যুল ওয়াসীলাহ, খইরুল আলামীন, সাইয়্যিদুছ ছাক্বলাইন, ছাহিবুল কাওছার, যিক্রুল্লাহ, খইরু খলক্বিল্লাহ, আস সিরাজুল মুনীর, ইমামুল মুত্তাক্বীন, মালিকুল কায়িনাত, আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াক্বেয়াহ মুবারক

সংখ্যা: ২৭৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

সম্মানিত তিজারাত তথা ব্যবসার উদ্দেশ্যে সম্মানিত সফর মুবারক

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিহ ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৬ মাস দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। তার মধ্যে ২ মাস সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সম্মানিত তিজারত তথা ব্যবসার উদ্দেশ্যে যাওয়া-আসা মিলে ২ মাস, ১ মাস ব্যবসা এবং ১ মাস সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ অবস্থান মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

ব্যবসা ছিলো কুরাইশদের প্রধান পেশা। তখন কুরাইশরা সাধারণত কাপড় ও খাদ্য-শস্যের ব্যবসা মুবারক করতেন। উনারা শীতকালে ইয়ামেন এবং গ্রীষ্মকালে শাম দেশে (সিরিয়ায়) সফর করতেন। এই সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اٖلٰفِهِمْ رِحْلَةَ الشِّتَآءِ وَالصَّيْفِ.

অর্থ: “উনাদের (কুরাইশ) আসক্তি হচ্ছে শীত ও গ্রীষ্মকালে সফর করা।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা কুরাইশ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২)

মহাসম্মানিত ও মাহপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ এবং সম্মানিত শা’বান শরীফ এই দুই মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর তিনি সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ মাসে সম্মানিত তিজারত তথা ব্যবসার উদ্দেশ্যে শাম দেশে সফর মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

خَرَجَ اَبُوْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ ذَبِـيْحُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ) اِلَـى الشَّامِ فِـى تِـجَارَةٍ مَّعَ جَـمَاعَةٍ مِّنْ قُرَيْشٍ.

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি কুরাইশদের একটি কাফেলা নিয়ে সম্মানিত তিজারত তথা ব্যবসার উদ্দেশ্যে শাম দেশে রওনা মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/১৮৭, সিমতুন নুজূম ১/২৯০)

শাম দেশে সম্মানিত অবস্থান মুবারক

আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি দীর্ঘ এক মাস পর শাম দেশে পৌঁছেন। তারপর একমাস সেখানে সম্মানিত তিজারত তথা ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। মহান আল্লাহ পাক উনার ফযলে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত তিজারত তথা ব্যবসায় অনেক লাভবান হন। আর উনার সম্মানার্থে কুরাইশরা পূর্বের তুলনায় এবার ব্যবসায় কল্পনাতীত লাভবান হন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ

কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

فَفَرَغُوْا مِنْ تِـجَارَتِـهِمْ ثُـمَّ انْصَرَفُوْا فَمَرُّوْا بِالْـمَدِيْنَةِ وَاَبُوْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ ذَبِـيْحُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ) يَوْمَئِذٍ مَرِيْضٌ فَقَالَ اَتَـخَلَّفُ عِنْدَ اَخْوَالِـىْ بَنِـىْ عَدِىِّ بْنِ النَّجَّارِ.

অর্থ: “দীর্ঘ একমাস শাম দেশে সম্মানিত তিজারত তথা ব্যবসা-বাণিজ্য করার পর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি কুরাইশদের নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। প্রায় এক মাস পর উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার কাছাকাছি এসে পৌঁছেন। অতঃপর উনারা যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তাই তিনি কুরাইশদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন-

اَتَـخَلَّفُ عِنْدَ اَخْوَالِـىْ بَنِـىْ عَدِىِّ بْنِ النَّجَّارِ.

অর্থ: “আমি সম্মানিত বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রের আমার সম্মানিত মামা উনাদের নিকট থেকে যাবো।” (ইবনে সা’দ ১/৯৯, বিদায়াহ-নিহায়াহ ৩/৩৮২, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৭৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩৩১, ‘উয়ূনুল আছার ১/৩৮ ইত্যাদি)

অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ থেকে যান। আর উনার সাথে যাঁরা ছিলেন উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ চলে যান।

সম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় মহাসম্মানিতক ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে সম্মানিত অবস্থান মুবারক এবং উনার সম্মানিত মামা উনাদের কর্তৃক উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আন্জাম মুবারক দেয়া

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রের উনার সম্মানিত মামা উনাদের নিকট এক মাস অবস্থান মুবারক করেন। এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,

فَاَقَامَ عِنْدَهُمْ مَرِيْضًا شَهْرًا.

অর্থ: “অতঃপর তিনি উনার সম্মানিত মামা উনাদের নিকট সম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় এক মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন।” (ইবনে সা’দ ১/৯৯, বিদায়াহ-নিহায়াহ ৩/৩৮২, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৭৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩৩১, ‘উয়ূনুল আছার ১/৩৮ ইত্যাদি)

‘মাওলিদুল বারযান্জী শরীফ’ উনার লিখক সাইয়্যিদ জা’ফর ইবনে হাসান ইবনে আব্দুল কারীম ইবনে মুহম্মদ ইবনে আব্দুর রসূল বারযান্জী হুসাইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ : ১১২৮ হিজরী শরীফ এবং বিছাল শরীফ : ১১৭৭ হিজরী শরীফ) তিনি ‘মাওলিদুল বারযানজী শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন-

وَكَانَ قَدِ اجْتَازَ بِاَخْوَالِهٖ بَنِـىْ عَدِىٍّ مِّنَ الطَّائِفَةِ النَّجَّارِيَّهْ  *

وَمَكَثَ فِيْهِمْ شَهْرًا سَقِيْمًا يُّعَانُوْنَ سُقْمَهٗ وَشَكْوَاهْ *

অর্থ: “যখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি নাজ্জারিয়াহ গোত্রের বনী আদী বংশের উনার সম্মানিত মামা উনাদেরকে অতিক্রম করছিলেন (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তাই),

তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় উনার সম্মানিত মামা উনাদের নিকট এক মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মামা উনারা উনার সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় উনার (চিকিৎসাসহ) যাবতীয় সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাওলিদুল বারযানজী ১৭পৃ.)

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশের কথা বর্ণনা এবং সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র

মদীনা শরীফ প্রেরণ

অতঃপর যখন কুরইশরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ পৌঁছেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই সম্মানিত কাফেলায় সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহি সালাম উনাকে দেখতে না পেয়ে অত্যন্ত চিন্তিত হলেন। তিনি এ বিষয়ে সবাইকে জিজ্ঞাসা করেন। উনারা বলেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ প্রকাশ করেছেন। ফলে তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রের উনার সম্মানিত মামা উনাদের নিকট রয়ে গেছেন।

এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

فَلَمَّا قَدِمَ اَصْحَابُهٗ مَكَّةَ سَاَلَـهُمْ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ جَدُّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) عَنْهُ فَقَالُوْا خَلَّفْنَاهُ مَرِيْضًا فَبَعَثَ اِلَيْهِ اَخَاهُ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ اَلْـحَارِثَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَوَجَدَهٗ قَدْ تُوُفّـِىَ.

অর্থ: “তারপর যখন সাইয়্যিদুনা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথীগণ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ যেয়ে পৌঁছলেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদেরকে সাইয়্যিদুনা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেন। উনারা জবাবে বললেন, সাইয়্যিদুনা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। যার কারণে আমরা উনাকে (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ) রেখে এসেছি। এ জবাব শুনার সাথে সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদণ্ড সাইয়্যিদুনা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার অবস্থা মুবারক জানার জন্য উনারই আপন ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ প্রেরণ করেন। অতঃপর তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পেলেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!

অপর বর্ণনায় রয়েছে-

فَبَعَثَ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ جَدُّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) اَكْبَـرَ وَلَدِهٖ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ اَلْـحَارِثَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَوَجَدَهٗ قَدْ تُوُفّـِىَ.

অর্থ: “অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত বড় আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনাকে (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ) প্রেরণ করেন। অতঃপর তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পেলেন যে, সাইয়্যিদুনা খাজা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহপবিত্র বরকতময় বিছালী

শান মুবারক প্রকাশ

কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে-

وَلَـمَّا تَـمَّ مِنْ حَـمْلِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سِتَّةُ اَشْهُرٍ عَلٰى مَشْهُوْرِ الْاَقْوَالِ الْـمَرْوِيَّهْ*

تُوُفِّـىَ بِالْـمَدِيْنَةِ الْـمُنَوَّرَةِ الشَّرِيْفَةِ حَضْرَتْ ذَبِيْحُ اللهِ الْمُكَرَّمُ اَبُوْهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ*

অর্থ: “মশহূর তথা প্রসিদ্ধ বর্ণনা মতে, যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত অবস্থানকাল ছয় মাস পূর্ণ হয়, তখন উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা মুনাওওয়ারা শরীফ উনার মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ পাঠ করার ছহীহ ও সুন্নতী তরতীব)

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আয’ম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় দীর্ঘ এক মাস মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২রা মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ সকালে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ অবস্থানকাল মুবারক ৬ মাস পূর্ণ হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!

সময়টি ছিলো সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার ৫৩ বছর ২ মাস পূর্বে। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার ২ মাস ১০ দিন পূর্বে। সুবহানাল্লাহ!

মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের ঘটনা মুবারক বর্ণনা:

হযরত আবূ রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের অনেক লম্বা ইতিহাস। মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের যখন মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন করা হলো, তখন মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ দুই মাস অবস্থান মুবারক করেন। তারপর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সফর মুবারক-এ যান।

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উম্মু আয়মন আলাইহাস সালাম উনাকে ‘উম্মী বা’দা উম্মী’ অর্থাৎ উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার পরে হযরত উম্মু আয়মন আলাইহাস সালাম উনাকে ‘উম্মী’ বলে সম্বোধন করতেন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে এনেছিলেন এবং উনার মহাসম্মানিত আওলাদ হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খেদমত মুবারক-এ উনাকে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার পর উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার খেদমত মুবারক-এ উনাকে দেয়া হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! হযরত মহাসম্মানিত উম্মু আয়মন আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে বলা হয় যে, উনি একমাত্র ব্যক্তিত্ব যিনি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াবী দৃষ্টিতে যমীনে তাশরীফ নেয়ার পূর্ব থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দীদার মুবারক-এ তাশরীফ নেয়া পর্যন্ত উনার ছোহবত মুবারক-এ ছিলেন। তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার খিলাফত মুবারক কালীন সময়ে তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি যখন ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সফর মুবারক-এ যান, তখন হযরত উম্মু আয়মন আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম উনার সাথে তিনি অবস্থান মুবারক করতেছিলেন। হযরত উম্মু আয়মন আলাইহাস সালাম তিনি নিজে বলেছেন যে, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম তিনি সব সময় চিন্তিত থাকতেন, আমি সব সময় উনাকে নানাভাবে সন্তুষ্ট করার জন্য, এতমিনান মুবারক দান করার জন্য আমি কোশেশ করাতাম। যেহেতু মাত্র দুই মাস অবস্থান করার পর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য সফরে গিয়েছেন, সেখান থেকে কবে আসবেন তিনি অপেক্ষমাণ ছিলেন। এদিকে হযরত উম্মু আয়মন আলাইহাস সালাম তিনিও সব সময় বিষয়টা খোঁজ নিতেছিলেন। জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে যেয়ে তিনি সংবাদ নিতেন যে উনারা কখন আসবেন। তিনি নিজেই বলেছেন যে, আমি সংবাদ নিতাম; কিন্তু কখন আসবেন এই বিষয়টা তাহক্বীক্ব না থাকার কারণে আমি কখনো এটা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার কাছে বলতাম না, চুপিয়ে রাখতাম। কারণ তিনি চিন্তিত হবেন। তিনি বলেন, তারপর যখন কাফেলার লোক চলে আসলো, কিন্তু মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি তাশরীফ মুবারক আনলেন না, আমি জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে সংবাদ নিলাম। লোকজন যারা এসেেেছন উনারা বলেছেন যে, উনি উনার মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, যার জন্য তিনি আসতে পারেন নি। এই সংবাদ পৌঁছানো হলো। এটা শুনে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম তিনি নিজেও মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করলেন। এদিকে যখন জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম উনাকে সংবাদ নেওয়ার জন্য, খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ পাঠালেন। তিনি এমতাবস্থায় যেয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ পৌঁছলেন, তখন মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং তিনি উনার রওযা শরীফেও তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

এদিকে হযরত উম্মু আয়মন আলাইহাস সালাম বলতেছিলেন যে, আমি প্রতি দিন সংবাদ নিতে থাকলাম যে, হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি কবে সংবাদ মুবারক নিয়ে তাশরীফ মুবারক আনবেন। আর এদিকেতো মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম তিনি সব সময় চিন্তিত ছিলেন, তিনি কখন তাশরীফ মুবারক আনবেন। আর এদিকে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ মুবারক নেওয়ার সময় নিকবর্তী হচ্ছিলো পর্যায়ক্রমে। এই সংবাদটা হযরত উম্মু আয়মন আলাইহাস সালাম উনার কাছে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র আম্মা আলাইহাস সালাম তিনি নিজেই দিয়েছিলেন এবং তিনি অত্যন্ত খুশি মুবারকও প্রকাশ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এদিকে হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি যখন সংবাদ নিয়ে আসলেন, হযরত উম্মু আয়মন আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আমি গেলাম সংবাদ নেওয়ার জন্য। যখন সংবাদ শুনা গেলো যে, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, সকলে চিন্তিত হলেন এবং তিনি বললেন যে, উনি নিজেও শুনে হুঁশ মুবারক হারিয়ে ফেললেন, বেহুঁশ হয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কারণ তিনি চিন্তিত ছিলেন, তিনি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনাকে কি সংবাদ পৌঁছাবেন? আর এই সংবাদ পৌঁছালে, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার কি শান মুবারক তিনি প্রকাশ করবেন? সেজন্য তিনি চিন্তিত হয়ে তিনি নিজেই বলেন যে, আমি বিলাপ করতে করতে অর্থাৎ এজন্য আফসোস করতে করতে আমি আমার নিজের হুঁশ হারিয়ে ফেলি। অনেক্ষণ পর্যন্ত আমি বেহুঁশ ছিলাম। যখন হুঁশ মুবারক ফিরে আসলো, তখন আমি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার কাছে এসে যখন বিষয়টা বললাম, আমার ভাষা দিয়ে আমি প্রকাশ করতে পারতেছিলাম না যে, কি করে এটা প্রকাশ করবো। তিনি বুঝতে পারলেন। তিনি বুঝতে পেরে তিনিও শুনে উনার বেহুঁশী শান মুবারক তিনি প্রকাশ করলেন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি অনেক্ষণ সেই শান মুবারক-এ ছিলেন। হযরত উম্মু আয়মন আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি উনার সেই শান মুবারক থেকে অর্থাৎ হুঁশ মুবারক আনার জন্য আমি সার্বিকভাবে কোশেশ করতে থাকলাম। যে, কোনো ব্যতিক্রম কিছু হয়ে যায় কিনা! অনেক কোশেশ করার পর তিনি উনার সেই ছিহ্হাতী শান মুবারক প্রকাশ করলেন এবং তিনি এজন্য অনেক উনার নূরুল মুহব্বত মুবারক অর্থাৎ অনেক রোনাজারী তিনি করলেন।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর কায়িনাতের অবস্থা

একমাত্র যিনি খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাত সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার খাদিম। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে সমস্ত কায়িনাত শোক প্রকাশ করেছেন। স্বয়ং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাও শোক প্রকাশ করেছেন। যেমন এ প্রসঙ্গে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّهٗ قَالَ لَـمَّا تُوُفّـِىَ اَبُوْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ ذَبِـيْحُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ) قَالَتِ الْـمَلَائِكَةُ يَا اِلـٰهَنَا وَيَا سَيّـِدَنَا بَقِىَ نَبِيُّكَ يَتِيْمًا وَفِـىْ رِوَايَةٍ صَارَ نَبِيُّكَ بِلَا اَبٍ فَبَقِىَ مِنْ غَيْـرِ حَافِظٍ وَمُرَبٍّ فَقَالَ اللهُ اَنَا لَهٗ حَافِظٌ وَنَصِيْـرٌ وَفِـىْ رِوَايَةٍ اَنَا وَلِيُّهٗ وَحَافِظُهٗ وَحَامِيُهٗ وَرَبُّهٗ وَعَوَّنُهٗ وَرَازِقُهٗ وَكَافِيُهٗ فَصَلُّوْا عَلَيْهِ وَتَبَرَّكُوْا بِاِسْـمِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা (কেঁদে কেঁদে) বলছিলেন- ইয়া বারে ইলাহী, খালিক, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক! আপনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো একক, বেনিয়ায তথা ছমাদিয়াতের বিশেষ শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

অপর বর্ণনায় রয়েছে- হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা বললেন, ইয়া বারে ইলাহী! আপনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো পিতৃহীন হয়ে গেলেন। (আপনি ব্যতীত দুনিয়াবী দৃষ্টিতে) উনার তো কোন রক্ষনাবেক্ষণকারী এবং দেখা-শুনা তথা লালন-পালনকারী আর কেউ বাকী থাকলেন না। অর্থাৎ আপনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো বেনিয়ায তথা ছমাদিয়াতের বিশেষ শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! জবাবে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম (আপনারা সাক্ষী থাকুন-) আমিই উনার মহাসম্মানিত হিফাযতকারী এবং আমিই উনার সাহায্যকারী। সুবহানাল্লাহ! অপর বর্ণনায় রয়েছে, আমিই উনার মহাসম্মানিত ওয়ালী তথা বন্ধু, অভিভাবক, আমিই উনার রক্ষনাবেক্ষণকারী, আমিই উনার মহাসম্মানিত রব তা‘য়ালা তথা লালন-পালনকারী, আমিই উনার মহাসম্মানিত সাহায্যকারী, আমিই উনার মহাসম্মানিত রিযিকদাতা এবং সার্বিক বিষয়ে আমিই উনার জন্য যথেষ্ট। সুবহানাল্লাহ! কাজেই হে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম! আপনারা সকলেই আমার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করুন তথা উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করুন। সুবহানাল্লাহ! এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসম বা নাম মুবারক দ্বারা সীমাহীন বরকত মুবারক হাছিল করুন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/১৮৭, শারহুয যারকানী ১/২০৭)

সম্মানিত গোসল মুবারক করানো, সম্মানিত কাফন মুবারক পড়ানো এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ সকালে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনার সম্মানিত গোসল মুবারক এবং সম্মানিত কাফন মুবারক সম্পন্ন মুবারক করা হয়। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত ছলাতুল ‘আছর উনার ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পূর্বেই অত্যন্ত সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক উনার সাথে সম্মানিত খাটিয়া মুবারক-এ করে সম্মানিত আবওয়া শরীফ নামক স্থান মুবারক-এ নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর উনাকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হয়। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সম্মানিত সংবাদ মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা

শরীফ-এ পৌঁছা

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে দেখার জন্য উনার আপন ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি আছরের ওয়াক্তে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে পৌঁছেন। তখন তিনি দেখতে পান যে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে মুবারক তাশরীফ নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি এই অবস্থা দেখে উনার মহাসম্মানিত ভাই উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে অত্যন্ত ব্যথিত হলেন এবং উনার দুই চোখ মুবারক দিয়ে অবিরত ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগলেন। সুবানাল্লাহ! তারপর সাইয়্যিদুন হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সম্মানিত সংবাদ মুবারক নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাক্কা শরীফ আসেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, মালিকাতুল জান্নাত, মালিকাতুল কায়িনাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা ‘আম্মাত তথা ফুফু আলাইহিন্নাস সালাম উনারা, উনার সম্মানিত ইখওয়ান তথা ভাই আলাইহিমুস সালাম উনারা, উনার সম্মানিত আখওয়াত তথা বোন আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং উনার সমস্ত আত্মীয়-স্বজন উনারা সকলে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সম্মানিত সংবাদ মুবারক শুনে অত্যন্ত ব্যথিত হন এবং উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে অবিরত ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করেন, কান্না করেন। সুবহানাল্লাহ! কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

 

فَرَجَعَ فَاَخْبَرَهٗ فَوَجَدَ عَلَيْهِ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ جَدَّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدَنَا حَضْرَتْ عَبْدَ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَحَضْرَتْ عَمَّاتَهٗ عَلَيْهِنَّ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ اِخْوَتَهٗ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ اَخْوَاتَهٗ عَلَيْهِنَّ السَّلَامُ وَجْدًا شَدِيْدًا.

অর্থ: “অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ) প্রত্যাবর্তন করেন। তারপর তিনি উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক—এ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সম্মানিত সংবাদ মুবারক পেশ করেন। সম্মানিত সংবাদ মুবারক শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা ‘আম্মাত তথা ফুফু আলাইহিন্নাস সালাম উনারা, উনার সম্মানিত ইখওয়ান তথা ভাই আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং উনার সম্মানিত আখওয়াত তথা বোন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সকলে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে অত্যন্ত কঠিভাবে ব্যথিত হন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১/৩৩১)

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ওয়ারিছত্ত হিসেবে যা রেখে যান

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ওয়ারিছত্ত হিসেবে অনেক সম্পদ মুবারক রেখে যান। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আইমন আলাইহাস সালাম তিনি, ৫টি উট, একটি বকরীর পাল এবং একটি তরবারী মুবারক। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে—

تَرَكَ اَبُوْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ ذَبِـيْحُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ) سَيِّدَتَنَـا حَضْرَتْ اُمَّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَخَـمْسَةَ اَجْـمَالٍ وَقِطْعَةً مِّنْ غَنَمٍ وَفِـىْ رِوَايَةٍ وَسَيْفًا وَهُوَ مَاْثُوْرٌ فَوَرِثَ ذٰلِكَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ اَبِيْهِ وَكَانَتْ سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ اُمُّ اَيْـمَنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ تَـحْضُنُه وَاسْـمُهَا سَيِّدَتُنَـا حَضْرَتْ بَرَكَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ.

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানতি ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পূর্বে ওয়ারিছত্ত হিসেবে রেখে যানÑ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আইমন আলাইহাস সালাম উনাকে, ৫টি উট এবং একটি বকরীর পাল। অপর বর্ণনায় রয়েছে, এবং একটি তরবারী মুবারক, যা ছিলো ঐতিহ্যসূত্রে প্রাপ্ত। সুবহানাল্লাহ! ফলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার কাছ থেকে এই সমস্ত বিষয়গুলো ওয়ারিছত্ব হিসেবে লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আইমন আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত কোল মুবারক—এ নিতেন এবং উনাকে সম্মানিত লালনপালন মুবারক করার ক্ষেত্রে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতেন। উনার সম্মানিত নাম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত বারাকাহ আলাইহাস সালাম’।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩৩২, আল মুখতাছরুল কাবীর ফী সীরাতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/২১, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৭৭, নিহায়াতুল ঈজায ১/৫৮, তালক্বীহ ১/১৪, আত ত্ববাক্বতুল কুবরা লিইবনে সা’দ ১/৮০ ইত্যাদি)

মূলত, এই সম্মানিত তরবারী মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পক্ষ থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইসমাঈল যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যম দিয়ে বংশানুক্রমে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে পৌঁছেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক:

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে কতো বছর অবস্থান মুবারক করেছেন, এই বিষয়ে কিতাবে অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়া সালাম তিনি সমস্ত ইখতিলাফ মিটিয়ে দিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার ৭৮ বছর ৮ মাস ১০ দিন পূর্বে ২রা রজবুল হারাম শরীফ লাইলাতুস সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার ৫৩ বছর ২ মাস পূর্বে অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার ২ মাস ১০ দিন পূর্বে ২রা মুহাররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ সকালে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সুতরাং তিনি দুনিয়ার যমীনে ২৫ বছর ৬ মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!

—মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।

 

 

 

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং নিজেই সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেন

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুল ফারীক্বাইন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজেই নিজের বিলাদত শরীফ পালন করে খুশি প্রকাশ করেন

হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের খিলাফতকালে নাবিইয়ুর রহমাহ, নাজিইয়ুল্লাহ, নূরুম মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করেছেন এবং এ উপলক্ষে ব্যয় করার ফযীলতও বর্ণনা করেছেন

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেছেন

বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয হওয়ার প্রমাণ