মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ ও মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৭১

সংখ্যা: ২৯১তম সংখ্যা | বিভাগ:

৩৩তম ফতওয়া হিসেবে

“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”-

পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

মুহাদ্দিছগণ উনাদের মাঝে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত মাক্বাম মুবারক

যদি মুহাদ্দিছগণ উনাদের মাঝে মর্যাদার স্তর বিন্যাস করা হয় তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সমসাময়িক প্রথম সারির মুহাদ্দিছগণ যেমন- হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম আওযায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রমূখ মুহাদ্দিছগণ উনাদের সমমর্যাদার অধিকারী হবেন। বরং উনাকে যদি উক্ত সম্মানিত ইমামগণ উনাদের উপর প্রাধান্য দেয়া হয় তবুও বাড়াবাড়ি হবে না। কারণ ঐসকল সম্মানিত ইমামগণই উনাকে নিজেদের উপর প্রাধান্য দিতেন। সুবহানাল্লাহ!

যেমন হযরত হাম্মাদ ইবনে যায়েদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমরা বিশিষ্ট মুহাদ্দিছ হযরত আমর ইবনে দিনার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট আসতাম। তখন ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আগমন করলে তিনি আমাদেরকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সমীপে প্রশ্ন করতে সুযোগ করে দিতেন। আমরা উনার নিকট প্রশ্ন করলে তিনি আমাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতেন। সুবহানাল্লাহ! (আল খইরাতুল হিসান লি ইবনে হাজার হায়তামী)

হযরত ইসমাঈল ইবনে আবি ফুযায়েল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দেখলাম, তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাত মুবারক ধরে হাঁটছেন। উনারা উভয়ে যখন মসজিদে এসে পেঁৗছলেন তখন হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে আগে বাড়িয়ে দিলেন। (কাওয়ায়েদ ফী উলূমিল হাদীছ-৩১৯ পৃষ্ঠা)

বিশিষ্ট মুহাদ্দিছ হযরত আসবাত ইবনে নজর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, প্রখ্যাত ইমাম মানসূর ইবনুল মুতামিরের কাছে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিরাট মর্যাদার আসন ছিল বলে প্রত্যক্ষ করেছি। তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দেখলে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং উনার সাথে এমন আচরণ করতেন, যা অন্য কারো সঙ্গে করতেন না। সুবহানাল্লাহ! (মানাকিবে ইমাম আবী হানীফা লিল মুয়াফফাক- ২৯৪ পৃষ্ঠা)

হযরত হাম্মাদ ইবনে যায়েদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ফিক্বাহ ও হাদীছ শাস্ত্রে বছরার শ্রেষ্ঠ ইমাম আইয়্যূব সাখতিয়ানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আমাকে বলেছেন, আপনি যখন ইরাকের বিখ্যাত আলিম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তখন উনাকে আমার  সালাম পেঁৗছাবেন। অপর বর্ণনায় আছে উনাদের (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত আইয়ূব সাখতিয়ানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মাঝে চিঠিপত্রের আদান প্রদান ছিল) (ছহীহ হাদীছ ও কথিত আহলে হাদীছ- পৃষ্ঠা ১০৬)

এক ব্যক্তি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট থেকে ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট আগমন করলে তিনি তাকে বলেছিলেন, তুমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ফকীহ উনার নিকট থেকে আগমন করেছো। নিঃসন্দেহে যে ব্যক্তি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিরোধিতা করে তার জন্য প্রয়োজন হলো উনার চেয়ে অধিক মর্যাদা ও ইলম মুবারক উনার অধিকারী হওয়া। আর এমনটা পাওয়া যাওয়া খুবই কঠিন।

যখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি একসঙ্গে হজ পালন করেছিলেন তখন হযরত সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে আগে বাড়িয়ে নিজে পিছনে পিছনে চলতেন। উনাদের উভয়কে কোনো প্রশ্ন করা হলে হযরত সুফিয়ান ছওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জবাব দিতেন না, বরং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জবাব দিতেন। সুবহানাল্লাহ! (আল খইরাতুল হিসান- ৭৬ পৃষ্ঠা)

ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সামনে এমন থাকতাম যেমন বাজপাখির সামনে চড়ুইপাখি থাকে । (আর তিনি হলেন সমস্ত আলিম উনাদের সাইয়্যিদ) (আর রাফউ ওয়াত তাকমীল- পৃষ্ঠা ৩৯)

ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মজলিসে বড়দের খুব ছোট অবস্থায় দেখেছি। আর নিজেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মজলিসে যতটা ছোট ও তুচ্ছ দেখেছি ততটা অন্য কোনো মজলিসে তেমন দেখিনি। (মানাকিবে আবী হানীফা লিল মাওয়াফফাক- পৃষ্ঠা ৩০৮)

আবুল অলীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ইমাম শোবা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছানা-ছিফত মুবারক করতেন। উনার সামনে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আলোচনা মুবারক হয়েছে আর তিনি উনার জন্য দুআ মুবারক করেননি এমনটি আমি কখনো দেখিনি। (মানাকিবে আবী হানীফা লিল মাওয়াফফাক- পৃষ্ঠা ৩০৮)

হযরত হারেছ ইবনে আব্দুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমরা বিশিষ্ট মুহাদ্দিছ হযরত আতা ইবনে আবী রাবাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সামনে একে অপরের পিছনে থাকতাম এমতাবস্থায় যখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আগমন করতেন, তখন উনার জন্য স্থান প্রশস্ত করে দিয়ে উনাকে কাছে টেনে নিতেন। (মানাকিবে আবী হানীফা লিল মাওয়াফফাক- পৃষ্ঠা ৩০৮)

সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার চোখে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ন্যায় কাউকে দেখিনি। (মানাকিবে আবী হানীফা লিল মাওয়াফফাক- পৃষ্ঠা ৩০৮)

ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি বিশিষ্ট মুহাদ্দিছ হযরত মিসআর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মুখে বসে প্রশ্ন করতে এবং উনার নিকট থেকে বুঝে নিতে দেখেছি। (তারীখে বাগদাদ-১৩/৩৪৩ পৃষ্ঠা)

ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, যদি আমার প্রতি অতিরঞ্জনের আঙ্গুলি নির্দেশ করার আশঙ্কা না হতো তাহলে আমি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উপর কাউকে প্রাধান্য দিতাম না। (মানাকিবে আবী হানীফা লিল মাওয়াফফাক- ৩০৭ পৃষ্ঠা)

এখানে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ব্যাপারে যুগশ্রেষ্ঠ কতিপয় ইমাম উনাদের উক্তি ও উনার সঙ্গে উনাদের আচরণের কিছু নমুনা উপস্থাপন করা হলো। যাদ্বারা একথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, মুহাদ্দিছগণের নিকট সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাক্বাম ছিল অনেক উচ্চে! উনার সমসাময়িক ইমামগণ কথা ও কাজে তা স্পষ্ট করে গেছেন।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আমল করার ক্ষেত্রে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশেষ গুরুত্বারোপ

যারা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযহাব ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নিয়ে গবেষণা করেন, তাদের অবশ্যই এ বাস্তবতা স্বীকার করতে হবে যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অন্যান্য মুজতাহিদদের তুলনায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আমল করার ক্ষেত্রে বেশি কঠোর ছিলেন। বরং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়লা আনহুম উনাদের আছার অনুযায়ী আমল করার বিষয়টি ছিল উনার মাযহাবের একটি অন্যতম মূলনীতি।

পক্ষান্তরে কোন কোন ইমামের মাযহাব হলো- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের আছার বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও উনারা ক্বিয়াস অনুযায়ী আমল করতেন। তাছাড়া উনার আরেকটি নীতি হলো, উনার নিকট যদি নির্ধারিত শর্তসহ কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ প্রমাণিত হতো, তাহলে তিনি অন্য কোন দিকে ঝুকতেন না, যদিও তা ক্বিয়াসের পরিপন্থী হয়। এমনকি জঈফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে পর্যন্ত বিশুদ্ধ ক্বিয়াসের উপর প্রাধান্য দিতেন। এক কথায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ হলো উনার মাযহাবের দ্বিতীয় প্রধান উৎস। যারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আমল করা থেকে সরে যান তিনি তাদের তিরস্কার করেছেন। (তারিখুল ইসলাম, আল্লামা যাহাবী-৬/১৩৮ পৃষ্ঠা)

হযরত হাসান ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে কোন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বিশুদ্ধ বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে তিনি তা ছেড়ে অন্য দিকে যান না। (ইকমালু তাহজীবিল কামাল-১২/৫৬ পৃষ্ঠা)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে একথা বলতে শুনেছি, কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে এলে তা অবশ্যই পালনীয়। আর যদি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে আসে তবুও তা গ্রহণ করি। উনাদের বক্তব্য থেকে সরে যাই না। আর যদি হযরত তাবিয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের থেকে আসে তাহলে উনাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হই। (সিয়ারু আলামীন নুবালা- ৬/৮০১)

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এই উক্তি এতটাই প্রসিদ্ধ যে, যে সকল মুজতাহিদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযহাবের উছূল বিষয়ে দু’ কলম লিখেছেন, উনাদের প্রত্যেকেই তা  বর্ণনা করেছেন। এমনকি এটি তাওয়াতুর এর পর্যায়ে চলে গেছে।

ইমাম ইবনুল কায়্যিম হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, শুধু সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিই নন, বরং উনার সমস্ত আছহাব এ কথার ওপর একমত যে, জঈফ হাদীছ শরীফ কিয়াসের ওপর অগ্রাধিকার রাখে। (ইলামুল মুআক্কায়ীন -১/৯৯ পৃষ্ঠা)

এতদসত্ত্বেও একথা বলা যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ ছেড়ে শুধু ক্বিয়াস শরীফ উনার উপর আমল  করেন, এটা নিঃসন্দেহে এই মহান ইমাম উনার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ, যা কোনো ঈমানদার আহলে ইলমের জন্য বলা সমীচীন নয়। তাছাড়া নছ বিদ্যমান থাকা অবস্থায় ক্বিয়াস করার বিষয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা বর্ণিত হয়েছে ।

যেমন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, কিতাবুল্লাহ বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ঐক্যমত বিদ্যমান থাকা অবস্থায় ব্যক্তিগত মতামত প্রদান করা কারো জন্য জায়িয নেই। (আওজাযুল মাসালিক ভূমিকা- ১/৫৯ পৃষ্ঠা)

তিনি আরো বলেন, সাবধান! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার দ্বীনের ব্যাপারে ব্যক্তিগত রায় দেয়া থেকে বিরত থেকো। তোমাদের ওপর আবশ্যক হলো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা করা। কারণ যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক থেকে বেরিয়ে যাবে সে গুমরাহ হয়ে যাবে। (আওজাযুল মাসালিক ভূমিকা- ১/৫৯ পৃষ্ঠা)

একদা উনার নিকট কূফার একজন অধিবাসী প্রবেশ করলো। তখন উনার দরবার শরীফে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ পাঠ করা হচ্ছিল। লোকটি বলে উঠলো, আমাদের সামনে এসব হাদীছ শরীফ? একথা শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তাকে কঠিনভাবে শাসালেন এবং বললেন, যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত না হতো তাহলে আমাদের কেউ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ বুঝতে সক্ষম হতো না। তিনি আরো বলেন, মানুষের মধ্যে যতক্ষণ পর্যন্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অন্বেষণকারী বিদ্যমান থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা সঠিক পথে থাকবে। আর তারা যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ ছাড়া অন্য কোন ইলিম অন্বেষণ করবে তখন তারা বিপদগামী হবে। তিনি আরো বলেন, তাদের জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো কথা বলা উচিত নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা জেনে না নেয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত শরীয়ত তা অনুমোদন করে। (মাকানাতুস সুন্নাহ- ৭৭-৭৮ পৃষ্ঠা)

অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন।

 

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৩

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৪

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৫

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া