সম্পাদকীয়

সংখ্যা: ২৭৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

সমস্ত প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

মহাসম্মানিত, মহাপবিত্র পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল মুবারক হয়েছে বিশ্ববাসীর জন্য। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে “আর জিন ও মানুষের মাঝে এমন অনেক জিন ও মানুষ রয়েছে, যাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গেছে। অর্থাৎ তারা তাদের বদ আমলের দ্বারা তাদের উপর জাহান্নাম অবধারিত করে নিয়েছে। তাদের অন্তর রয়েছে; কিন্তু তারা উপলব্ধি করতে পারে না। তাদের চক্ষু রয়েছে; কিন্তু তারা দেখতে পায় না। তাদের কান রয়েছে; কিন্তু তারা শুনতে পায় না। তারা হচ্ছে চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায়; বরং তার চেয়েও অধিক নিকৃষ্ট। মূলত তারা হচ্ছে গাফিল।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সূরা আ’রাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭৯)

আজ করোনা গযবে কাফির গোষ্ঠীর মাঝে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে। তাদের তথাকথিত সামরিক জোট, সামরিক শক্তি সব অকেজো, অর্থহীন প্রমাণিত হয়েছে। নমরুদের মশার চেয়েও তুচ্ছ এ করোনা ভাইরাস। কারণ নমরুদকে ধ্বংসকারী মশা অন্ধ হলেও ল্যাংড়া হলেও, বধির হলেও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হলেও তার একটা অস্তিত্ব ছিল। সেটা দৃশ্যমান ছিলো। আর করোনার আকৃতি হচ্ছে ১ মাইক্রো মিটারের ১০ ভাগের ১ ভাগ। ১ মাইক্রো মিটার হচ্ছে ১ মিলিমিটারের ১০০০ ভাগের ১ ভাগ। অর্থাৎ করোনার আকৃতি হচ্ছে ১ মিলিমিটারের ১০০০ ভাগের ১ ভাগ। শক্তিশালী ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ ছাড়া দেখা সম্ভব নয়। অর্থাৎ আজকের বিশ্ব যেরূপ ডিজিটাল দাবী করে তারচেয়েও মহাডিজিটাল গযব হচ্ছে করোনা ভাইরাস।

এক সমীক্ষা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাংক রয়েছে আট হাজার ৮০০টি, যুদ্ধবিমান রয়েছে ১৩ হাজার ৪০০টি, আর যুদ্ধ জাহাজ ৪৩৭টি। রাশিয়ার ট্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি। দেশটির ট্যাংক সংখ্যা ১৫ হাজার ৪০০টি। এছাড়া যুদ্ধ বিমান রয়েছে ৩ হাজার ৫০০টি, যুদ্ধ জাহাজ ৩৫২টি। চীনের ট্যাংক ৯ হাজার ২০০টি, যুদ্ধবিমান ৩ হাজার ৯০০টি, আর যুদ্ধ জাহাজ ৬৭৩টি। ভারতের ট্যাংক রয়েছে ৬ হাজার ৫০০টি, যুদ্ধবিমান রয়েছে ২ হাজারটি, আর যুদ্ধজাহাজ ২০০টি। কিন্তু তাদের এতসব ভারী যুদ্ধাস্ত্র তথা সামরিক শক্তিকে নিতান্তই করুনার দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে করোনা ভাইরাস। এদিকে, স্বীকৃত হিসেব মতে, করোনার কারণে কাফির বিশ্বে অর্থনীতিতে সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন ডলার। প্রকৃত হিসেব এর চেয়ে অনেক বেশি। করোনার কারণে একাধিক দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

করোনা গজব থেকে বাঁচতে মরিয়া হয়ে উঠেছে কাফির বিশ্ব। বাচার জন্য তারা মাস্ক, অক্সিমিটার, পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, ফেস শিল্ড, টেস্ট কিট, আইসোলেশন বেড, স্যানিটাইজার, পিপিই, হ্যান্ড গ্ল্যাভস ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করছে। ব্যয় করছে কোটি কোটি ডলার। স্বীকৃত হিসেব মতে, চীন ব্যয় করছে তাদের দেশের জাতীয় আয়ের ৩.১ শতাংশ (৩৬ লাখ কোটি টাকা), আমেরিকা ব্যয় করেছে তাদের দেশের জাতীয় আয়ের ১৮ শতাংশ (১০ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা)। যদিও এ হিসেব যথার্থ নয়।

ফিকিরের বিষয় হচ্ছে, করোনার আক্রমনকে মারাত্মক কষ্টকর হিসেবে আমলে নিয়ে কাফির বিশ্ব তা থেকে রক্ষা পেতে এতসব সুরক্ষার পন্থা অবলম্বন করছে। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে মৃত্যু পরবর্তী জাহান্নাম থেকে রক্ষা পেতে কাফির বিশ্বের কী করা উচিত? করোনার পাশাপাশি এটাও তাদের আমলে নেয়া জরুরী নয় কী?

কারণ, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে জাহান্নামীদের শাস্তি সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা আমার পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ অস্বীকার করেছে আমি তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করবো। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আবার আমি তা পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে, যাতে তারা আযাব আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাপরাক্রমশালী, হিকমত মুবারক উনার অধিকারী। (পবিত্র সূরা আন নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)।

বলাবাহুল্য, করোনাকে দেখা যায়না কিন্তু তারপরেও কাফির বিশ্ব করোনা বিশ্বাস করছে এবং তা থেকে বাচার বহু চেষ্টা করছে। তবে কী তাদের এটাও উচিত নয় আলিমুল গায়েব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান আনা এবং জাহান্নাম থেকে বাচার জন্য কোশেশ করা?

মূলত পুজিবাদী সমাজতন্ত্রী ধর্মনিরপেক্ষ অথবা ধর্মহীন, গণতান্ত্রিক, রাজতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক বা যেকোনো ধারার রাষ্ট্রই ঈমানী মূল্যবোধ থেকে নিজেও দুরে থাকে, জনগণকেও মহাদুরে রাখে।

বাস্তবে আমরা তাই দেখতে পেলাম ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের এদেশে করোনার অজুহাতে মসজিদে আযান বিকৃত হলো, নামাজ নিষিদ্ধ হলো, তারাবীহ নিষিদ্ধ হলো, মাঠে ঈদের জামায়াত নিষিদ্ধ হলো, মুসাফাহ-মুয়ানাকা নিষিদ্ধ হলো। কিন্তু এও কি সম্ভব? কারণ এতে করে রাষ্ট্রযন্ত্র সংবিধানের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। যেহেতু সংবিধানে ২ (ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম। পাশাপাশি রাষ্ট্রযন্ত্র ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দ্বীনী অধিকার ভুলুণ্ঠিত করেছে। শুধু তাই নয় এতে করে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রযন্ত্র মূলত ফিরাউন, নমরুদের মত সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! দেশের হক্কানী-রব্বানী উলামা-মাশায়েখরা অন্তত তাই মনে করছেন।

অপরদিকে সংবিধান থেকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস এ অনুচ্ছেদ উঠিয়ে নিয়ে সরকার হাতে নাতে কী প্রমাণ পেলো? ‘উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে দেশ’- এ শ্লোগান এখন কোথায় গেলো? আত্মঘাতি লকডাউনের কারণে নতুন করে বেকার হবে প্রায় ৬ কোটি লোক। পারিবারিক আয় কমেছে ৭৪ শতাংশ। নতুন করে ৪ কোটি লোক দারিদ্রসীমার নীচে যাবে। ২০ লাখেরও বেশি প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে। ১২ কোটি লোক চরম স্বাস্থ্যঝুকিতে পড়েছে।

দেখা যাচ্ছে, এতদিনের সব তথাকথিত উন্নয়ন, মহান আল্লাহ পাক উনার এক গযবে বিপর্যস্থ। বড় বড় মন্ত্রী, এমপিরাও এখন সমাহিত। কাজেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে এখনই সামাল দিতে হবে। করোনাকে ছোঁয়াচে বা মহামারী নয় গযব বলতে হবে। করোনাকে মোকাবেলা বা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে নমরুদের ন্যায় আকাশে তীর মেরে গযবকে আরো ব্যাপক করা। কাজেই এসব ধর্মনিরপেক্ষ বা ধর্মহীন চিন্তা, দর্শন বাদ দিয়ে মুসলমান হিসেবে সরকার সহ গোটা জনগোষ্ঠীকে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে সমর্পিত হতে হবে।

আর যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আযম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই তা করা সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করুন। আমিন! আমিন! আমিন!

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়