“প্রটোকল” পুস্তক একটি মূল্যবান দলীল। দুনিয়ার মানুষকে সর্বপ্রথম এ বইটি সম্পর্কে অবহিত করেন প্রফেসর সারকিল এ নাইলাস নামক জনৈক গোঁড়া রুশীয় পাদ্রী। ১৯০৫ সালে প্রফেসর নাইলাস নিজে উদ্যোগী হয়ে বইটি প্রকাশ করেন। বইয়ের ভুমিকায় তিনি উল্লেখ করেন যে, “ইহুদী ফ্রি-ম্যাসন ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রস্থল” ফ্রান্সের একটি ফ্রি-ম্যাসন লজ থেকে জনৈক মহিলা(সম্ভবতঃ হিব্রু ভাষায় লিখিত) মূল বইটি চুরি করে এনে তাঁকে উপহার দেন।
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার পর কোন মহিলাকেই আর ফ্রি-ম্যাসন আন্দোলনের সদস্য করা হয়না। সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে মহিলারা ফ্রি-ম্যাসন লজে যাবার অনুমতি পেলেও বৈঠকাদির সময় তাদের বের করে দেয়া হয়। নাইলাস ধর্মে খৃষ্টান ছিলেন। তিনি স্বীয় ধর্মকে ইহুদী ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যেই এ বইটি বিশ্ববাসীর কাছে পেশ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলেন।
প্রটোকল বইটি গুপ্ত চক্রান্ত মারফত বিশ্ব সমাজ গঠনের ইহুদী পরিকল্পিত একটি নীল নক্শা। আমরা বইটির এই গুরুত্ব উপলব্ধি করে ইংরেজী থেকে তার বাংলা অনুবাদ এখানে পেশ করছি। চিন্তাশীল পাঠক তা মনোযোগ সহকারে পাঠ করলে বিশ্বব্যাপী ইহুদী ষড়যন্ত্র সম্পর্কে একটা সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবেন। নিম্নে প্রটোকল পুস্তকে বর্ণিত ইহুদীদের নিজস্ব অভিমত ও মুসলমান দমনের গোপন পরিকল্পনা বা নীল-নকশা তুলে ধরা হলো-
(গত সংখ্যার পর)
“অতি প্রাচীনকালে আমরাই সর্বপ্রথম জনগণের মাঝখানে দাঁড়িয়ে “উদারনীতি” “সমানাধিকার” ও “ভ্রাতৃত্বের” ধুয়া তুলেছি। নির্বোধ তোতা পাখির দল এরপর থেকে এ শব্দগুলোকে অসংখ্যবার উচ্চারণ করেছে এবং চারদিক থেকে ছুটে এসে আমাদের এ ফাঁদে ধরা দিয়ে পৃথিবীর সত্যিকার কল্যাণ ও জনগণের প্রকৃত আজাদী হরণে সহায়তা করেছে। এর আগে জনগণের চাপ থেকে আজাদী ও কল্যাণকে বহু যতেœ সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছিল। মুসলিম সমাজের ভাবি জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান ব্যক্তিগণও শব্দগুলোকে উচ্চারণ করেছে কিন্তু এগুলোর অন্তর্নিহিত অর্থ তারা বুঝতেই পারেনি। তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও শব্দগুলোর মধ্যে যে গরমিল রয়েছে, তাও তারা লক্ষ্য করেনি। তারা দেখতে পায়নি যে, প্রাকৃতিক জগতেরই কোথাও সমানাধিকার প্রতিষ্ঠিত নয় এবং প্রাকৃতিক নিয়মেই আজাদী বলতে কোন কিছু নেই। তারা দেখতে পায়নি যে, প্রকৃতিই মন, চরিত্র ও কর্মক্ষমতার ক্ষেত্রে তারতম্য সৃষ্টি করেছে এবং যেভাবে সে সবাইকে প্রাকৃতিক নিময় মেনে নিতে বাধ্য করেছে, ঠিক সেভাবেই সামাজিক তারতম্যও মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। এ বুদ্ধিমানের দল মুহূর্তের জন্যও একটু স্থিরভাবে চিন্তা করে দেখেনি যে, জনসমষ্টি একটি অন্ধশক্তি এবং যে সব ভূঁইফোড় ব্যক্তি জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভ করে, তারাও ঐ ভোটদাতা জনগণের মতই অন্ধ। তারা এটাও ভেবে দেখেনি যে, অভিজ্ঞ ব্যক্তি নির্বোধ হলেও শাসনকার্য চালাতে পারে। পক্ষান্তরে অনভিজ্ঞ ব্যক্তি প্রতিভাবান হলেও রাজনীতির প্রকৃতি বুঝতে অক্ষম। মুসলিম সমাজ এসব বিষয়ের প্রতি কোনই গুরুত্ব আরোপ করেনি। তাদের শাসন ক্ষমতা গোত্রীয় ব্যবস্থায় সংরক্ষিত ছিলো। পিতা তার সন্তানকে রাজনৈতিক ব্যাপারে এমন সব জ্ঞানগর্ভ বিষয় শিক্ষা দিতেন যা ঐ গোত্রের লোকদের প্রকাশ করতে রাজী হতোনা। কালক্রমে গোত্রীয় ব্যবস্থাধীন পিতার রাজনৈতিক জ্ঞান পুত্রের উত্তরাধিকারে আসার সুষ্ঠ ব্যবস্থা ভেঙ্গে গেল এবং এরই ফলে আমাদের বিজয় সহজতর হলো। পৃথিবীর কোণায় কোণায় “উদারনীতি” “সমানাধিকার ও ভ্রাতৃত্বের” বুলি বিপুল জনসমষ্টিকে আকৃষ্ট করেছে এবং এক বিরাট বাহিনী সোৎসাহে আমাদের ঝান্ডা নিজেদের কাঁধে তুলি নিয়েছে। এ সাফল্যের জন্য এজেন্টগণ সত্যই ধন্যবাদার্হ। আমাদের প্রবর্তিত এ শ্লোগানগুলো মুসলিম সমাজের সুখ-শান্তিকে উঁই পোকার মত খেয়ে ফেলছে। সর্বত্র সুখ-শান্তি, সংহতি ও গর রাষ্ট্রের যাবতীয় সংস্থা ধ্বংস করে চলেছে।
এ ধ্বংসলীলা আমাদের বিজয়ে সহায়ক হয়েছে। আমাদের হাতে কর্তৃত্বের রশি এসেছে। এ রশি টেনে টেনে আমরা তাদের অধিকার হরণ করেছি এবং মুসলিম সমাজে সম্ভ্রান্ত শ্রেণী নামক যে মহলটি আমাদের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরক্ষার কাজ করতে সমর্থ ছিল সে শ্রেণীর অস্তিত্বই নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি। মুসলিম সমাজের স্বাভাবিক ও বংশানুক্রমিক সম্ভ্রান্ত শ্রেণীর ধ্বংস স্তুপের উপর আমরা আমাদের শিক্ষিত ও অর্থশালী লোকদের দ্বারা অপর একটি নয়া সম্ভ্রান্ত গোষ্ঠি গড়ে তুলেছি। এ নয়া সম্ভ্রান্ত গোষ্ঠিতে শুধু অর্থশালী ও শিক্ষিত ব্যক্তিগণই শামিল হতে পারে। অর্থের জন্য তাদের সর্বদাই আমাদের মুখাপেক্ষী হতে হয়। আর শিক্ষা? শিক্ষার মূল ভাবধারাটিই আমাদের বিজ্ঞ মুরুব্বী শ্রেণীর লোকেরাই নিয়ন্ত্রণ করছে।
আমাদের বিজয় আরও সহজ করার জন্য আমরা যে সমস্ত মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছি, সর্বদাই তাদের অন্তরের দুর্বলতম স্থানগুলোতে হস্ত সঞ্চালন করেছি। নগদ লেনদেন, সম্পদের লোভ, বস্তুতান্ত্রিক চাহিদা পূরণের জন্য মানসিক চাঞ্চল্য ইত্যাদি বিষয় মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত কর্ম-প্রেরণা চিরদিনের জন্য স্তব্ধ করে দিতে পারে। কেননা এসব দুর্বলতার দরুণ মানুষ নিজের ইচ্ছাশক্তিকে তাদের হাতেই তুলে দেয়, যারা কর্ম-প্রেরণার মূল্য দিয়ে তাদের সত্ত্বাকেই খরিদ করে দিতে সক্ষম?
আজাদী শব্দটির মর্মগত অস্পষ্টতার দরুণ আমরা সকল দেশের জনতাকে একথা বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক জনগণ আর সরকার তাদের প্রতিনিধি মাত্র। আর পুরাতন ছিন্ন দস্তানার মতই প্রতিনিধিকে যে কোন সময় বদলানো যেতে পারে। জনসাধারণের প্রতিনিধিকে পরিবর্তনের এ সম্ভাবনাটিই তাদের নেতাগণকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে এবং এ ক্ষমতাবলে আমরা তাদের নিয়োগ ও বরখাস্ত করার গুপ্ত অধিকার লাভ করেছি।”
পাঠক! ইহুদীদের প্রটোকলে বর্ণিত এই বক্তব্য থেকে স্পষ্টই প্রতিভাত হয় যে, জনগণের দ্বারা পরিচালিত সরকার তথা নির্বাচন ও গণতন্ত্র পুরোই মুসলমানদের উপর, ইহুদীদের দ্বারা আরোপিত নীল নকশাঁ। আর এক্ষেত্রে তারাই যে নেপথ্য থেকে তাদের পছন্দানুযায়ী সরকার চাপিয়ে দিয়ে থাকে তাও ব্যক্ত হয়েছে।
-সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলমগীর, ঢাকা।
প্রসঙ্গ: গণতন্ত্র; এখনই চরম সময়, বিষয়টি ভাবিবার