মাহে শাওওয়াল শরীফ এবং উনার প্রাসঙ্গিক আলোচনা

সংখ্যা: ২২৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

আরবী দশম মাসটির নাম শাওওয়াল। এ মাসের পহেলা তারিখ দিনটি ঈদুল ফিতর উনার দিন। ঈদুল ফিতর উনার রাত ও দিন উভয়টি অতিশয় ফযীলত ও মর্যাদার। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “পবিত্র ঈদুল ফিতর উনার রাতে একদল হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা আসমান হতে যমীনে আগমন করে উচ্চস্বরে ঘোষণা করতে থাকেন, হে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয় বান্দাগণ! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দির জন্য এক মাস রোযা রেখেছো, বিনিময়ে মহান আল্লাহ পাক তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং তোমাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি জান্নাতে এমন সব বালাখানা তৈরি করে দিবেন, যা অন্য কারো পক্ষে লাভ করা সম্ভব হবে না। শুধুমাত্র যারা তোমাদের মতো নেক আমল করবে তারাই সে মর্যাদা লাভে সক্ষম হবে।”

আর দিনটির ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ঈদুল ফিতর উনার দিনে যখন মুছল্লীগণ ঈদের নামায আদায় করার জন্য ঈদগাহে জমায়েত হন তখন মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়, “হে আমার বান্দাগণ! তোমরা আমারই রিযামন্দি মুবারক লাভের আশায় এক মাস রোযা রেখেছো এবং আজ আমার সন্তুষ্টি মুবারক লাভের আশায় ঈদগাহে সমবেত হয়েছো। কাজেই, আমি আজ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। যাও, তোমরা আজ চিরমুক্ত ও নির্মল।”

উক্ত ফযীলত, বরকত ও রহমতপূর্ণ খুশি প্রকাশের দিনটিতে বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেন ওলীয়ে মাদারযাদ, লখতে জিগারে হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, ক্বায়িম-মাক্বামে বিনতে রসূল হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম, বাহরুল উলূম সাইয়্যিদাতুন নিসা, নাক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ঊলা ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

এ মাসের একটি ফযীলতের বিষয় হচ্ছে, এ মাসের ২৫ তারিখে বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন যামানার লক্ষস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার লক্ষ্যস্থল আওলাদের রসূল, মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম-মাক্বামে উম্মু রসূলিল্লাহ হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম, আওলাদুর রসূল আমাদের সম্মানিতা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম।

উনার শান-মান, বুযুর্গী-সম্মান, ফযীলত বর্ণনার অপেক্ষা রাখেনা। কেননা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যে সকল বান্দা-বান্দী উনাদেরকে মনোনীত করে সৃষ্টি করেছেন এবং যমীনে পাঠিয়েছেন উনাদের মধ্যে একজন হলেন সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম।

উল্লেখ্য, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা যেমনিভাবে মনোনীত; উনাদের যাঁরা সম্মানিত পিতা আলাইহিমুস সালাম এবং সম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম উনারাও তেমনি মনোনীত। ফলে উনাদের ব্যাপারে উম্মতের ইজমা বা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারো পিতা-মাতা উনারা কেউই কাফির-মুশরিক ছিলেন না। বরং উনারা ছিলেন উনাদের যামানায় মহান আল্লাহ পাক উনার আখাচ্ছুল খাছ মনোনীত ও মকবূল বান্দা-বান্দী উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

অনুরূপ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের আগমনের ধারা বন্ধ হওয়ার পর খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফ-এর পর উনার প্রতিনিধি হিসেবে শতাব্দীর মুজাদ্দিদরূপে যাঁরা আগমন করেন উনারাও মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মনোনীত ও প্রেরিত হয়ে থাকেন এবং উনাদের যারা সম্মানিত পিতা এবং সমমানিতা মাতা উনারাও মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত ও মকবুল বান্দা-বান্দী উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিতা আম্মা আলাইহাস সালাম উনাদের মনোনীত ও মক্ববুল হওয়া এবং পবিত্রতার বিষয়টি মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ঘোষণা করে দিয়েছেন।

যেমন- এ মর্মে মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আম্মা আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “হে হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে মনোনীত এবং পবিত্র করেছেন এবং আপনাকে সারা জাহানের মহিলাদের উপর মনোনীত করেছেন।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪২)

আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “অতঃপর উনাকে উনার প্রতিপালক মহান আল্লাহ পাক তিনি উত্তমরূপে কবুল করেছেন এবং উনাকে উত্তমরূপে প্রবৃদ্ধি বা প্রতিপালন করেছেন।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৭)

উদ্ধৃত আয়াতে কারীমা উনার দ্বারা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিতা আম্মা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মনোনীত হওয়া, পবিত্র হওয়া, কবুল হওয়া এবং উনাদের উত্তমরূপে প্রতিপালন হওয়ার বিষয়টি সাব্যস্ত হয়েছে।

অতএব, যিনি ক্বায়িম-মাক্বামে উম্মু রসূলিল্লাহ, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন আমাদের সম্মানিতা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনিও ছিলেন উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক। সুবহানাল্লাহ!

-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ শুয়াইব আহমদ

 

মাহে মুহররমুল হারাম ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা

মাহে রবীউল আউয়াল শরীফ ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা

মাহে রবীউছ ছানী ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা

মাহে জুমাদাল উখরা ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা

মাহে রজব ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা