্মানিত গম্বুজ মুবারক ছিলো, যার পায়া ছিলো গোমেদ অর্থাৎ পীতবর্ণের মণিবিশেষ দ্বারা তৈরি। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত গম্বুজ মুবারক উনার দরজা মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে স্বর্ণ নির্মিত একখানা খাট মুবারক দেখতে পেলেন, যার পায়াগুলো ছিলো মুক্তার। তিনি উক্ত খাট মুবারক-এ একজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মহিলা আলাইহাস সালাম উনাকে দেখতে পেলেন, যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মহিলা আলাইহাস সালাম উনার থেকে অবিরত ধারায় সম্মানিত ও পবিত্র নূর মুবারক এবং রশ্মি মুবারক বিচ্ছূরিত হচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক-এ) জাওহার খচিত স্বর্ণের তাজ মুবারক শোভা পাচ্ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মহিলা আলাইহাস সালাম উনার থেকে এতো অধিক বিস্ময়কর খুব ছূরত মুবারক উনার অধিকারিণী আর কাউকে কখনো দেখেননি। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! এতো অধিক বেমেছাল বিস্ময়কর সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী এই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক তিনি কে? মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তিনি হচ্ছেন আমার যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত (মেয়ে) সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আন নূরুর রবি‘আহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওজুম মুকাররাম (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহাল) কে হবেন? অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আপনি ইয়াকুত নির্মিত সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দরজা মুবারক খুলে দিন। তারপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দরজা মুবারক খুলে দিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে একখানা কপূর্র নির্মিত গম্বুজ মুবারক উনার ভিতর স্বর্ণের খাট মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত ইঊসুফ আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় (বরং উনার চেয়েও) অত্যধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী একজন সম্মানিত যুবক উনাকে দেখতে পেলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, ইনিই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আন নূরুর রবি‘আহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওজুম মুকাররাম ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী! উনাদের কী কোনো আওলাদ রয়েছেন? তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে লু’লু’ অর্থাৎ অতি মূল্যবান মুক্তা মুবারক দ্বারা নির্মিত একখানা সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দ্বার মুবারক খুলে দিতে নির্দেশ মুবারক দিলেন। ফলে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার দ্বার মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে জমরূদ নির্মিত একখানা গম্বুজ মুবারক উনার ভিতরে একখানা আম্বরের খাট মুবারক-এ সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম) উনার এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম) উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের সম্মানিত ছূরত মুবারক শোভা পাচ্ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! (উনাদেরকে দেখে সবশেষে) সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার স্থান মুবারক-এ ফিরে আসলেন।” (নুযহাতুল মাজালিস ২/১৭২)

উপরোক্ত সম্মানিত ঘটনা মুবারক দ্বারা সৃষ্টির শুরুতেই উম্মু আবীহা, আন নূরুর রবি‘আহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মর্যাদা-মর্তবা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

এ কারণেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَـرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ اِنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَـقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَـيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ الـنُّـبُـوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْـتَـلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَـيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ

অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলিম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ অর্থাৎ বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)

আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,

اِنَّا نَـحْنُ اَهْلُ بَـيْتٍ لَّا يُـقَاسُ بِنَا اَحَدٌ مَّنْ قَاسَ بِنَا اَحَدًا فَـقَدْ كَفَرَ

অর্থ: “নিশ্চয়ই আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ! যে ব্যক্তি আমাদের সাথে অন্য কাউকে তুলনা করবে, অবশ্যই সে কুফরী করবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!

(অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)

 

 

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৩

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৪

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৫

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া